ছন্দে ছন্দে আল হাদিস-১৫
লিখেছেন লিখেছেন ফাতিমা মারিয়াম ২৫ মার্চ, ২০১৪, ০১:২৫:৩০ দুপুর
দ্বীনের মূল শিক্ষা
উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু করেছেন বর্ণনা,
শোন, সবাই সেই শিক্ষণীয় ঘটনা।
.
‘একদিন সাহাবাগণ বসে ছিলেন রাসুল ﷺ এর কাছে,
এমন সময় এলেন এক ব্যক্তি আমাদের সকলের মাঝে।
তাঁর পোশাক ছিল ধবধবে সাদা, চুলগুলো সব কালো,
সফরের কোন চিহ্ন ছিলনা তার দেহে(লাগছিলো খুব ভালো)।
আমরা কেউ চিনলামনা তাঁকে (কে হতে পারেন ইনি?)
রাসুলের কাছে গিয়ে সামনাসামনি বসে পড়লেন তিনি।
.
শুধায় রাসুলে সেই আগন্তুক,'ইসলাম কি? বলুন।'
বলেন রাসুল,’লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ’ জানুন।
নামায কায়েম করবে এবং যাকাত দিয়ে দিবে,
রমজান মাসে রোজা রাখবে এবং হাজ্জ্ব আদায় করবে।'
আগন্তুক বলেন রাসুলে,' সঠিক কথা বলেছেন।'
আমরা সবাই অবাক হলাম তিনি জেনেও প্রশ্ন করেছেন!
.
আবার তিনি প্রশ্ন করেন রাসুল ﷺ এর কাছে,
'ঈমানের পরিচয় কি? সে কথা কি আপনার জানা আছে?'
‘ঈমান হল আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস অবিচল,
ফেরেশতাগণ ও কিতাব সমূহে আস্থা অনড় অটল।
রাসুলগণের প্রতিও তুমি দৃঢ় বিশ্বাস রাখবে,
কিয়ামাতের দিন, তাকদীরের প্রতি বিশ্বাস পোষণ করবে।'
.
‘সত্য বলেছেন’ বলেই সেই লোক আবার রাসুলে শুধায়,
‘ইহসান কি? জানেন আপনি? সে কথা বলুন আমায়!’
রাসুল বলেন, ‘ইবাদাত কর এমনভাবে যেন দেখছ আল্লাহকে,
‘অথবা যদি তুমি তাকে না দেখ, তবে মেনো তিনি দেখছেন তোমাকে।'
.
আগন্তুক আবারও প্রশ্ন করেন, ‘কিয়ামাত কবে হবে?’
রাসুল বলেন,’ এই ব্যাপারে উভয়েই মোরা বেশি কিছু জানিনা যে!’
‘তাহলে তার আলামতগুলো বলুন এবার শুনি,
‘দাসী করবে মালিককে প্রসব এই কথাটি জানি।'
গরীব রাখাল অহংকার করবে সুউচ্চ দালানের,
খালি পা ও উলঙ্গ শরীর ছিল যেই রাখালের।'
.
এরপর সেই আগন্তুক সেথা থেকে চলে গেলেন,
অবাক হয়ে ভাবছি মোরা -‘কে ইনি? কেনইবা এখানে এলেন?'
.
ক্ষণপরে রাসুল আমার নিকট জানতে চায়,’হে উমার!
তুমি কি চিনেছ এই লোক কে? কিবা পরিচয় তার।
বললাম আমি,'আল্লাহ এবং তাঁর রাসুলই ভালো জানেন’,
‘জিবরীল ইনি; তোমাদেরকে দ্বীন শেখাতে এসেছিলেন।'
.
