সাপলুডু
লিখেছেন লিখেছেন ফাতিমা মারিয়াম ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৪, ০৪:১৬:০২ বিকাল
এক
অ-নে-ক অনেক আগের কোন এক প্রাচীন সুসজ্জিত শহর। ছিমছাম...টিপটপ.... একেবারে আধুনিক একটি নগরী। অগণিত মানুষ। শহরবাসী নারী-পুরুষ সবাই যার যার দৈনন্দিন কাজে ব্যস্ত। এই কর্মব্যস্ত নগরীর কেউ কল্পনাও করতে পারছেনা তাদের জন্য কী এক মহা বিপদ অপেক্ষা করে আছে।
হঠাৎ সবকিছু লণ্ডভণ্ড করে দিল এক প্রাকৃতিক দুর্যোগ। পুরো শহর কয়েক মুহূর্তের মধ্যেই বিলীন হয়ে গেল। দেখে মনেই হচ্ছেনা কিছুক্ষণ পূর্বেও এখানে কর্মব্যস্ততা ছিল....ছিল অসংখ্য প্রাণের স্পন্দন। কোন জন-মানুষ কোথাও কেউ নেই। বাড়িঘর সব মাটির সাথে মিশে গেছে। এটি এখন একটি বিধ্বস্ত জনপদে পরিণত হয়েছে।
কেমন যেন রূপকথার গল্পের মত মনে হচ্ছে.....তাই না? কিন্তু এভাবেই অনেক সভ্যতা ধ্বংস হয়ে গেছে। আসলে এগুলোকে ধংস করে দেয়া হয়েছে। কারণ? আল্লাহ প্রদত্ত জীবন বিধান থেকে দূরে সরে গিয়ে ঐসব জনপদের বাসিন্দারা বিপথগামী হয়ে গিয়েছিল। ফলে আল্লাহর আযাব এসে তাদেরকে সহ তাদের বাসভূমিকে শেষ করে দিয়েছে। মহান আল্লাহ তায়ালা আল কুরআনে অসংখ্য স্থানে এসব ধ্বংসপ্রাপ্ত জনপদ বা জাতি সম্পর্কে আমাদেরকে জানিয়েছেন।
১)-'আর এমন কত জনপদ আমি ধ্বংস করে দিয়েছি যেখানকার লোকেরা তাদের সম্পদ-সম্পত্তির দম্ভ করতো।'[আল কাসাস;আয়াত নং-৫৮]
২)- 'কত জনপদ আমি ধ্বংস করে দিয়েছি। তাদের ওপর আমার আযাব অকস্মাৎ ঝাঁপিয়ে পড়েছিল রাতের বেলা অথবা দিনের বেলা যখন তারা বিশ্রামরত ছিল।
- আর যখন আমার আযাব তাদের ওপর আপতিত হয়েছিল তখন তাদের মুখে এছাড়া আর কোন কথাই ছিল না যে, “সত্যিই আমরা জালেম ছিলাম।”[আল আরাফ;আয়াত নং-৪ ও ৫]
দুই
ছোটবেলায় লুডু খেলেন নি এমন বাঙালীর সংখ্যা মনে হয় খুবই কম। ছোটরা তো খেলেই বড়রাও সুযোগ পেলে কম যান না! এই লুডু খেলার মধ্যে সাপ লুডু একটি চমকপ্রদ ও জনপ্রিয় খেলা। সাপ লুডু সম্পর্কে পরিচয় করিয়ে দেয়ার আসলে কিছুই নেই। কারণ সবাই-ই এই খেলার নিয়মাবলী জানেন। এই খেলার প্রতিটি ধাপেই রয়েছে এক ধরণের উত্তেজনা! এই বুঝি সাপের মুখে পড়লাম! অথবা এখন যদি একটা মই পেতাম!! এই ধরণের টানটান উত্তেজনার মধ্য দিয়েই নানা উত্থান-পতনের মাধ্যমে এক সময় খেলা শেষ হয়।
আমাদের জীবনটাও অনেকটা এই সাপ লুডু খেলার মত। জীবনে চলার পথে কোথাও হয়ত ওঁত পেতে আছে এক ভয়ংকর অজগর যে কিনা নিমিষেই গ্রাস করে নেয় আমাদের অনেক সুখ-শান্তি-আনন্দ! আবার কোথাও সাফল্যের সিঁড়ি বেয়ে তরতর করে চলে যাই উন্নতির উচ্চ শিখরে! মোটকথা নানা উত্থান ও পতনের মধ্য দিয়েই আমাদের জীবন যাপিত হয়।
