কাউকে নাস্তিক বলার জন্য আল্লামা শাহ আহমদ সফি কে? ------ বেগম মতিয়া চৌধুরী
লিখেছেন লিখেছেন শাজিদ ০৯ এপ্রিল, ২০১৩, ০৬:৩৭:২২ সন্ধ্যা
মাননীয় কৃষীমন্ত্রী আল্লামা শাহ আহমদ সফি (দা.বা.) কে উদ্দিশ্য করে খুবই সহজ সরল ভাবে বেশ কিছু প্রশ্ন উত্তাপন করেছেন। সাধারন বক্তৃতায় মাননীয় মন্ত্রীকে যেই ভাবে উত্তেজিত দেখা যায় আল্লামা শাহ আহমদ সফি সাহেবের কাছে প্রশ্ন কালে সেই রকম উত্তেজনা অনুপস্থিত।
যাই হউক, আল্লামা শাহ আহমদ সফি (দা.বা.) সাহেব মাননীয় মন্ত্রীর প্রশ্নের উত্তর দিবেন না যতক্ষন না মাননীয় মন্ত্রী দ্বীন কাকে বলে বিস্তারিত ভাবে জানার জন্য এই শাইখুল ইসলামের ধারস্থ না হ্ইবেন। তবে হেঁ যেহেতু তিনি প্রশ্ন তোলেছেন এবং যেহেতু এই প্রশ্ন দেশের ১৬ কোটি মানুষের কাছে পৌঁছেছে সেহেতু একজন মুসলমান হিসাবে মাননীয় মন্ত্রীকে উত্তাপিত প্রশ্ন গুলির উত্তর দেয়া দরকার মনে করছি।
মাননীয় মন্ত্রী বলছেন যে তিনি চার কলেমা পড়েছেন আর চার কলেমায় যার বিশ্বাস আছে তাকে আল্লামা শাহ আহমদ সফি সাহেব নাস্তিক বলা কে?
উত্তর:- আমরা জানি চার কলেমা পড়ার মাধ্যমেই মোশরেক মুসলমান (ঈমানদার) হয়। মাননীয় মন্ত্রী হয়ত জানেন না যে মুসলমান থাকার জন্য শুধুমাত্র চার কলেমা পড়ার মধ্যেই সীমবদ্ধ নয় বরং এই চার কলেমাকে দ্বীলের মধ্যে হেফাজত করতে হবে। চার কলেমা যারা পড়েছেন তারাই মুসলমান তাদের মধ্যেই ইসলাম। যারা চার কলেমা পড়েছেন বটে কিন্তু তাহা দ্বীলের মধ্যে হেফাজত করলেন না বা হেফাজত করতে জানেন না বরং এমন কিছু কর্মকান্ড ও বাক্য বচন করলেন যার কারণে চার কলেমা পড়লেও দ্বীলের মধ্যে তার অস্তিত্ব থাকছেনা, নিজের অজান্তে মুসলমান ঈমান হারা হয়ে যাচ্ছে। যারা চার কলেমা পড়েছেন অথচ তারা নিজের অজান্তেই ঈমান হারা হয়ে যাচ্ছেন দ্বীনে ইসলাম থেকে খারিজ হয়ে যাচ্ছেন তাই আল্লামা শাহ আহমদ সফি (দা.ব.) এর ডাক দিয়েছেন হে চার কলেমাধারী মুসলমান ভাইবোন তোমরা স্ব স্ব দ্বীলের মধ্যে দ্বীনে ইসলামকে হেফাজত কর, এক কথায় "হেফজতে ইসলাম"।
মাননীয় মন্ত্রী প্রশ্ন তোলেছেন নাস্তিক বলার জন্য আল্লামা শাহ আহমদ সফি কে? সহজ উত্তর হচ্ছে, আল্লামা শাহ আহমদ সফি হচ্ছেন একজন মুসলমান আর যিনি বা যারা নিজের অজান্তে দ্বীন থেকে খারিজ হয়ে যাচ্ছেন তাদেরকে স্বরন করিয়ে দেয়া সতর্ক করা এবং সঠিক পথে ডাকা আরেকজন মুসলমানের ঈমানী দায়ীত্ব, আল্লামা শাহ আহমদ সফি সাহেব তার ঈমানী দায়ীত্ব পালন করছেন। আশাকরি মাননীয় মন্ত্রী তার প্রথম প্রশ্নের উত্তর পেয়েছেন।
----------
মাননীয় মন্ত্রী বলছেন, শেখ হাঁসিনা ধর্মকর্ম পালন করেন, সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম রেখেছেন এবং পাশাপাশি অন্যন্য ধর্মাবলম্বীর ধর্মীয় স্বাধীনতার কথাও বলা হয়েছে।
উত্তর:- আমাদের বীর মুক্তিযোদ্ধা সিআর দত্ত বীর উত্তম যদি প্রধানমন্ত্রী হয়ে যান এবং তিনি যদি সংবিধানে রাষ্ট্র ধর্ম ইসলাম রাখেন এমনকি বিছমিল্লাহও সংযোজন করেন তখন সিআর দত্ত বাবু মুসলমান হয়ে যাবেন কি? রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম রাখা, বিছমিল্লাহ রাখা বা সংযোজন করা এবং তাহা সর্বকালের জন্য সংবিধানে সংরক্ষন করাটা তো কোনো মোশরেক মুসলমান হাওয়ার "সনদ" নয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ধর্মকর্ম