আইনমন্ত্রী সঠিক বলেন নাই। "তালাক" একটি ঘৃন্নিত শব্দ।

লিখেছেন লিখেছেন শাজিদ ২৯ জুন, ২০১৩, ০৬:২৪:৩২ সন্ধ্যা

(আইন বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ বলেছেন, ‘পারিবারিক অশান্তি নিরসনে কাজীদের ভূমিকা রাখতে হবে।বিবাহ বিচ্ছেদের ক্ষেত্রে তালাক দিলেই তা সঙ্গে সঙ্গে কার্যকর হবে না। এক্ষেত্রে ইউনিয়ন কাউন্সিল বোর্ড উভয়পক্ষকে নিয়ে মধ্যস্থতা ও সালিশ করবে। তিন মাস সময়ের মধ্যে উভয়পক্ষ সমঝোতায় আসতে ব্যর্থ হলে তখন ইউনিয়ন কাউন্সিল এ বিষয়ে একটি সার্টিফিকেট ইস্যু করবে। তারপর কাজী তালাক রেজিস্ট্রি করবে।)

এখানে আইনমন্ত্রী সঠিক বলেন নাই, "তালাক দিলেই তা সঙ্গে সঙ্গে কার্যকর হবে না।" বাক্যটি সরাসরি কোরান সুন্নাহ বিরোধী। তালাক একটি ঘৃন্নিত সিদ্দান্ত এই সিদ্দান্ত নেয়ার আগে অর্থাত তালাক দেয়ার ক্ষেত্রে কি কি কারণে তালাক দেয়া যাইতে পারে তাহা যেমন বলা হয়েছে ঠিক একইভাবে তালাক দিতে চাইলেও সংশোধনের সময় দিয়ে তালাকের বিধি বিধান রয়েছে, বিধি বিধান মেনে তালাক না দেয়াটা অজ্ঞতা, মূর্খতা এবং অপরাধও বটে। কিন্তু বিধি বিধান না মেনে তালাক দিলেও সত্যিসত্যি "তালাক" হয়ে যায়। "শরিয়ত মতে তালাক" হয়ে যাওয়ার পর আর কোনো বিচার আচার সমজোতা নাই। শরিয়তের বিধান অনুসারে যদি "তালাক" হয়ে যায় তাহা দুনিয়াতে কার্যকর হউক বা না হউক আল্লাহর বিচারে "তালাক" হয়ে গেছে। এর পরবর্তী প্রতিটি মুহুর্ত হবে জেনা, জেনা, জেনা।

আইনমন্ত্রী বলছেন সাথে সাথে কার্যকর হবেনা। এটি ভূল মতামত, যদি কেউ "তালাক" দিয়ে থাকে তাহা শরীয়তের আলোকে আগে জানতে হবে আদৌ তালাক হয়েছে কিনা। তবে হেঁ, আইনমন্ত্রী যদি বলতেন কেউ কোনো কারণে "তালাক" দিতে চাইলে "তালাক দেয়ার আগে এক্ষেত্রে ইউনিয়ন কাউন্সিল বোর্ড উভয়পক্ষকে নিয়ে মধ্যস্থতা ও সালিশ করবে যে, স্বামী স্ত্রীর মধ্যে যেইসব সমস্যা দেখা দিয়েছে তাহা সামাধান করা যায় কিনা, সমাধান যদি সম্ভব হয় আল্লাহর দরবারে লাখ লাখ শোকরীয়া আর যদি সম্ভব না হয় তখন সংশ্লিস্টদের উপস্থিতিতে সমস্ত দেনা পাওনা আদায় সাপেক্ষে "তালাক" দিতে হবে।

--- এই বিধি বিধানটি যদি সরকারী ভাবে সারাদেশে প্রচারীত হয় এবং এক্ষেত্রে ইউনিয়ন কাউন্সিল বোর্ড ইত্যাদির দায়ীত্বশীল ব্যক্তিরা জনগনকে স্বচেতন করেন তাহলে ইনশাআল্লাহ আমাদের দেশে "তালাক" দেয়ার প্রবনতা হয়ত ধীরে ধীরে ম্লান হয়ে যাবে। স্বামী স্ত্রী একে অপরের সমস্য বুঝে সমাধানে এগিয়ে আসবে, দায়ত্বীশীল হবে, সূখের সংসার গড়ে তোলতে সক্ষম হবে ইনশাআল্লাহ।

আরেকটি কথা না বলিলেই নয়, মাননীয় আইনমন্ত্রী "তালাকের" কথা বলছেন তবে বাস্তবতা হচ্ছে (আজকের মনবজমিনেও লিখেছে) বর্তমানে আধুনিকতার ধাক্কায় তালাক দেয়া/নেয় তো দূরের কথা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে ঝামেলা ঝক্করে যাইতেও রাজী নয় তারা এমন এক আধুনীকতা পৌঁছে গেছে যে, বিবাহের প্রয়োজন নাই বরং পছন্দ ভালবাসা এবং জৈবিক চাহিদা পুরনের জন্য বিবাহ বন্ধন ব্যতিরেকে লিভটুগেদার করে চলিয়ে যাচ্ছে, জৈবিক চাহিদা সেরে নিচ্ছে।

দুঃখ জনক হইলেও সত্য যে, আমাদের কথাকথিত উচ্চতর, শিক্ষিত, উন্নত পরিবারের মধ্যে এই লিভটুগেদারের প্রবনাতা বেশী। বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয় অঙ্গনে প্রেম ভালবাসা নামে লিভটুগেদার একটি সর্বাধুনিক ফ্যাশনে পরিনত হয়েছে, শিক্ষকের অনেকে লিভটুগেদার করেন এবং ছাত্র ছাত্রীকে এদিকে উতসাহিত করেন।

মাননীয় আইনমন্ত্রী "তালাক" বিষয়ে চিন্তা করেও শরীয়তের বিধান সম্পর্কে অপিরপূর্ণ থাকায় সঠিক মতামত দিতে পারেন নাই আশা করছি তিনি বিষয়টি স্পষ্ট করিবেন এবং অনুরোধ রহিল যে, শুধু "তালাক" নয় বরং উনাদের মত শিক্ষিত সমাজে লিভটুগেদারের যেই প্রতিযোগীতা চলছে সেই দিকেও যেন নজর দেন। মূফতি আমেনী রাহিমাহুমুল্লাহ সরকারের এক সিদ্দান্তের আলোকে বলেছিলে বাংলাদেশ জারজ সন্তানের রাজ্যে পরিনত হবে, পত্র পত্রিকায় ব্যস সমালোচিত হয়েছিল এই বাক্যটি তবে বর্তানের যেই ভাবে লিভটুগেদার সাংস্কৃতির বিকাশ ঘটতেছে একদিন মরহুম আমেনীর আশঙ্কা জনক এই বাক্যই বাস্তবায়ীত হবে।

বিষয়: বিবিধ

১৯২৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File