এই হাদিসটি মুসলিম শরীফে আছে সংরক্ষিত,
এসো, দীনের সঠিক জ্ঞান অর্জন করে হই মোরা আলোকিত।
মূল হাদিসঃ
হযরত উমর ইবনে খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, 'একদিন আমি রাসূলে আকরাম ﷺ এর নিকট বসে আছি। এমন সময় হঠাৎ সেখানে একটি (অচেনা) লোক উপস্থিত হলো। লোকটির পোশাক-আশাক ছিল খুবই ধবধবে সাদা। তার মাথার চুলগুলো ছিল কুচকুচে কালো। তার শরীরে সফরের কোন চিহ্ন দেখা যাচ্ছিল না। আর আমাদেরও কেউ তাকে চিনতে পারছিল না। লোকটি সোজা রাসূলে আকরাম ﷺ এর কাছে গিয়ে বসল।
তারপর তার জানু রাসূলে আকরাম ﷺ এর জানুর সাথে লাগিয়ে দিয়ে নিজের দু’হাত দু’টি উরুর ওপর স্থাপন করে বলল, ‘হে মুহাম্মদ! আমায় ইসলামের পরিচয় বলে দিন’। রাসূলে আকরাম ﷺ বললেন, 'ইসলাম হলো এই যে, তুমি সাক্ষ্য দেবে আল্লাহ ছাড়া আর কোন মাবুদ নেই এবং মুহাম্মাদ আল্লাহর রাসূল। সেই সঙ্গে তুমি নামায কায়েম করবে, যাকাত প্রদান করবে এবং রমযানের রোযা পালন করবে আর সামর্থ্য থাকলে হজ্ব আদায় করবে। আগন্তুক বলল, আপনি যথার্থই বলেছেন।’ আমরা লোকটির এ আচরণ দেখে বিস্মিত হলাম যে, সে নবী করীম ﷺ কে জিজ্ঞেসও করছে আবার তার কথা যথার্থ বলে মন্তব্যও করেছ।
লোকটি আবার অনুরোধ করল, 'আপনি আমায় ঈমানের পরিচয় বলে দিন।' রাসূলে আকরাম ﷺ বললেন,' ঈমান হচ্ছে এই যে, তুমি আল্লাহর, তাঁর ফেরেশতা, তাঁর কিতাবসমূহ, তাঁর রাসূলগণ, কিয়ামত দিবস এবং তকদীরের ভাল-মন্দের প্রতি বিশ্বাস পোষণ করবে।’ লোকটি বলল, 'আপনি যথার্থই বলেছেন।'
সে আবারও অনুরোধ করল, ‘আপনি আমায় ইহসানের পরিচয় বলে দিন।' তিনি বললেন,' সেটা এই যে, তুমি আল্লাহর ইবাদত এই মনোভাব নিয়ে করবে যে তুমি তাঁকে দেখছ। তুমি যদি তাকে না দেখ, তবে তিনি তোমায় নিশ্চয়ই দেখছেন বলে মনে করবে।’
অতঃপর আগন্তুক বলল, 'কিয়ামতের ব্যাপারে আমায় কিছু বলুন। রাসূলে আকরাম ﷺ বললেন, ‘যাকে এ প্রশ্ন করা হয়েছে সে প্রশ্নকারী অপেক্ষা বেশি কিছু জানে না’।
আগন্তুক বলল, ‘তাহলে কিয়ামতের লক্ষণগুলো সম্পর্কে কিছু বলুন’।রাসূলে আকরাম ﷺ বললেন,' লক্ষণ হচ্ছে এই যে, দাসী তার মনিবকে প্রসব করবে। আর নগ্ন পা ও উলঙ্গ শরীর বিশিষ্ট গরীব মেষ পালকদেরকে দেখতে পাবে যে, তারা সুউচ্চ দালান-কোঠায় বসে অহংকার করছে।' এরপর লোকটি হঠাৎ চলে গেল।
আমি কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর রাসূলে আকরাম ﷺ বললেন, ‘উমর! তুমি কি এই লোকটির পরিচয় জানো? আমি বললাম, ‘এ বিষয়ে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলই ভাল জানেন’। রাসূলে আকরাম ﷺ বললেন, ‘ইনি হচ্ছেন জিব্রাঈল। তিনি তোমাদেরকে দ্বীন (এর মৌল বিষয়াদি) শিখাতে এসেছিলেন।’
(মুসলিম)
ছন্দে ছন্দে আল হাদিস-১৪