করেন (একজন মুসলমান হিসাবে এইটাই করনীয়) তবে তিনি একথাও বলেছেন "দূর্গা মা" গজে চড়ে আসাতে এবার ফসল ভাল হয়েছে, শাজেদা চৌধূরী বলেছেন আজ "কালি মা" থাকলে দেশে অরাজগতার সৃষ্টি হত না, সৈয়দ আশরাফ সাহেব বলেছেন তিনি হিন্দু নন আবার মুসলমানও নন। মাননীয় কৃষিমন্ত্রী কিছু বলেছেন কিনা জানিনা তবে উল্লেখিত যাহা বলেছেন তাহা সমর্থন করেছেন। আল্লামা শাহ আহমদ সফি সাহেব এখানেই বলছেন হে মুসলমান ভাইবোনেরা তোমরা দ্বীলের মধ্যে ইসলামকে হেফাজত কর, দ্বীলের মধ্যে যদি উল্লেখিত বিশ্বাসকেও স্থান দাও তখন তোমাদের ঈমান থাকেনা, মুসলমান থাকবেনা, তোমাদের মধ্যে হিন্দু বা মুসলমান কোনো ধর্মেরই পরিচয় থাকেনা আর যাদের কোনো ধর্মীয় পরিচয় থাকেনা তারা নাস্তিক।
আমরা মুসলমানকে মুসলমান, হিন্দুকে হিন্দু, বৌদ্ধকে বৌদ্ধ এবং খৃষ্টানকে খৃষ্টান বলি আর যাদের মধ্যে কোনো পরিচয় নাই তারাই হচ্ছে নাস্তিক। এখানেই আল্লামা শাহ আহমদ সফি (দা.ব.) এর ডাক হচ্ছে "হেফাজতে ইসলাম" তোমরা দ্বীলের মধ্যে ইসলামকে হেফাজত কর।
----------------------
মাননীয় মন্ত্রী বলছেন একজনের উপার্জনে কিন্তু সংসার চলে না। তাই বাধ্য হয়েই নারীকে কাজ করতে হয়।
প্রমত আল্লামা শাহ আহমদ সফি নারীর কর্ম নিয়ে কোনো প্রশ্ন তোলেন নাই। তিনি ১৩ দফার মধ্যে নারী সম্পর্কে যাহা বলেছেন তাহা হচ্ছে নারী পুরুষের অবাধ চলফেরা বন্ধ কর। নারীকে সর্বউচ্চ মর্যাদা দেয়ার কথা বলা হয়েছে, নারীর অধীকার প্রতিষ্টা করার কথা বলা হয়েছে, নারী পুরুষ সমন্নয়ে সূন্দর একটি সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তোলার কথা বলা হয়েছে।
নারী পুরুষ অবাধ চলফেরার কারণে নারীরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে, ব্যভিচার (জেনা) হচ্ছে, অবৈধ সম্পর্ক গড়ে উঠছে, নারীরা তাদের প্রাপ্য অধীকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, পুরুষ নারীকে ব্যবহার করছে, পরুষ নামের পশুরা নারীকে ভোগ্যপণ্য বানাচ্ছে, নারীর রূপলাবণ্য প্রদর্শন করে এই পশুরা অর্থ উপর্জন করছে। --- মাননীয় মন্ত্রীকে স্বরন করিয়ে দিতে চাই, পবিত্র ধর্ম ইসলামে নারীকে এতই উচ্চ মর্যাদায় অধীষ্ট করেছে যে, মোহরানা আদায় ব্যতিরেকে স্ত্রী সম্মতি না দিলে স্বামী স্ত্রীকে স্পর্শ করতে পারেনা, স্বামী যদি ক্ষমতা বলে তার অধীকার চর্চা করে, ইচ্ছ আখাঙ্কা আদায় করতে চায় তখন স্ত্রীর উপর জুলম হয় কেয়ামতরে ময়দানে এর জবাব দিতে হবে। নিন্মের এই বাক্যটি একটু অপ্রত্যাশিত হলেও বুঝার জন্য বলছি। "স্ত্রী সম্মতি না দিলে স্বামী স্ত্রীকে গর্ভবতি করার অধীকার রাখেনা"। স্ত্রীর ভরন পোষন সহ স্ত্রীর অধীকার রক্ষা করা, তার চাওয়া পাওয়া পরিপূর্ণ করা, উজ্জত আব্রু রক্ষা করা, আত্নমর্যাদাশীল করা, সম্মানিত করা সহ যাবতীয় দায় দায়ীত্ব স্বামীর উপর। স্বামী যাবতীয় কামাই রোজগারের উপর স্ত্রীর পূর্ণ অধীকার রয়েছে কিন্তু স্ত্রীর কামাই রোজগারের উপর স্বামীর কোনো অধীকার নাই এমন কি সন্তান সন্ততীকে লালন পালনের দায়ীত্বও স্ত্রীর নয়। আল্লামা শাহ আহমদ সফি (দা.ব.) নারীর ক্ষেত্রে এখানেই বলছেন হে ভাইবোনেরা তোমরা দ্বীলের মধ্যে ইসলামকে হেফাজত কর এইটাই "হেফাজতে ইসলাম"।
বিষয়: বিবিধ
১৭৯৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন