বয়বৃদ্ধ সাংবাদিক শ্রদ্ধেয় এবিএম মুসা ভাই

লিখেছেন লিখেছেন শাজিদ ১৯ জুন, ২০১৩, ০৪:০১:৫৪ বিকাল

বর্ষীয়ান সাংবাদিক মূসা ভাই (আমার দাদার বয়সী তাই ভাই বলিলাম) নিজের অবস্থান থেকে বিশ্লেষণ করেছেন, সূত্র: মানবজমিন। তিনি অনেক সত্যকে আড়াল করে দক্ষিনাঞ্চলের তিনটি সিটি নির্বাচনের ফলাফলকে পদ্মাসেতুর ব্যর্থতার সাথে গুলিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেছেন। আসলে কি তাই? মূলত পদ্মাসেতু দক্ষিনাঞ্চলীয় বিষয় নয় বরং এটি গোটা বাংলাদেশের ইমেজের বিষয়। এটি আন্তর্জাতিক ভাবে স্বীকৃত অভীযোগ সরকারের বিরোদ্ধে, অর্থত সরকার নিজেই এই দূর্নীতির সাথে জড়িত। পদ্মাসেতু দূর্নীতির কারণে বহিঃবিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে সিটি নির্বাচনের ফলাফল শুধুমাত্র দক্ষিনাঞ্চলীয়রাই অসন্তোষ্টির কারণ নয়।

-- দাদুকে স্বরন করিয়ে দিতে চাই:- মাননীয় সাবেক প্রধান বিচারপতি বলেছিলেন "আমাদেরকে হাত পা বেঁধে সাঁতার কাটতে দিয়েছে সরকার" তার অর্থ যদি এই রকম হয় যে, সরকার যাহা চায় মাননীয় বিচারপতিরা বিচারালয়ে বসে শুধু তাহাই ঘোষনা করেছেন। দুদক চেয়ারম্যান বলেছিলেন দুদক "একটি নক দন্তহীন বাঘ" আজকের পেপারেও আছে দুদক চেয়ারম্যান আবুল সাহেবকে দায়মুক্তি দিয়ে বলছেন দুদক নক দন্তহীন বাঘ থেকেই যাবে। তার অর্থ যদি এই রকম হয় যে, পদ্মাসেতুর সাথে আবুল সাহেব জড়িত আছে তবে নক দন্তহীন বাঘ বিধায় করার কিছুই নেই। এই ধরনের উক্তি হয়ত নির্বাচন কমিশনের কাছ থেকেও জাতী শুনবে। পরম শ্রদ্ধেয় দাদুকে স্বরন করিয়ে দিতে চাই, তিনি "চ্যানেল আই" এ বসে মতি ভাইয়ের প্রশ্নের জবাবে হেফাজতে ইসলামের উপর বর্বরতম গনহত্যা বিষয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেছিলেন "এই পদক্ষেপ আরও আগে নেয়া উচিত ছিল এখন দেরীতে হলেও নিয়েছে তাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ"। অর্থাত তিনি শাপলা চত্তেরে সরকারের গনহত্যাকে শুধু সমর্থনই করেন নাই একই সাথে ধন্যবাদও জানিয়েছেন।

বয়বৃদ্ধ দাদুর কাছে জানতে ইচ্ছে হয়, ৫ই মে ২০১৩ এর বর্বরতম গনহত্যা যদি সমর্থনযোগ্য হয় তাহলে ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চে বর্বরতম গনহত্য সম্পর্কে তার মূল্যায়ন কি! জীবনের সন্ধ্যা বেলায় উপনিত দাদু হয়ত সবকিছু স্বরনে রেখে সঠিক বিশ্লেষণ করতে পাচ্ছেন না। বাংলাদেশে সর্বক্ষেত্রে উপেক্ষিত একটি শ্রেনী থাকিলে তারা হচ্ছেন আলেম ওলামা সমাজ। এই সমাজকে শুধু উপেক্ষাই করা হয় না একই সাথে তাদের বিরোদ্ধে নানা অপপ্রচার ছড়ানো হয়। দির্ঘ্য ৪২ বছর ধরে পরিকল্পিত ভাবে পরিচালিত অপপ্রচারের ফলাফল আদৌ দাদু ভাইয়েরা পেয়েছেন কিনা তাহা এই উপেক্ষিত আলেম ওলামা সমাজ ৬ই এপ্রিল লংমার্চ এবং ৫ই মে ঢাকা অবরোধ উত্তর শাপলা চত্তরে শহীদ হয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন। দাদু ভাইয়েরা সত্যতাকে বুঝেন কিন্তু মানষীকতার অভাবে সত্যকে স্বীকার করার সাহস করেন না।

