শেষ হয়ে যাওয়া সময়... .
লিখেছেন লিখেছেন ফাতিমা মারিয়াম ০২ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ০৫:১৩:৩৯ বিকাল
ছোটবেলা থেকেই দেখে এসেছি আমাদের পরিবারে জন্মদিনের অনুষ্ঠান পালনের কোন রেওয়াজ নেই। কারণ আমার আব্বা এইসব দিবস ভিত্তিক অনুষ্ঠান একেবারেই পছন্দ করতেন না। আত্মীয়স্বজন বা প্রতিবেশীদের জন্মদিন, ম্যারেজ ডে এইসব অনুষ্ঠানে আব্বা যেতেন না। ফলে কেউ কেউ মন খারাপও করত। নানান কথা বলত। কিন্তু আব্বা অবিচল থাকতেন। তাই আমরাও এই অনুষ্ঠানগুলিকে এড়িয়ে যেতাম। ফলে আমাদের কার জন্মদিন কবে আসল কবে গেল তা নিয়ে কারও কোন মাথাব্যথা ছিলনা। নীরবে নিভৃতেই এই দিনটি আসত এবং চলে যেত।
কলেজে ঢুকার পর প্রথম বছরেই ঘনিষ্ঠ বান্ধবীরা গিফট সহ জন্মদিনে উইশ করা শুরু করল। ভার্সিটিতেও এই ধারা চলমান ছিল।(বকা খাওয়ার ভয়ে আব্বার কাছে কখনোই এইসব গিফটের কথা বলতাম না।) ভার্সিটি লাইফ শেষ হওয়ার পর আবার ধীরে ধীরে এই উইশের পরিমাণ কমতে থাকে।
এখন আমার দুই কন্যা, পরিবারের গুটি কয়জন এবং বান্ধবীদের কয়েকজন প্রতিবছর মনে করে উইশ করে যায়। এখানে আরেকটু কথা উল্লেখ করি, আমি আমার বাচ্চাদের জন্মদিনেও কোন অনুষ্ঠান করি না। একেবারে শুরু থেকেই এই ধারা চালু রেখেছি। তাই তারাও কখনো অনুষ্ঠান করার বায়না ধরে না...আলহামদুলিল্লাহ। আমি নিজেও অন্যদের অনুষ্ঠানে অংশ নেই না। আত্মীয় বা প্রতিবেশীদের মধ্যে যারা নিয়মিত তাদের বাচ্চাদের জন্মদিনে অথবা নিজেদের বিবাহ বার্ষিকীতে অনুষ্ঠান করে তারাও এখন আর দাওয়াত দেয়না।
আমার কাছে মনে হয় জন্মদিন মানেই জীবন থেকে একটি বছর শেষ হয়ে যাওয়া, একধাপ মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাওয়া, জীবনের গুরুত্বপূর্ণ কিছু সময় চলে যাওয়া। ছোটবেলায় শোনা একটা গান খুব মনে পড়ে-'সবাই বলে বয়স বাড়ে আমি বলি কমেরে, আমি বলি কমে.....'
আসলেই ত দিন দিন নির্দিষ্ট সেই গন্তব্যের দিকে এগিয়ে যাওয়া মানেই জীবনের কিছু সময় কমে যাওয়া। অথচ এই অনুভূতি গুলি হৃদয়কে নাড়া দেয় না। দুনিয়া মুখী এই জীবনকে নিয়ে কতই না পরিকল্পনা! কত স্বপ্ন, কত সাধ, কত আশা!
অথচ আমি জানি যে মহান প্রভু আমাকে কেন সৃষ্টি করেছেন? 'জিন ও মানুষকে আমি শুধু এজন্যই সৃষ্টি করেছি যে, তারা আমার দাসত্ব করবে।'[আয যারিয়াতঃ আয়াত নং-৫৬] সেই দাসত্বে আমি কতটুকু এগিয়ে যেতে পেরেছি তা কেন মনকে ব্যথিত করে না? তারপরও পরম করুণাময়ের নিকট প্রত্যাশা তিনি যেন আমার শেষ পরিণতি তাঁর পছন্দ মাফিক করেন, শেষ দিবসের বিচারে তাঁর রহমতের ছায়া দিয়ে পার করিয়ে নেন, চিরসুখের জান্নাতের চিরস্থায়ী বাসিন্দা করে দেন। এটাই আসল সফলতা।
বিষয়: বিবিধ
২৬১১ বার পঠিত, ৫৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
জন্মদিনে আপুর সুস্থতা ও কল্যাণমুখী জীবনের জন্য অজস্র দুয়া রইল।
আমীন
আমাদের চা কোথায়?
আমাদের পানীয় কোথায়?
আমাদের সন্দেশ কোথায়?
আমাদের দই কোথায়?
আমার খাওয়াতো ভাইটা কোথায়?
তবে আমি ভাবছি,সামনে আমার জন্মদিন। আর সেদিন আমি উধাও হয়ে যাবো
আচ্ছা আপু,আপনি আজকে এই পোষ্ট দিলেন কেন?আপনার কি আজকে বার্থডে
কেন যেন মনে হচ্ছে,আপনার সাথে ঝিঙেফুল আপুর মিল আছে ] ]
আচ্ছা আমি আপনাকে আমার জন্মদিনের তারিখ বলবো তবে সেটা ধাঁধার মার্ধ্যমে,
আমার যেদিন জন্মদিন,বছরের অন্য মাসে সেদিনকে এদেশের সকল মানুষ শোকে শোকাহত হয়ে পড়ে।আর কিছু ভাইকে না ভুলার কথা বলে।আবার যে দিন শোক পালন করে তার পরের মাসের ঐ তারিখের,৩ দিন পর এদেশের মানুষ নিজের স্বাধীন মনে করে। আর যে সবাই নিজেদের স্বাধীন মনে করে তার ৫ মাস পর ঐ তারিখের ৩ দিন আগে আমার জন্ম হয়। বলেন তো দেখি আমার জন্ম তারিখ কবে
২ যোগ বিয়োগ করলে আসলটা আসলেও আসতে পারে
নাচতে না জানলে উঠান বাঁকা আপনার অবস্থা হয়েছে সেরকম
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ আপু, আলহামদুলিল্লাহ
আমার আত্মীয় স্বজনসহ চৌদ্দ গোষ্ঠীতেও জন্ম দিবস, মৃত্যু দিবস, ম্যরিজ ডে সহ এসব পাগলামীর অস্তিত্বও নেই।
আমার কন্যার বয়স ৫ বছর। গত বছর জন্মদিন নিয়ে বিশেষ উৎসাহ থাকলেও এই বছর আমি বুঝানয় তার বিশেষ কোন উৎসাহ ছিলনা।
জাজাকিল্লাহু খায়র।
আমরাও কখনোই এসব ডে, খাতনার প্রোগ্রাম ইত্যাদি তে অংশগ্রহন করি না, যার কারনে আত্মিয় স্বজনেরা কেউ দাওয়াত ও দেয় না। কিন্তু এখন আমি যেখানে আছি সেখানে তারা বেশ ভাল মতই পালন করে, কিছুদিন পর হয়ত আমার উপর রাগ করা শুরু করবে........
পরম করুণাময়ের নিকট প্রত্যাশা তিনি যেন আমার শেষ পরিণতি তাঁর পছন্দ মাফিক করেন, শেষ দিবসের বিচারে তাঁর রহমতের ছায়া দিয়ে পার করিয়ে নেন, চিরসুখের জান্নাতের চিরস্থায়ী বাসিন্দা করে দেন। এটাই আসল সফলতা। আমীন
আর আমার জন্মদিন আমি এবং আমার বাবা ছাড়া খুব কেউ জানত না, আমার আম্মু কোন কিছু খুব মনে রাখতে পারেন না। বন্ধুরা জানে সার্টিফিকেট বার্থ ডে---- যেটা কিন্তু আসল না।
অবশেষে বুল করে ফেসবুক এ আসল জন্মদিন লেখার কারনে এখন অনেকেই জেনে গেছে।
মন্তব্য করতে লগইন করুন