'পলাশ ফুটেছে শিমুল ফুটেছে এসেছে দারুণ মাস.........'
লিখেছেন লিখেছেন ফাতিমা মারিয়াম ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪, ০৮:০৭:৪৪ রাত
ষড়ঋতুর এই দেশে প্রকৃতি এখন ফুলে ফুলে সুশোভিত। গাছে গাছে নতুন পাতা, ডালে ডালে পাখীর কলতান, মিষ্টি মধুর হাওয়া কতইনা সুন্দর মনোরম পরিবেশ। কালের পরিক্রমায় এখন আগমন হয়েছে ঋতুরাজ বসন্তের। দুইমাস এই আবহাওয়া বিরাজমান থাকবে। তারপর আবার প্রকৃতির নতুন রূপ। নতুন ঋতু নতুন বৈশিষ্ট্য নিয়ে আমাদের মাঝে আগমন করবে। আবারও সবাই সেই ঋতুকে বরণ করে নেবে যার যার মত করে।
এই বসন্তঋতুকে নিয়ে কত গান, কত কবিতা, কত গল্প রচিত হয়েছে তার পরিমাপ করা আমার পক্ষে কোনভাবেই সম্ভব নয়। কবি সাহিত্যিকগণ আমাদের সাহিত্যের ভাণ্ডার ভরে দিয়েছেন এই ঋতুকে নিয়ে লেখালেখি করে।
যত বর্ণনাশৈলী দিয়েই অভিহিত করা হোকনা কেন, যেভাবেই বরণ করা হোকনা কেন এই ঋতুরাজের স্থায়িত্ব কিন্তু মাত্র দুই মাস। দুইমাস পরে সে আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়ে যায় –‘আমি ক্ষণস্থায়ী......আমি চলে যাচ্ছি! তোমরা ভালো থেকো...... যদি তোমরা প্রভুর দয়ায় বেঁচে থাক তবে আগামীবার আবার দেখা হবে!! আমি আবার একবছর পর তোমাদের কাছে আসব!!!’
মাত্র দুইমাসের এই ঋতুকে নিয়ে আমাদের এত বাড়াবাড়ি ... এত আবেগ ...... এত প্রেম......... এত ক্রন্দন ! অথচ চিরবসন্তের একটি স্থান আছে যার কথা আমরা সবাই জানি। যেখানে সারিসারি গাছ আছে, সেই গাছগুলো ফুলেফলে সুশোভিত, ডালে ডালে অসংখ্য পাখী, সেইসব পাখীর গানে মুখরিত সেই বাগানের নীচ দিয়ে প্রবাহমান ঝর্ণাধারা...... মৃদুমন্দ বাতাস। 'এ মুমিন পুরুষ ও নারীকে আল্লাহ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তাদেরকে তিনি এমন বাগান দান করবেন যার নিম্নদেশে ঝর্ণাধারা প্রবাহমান হবে এবং তারা তার মধ্যে চিরকাল বাস করবে। এসব চির সবুজ বাগানে তাদের জন্য থাকবে বাসগৃহ এবং সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, তারা আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করবে। এটিই সবচেয়ে বড় সাফল্য।' [আত তওবা ; আয়াত নং - ৭২]
সেই সাফল্য পাওয়ার জন্য, সেই স্থানকে আপন করে পাওয়ার জন্য, সেই স্থানের চিরস্থায়ী বাসিন্দা হওয়ার জন্য আমার মন কি একটুও আকুল হয়? আমি কি সেই চিরবসন্তের বাগানের মালিকের কাছে একটুও আকুতি জানাই? অথচ আমি জানি সেখানে নতুন রঙিন কাপড় পড়ে আমাকে সেই বসন্তকে বরণ করতে হবেনা! সেখানে আমি সব সময়ই নিত্যনতুন কাপড় পাব যা কখনও কোন চোখ দেখেনি, কোন মন যাকে কল্পনাও করতে পারেনি- সেই কাপড় পরার জন্য আমি কি উদগ্রীব? আমি রাসুল এর হাদিসের মাধ্যমে জানতে পেরেছি ' বেহেশতের মধ্যে প্রতি শুক্রবারে একটি বাজার বসবে। বেহেশতাবাসীরা সেখানে যাবে। তখন উত্তর দিক হতে একটা বায়ু প্রবাহিত হয়ে তাদের চেহারা ও পোশাক-পরিচ্ছদ ছড়িয়ে পড়বে। আর তাতে তাদের রূপ সৌন্দর্য আরও বৃদ্ধি পাবে। এ অবস্থায় যখন তারা নিজেদের সংসার-পরিজনের নিকট প্রত্যাবর্তন করবে তখন তারা বলবে, 'আল্লাহর শপথ! তোমাদের রূপ-সৌন্দর্য অধিক বৃদ্ধি পেয়েছে।' অপরদিকে তারাও বলবে, 'আল্লাহর শপথ! তোমাদেরও রূপ-সৌন্দর্য বৃদ্ধি পেয়েছে।'[হযরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত মুসলিম শরীফের হাদিস]
আমি চাই......আমি সেইস্থানে যেতে চাই! তার সব সুবিধা ভোগ করতে আমি লালায়িত। অথচ আমার আচরণ, আমার কার্যকলাপ তা প্রমাণ করেনা। আমি জানি মহান প্রভু বলে দিয়েছেন,“ যারা আল্লাহকে ভয় করে তাদের জন্য যে জান্নাতের ওয়াদা করা হয়েছে তার অবস্থা হচ্ছে এই যে, তার পাদদেশে নদী প্রবাহিত হচ্ছে, তার ফলসমূহ চিরস্থায়ী এবং তার ছায়ার বিনাশ নেই। এ হচ্ছে মুত্তাকীদের পরিণাম।“ [সূরা আর্ রাদ; আয়াত নং -৩৫]
হে চিরবসন্তের বাগানের মালিক! হে মহান প্রভু!! তুমি আমার সমস্ত কাজকে কবুল করে নাও, আমার সব গুনাহ ক্ষমা করে দিয়ে আমাকে তোমার চিরবসন্তের বাগানে একটুখানি ঠাঁই দিও। আমি যেন, তোমার আয়াত সমূহকে মেনে জীবন গঠন করতে পারি, তোমার জান্নাতের পথে চলতে পারি সেই তাওফিক দিও। আমীন......
বিষয়: বিবিধ
২২৫৪ বার পঠিত, ১১১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
'আর হে নবী, যারা এ কিতাবের ওপর ঈমান আনবে এবং (এর বিধান অনুযায়ী) নিজেদের কার্যধারা সংশোধন করে নেবে তাদেরকে এ মর্মে সুখবর দাও যে, তাদের জন্য এমন সব বাগান আছে যার নিম্নদেশ দিয়ে প্রবাহিত হবে ঝর্ণাধারা। সেই বাগানের ফল দেখতে দুনিয়ার ফলের মতই হবে। যখন কোন ফল তাদের দেয়া হবে খাবার জন্য, তারা বলে উঠবেঃ এ ধরনের ফলই ইতিপূর্বে দুনিয়ায় আমাদের দেয়া হতো। তাদের জন্য সেখানে থাকবে পাক-পবিত্র সাথীগণ এবং তারা সেখানে থাকবে চিরকাল।'
[আল বাকারাহ; আয়াত নং -২৫ ]
'আর যারা আমার আয়াতগুলো মেনে নিয়েছে এবং সৎকাজ করেছে তাদেরকে এমন সব বাগীচার মধ্যে প্রবেশ করাবো যার নিম্নদেশে ঝরণাধারা প্রবাহিত হবে। সেখানে তারা থাকবে, চিরস্থায়ীভাবে, তারা সেখানে পবিত্র স্ত্রীদেরকে লাভ করবে এবং তাদেরকে আমি আশ্রয় দেবো ঘন স্নিগ্ধ ছায়াতলে।'
