মত প্রকাশের স্বাধীনতা আছে বটে কিন্তু স্বাধীনতার অপব্যবহার বর্জনীয়

লিখেছেন লিখেছেন শাজিদ ১৯ জানুয়ারি, ২০১৩, ০৪:২২:৩৯ বিকাল



নোট:-

মানুষকে পশু বানানোর একমাত্র উপায়, উপকরণ হচ্ছে নারীকে আকর্ষণীয় করে তোলা এবং পুরুষকে নারী ভোগের পথ উম্মুক্ত করে দেয়া।

তিনি সরকারের সমালোচনা করেন তাই তার উপর আক্রমন হয়েছে মনে করছেন আবার তিনি মৌলবাদীর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন তাই তিনি কথিত মৌলবাদীকে সন্দেহ করছেন। তিনি একই সাথে বলছেন (আমাদের দেশে যুক্তির বিরুদ্ধে যুক্তি এবং মতের বিরুদ্ধে মত প্রতিষ্ঠা করা যায় না। ওরা বিপক্ষ মতকে গলা টিপে হত্যা করতে চায়। আমি যুক্তির বিরুদ্ধে যুক্তি ও মতের বিরুদ্ধে মত তুলে ধরতে চাই।)। আসলে কি তাই? তার সাথে অন্য কারও ব্যক্তিগত শত্রুতামীও তো থাকতে পারে।

সারাদেশে লক্ষ কোটি ব্লগার আছেন তাতে দেখা যায় দুই পক্ষ দুই মেরুতে অবস্থান প্রত্যেকেই স্ব স্ব যুক্তি তোলে ধরেন। তিনি সন্ত্রাসী দ্বারা আক্রান্ত হয়েছেন তাতে কোনো সন্দেহ নাই তবে তিনি নিজেকে একজন খ্যাতিমান ব্লগার বানানোর চেষ্টা করেছেন বলে মনে হচ্ছে। আমাদের বহুল পরিচিত বহুল আলোচিত কলামিষ্ট সৌদি আরবে ৮ জন বাংলাদেশীকে শিরচ্ছেদ করায় তিনি গলায় পোষ্টার লাগিয়ে অনশন করেছিলেন সৌদি আরবের আইনকে বর্বর আইন বলেছিলেন। সৌদি আরব হচ্ছে একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশ এই দেশটি তাদের নিজস্ব আইনে শাসিত হয় এবং যারা এই দেশে থাকবেন, আসবেন তারা এই দেশের আইন মেনে চলতে বাধ্য, আইন ভঙ্গ করিলে এই দেশেরই আইনে বিচারের মাধ্যমে যাহা যাহওয়ার তাহাই মেনে নিতে হবে।

জনাব, কলামিষ্টের মতে এটি যদি বর্বব আইন হয় তাহলে এরা বর্বব জাতি। আসলে কি তাই? জনাব আবুল কলামিষ্ট অন্য কোনো দেশের প্রচলিত আইনের সমালোচনা করার অধিকার রাখেন কি? তবে হেঁ স্বদেশী নাগরিকের জন্য তিনি সৌদি সকারের সহানুভূতি চাইতে পারেন, শাস্তি প্রাপ্তদের মুক্তি চাইতে পারেন এবং একই সাথে স্বদেশীয় সরকারের ব্যর্থতার সমালোচনা করতে পারেন। জনাব কলামিষ্টে সাহেব তাহা না করে সৌদি আরবের কড়া সমালোচনা করে এই দেশের আইনকে বর্বর আইন পক্ষান্তরে এই জাতীকে বর্বব জাতি হিসাবে আখ্যায়িত করলেন এটি জনাব কলামিষ্টে সাহেবের মত প্রকাশের যেই স্বাধীনতা রয়েছে তার অপব্যবহার নয় কি?

প্রত্যেকেরই মত প্রকাশের স্বাধীনতা রয়েছে তবে এই স্বাধীনতার অপব্যবহার করার অধিকার কারও নাই, অন্যকে আঘাত করার অধিকার কারও নাই, নিজে যাহা ভাবেন তাহা বলুন/লিখুন পাঠক শ্রোতারা নিজের বিবেচনায় গ্রহণ বা বর্জন করবে। আমাদের তাসলিমা নাসরীন শত যুক্তি দিয়ে এক নারী একাধিক স্বামী গ্রহণের পক্ষে মাঠে নেমেছেন, তিনি অগনিত স্বামী গ্রহন করেও দেখিয়েছেন এখন তার আদৌ কোনো স্বামী আছে কিনা বা কতজন আছে তিনি নিজেও হয়ত বলতে পারবেন না। আর এই ধরণের মতবাদ মুসলমান তো বটেই দুনিয়ার কোনো ধর্ম বিশ্বাসীরাই গ্রহণ করেনা, আর ধর্ম হচ্ছে মানুষের প্রাণ, মানুষের সমাজ ব্যবস্থা ধর্ম বিশ্বাসের দৃষ্টিকোণ থেকেই প্রতিষ্ঠিত হয়। আমাদের দেশে প্রত্যেক সম্প্রদায়ের আলাদা আলাদা সমাজ ব্যবস্থা রয়েছে এবং এক সম্প্রদায়ের সাথে অন্যের কোনো প্রকার সাংঘর্ষিক অবস্থান নাই।

কথিত ব্লগারের ভাষায়, ধর্ম বিশ্বাসীরা যদি চিন্তা চেতনায় মৌলবাদী হয় তাহলে অমৌলবাদীদের পরিচয় দাঁড়ায় জঙ্গলের পশু। অন্যভাবে দেখিলে ওরা জঙ্গলের পশুর চাইতেও অধম। মানব জাতীর এক শ্রেণী নিজেকে সেই রকম ভাবছে বলেই তো প্রতিদিন খুন খারাবী, অপহরণ ধর্ষণ, চিত্ত বিনোদনের নামে নারী ভোগ ও নারী প্রদর্শন করে অর্থ উপার্জন ইত্যাদি ইত্যাদি এখন নিত্যনৈমিত্তিক ব্যপার হয়ে গেছে, বর্তমানে দেশের প্রচলিত আইনে এই গুলি অপরাধ হইলেও সেই আইনের কোনো দৃশ্যমান প্রয়োগ নাই, যেন এইসব কর্মকান্ডের লাইসেন্স দেয় আছে।

অপহরণ করে ধর্ষণ করিলে ধর্ষণ অপরাধ হয় কিন্ত আপোষ রফার মাধ্যামে প্রেমিক প্রেমিকা হয়ে আবশ্যক হোটেলে গিয়ে দেহ ভোগ করিলে, কিংবা বিবাহ বিহীন দেহ ভোগের আয়োজন তথা লীভ টুগেদার হইলে ধর্ষণ হয়না। বলুন তো আমারা কোন্ জঙ্গলের পশু? আরে ভাই সৃস্টি জগতের পশু শ্রেণীও তো স্ব স্ব সমাজ মেনে চলে। বিড়ালের সাথে কুকুরের সমাজ হয়না, ইঁদুরের সাথে বিড়ালের সমাজ হয়না, হাঁসের সাথে মোরগ মুরগীর সমাজ হয়না, শিয়ালের সাথে বানরের সমাজ হয়না। আমরা মানুষ হয়েও কেন পশুর চাইতেও অধম হইলাম ?????

-----------------------------------------------------------------------------------------------

সাংবাদটি এখানে:-

সিরাজুল ইসলাম: দুঃসহ যন্ত্রণা। কাতরাচ্ছেন। দিনের পর দিন। চার দিন। সন্ত্রাসী হামলায় আহত জনপ্রিয় ব্লগার আসিফ মহিউদ্দীন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তেতলার একটি কেবিনে তিনি। কিন্তু নিরাপত্তা? না, নিজেকে নিরাপদ মনে করছেন না তিনি। এখনও আসছে হুমকি। ওদিকে মামলা হলেও পুলিশ সন্ত্রাসীদের কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। এমনকি পুলিশের পক্ষ থেকে এ পর্যন্ত যোগাযোগ করা হয়নি আসিফ বা তার পরিবারের কোন সদস্যের সঙ্গে। হাসপাতাল বেডে শুয়ে কথা বলতে কষ্ট হচ্ছিল আসিফের। তিনি বলেন, আমাদের দেশে যুক্তির বিরুদ্ধে যুক্তি এবং মতের বিরুদ্ধে মত প্রতিষ্ঠা করা যায় না। ওরা বিপক্ষ মতকে গলা টিপে হত্যা করতে চায়। আমি যুক্তির বিরুদ্ধে যুক্তি ও মতের বিরুদ্ধে মত তুলে ধরতে চাই। এটাই আমার জন্য কাল হয়েছে। মামলা তদন্তে পুলিশের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ বলেও উল্লেখ করেন তিনি। কাতর কণ্ঠে আসিফ জানান, এর আগে ২০১১ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলন চলাকালে সরকারের দু’টি গোয়েন্দা সংস্থা আমার বিরুদ্ধে তদন্তে নেমেছিল। ডিবি পুলিশ তখন আমাকে বিনা কারণে আটক করে ১৮ ঘণ্টা নির্যাতন চালায়। ওই নির্যাতন বা আটকের ঘটনা কাউকে বলতে নিষেধ করেছিল ডিবি পুলিশ। সরকারের কোন বাহিনীর ইন্ধন বা মৌলবাদী কোন গোষ্ঠী তার ওপর হামলা চালিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, হত্যার উদ্দেশ্যেই আক্রমণ চালানো হয়েছিল। সরকার ও মৌলবাদীদের বিরুদ্ধে লেখালেখির কারণে সরকারি বাহিনীর পাশাপাশি বিভিন্ন মহল থেকে আমার ওপর অনেক হুমকি এসেছে। কখনও ভয় পাইনি। ভাবতে পারিনি আমার ওপর এত বড় আক্রমণ আসবে। তিনি জানান, আমি সব সময় সরকারের নানা নেতিবাচক পদক্ষেপের সমালোচনা করে ফেসবুক ও ব্লগে লেখালেখি করি। সামপ্রতিক সময়ে বিশ্বজিৎ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ছাত্রলীগের চরম সমালোচনা করেছি। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ফি বাড়ানোর প্রতিবাদ জানিয়ে আমিই প্রথম ব্লগে লিখেছি। সামপ্রতিক ধর্ষণ ঘটনার কড়া প্রতিবাদ জানাচ্ছি। তেল-গ্যাসের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে বিবৃতি দিচ্ছি। যুদ্ধাপরাধের বিচারের ধীরগতির বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছি। ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করার পক্ষে বক্তব্য দিচ্ছি। এসব কারণেই এ হামলা হতে পারে।

মামলার বিবরণীতে তিনি উল্লেখ করেছেন, আমি সামাজিক গণমাধ্যমের সঙ্গে যুক্ত বাকস্বাধীনতা আন্দোলনের একজন কর্মী। গত ১৪ই জানুয়ারি রাতে আমি আমার ইস্কাটনের বাসা থেকে উত্তরা ১১ নম্বর সেক্টরে অবস্থিত গরিবে নেওয়াজ এভিনিউতে একটি আইটি ফার্মে যাচ্ছিলাম। আমি ওই ফার্মে আইটি এনালিস্ট হিসেবে কর্মরত। প্রতিদিন রাত ১০টার দিকে অফিসে যাই। ওইদিনও এর ব্যতিক্রম ঘটেনি। সন্ত্রাসীরা আগে থেকেই ওত পেতে ছিল। রাত সাড়ে ৯টার দিকে অফিসের নিচে রিকশা থেকে নেমে ভাড়া পরিশোধ করছিলাম। হঠাৎ রিকশাওয়ালার সামনেই মুখোশ পরা ৩ যুবক অতর্কিত আমার ওপর হামলে পড়ে। প্রথমে একজন পেছন থেকে চাপাতির বাঁট দিয়ে আঘাত করে। আরেকজন এসে আমার চশমা ফেলে দেয়। আমি যে চশমা ছাড়া কম দেখি তারা হয়তো তা জানতো। চাপাতির বাঁটের আঘাতের পর আমি পিছন ফিরে তাকাতেই ৩ জনে মিলে আমাকে জাপটে ধরে। কালো কাপড় দিয়ে আমার মুখমণ্ডল ঢেকে ফেলে। তারা এলোপাতাড়ি আমার ঘাড়, কাঁধ, উরু, পিঠ ও তলপেটে কোপাতে থাকে। চাপাতি ছাড়াও তাদের হাতে ছিল ছুরি ও ছোড়া। শরীরে বিভিন্ন স্থানে বড় ধরনের ৭টি আঘাত লাগে। এর মধ্যে ঘাড়ের একটি আঘাত ৮ সেন্টিমিটার এবং অপর একটি আঘাত ৬ সেন্টিমিটার গভীর। আমি মাটিতে লুটিয়ে পড়লে মৃত ভেবে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। তাদের আক্রমণে ভীত হয়ে রিকশাওয়ালা ভাড়া না নিয়ে দূরে চলে গিয়েছিল। সন্ত্রাসীরা চলে যাওয়ার পর ওই রিকশাওয়ালা ও দুই পথচারী এসে প্রথমে আমার চশমা খুঁজে দেন। পরে তারা আমাকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে ডাক্তার তার দায়িত্বে চরম অবহেলা দেখায়। পরে দ্রুত স্থানীয় মনসুর আলী মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি হই। সেখানে কয়েকটি ব্যান্ডেজ করা হলেও বড় আঘাতগুলোয় ব্যান্ডেজ সম্ভব হয়নি। পরে রাতেই ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি হই।

তিনি বলেন, স্বাধীন মত প্রকাশ করতে গিয়ে আমি অনেকবার প্রাণনাশের হুমকির সম্মুখীন হয়েছি। সরকারের কাছ থেকে পেয়েছি চোখরাঙানি। মৌলবাদী গোষ্ঠীর কাছ থেকে পেয়েছি বিরূপ প্রতিক্রিয়া। তিনি জানান, ডিবি পুলিশ আমার সঙ্গে চরম অমানবিক আচরণ করেছিল। তারা আমার কাছে জানতে চেয়েছিল, আমি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র না হয়েও কেন ছাত্রদের পক্ষে লেখালেখি করছি? কেন সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলছি? ডিবি পুলিশ আমাকে এই মর্মে মুচলেকা দিতে বলেছিল যে, আমি আর কোন সামাজিক যোগাযোগ সাইটে লিখতে পারবো না। জগন্নাথের আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হতে পারবো না। কোন সভা-সমাবেশ করতে পারবো না। আমি রাজি না হওয়ায় তারা আমাকে রিমান্ডের ভয় দেখিয়েছিল। পরে এই মর্মে মুচলেকা দিয়েছি, জগন্নাথের ঘটনায় শাহবাগে যে সমাবেশ ডাকা হয়েছে তা বাতিল করলাম। এ নিয়ে কোন সমাবেশ হবে না। এরপর ডিবি পুলিশ আমাকে ছেড়ে দেয়। তিনি জানান, ব্লগে লেখালেখি বন্ধ করতে এখনও আমাকে ফেসবুক ও মোবাইল ফোনে হুমকি দেয়া হচ্ছে।

২৮ বছর বয়সী আসিফ আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি থেকে ২০০৮ সালে কম্পিউটার বিভাগে মাস্টার্স পাস করে একাধিক বেসরকারি আইটি ফার্মে কাজ করেছেন। উত্তরার ওই আইটি ফার্মে কাজ করছেন আড়াই বছর ধরে। বাবা-মা বেশ কয়েক বছর আগে মারা গেছেন। তারা ৬ বোন, ৩ ভাই। আসিফ সবার ছোট। বড় ভাই মাহতাব হোসেন সজল ২০১১ সালের ২৮শে মে থেকে নিখোঁজ। পিতা মকবুল আহমেদ এজি অফিসের সুপারিনটেনডেন্ট এবং মা গৃহিণী ছিলেন। গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালী হলেও সেখানে তার খুব একটা যাতায়াত নেই। স্থায়ী ঠিকানা হিসেবে ব্যবহার করেন ৩৯/৩, দক্ষিণ যাত্রাবাড়ি।

বিষয়: বিবিধ

১২১৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File