বাংলাদেশে দুইটি বড় রাজনৈতিক দল তথা জোট। মাসের পর মাস দিবারাত্রি খরিদা গনমাধ্যম দিয়ে প্রচারনা চালিয়ে শত শত কোটি টাকা ব্যয় করে ১০ হাজার মানুষের সমাবেশ ঘটাতে পারেন না অথচ একেবারে স্থানীয় পর্যায়েও তাদের সূসংগঠিত সংগঠন কর্মী সমর্থক রয়েছে, ক্ষমতায় থাকিলে নানা সুবিধা দিয়ে এবং ক্ষমতায় না থাকিলে প্রচুর টাকা পয়সা দিয়ে এইসব সংগঠনকে জীবীত রাখা হয় তরপরেও ১০ হাজার মানুষের সমাবেশ হয়না। অথচ মাত্র সারে তিন বছর আগে জন্ম নেয়া অর্থনৈতিক বিচারে ভিক্ষুক হেফাজতে ইসলাম এক ইশারায়, "একটিমাত্র ইশারা" কোটি কোটি আল্লাহ ও রাসুল (সঃ) প্রিয় মানুষকে সমাবেত করে দাদু ভাইকে দেখিয়ে দিয়েছেন তারা কি করতে পারেন। ৬ই এপ্রিল হতভম্ব সরকার মানুষের ঢল ঠেকানোর জন্য সারাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা স্তবির করে দিয়েছিল কিন্তু ঢল ঠেকে নাই। ৫ই মে ২০১৩ এ ঐতিহাসিক অবরোধ সফল করে শাপলা চত্তরে ৫০ লক্ষাদিক আল্লাহ ও রাসুল (সঃ)প্রিয় মানুষগুলি সমাবেত হয়েছিল। ভীত সন্ত্রস্ত সরকার উপায় অন্তর না দেখে আলো নিভিয়ে পথ অবরুদ্ধ করে নিরহ নিরস্র ঘুমন্ত ধর্মপ্রাণ মানুষ গুলির উপর বর্বরতম গনহত্যা চালিয়ে আত্নরক্ষা করেছিল। বয়বৃদ্ধ মুসা ভাই তার বিশ্লেষণে সত্যকে আড়াল করে সিটি নির্বাচনের ফলাফলকে ভিন্ন ভাবে উপস্থাপন করে গনমানুষকে বোকা বানানোর চেষ্টা করছেন। মুসা ভাই ভাবছেন না যে, রাষ্ট্রীয় ভাবে উপেক্ষিত,গনমাধ্যম দ্ধারা উপিক্ষিত, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব দ্ধারা উপেক্ষিত, দুষ্ট পরিকল্পনা কারীদের পাহাড় সমতুল্য চেষ্টাকে উপেক্ষা করে তারা কি করতে পারেন। বিজ্ঞ বর্ষীয়ান সাংবাদিক মুসা ভাইয়ের জন্য হেফাজতে ইসলামের একটি বাক্যই যথেষ্ট তারা বলেছেন "ক্ষমতায় থাকতে চাইলে কিংবা ক্ষমতায় যাইতে চাইলে" ১৩ দফা মানতে হবে। সরকার, বিরোধী দল কিংবা জাগতীক শিক্ষায় শিক্ষিত মানুষগুলি হেফাজতের ১৩ দফায় সন্তোষ্ট বা সমর্থন করুন বা না করুন সেটি ভিন্ন বিষয় কিন্তু রাতের অন্ধকারে গনহত্যা না চালিয়ে হেফাজতের সাথে উম্মুক্ত আলোচনায় বসা যেত যে, কেন এই ১৩ দফা? বর্তমান শাসন ব্যবস্থায় ১৩ দফার উপিস্থিতি আছে কিনা, যদি না থাকে দেশ ও জাতী কিভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে? বা আদৌ ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে কিনা এবং ১৩ দফায় দেশ ও জাতীর মঙ্গল আছে কিনা, যদি থাকে তাহা কি? এবং ১৩ দফা সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষীক কিনা কিংবা জাতীয় সংবিধানে ১৩ দফা বা ১৩ দফার কোনো দফা সংযোজন যোগ্য কিনা ইত্যাদি বিষয়ে উম্মুক্ত আলোচনায় বসিলে হয়ত সিটি নির্বাচনের ফলাফল অন্য রকম হইত।

বিষয়: বিবিধ

১৭৪৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File