[ আন্ নিসা; আয়াত নং -৫৭]
আমিন।
অনেক ভালো লাগল।
'অন্যদিকে যারা আমার আয়াত মেনে নিয়েছে এবং সৎকাজ করেছে- আর এ পর্যায়ে আমি কাউকে তার সামর্থের অতিরিক্ত দায়িত্ব অর্পণ করি না- তারা হচ্ছে জান্নাতবাসী। সেখানে তারা থাকবে চিরকাল।'
'তাদের মনে পরস্পরের বিরুদ্ধে যা কিছু গ্লানি থাকবে তা আমি বের করে দেবো। তাদের নিম্নদেশে ঝরণাধারা প্রবাহিত হবে এবং তারা বলবেঃ “প্রশংসা সব আল্লাহরই জন্য, যিনি আমাদের এ পথ দেখিয়েছেন। আমরা নিজেরা পথের সন্ধান পেতাম না যদি না আল্লাহ আমাদের পথ দেখাতেন। আমাদের রবের পাঠানো রসূলগণ যথার্থ সত্য নিয়েই এসেছিলেন।” সে সময় আওয়াজ ধ্বনিত হবেঃ “তোমাদেরকে এই যে জান্নাতের উত্তরাধিকারী বানানো হয়েছে, এটি তোমরা লাভ করেছো সেই সমস্ত কাজের প্রতিদানে যেগুলো তোমরা অব্যাহতভাবে করতে।”
[আল আরাফ; আয়াত নং - ৪২ ও ৪৩ ]
'অন্যদিকে রসূল ও তার ঈমানদার সাথীরা নিজেদের জান-মাল দিয়ে জিহাদ করেছে। সমস্ত কল্যাণ এখন তাদের জন্য এবং তারাই সফলকাম হবে।'
'আল্লাহ তাদের জন্য এমন বাগান তৈরী করে রেখেছেন। যার নিম্নদেশে স্রোতস্বিনী প্রবাহিত হচ্ছে। তার মধ্যে তারা থাকবে চিরকাল। এটাই মহা সাফল্য।'
[আত তওবা ; আয়াত নং - ৮৮ ও ৮৯ ]
“মুহাজির ও আনসারদের মধ্য থেকে যারা সবার আগে ঈমানের দাওয়াত গ্রহণ করার ব্যাপারে উদ্যোগী হয়েছে এবং যারা পরে নিষ্ঠা সহকারে তাদের অনুসরণ করছে, আল্লাহ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন এবং তারা আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছে। আল্লাহ তাদের জন্য এমন বাগান তৈরী করে রেখেছেন যার নিম্নদেশে ঝরণাধারা প্রবাহিত হবে এবং তারা তার মধ্যে থাকবে চিরকাল। এটাই মহা সাফল্য।“
[সূরা আত তওবা; আয়াত নং -১০০]
‘তাদের অবস্থা হয় এই যে, নিজেদের রবের সন্তুষ্টির জন্য তারা সবর করে, নামায কায়েম করে, আমার দেয়া রিযিক থেকে প্রকাশ্যে ও গোপনে খরচ করে এবং ভালো দিয়ে মন্দ দূরীভূত করে। আখেরাতের গৃহ হচ্ছে তাদের জন্যই। অর্থাৎ এমন সব বাগান যা হবে তাদের চিরস্থায়ী আবাস।
তারা নিজেরা তার মধ্যে প্রবেশ করবে এবং তাদের বাপ-দাদারা ও স্ত্রী-সন্তানদের মধ্য থেকে যারা সৎকর্মশীল হবে তারাও তাদের সাথে সেখানে যাবে। ফেরেশতারা সব দিক থেকে তাদেরকে অভ্যর্থনা জানাবার জন্য আসবে
এবং তাদেরকে বলবেঃ “তোমাদের প্রতি শান্তি।তোমরা দুনিয়ায় যেভাবে সবর করে এসেছো তার বিনিময়ে আজ তোমরা এর অধিকারী হয়েছো।”- কাজেই কতই চমৎকার এ আখেরাতের গৃহ!”