আজ যেই মানুষটি সবার শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার পাত্র দুইদিন বাদে তিনিই হয়ে যান চরম ঘৃণিত ও অবহেলিত। মানুষ হিসেবে আমাদের উচিত এইসব প্রাপ্তি ও অপ্রাপ্তিগুলোকে হাসিমুখে মেনে নেয়া। জানি, এটা বেশ কঠিন একটা কাজ। যে মানুষটা গতকাল সাফল্যের চুড়ায় অবস্থান করছিল, তার পক্ষে আজ এই পতন মেনে নেয়াটা যে কতটা পীড়াদায়ক তা ভুক্তভোগী মাত্রই জানেন।
একজন মানুষ তার জীবনের প্রতিটি স্তরেই এই হারজিতের মধ্য দিয়ে সামনে এগিয়ে যান। ছাত্রজীবন, পারিবারিক জীবন, সমাজ জীবন, অর্থনৈতিক জীবন ও রাজনৈতিক জীবনে এই ধারা লক্ষ্য করা যায়।
আমরা জানি ভালো কাজ করলে আমরা আল্লাহর নৈকট্য লাভ করতে পারব;আর খারাপ কাজ থেকে নিজেকে বিরত রাখলে মহান প্রভু খুশি হবেন! সেই লক্ষ্যে একজন মুমিন মহান প্রভুর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য উত্তম আমল সমূহ করে যেতে চেষ্টা করে। সমাজে সালাত কায়েমের লক্ষ্যে নিরলস ভাবে কাজ করে যাওয়া,ব্যক্তিগতভাবে সালাত আদায়, দুখী জনের দুঃখ মোচনের জন্য কাজ করে যাওয়া, নিজে সৎভাবে জীবনযাপন করা ও অন্যকে এই পথে চলার জন্য উদ্বুদ্ধ করা এসব হাজারো ভালো কাজের মাধ্যমে সে তরতর করে উপরের দিকে যেতে থাকে।
কিন্তু এক পর্যায়ে হঠাৎ সে কোন একটি খারাপ কাজ করে ফেলে। হয়ত কারো নামে গীবত করে ফেলে অথবা মিথ্যাকথা বলে অথবা অন্য কোন পাপকাজ তার দ্বারা হয়ে যায়। ফলে সে পা পিছলে নিচে পড়ে যায়। আবারও কিছু ভালো কাজের মাধ্যমে আল্লাহর নিকটবর্তী হওয়ার চেষ্টা...... এইভাবেই একজন মুমিনের জীবন যাপিত হয়।
- আর যারা কখনো কোন অশ্লীল কাজ করে ফেললে অথবা কোন গোনাহের কাজ করে নিজেদের ওপর জুলুম করে বসলে আবার সঙ্গে সঙ্গে আল্লাহর কথা স্মরণ হয়ে তাঁর কাছে নিজেদের গোনাহ খাতার জন্য মাফ চায় – কারণ আল্লাহ ছাড়া আর কে গোনাহ মাফ করতে পারেন – এবং জেনে বুঝে নিজেদের কৃতকর্মের ওপর জোর দেয় না,
-এ ধরনের লোকদের যে প্রতিদান তাদের রবের কাছে আছে তা হচ্ছে এই যে, তিনি তাদের মাফ করে দেবেন এবং এমন বাগিচায় তাদের প্রবেশ করাবেন যার পাদদেশে ঝর্ণাধারা প্রবাহিত হবে, সেখানে তারা চিরকাল থাকবে। সৎকাজ যারা করে তাদের জন্য কেমন চমৎকার প্রতিদান![আলে ইমরান;আয়াত নং-১৩৫ ও ১৩৬]
মহান আল্লাহ তায়ালা নিজেই বলে দিয়েছেন জীবনে চলার পথে কেউ যদি খারাপ কোন কাজ করে ফেলে তবে সে যেন মহান প্রভুর কাছে ক্ষমা চেয়ে নেয়। ফলে তার যতটুকু পতন হয়েছিল তা থেকে সে আবার সাফল্যের পথে যেতে থাকবে। আমাদের জীবন চলতে চলতে যখন শেষ হয়ে যাবে তখন যেন শেষের স্থানেই আমাদের অবস্থান হয়-এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
তিন
মানবসভ্যতার ইতিহাস পর্যালোচনা করলে আমরা দেখতে পাই যে অনেক সুসভ্য জাতি সেই যুগের উন্নতির চরম শিখরে থেকেও ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে। তাদের সভ্যতার ধ্বংসাবশেষ থেকে আমরা তাদের উন্নতি-অবনতি-পরিণতি সম্পর্কে জানতে পারি।
আল কুরআনের মাধ্যমে আমরা জানতে পারি যে ঐসব জাতির ধ্বংসের জন্য শুধুমাত্র মহান প্রভুর অবাধ্যতাই দায়ী। তারা যখনই আল্লাহর বিধান থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে, প্রচণ্ড ভাবে নাফরমানি করা শুরু করেছে তখনই আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে শাস্তি হিসেবে ধ্বংস করে দিয়েছেন। অবশ্য এর পূর্বে তিনি তাদেরকে বিভিন্ন সময়ে অসংখ্যবার সাবধান করেছিলেন। কিন্তু তারা আল্লাহর কথায় কর্ণপাত করেনি। ফলে তারা তাদের সভ্যতা সহ শেষ হয়ে যায়।
-'তাদের কাছে কি তাদের পূর্ববর্তীদের ইতিহাস পৌঁছেনি? নূহের জাতির, আদ, সামূদ ও ইবরাহীমের জাতির, মাদইয়ানের অধিবাসীদের এবং যে জনবসতি গুলো উল্টে দেয়া হয়েছিল সেগুলোর? তাদের রসূলগণ সুস্পষ্ট নিশানিসহ তাদের কাছে এসেছিলেন। এরপর তাদের ওপর জুলুম করা আল্লাহর কাজ ছিল না বরং তারা নিজেরাই নিজেদের ওপর জুলুম করেছিল।'[আত তওবা; আয়াত নং- ৭০]
আবার ক্ষেত্র বিশেষে দেখা যায় যে আল্লাহ তায়ালা কোন স্বেচ্ছাচারী ব্যক্তিকে তাদের ধন-সম্পদ সহকারে ধংস করে দিয়েছেন। তারা যখন ক্ষমতার শীর্ষবিন্দুতে ছিল তখন তারা নিজেদেরকে অক্ষয়-অমর ভাবতে শুরু করেছিল এবং চরম অহংকার প্রকাশ করেছিল। ফলে তারাও ধংসপ্রাপ্ত হয়।
-'আর কারূন, ফেরাঊন ও হামানকে আমি ধ্বংস করি। মুসা তাদের কাছে সুস্পষ্ট নিদর্শন নিয়ে আসে কিন্তু তারা পৃথিবীতে অহংকার করে অথচ তারা অগ্র গমনকারী ছিল না।' [আল আনকাবূত; আয়াত নং- ৩৯]
এইসব জাতি বা ব্যক্তির উত্থান বা পতন থেকে আমাদের জন্য শিক্ষণীয় বিষয় এই যে, পৃথিবীতে কোন কিছুই চিরস্থায়ী নয়। আল্লাহ যেমন মানুষকে উজাড় করে ধন-সম্পদ-ক্ষমতা দিতে পারেন;আবার তেমনি তার নাফরমানি করলে তা কেড়েও নিতে পারেন। সুতরাং আল্লাহর বিধান মেনে জীবন যাপন করে দুনিয়া ও আখিরাতে সম্মানিত জীবন যাপন করাই হোক আমাদের জীবনের একমাত্র লক্ষ্য। জীবনের সামগ্রিক উত্থান ও পতনের ধারায় আমাদের শেষ অবস্থান ইতিবাচক ও প্রত্যাশিত হোক। আল্লাহ আমাদের কবুল করুন। আমীন।
বিষয়: বিবিধ
২১৫২ বার পঠিত, ৭৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
'হে মানব জাতি। ইবাদাত করো তোমাদের রবের, যিনি তোমাদের ও তোমাদের পূর্বে যারা অতিক্রান্ত হয়েছে তাদের সবার সৃষ্টিকর্তা, এভাবেই তোমরা নিষ্কৃতি লাভের আশা করতে পারো।'[আল বাকারাহ;আয়াত নং-২১]
সবসময় আল্লহর শুকরিয়া আদায় করে যেন চলতে পারি।
-'যে ব্যক্তিই পাপ করবে এবং পাপের জালে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে পড়বে সে-ই জাহান্নামী হবে এবং জাহান্নামের আগুনে পুড়তে থাকবে চিরকাল।
-আর যারা ঈমান আনবে এবং সৎকাজ করবে তারাই জান্নাতের অধিবাসী, সেখানে থাকবে তারা চিরকাল।'
[আল বাকারাহ;আয়াত নং-৮১ ও ৮২]
-'যে ব্যক্তিই পাপ করবে এবং পাপের জালে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে পড়বে সে-ই জাহান্নামী হবে এবং জাহান্নামের আগুনে পুড়তে থাকবে চিরকাল।
-আর যারা ঈমান আনবে এবং সৎকাজ করবে তারাই জান্নাতের অধিবাসী, সেখানে থাকবে তারা চিরকাল।'
[আল বাকারাহ;আয়াত নং-৮১ ও ৮২]
-'যে ব্যক্তিই পাপ করবে এবং পাপের জালে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে পড়বে সে-ই জাহান্নামী হবে এবং জাহান্নামের আগুনে পুড়তে থাকবে চিরকাল।
-আর যারা ঈমান আনবে এবং সৎকাজ করবে তারাই জান্নাতের অধিবাসী, সেখানে থাকবে তারা চিরকাল।'
[আল বাকারাহ;আয়াত নং-৮১ ও ৮২]
'মানুষের জন্য নারী, সন্তান, সোনা-রূপার স্তূপ, সেরা ঘোড়া, গবাদী পশু ও কৃষি ক্ষেতের প্রতি আসক্তিকে বড়ই সুসজ্জিত ও সুশোভিত করা হয়েছে। কিন্তু এগুলো দুনিয়ার ক্ষণস্থায়ী জীবনের সামগ্রী মাত্র। প্রকৃতপক্ষে উত্তম আবাস তো রয়েছে আল্লাহর কাছে।'[আলে ইমরান;আয়াত নং-১৪]
'হে ঈমানদারগণ! তোমরা যথাযথভাবে আল্লাহকে ভয় করো। মুসলিম থাকা অবস্থায় ছাড়া যেন তোমাদের মৃত্যু না হয়।'[আলে ইমরান;আয়াত নং-১০২]
'তোমাদের মধ্যে এমন কিছু লোক অবশ্যই থাকতে হবে, যারা নেকী ও সৎকর্মশীলতার দিকে আহবান জানাবে, ভালো কাজের নির্দেশ দেবে ও খারাপ কাজ থেকে বিরত রাখবে। যারা এ দায়িত্ব পালন করবে তারাই সফলকাম হবে।'[আলে ইমরান;আয়াত নং-১০৪]
জীবনটা এক কথায় সাপলুডু খেলার মত উত্থান পতনে ভরপুর।
এটা আমার পড়া, আপনার একটা সেরা পোষ্ট । মডুরা এই রকম পোষ্ট স্টিকি করবেনা জানি তবুও, তাদেরকে অনুরোধ করব , পোষ্টটি স্টিকি করার জন্য।
আল্লাহ আমাদের কে এই পোষ্ট থেকে শিক্ষা গ্রহন করে, আমল করার তাওফিক দিন । আমীন । জাজাকাল্লাহহু খাইরান।
-'যেদিন কিছু লোকের মুখ উজ্জ্বল হয়ে উঠবে এবং কিছু লোকের মুখ কালো হয়ে যাবে। তাদেরকে বলা হবে, ঈমানের নিয়ামত লাভ করার পরও তোমরা কুফরী নীতি অবলম্বন করলে? ঠিক আছে, তাহলে এখন এই নিয়ামত অস্বীকৃতির বিনিময়ে আযাবের স্বাদ গ্রহণ করো।
-আর যাদের চেহারা উজ্জ্বল হবে, তারা আল্লাহর রহমতের আশ্রয় লাভ করবে এবং তারা চিরকাল এই অবস্থায় থাকবে।'[আলে ইমরান;আয়াত নং-১০৬ ও ১০৭]
'পৃথিবী ও আকাশে যা কিছু আছে সমস্তই আল্লাহর মালিকানাধীন। যাকে চান মাফ করে দেন এবং যাকে চান শাস্তি দেন। তিনি ক্ষমাশীল ও করুণাময়।'[আলে ইমরান;আয়াত নং-১২৯]
ইচ্ছে হয় আপনাকে অনেক বকা দেই,
কিন্তু জ্ঞাত-অজ্ঞাত অসুবিধাগুলোর কথা ভেবে নিবৃত হই!
আর দোয়া করি, আল্লাহতায়ালা যেন আপনাকে এখানে নিয়মিত হাজির থাকার সব অনুষঙ্গ ঠিক রাখেন!!
সুতরাং আল্লাহর বিধান মেনে জীবন যাপন করে দুনিয়া ও আখিরাতে সম্মানিত জীবন যাপন করাই হোক আমাদের জীবনের একমাত্র লক্ষ্য।
আমিন আমিন ছুম্মা আমিন
'হে ঈমানদারগণ! সবরের পথ অবলম্বন করো, বাতিলপন্থীদের মোকাবিলায় দৃঢ়তা দেখাও, হকের খেদমত করার জন্য উঠে পড়ে লাগো এবং আল্লাহকে ভয় করতে থাকো। আশা করা যায়, তোমরা সফলকাম হবে।'[আলে ইমরান;আয়াত নং-২০০]
'হে মানব জাতি। ইবাদাত করো তোমাদের রবের, যিনি তোমাদের ও তোমাদের পূর্বে যারা অতিক্রান্ত হয়েছে তাদের সবার সৃষ্টিকর্তা, এভাবেই তোমরা নিষ্কৃতি লাভের আশা করতে পারো।'[আল বাকারাহ;আয়াত নং-২১]
-'যে ব্যক্তিই পাপ করবে এবং পাপের জালে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে পড়বে সে-ই জাহান্নামী হবে এবং জাহান্নামের আগুনে পুড়তে থাকবে চিরকাল।
-আর যারা ঈমান আনবে এবং সৎকাজ করবে তারাই জান্নাতের অধিবাসী, সেখানে থাকবে তারা চিরকাল।'
[আল বাকারাহ;আয়াত নং-৮১ ও ৮২]
'মানুষের জন্য নারী, সন্তান, সোনা-রূপার স্তূপ, সেরা ঘোড়া, গবাদী পশু ও কৃষি ক্ষেতের প্রতি আসক্তিকে বড়ই সুসজ্জিত ও সুশোভিত করা হয়েছে। কিন্তু এগুলো দুনিয়ার ক্ষণস্থায়ী জীবনের সামগ্রী মাত্র। প্রকৃতপক্ষে উত্তম আবাস তো রয়েছে আল্লাহর কাছে।'[আলে ইমরান;আয়াত নং-১৪]
onek valo laglo likhati. Allah apnake uttom protidan diik.
amon likha arro beshi beshi likhar taufiq diuik.
'হে ঈমানদারগণ! তোমরা যথাযথভাবে আল্লাহকে ভয় করো। মুসলিম থাকা অবস্থায় ছাড়া যেন তোমাদের মৃত্যু না হয়।'[আলে ইমরান;আয়াত নং-১০২]
'তোমাদের মধ্যে এমন কিছু লোক অবশ্যই থাকতে হবে, যারা নেকী ও সৎকর্মশীলতার দিকে আহবান জানাবে, ভালো কাজের নির্দেশ দেবে ও খারাপ কাজ থেকে বিরত রাখবে। যারা এ দায়িত্ব পালন করবে তারাই সফলকাম হবে।'[আলে ইমরান;আয়াত নং-১০৪]
-'যেদিন কিছু লোকের মুখ উজ্জ্বল হয়ে উঠবে এবং কিছু লোকের মুখ কালো হয়ে যাবে। তাদেরকে বলা হবে, ঈমানের নিয়ামত লাভ করার পরও তোমরা কুফরী নীতি অবলম্বন করলে? ঠিক আছে, তাহলে এখন এই নিয়ামত অস্বীকৃতির বিনিময়ে আযাবের স্বাদ গ্রহণ করো।
-আর যাদের চেহারা উজ্জ্বল হবে, তারা আল্লাহর রহমতের আশ্রয় লাভ করবে এবং তারা চিরকাল এই অবস্থায় থাকবে।'[আলে ইমরান;আয়াত নং-১০৬ ও ১০৭]
'পৃথিবী ও আকাশে যা কিছু আছে সমস্তই আল্লাহর মালিকানাধীন। যাকে চান মাফ করে দেন এবং যাকে চান শাস্তি দেন। তিনি ক্ষমাশীল ও করুণাময়।'[আলে ইমরান;আয়াত নং-১২৯]