বিষয়: বিবিধ
১৮২৪ বার পঠিত, ৬৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
যাযাকাল্রাহু খায়ের।
হযরত আবু যার রাদিয়াল্লাহু আনহু ও মুয়ায ইবনে জাবাল রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসূলে আকরাম ﷺ বলেছেন, ‘তুমি যেখানেই থাকো, আল্লাহকে ভয় করে চলো এবং মন্দ কাজ করে বসলে সঙ্গে সঙ্গে ভালো কাজ করো। তাহলে ভালো কাজ মন্দ কাজকে মুছে ফেলবে আর মানুষের সাথে সদাচারণ করো।’
(তিরমিযী)
শাদ্দাদ ইবনে আউস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসূলে আকরাম ﷺ বলেছেন, ‘বুদ্ধিমান সেই ব্যক্তি যে তার নফসের হিসাব গ্রহণ করে এবং মৃত্যুর পরবর্তী জীবনের জন্য কাজ করে। আর দুর্বল সেই ব্যক্তি, যে স্বীয় নফসের অনুসরণ করে আবার আল্লাহর কাছেও (ভাল কিছু প্রাপ্তির) আকাংখা পোষণ করে।'
[ তিরমিযী
হযরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, 'তোমরা এমন সব কাজ করে থাকো, যেগুলো তোমাদের দৃষ্টিতে চুল অপেক্ষাও বেশি হালকা; কিন্তু আমরা রাসূলে আকরামﷺএর যুগে সেগুলোকে অত্যন্ত ক্ষতিকর রূপে গণ্য করতাম। '
(বুখারী)
'আর সেই পরাক্রান্ত ও দয়াময়ের উপর নির্ভর করো
যিনি তোমাকে দেখতে থাকেন যখন তুমি ওঠো
এবং সিজ্দাকারীদের মধ্যে তোমার ওঠা-বসা ও নড়া-চড়ার প্রতি দৃষ্টি রাখেন।'
(সূরা শু’আরাঃ ২১৭-২১৯)
'তোমরা যেখানেই থাক তিনি তোমাদের সাথে আছেন। তোমরা যা করছো আল্লাহ তা দেখছেন। আসমান ও যমীনের নিরংকুশ সার্বভৌম মালিকানা একমাত্র তাঁরই। সব ব্যাপারের ফায়সালার জন্য তাঁর কাছেই ফিরে যেতে হয়।'
(সূরা হাদীদঃ ৫)
'আল্লাহ চোখের বিশ্বাসঘাতকতা (অর্থ্যাৎ নিষিদ্ধ দৃষ্টি) ও মনের গোপন কথা সম্পর্কে অবহিত। '
(সূরা মুমিনঃ ১৯)
'আল্লাহর কাছে আসমান ও জমিনের কোনো কিছুই গোপন থাকে না।'
(সূরা আলে ইমরানঃ ৫)
হযরত আবু যার রাদিয়াল্লাহু আনহু ও মুয়ায ইবনে জাবাল রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসূলে আকরাম ﷺ বলেছেন, ‘তুমি যেখানেই থাকো, আল্লাহকে ভয় করে চলো এবং মন্দ কাজ করে বসলে সঙ্গে সঙ্গে ভালো কাজ করো। তাহলে ভালো কাজ মন্দ কাজকে মুছে ফেলবে আর মানুষের সাথে সদাচারণ করো।’
(তিরমিযী)
আপনাকে ধন্যবাদ।
শাদ্দাদ ইবনে আউস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসূলে আকরাম ﷺ বলেছেন, ‘বুদ্ধিমান সেই ব্যক্তি যে তার নফসের হিসাব গ্রহণ করে এবং মৃত্যুর পরবর্তী জীবনের জন্য কাজ করে। আর দুর্বল সেই ব্যক্তি, যে স্বীয় নফসের অনুসরণ করে আবার আল্লাহর কাছেও (ভাল কিছু প্রাপ্তির) আকাংখা পোষণ করে।'
[ তিরমিযী
হযরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, 'তোমরা এমন সব কাজ করে থাকো, যেগুলো তোমাদের দৃষ্টিতে চুল অপেক্ষাও বেশি হালকা; কিন্তু আমরা রাসূলে আকরামﷺএর যুগে সেগুলোকে অত্যন্ত ক্ষতিকর রূপে গণ্য করতাম। '
(বুখারী)
'আর সেই পরাক্রান্ত ও দয়াময়ের উপর নির্ভর করো
যিনি তোমাকে দেখতে থাকেন যখন তুমি ওঠো
এবং সিজ্দাকারীদের মধ্যে তোমার ওঠা-বসা ও নড়া-চড়ার প্রতি দৃষ্টি রাখেন।'
(সূরা শু’আরাঃ ২১৭-২১৯)
'তোমরা যেখানেই থাক তিনি তোমাদের সাথে আছেন। তোমরা যা করছো আল্লাহ তা দেখছেন। আসমান ও যমীনের নিরংকুশ সার্বভৌম মালিকানা একমাত্র তাঁরই। সব ব্যাপারের ফায়সালার জন্য তাঁর কাছেই ফিরে যেতে হয়।'
(সূরা হাদীদঃ ৫)
'আল্লাহ চোখের বিশ্বাসঘাতকতা (অর্থ্যাৎ নিষিদ্ধ দৃষ্টি) ও মনের গোপন কথা সম্পর্কে অবহিত। '
(সূরা মুমিনঃ ১৯)
'আল্লাহর কাছে আসমান ও জমিনের কোনো কিছুই গোপন থাকে না।'
(সূরা আলে ইমরানঃ ৫)
হযরত আবু যার রাদিয়াল্লাহু আনহু ও মুয়ায ইবনে জাবাল রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসূলে আকরাম ﷺ বলেছেন, ‘তুমি যেখানেই থাকো, আল্লাহকে ভয় করে চলো এবং মন্দ কাজ করে বসলে সঙ্গে সঙ্গে ভালো কাজ করো। তাহলে ভালো কাজ মন্দ কাজকে মুছে ফেলবে আর মানুষের সাথে সদাচারণ করো।’
(তিরমিযী)
এটিই হলো সেই বিখ্যাত হাদিসে জিবরাঈল!
হু কেম টু টিচ আওয়ার রিলিজিয়ন!
জাযাকাল্লাহ খাইরান!
শাদ্দাদ ইবনে আউস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসূলে আকরাম ﷺ বলেছেন, ‘বুদ্ধিমান সেই ব্যক্তি যে তার নফসের হিসাব গ্রহণ করে এবং মৃত্যুর পরবর্তী জীবনের জন্য কাজ করে। আর দুর্বল সেই ব্যক্তি, যে স্বীয় নফসের অনুসরণ করে আবার আল্লাহর কাছেও (ভাল কিছু প্রাপ্তির) আকাংখা পোষণ করে।'
[ তিরমিযী
ইলিশ মাছের ঝোল কই? আচ্ছা আমিই দিলাম
হযরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, 'তোমরা এমন সব কাজ করে থাকো, যেগুলো তোমাদের দৃষ্টিতে চুল অপেক্ষাও বেশি হালকা; কিন্তু আমরা রাসূলে আকরামﷺএর যুগে সেগুলোকে অত্যন্ত ক্ষতিকর রূপে গণ্য করতাম। '
(বুখারী)
'আর সেই পরাক্রান্ত ও দয়াময়ের উপর নির্ভর করো
যিনি তোমাকে দেখতে থাকেন যখন তুমি ওঠো
এবং সিজ্দাকারীদের মধ্যে তোমার ওঠা-বসা ও নড়া-চড়ার প্রতি দৃষ্টি রাখেন।'
(সূরা শু’আরাঃ ২১৭-২১৯)
'তোমরা যেখানেই থাক তিনি তোমাদের সাথে আছেন। তোমরা যা করছো আল্লাহ তা দেখছেন। আসমান ও যমীনের নিরংকুশ সার্বভৌম মালিকানা একমাত্র তাঁরই। সব ব্যাপারের ফায়সালার জন্য তাঁর কাছেই ফিরে যেতে হয়।'
(সূরা হাদীদঃ ৫)
'আল্লাহ চোখের বিশ্বাসঘাতকতা (অর্থ্যাৎ নিষিদ্ধ দৃষ্টি) ও মনের গোপন কথা সম্পর্কে অবহিত। '
(সূরা মুমিনঃ ১৯)
'আল্লাহর কাছে আসমান ও জমিনের কোনো কিছুই গোপন থাকে না।'
(সূরা আলে ইমরানঃ ৫)
মন্তব্য করতে লগইন করুন