[সূরাআর্ রাদ; আয়াত নং -২২, ২৩ ও ২৪]
এখন আর ষড়ঋতু নাই। দেখেননা ফাল্গুন শুরু নাহতেই বৃষ্টি শুরু।
" অপরদিকে যারা দুনিয়ায় ঈমান এনেছে এবং যারা সৎ কাজ করেছে তাদেরকে এমন বাগীচায় প্রবেশ করানো হবে যার পাদদেশে নদী প্রবাহিত হবে। সেখানে তারা তাদের রবের অনুমতিক্রমে চিরকাল বসবাস করবে। সেখানে তাদেরকে অভ্যর্থনা জানানো হবে শান্তি ও নিরাপত্তার মোবারকবাদ সহকারে।"
[সূরা ইবরাহীম আয়াত নং -২৩]
হযরত জাবের রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ ﷺইরশাদ করেছেন, 'বেহেশতবাসীগণ বেহেশতের খাদ্য খাবে এবং পানীয় বস্তু পান করবে। কিন্তু সেখানে তাদের পায়খানার প্রয়োজন হবে না, তাদের নাকে শ্লেষ্মা বা ময়লা জমবে না এবং তারা পেশাবও করবে না। ঢেকুরের মাধ্যমে তাদের পেটের খাদ্য দ্রব্য হযম হয়ে মেশকের সুঘ্রাণের মতো বেরিয়ে যাবে। শ্বাস-প্রশ্বাস গ্রহণের মতই তারা তাসবীহ ও তাকবীরে অভ্যস্ত হয়ে যাবে।'
(মুসলিম
হযরত আবু হোরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ ﷺ ইরশাদ করেছেন, আল্লাহ তায়ালা বলেন, আমি আমার পুণ্যবান বান্দাদের জন্য এমন সব বস্তু তৈরি করে রেখেছি, যা কোন চোখ কখনো দেখেনি, কোন কান তার বর্ণনা কখনো শুনেনি। আর কোন মানুষ কোন দিন তার ধারনা বা কল্পনাও করতে পারেনি। এ কথার সমর্থনে তোমরা এ আয়াত পাঠ করতে পার, ' তারপর কেউ জানে না তাদের কাজের পুরস্কার হিসেবে তাদের চোখের শীতলতার কি সরঞ্জাম লুকিয়ে রাখা হয়েছে।' ( সূরা আস সাজদাহ; আয়াত নং- ১৭)
(বুখারী ও মুসলিম)
হযরত আবু হোরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ ﷺ ইরশাদ করেছেন, 'সর্বপ্রথম যে দল বেহেশতে যাবে তাদের চেহারা পূর্ণিমার চাঁদের মতো উজ্জ্বল হবে। এরপর যারা যাবে তাদের চেহারা ঝিকমিক করা তারকার মতো আলোকিত হবে। তাদের চিরুনী হবে স্বর্ণের তৈরি। তাদের ঘাম হবে মেশকের মতো সুঘ্রাণ। তাদের ধুমদানী সুঘ্রাণ কাঠ দিয়ে জ্বালানো হবে। আয়তলোচনা হূর হবে তাদের স্ত্রী। তাদের দৈহিক গঠন হবে এক প্রকারের। দৈহিক অভ্যাস একই রকম হবে। উচ্চতায় তারা তাদের আদি পিতা হযরত আদম আলাইহিস সালাম এর মত ষাট হাত লম্বা হবে।'
(বুখারী)
বুখারী ও মুসলিম শরীফের অপর এক বর্ণনায় রয়েছে, 'তাদের ব্যবহার্য পাত্র হবে স্বর্ণের। তাদের ঘাম হবে মেশকের মতো সুগন্ধ। তাদের প্রত্যেককে দু’জন করে স্ত্রী দেয়া হবে। তারা এত সুন্দরী হবে যে, তাদের উরুর হাড়ের মজ্জা মাংসের ভিতর দিয়ে দেখা যাবে। তাদের পরস্পরের মধ্যে কোন মতানৈক্য বা হিংসা-বিদ্বেষ থাকবে না। তাদের মন হবে একই ব্যক্তির মনের মতো। সকাল-সন্ধ্যায় তারা আল্লাহর পবিত্রতা ও মহত্ত্ব বর্ণনা করতে থাকবে।'
হযরত মুগীরা ইবেন শু’বা রাদিয়াল্লাহু আনহু রাসূলুল্লাহ ﷺ থেকে বর্ণনা করেছেন। রাসূলুল্লাহ ﷺ ইরশাদ করেছেন, 'হযরত মূসা আলাইহিস সালাম তাঁর রবকে জিজ্ঞেস করেন, 'সবচেয়ে কম মর্যদায় বেহেশতী কে?'