'হে ঈমানদারগণ! সবরের পথ অবলম্বন করো, বাতিলপন্থীদের মোকাবিলায় দৃঢ়তা দেখাও, হকের খেদমত করার জন্য উঠে পড়ে লাগো এবং আল্লাহকে ভয় করতে থাকো। আশা করা যায়, তোমরা সফলকাম হবে।'[আলে ইমরান;আয়াত নং-২০০]
'হে মানব জাতি। ইবাদাত করো তোমাদের রবের, যিনি তোমাদের ও তোমাদের পূর্বে যারা অতিক্রান্ত হয়েছে তাদের সবার সৃষ্টিকর্তা, এভাবেই তোমরা নিষ্কৃতি লাভের আশা করতে পারো।'[আল বাকারাহ;আয়াত নং-২১]
জাযাকিল্লাহ খাইর, সুন্দর পোষ্টটির জন্য শুকরিয়া।
অনেক দেরীতে জবাব দেয়ার জন্য আমি আন্তরীকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি।
পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
-'যে ব্যক্তিই পাপ করবে এবং পাপের জালে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে পড়বে সে-ই জাহান্নামী হবে এবং জাহান্নামের আগুনে পুড়তে থাকবে চিরকাল।
-আর যারা ঈমান আনবে এবং সৎকাজ করবে তারাই জান্নাতের অধিবাসী, সেখানে থাকবে তারা চিরকাল।'
[আল বাকারাহ;আয়াত নং-৮১ ও ৮২]
আমি ঢাকার বেশ জাকজমকপূর্ণ একটা জায়গয় থাকি পরিবারের সাথে। পড়ি প্রাইভেট ভার্সিটিতে। অতীতে যেসব পাপের জন্য মহান আল্লাহ আদ, সামুদ, সাদুম, মাদাইন,তুব্বা, ফিরাউন, বনী ইজরাইল সহ অসংখ্য সম্প্রদায়কে ধ্বংশ করেছেন, তার প্রতিটি আমি দেখি শুধু ঢাকাবাসীর মাঝে। সব রকম পাপাচার। আমি আমার পরিচিত ইয়ারমেটদের মাঝেই দেখেছি লেসবিয়ান কালচার। আমাদের এলাকায় প্রচুর ছেলে-মেয়ে আছে যারা প্রাইভেট ভার্সিটি বা মেডিকেলের স্টুডেন্ট তারা লিভ টুগেদার করে বাসা ভাড়া নেয় অথচ পরিচয় দেয় স্বামী-স্ত্রী। আমার ক্লাসমেট এক মেয়ে বয় ফ্রেন্ড রিলেটেড খুব বাজে একটা ঘটনা ঘটিয়ে পরে আমাকে জানানোর পর সেটা সমাধান করতে গিয়ে আমাকে অনেক সমস্যায় পরতে হয়েছে। অথচ ও কিন্তু রীতিমত হিজাবী। ওর দ্বারা এত খারাপ কাজ হবে আমি কল্পনাও করিনা। কিছুদিন ডাক্তারদের সাথে বেশ কিছু কাজ করেছিলাম এবং হাজবেন্ড-ওয়াফের সম্পর্কের কিছু জিনিস জানার পর অবাক হয়েছিলাম, এরা হারাম-হালাল কি তাও কি জানেনা? মনে মনে বলেছিলাম বিয়ে না করাই তো ভাল। এসব জিনিস কওমে লুতের বা সাদুমের বৈশিষ্ট ছিল।
গত একমাস আগে আমি তাড়াহুড়ো করে বাসার থেকে বের হয়ে যাওয়ার সময় ভাইয়া জোড় করে ব্যাগে কমলা দিয়ে দিল খাবার জন্য। কিন্তু সেটা ব্যাগে ছিল খাওয়া হয়নি একমাস পর দেখি সেটা এমদম ফ্রেশ। বুঝতেই পারছো কি পরিমাণ ফরমালিন দেয়া হয়েছে। প্রতিটি খাবারে ভেজাল। মাপে-ওজনে গরমিল। ব্যবসায়িক লেনদেনগুলি টোটালি ঠকবাজির উপর নির্ভরশীল। এটা ছিল কওমে মাদাইন এর বৈশিষ্ট।
আদ জাতি শারিরিকভাবে যেমন ছিল শক্তিশালী তেমনি ছিল সূচ্চ গৃহনির্মাণে পারদর্শী যা তাদেরকে অহংকারী করে তুলেছিল।
ফিরাউন সভ্যতা ছিল সেই যুগের বিস্ময়। তারা জ্যামিতি, গণিতশাস্ত্র,পৃথিবী ও গ্রহ-নক্ষত্র ইত্যাদির ব্যাপারে সূক্ষাতিসূক্ষ্ণ জ্ঞান রাখত। পিরামিড নিয়ে এখনো আগ্রহের শেষ নেই।
বনী ইজরাইলরা: অসহায় মুমিনদের উপর অত্যাচার, নবী হত্যা, গরীবদের সম্পদ লুন্ঠন, আত্বীয়তা অস্বীকার, ইবাদতে অবহেলা, অহমিকা প্রদর্শন করত এবং বলত, আমরা যাই করি আল্লাহ আমাদের কিছুই করবেনা, আমরাই জান্নাতের মালিক কারণ আমরা ছাড়া আল্লাহর ইবাদত কে করবে?? আছে কে?
আজ এসব প্রতিটি বৈশিষ্ট নগরীর মানুষগুলির মাঝে দেখি। আর ভয় হয় যে কোন সময় এটা ধ্বংশ হবে। আর আমিও আযাবে শেষ হব। পালানোরও জায়গা নেই। তাই প্রতিটা রাতেই খুব ভয় হয়। আর কাছের মানুষগুলোর যখন ইসলামের প্রতি, নামাজ, পর্দা ইত্যাদির ব্যাপারে অবহেলা দেখি, মোজ-মাস্তি, মুভি-মিউজিক ইত্যাদিতে ডুবে থাকতে দেখি-তখন আরো মন খারাপ হয়। নিজেকে পরাজিত মনে হয়।
আপনার দীর্ঘ মন্তব্যটি কলিজায় কাঁপন ধরিয়ে দেয়ার মত!!
অনেক দেরীতে জবাব দেয়ার জন্য আমি আন্তরীকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি।
পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
তোমার মন্তব্যটি আমাদের বর্তমান সামাজিক অবস্থার প্রতিফলন।
আশাকরি আরো লিখবেন, ধন্যবাদ।
পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
'হে ঈমানদারগণ! তোমরা যথাযথভাবে আল্লাহকে ভয় করো। মুসলিম থাকা অবস্থায় ছাড়া যেন তোমাদের মৃত্যু না হয়।'[আলে ইমরান;আয়াত নং-১০২]
কিছু পোস্ট ইচ্ছে করেই ফেলে রাখি পরে পড়ার জন্য- যেন মূল্যবান মন্তব্যগুলোও পড়তে পারি!
জাযাকুমুল্লাহ...
পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
'তোমাদের মধ্যে এমন কিছু লোক অবশ্যই থাকতে হবে, যারা নেকী ও সৎকর্মশীলতার দিকে আহবান জানাবে, ভালো কাজের নির্দেশ দেবে ও খারাপ কাজ থেকে বিরত রাখবে। যারা এ দায়িত্ব পালন করবে তারাই সফলকাম হবে।'[আলে ইমরান;আয়াত নং-১০৪]
-'যেদিন কিছু লোকের মুখ উজ্জ্বল হয়ে উঠবে এবং কিছু লোকের মুখ কালো হয়ে যাবে। তাদেরকে বলা হবে, ঈমানের নিয়ামত লাভ করার পরও তোমরা কুফরী নীতি অবলম্বন করলে? ঠিক আছে, তাহলে এখন এই নিয়ামত অস্বীকৃতির বিনিময়ে আযাবের স্বাদ গ্রহণ করো।
-আর যাদের চেহারা উজ্জ্বল হবে, তারা আল্লাহর রহমতের আশ্রয় লাভ করবে এবং তারা চিরকাল এই অবস্থায় থাকবে।'[আলে ইমরান;আয়াত নং-১০৬ ও ১০৭]
মন্তব্য করতে লগইন করুন