মহান আল্লাহ বলেন, 'সে ঐ ব্যক্তি যে বেহেশবাসীদেরকে বেহেশতে দেয়ার পর আসবে। তাকে বলা হবে বেহেশতে যাও। সে বলবে হে বর! সব লোক নিজ নিজ বাসস্থানে অবস্থান নিয়েছে এবং নিজেদের প্রাপ্য অংশগ্রহণ করেছে, তাই আমি এখন বেহেশতে গিয়ে কিভাবে স্থান পাবো?'
তাকে বলা হবে,' তোমাকে যদি পৃথিবীর কোন বাদশাহ বা শাসকের রাজ্যের সমান এলাকা দেয়া হয় তবে কি সন্তুষ্ট হবে?'
সে বলবে,' হে রব! আমি এতে সন্তুষ্ট হলাম।'
এবার মহান আল্লাহ তাকে বলবেন, 'তোমাকে তাই দেয়া হল।'।
এরপরও তার সমান আরো, এরপর তার সমান আরো, এবং এরপর ঐগুলোর সমান আরও অতিরিক্ত দেয়া হল। পঞ্চমবারে সে বলবে, 'হে রব, আমি সন্তুষ্ট হলাম।'
এবার মহান আল্লাহ তাকে বলবেন, 'তোমাকে এসবের মত আরো দশগুণ দেয়া হল। তোমার অন্তর যা কামনা করে, তোমার চোখ যাতে পরিতৃপ্ত হয় সেসব বস্তু তোমাকে দেয়া হল।'
সে বলবে, 'হে আল্লাহ আমি সন্তুষ্ট হলাম।'
হযরত মূসা আলাইহিস সালাম বলেন, 'হে রব! বেহেশতে সবচেয়ে বেশি মর্যাদাবান কে হবে?'
মহান আল্লাহ বলেন, 'যাদেরকে আমি মর্যাদা আমি মর্যাদা দিতে চাইব আমি নিজে তাদের মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত করব। তাদেরকে সীলমোহর দিয়ে চিহ্নিত কর। তাদেরকে এমন কিছু দেয়া হবে যা কোন চোখ কখনো দেখেনি, কোন কন কোন দিন শোনেনি এবং মানবের কল্পনা তার ধারে কাছেও পৌঁছতে পারে না। '
(মুসলিম)
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ ﷺ ইরশাদ করেছেন, আমি জানি কোন দোযখী সর্বশেষ দোযখ হতে বেরিয়ে আসবে অথবা কোন বেহেশতী সর্বশেষ বেহেশত যাবে। এক ব্যক্তি নিতম্বের উপর ভর দিয়ে হেচড়েতে হেচড়েতে দোযখ হতে বেরিয়ে আসবে। মহান ও সর্বশক্তিমান আল্লাহর তাকে বলবেন, 'যাও বেহেশতে গমন কর।'
সে বেহেশতের কাছে গেল তবে তা ইতোমধ্যেই পরিপূর্ণ হয়ে গিয়েছে। সে ফিরে এসে বলবে, 'হে রব বেহেশত তো পরিপূর্ণ হয়ে গিয়েছে। মহান ও সর্বশক্তিমান আল্লাহ তাকে বলবেন, তুমি গিয়ে বেহেশতে যাও।'
সে আবার যাবে। কিন্তু তার মনে হবে বেহেশত তো ইতোমধ্যেই পরিপূর্ণ হয়ে গিয়েছে। সে ফিরে এসে বলবে, 'হে রব! আমি দেখলাম বেহেশত ভরপুর হয়ে গিয়েছে।'
মহান ও সর্বশক্তিমান আল্লাহ তাকে বলবেন, 'তুমি বেহেশত যাও। কেননা, তোমার জন্য পৃথিবীর সম পরিমাণ এবং অনুরূপ আরো দশ গুণ অথবা পৃথিবীর মত দশগুণ জায়গা নির্মিত হয়েছে।'
লোকটি ব্লবে,'হে আল্লাহ! আমার সাথে হাসি-ঠাট্টা করছেন? অথচ আপনি সব কিছুর একচ্ছত্র মালিক।'
ইবন মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন আমি দেখলাম রাসূলুল্লাহ ﷺ এ কথা বলে এনমভাবে হাসলেন যে তার পবিত্র দাঁত দেখা যাচ্ছিল । তিনি বলছিলেন এই ব্যক্তি হবে সবচেয়ে কম মর্যাদার বেহেশতী।'
( বুখারী ও মুসলিম)
ধন্যবাদ আপনাকে।
হযরত আবু মূসা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। নবী করীম ﷺ ইরশাদ করেছেন 'বেহেশতের মধ্যে প্রত্যেক মু’মিন ব্যক্তির জন্য একক একটি ফাঁফা মুক্তার তৈরি তাবু থাকবে। তার উচ্চতা হবে ষাট মাইল। ঈমানদার ব্যক্তির পরিবারের ব্যক্তিরা এর মধ্যে বসবাস করবে। মু’মিন ব্যক্তি তাদের সাথে দেখা সাক্ষাৎ করবে। কিন্তু তারা অপরের কারো সাক্ষাৎ পাবে না। '
(বুখারী ও মুসলিম)
সুন্দর লেখাটির জন্য জাযাকিল্লাহ
হযরত জাবির ইবনে আবদুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহুথেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার রাসূলুল্লাহ ﷺ-এর কাছে ছিলাম। তিনি পূর্ণিমার চাঁদের দিকে তাকালেন এবং বলেন, 'তোমরা এখন চাঁদকে যেভাবে দেখতে পাচ্ছ, অচিরেই তোমাদের রবকে ও স্বচক্ষে সেভাবে দেখতে পাবে। তাঁর দর্শনে তোমরা কোনরূপ ক্লেশ বা অসুবিধা অনুভব করবে না।'
( বুখারী ও মুসলিম)
পরে দেখলাম আপনি সুন্দর ও সাবলীল ভাষায় চির বসন্তের জান্নাতকে তুলে ধরেছেন। আল্লাহ আমাদের সকলকে ’সিরাতুল মুস্তাকীম’ অনুযায়ী চলার তাওফীক দিন।
হযরত আবু সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু আনহু নবী করীম ﷺ থেকে বর্ণনা করেছেন। নবী করীম ﷺ ইরশাদ করেছেন 'বেহেশতের একটি গাছ রয়েছে। এক দ্রতগামী ঘোড়ায় আরাহী হয়ে কোন ব্যক্তি যদি একাধারে একশ বছর চলতে থাকে, তবুও তা অতিক্রম করে শেষ করতে পারবে না।'
( বুখারী ও মুসলিম)
আমীন...
হযরত আবু সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু আনহু নবী করীম ﷺ থেকে বর্ণনা করেছেন। নবী করীম ﷺ ইরশাদ করেছেন, 'বেহেশতবাসীরা তাদের উপরতলার কক্ষের ব্যক্তিদেরকে এমনভাবে দেখতে পাবে, যেমনভাবে তোমরা পূর্ব অথবা পশ্চিম দিগন্তে উজ্জ্বল তারকাসমূহ দেখতে পাও। তাদের পরস্পরের মর্যাদার পার্থক্যের হেতুতে এরূপ হবে।'
সাহাবায়ে কেরাম রাদিয়াল্লাহু আনহু জিজ্ঞেস করলেন, 'ইয়া রাসূলুল্লাহ! নবীদের ঐ স্তরসমূহ যা অপর কেউ লাভ করবে না?'
তিনি বলেন, 'কেন পৌঁছতে পারবে না! সেই সত্তার শপথ যাঁর হাতে আমার জান! যারা আল্লাহর প্রতি ঈমান এনেছে এবং নবীদেরকে সত্য মেনে নিয়েছে তারা ঐ স্তরে যেতে সক্ষম হবে।'
(বুখারী ও মুসলিম)
হযরত আবু সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, 'মহান ও সর্ব শক্তিমান আল্লাহ বেহেশতবাসীদেরকে বলবেন, হে বেহেশতের অধিবাসীগণ!'
তারা বলবে, 'আমরা উপস্থিত আছি। হে আমাদের প্রতিপালক! সব কল্যাণ তোমার হতে নিহিত!'
মহান আল্লাহ বলবেন,' তোমারা কি সন্তুষ্ট হয়েছ?'
তার বলবে, 'হে আমাদের রব! আমরা কেন খুশী হব না? তুমি আমাদেরকে যে অনুগ্রহ দিয়েছে তা অপর কোন সৃষ্টিকে দাও নি।'
মহান আল্লাহ বলবেন, 'এর চেয়ে উত্তম বস্তু আমি কি তোমাদের দেব না? '
তারা বলবে, 'এর চেয়ে উত্তম ও উন্নত বস্তু আর কি হতে পারে? '
মহান আল্লাহ বলবেন, 'আমি তোমাদের উপর আমার সন্তোষ অবতীর্ণ করব। এরপর আমি আর কখনো তোমাদের উপর অসন্তুষ্ট হব না।'
( বুখারী ও মুসলিম )
ধন্যবাদ আপনাকে।
'আর হে নবী, যারা এ কিতাবের ওপর ঈমান আনবে এবং (এর বিধান অনুযায়ী) নিজেদের কার্যধারা সংশোধন করে নেবে তাদেরকে এ মর্মে সুখবর দাও যে, তাদের জন্য এমন সব বাগান আছে যার নিম্নদেশ দিয়ে প্রবাহিত হবে ঝর্ণাধারা। সেই বাগানের ফল দেখতে দুনিয়ার ফলের মতই হবে। যখন কোন ফল তাদের দেয়া হবে খাবার জন্য, তারা বলে উঠবেঃ এ ধরনের ফলই ইতিপূর্বে দুনিয়ায় আমাদের দেয়া হতো। তাদের জন্য সেখানে থাকবে পাক-পবিত্র সাথীগণ এবং তারা সেখানে থাকবে চিরকাল।'
[আল বাকারাহ; আয়াত নং -২৫ ]
'আর যারা আমার আয়াতগুলো মেনে নিয়েছে এবং সৎকাজ করেছে তাদেরকে এমন সব বাগীচার মধ্যে প্রবেশ করাবো যার নিম্নদেশে ঝরণাধারা প্রবাহিত হবে। সেখানে তারা থাকবে, চিরস্থায়ীভাবে, তারা সেখানে পবিত্র স্ত্রীদেরকে লাভ করবে এবং তাদেরকে আমি আশ্রয় দেবো ঘন স্নিগ্ধ ছায়াতলে।'
[ আন্ নিসা; আয়াত নং -৫৭]
'অন্যদিকে যারা আমার আয়াত মেনে নিয়েছে এবং সৎকাজ করেছে- আর এ পর্যায়ে আমি কাউকে তার সামর্থের অতিরিক্ত দায়িত্ব অর্পণ করি না- তারা হচ্ছে জান্নাতবাসী। সেখানে তারা থাকবে চিরকাল।'
'তাদের মনে পরস্পরের বিরুদ্ধে যা কিছু গ্লানি থাকবে তা আমি বের করে দেবো। তাদের নিম্নদেশে ঝরণাধারা প্রবাহিত হবে এবং তারা বলবেঃ “প্রশংসা সব আল্লাহরই জন্য, যিনি আমাদের এ পথ দেখিয়েছেন। আমরা নিজেরা পথের সন্ধান পেতাম না যদি না আল্লাহ আমাদের পথ দেখাতেন। আমাদের রবের পাঠানো রসূলগণ যথার্থ সত্য নিয়েই এসেছিলেন।” সে সময় আওয়াজ ধ্বনিত হবেঃ “তোমাদেরকে এই যে জান্নাতের উত্তরাধিকারী বানানো হয়েছে, এটি তোমরা লাভ করেছো সেই সমস্ত কাজের প্রতিদানে যেগুলো তোমরা অব্যাহতভাবে করতে।”
[আল আরাফ; আয়াত নং - ৪২ ও ৪৩ ]
'অন্যদিকে রসূল ও তার ঈমানদার সাথীরা নিজেদের জান-মাল দিয়ে জিহাদ করেছে। সমস্ত কল্যাণ এখন তাদের জন্য এবং তারাই সফলকাম হবে।'
'আল্লাহ তাদের জন্য এমন বাগান তৈরী করে রেখেছেন। যার নিম্নদেশে স্রোতস্বিনী প্রবাহিত হচ্ছে। তার মধ্যে তারা থাকবে চিরকাল। এটাই মহা সাফল্য।'
[আত তওবা ; আয়াত নং - ৮৮ ও ৮৯]
সুন্দর বসন্তকালের শুভেচ্ছা
“মুহাজির ও আনসারদের মধ্য থেকে যারা সবার আগে ঈমানের দাওয়াত গ্রহণ করার ব্যাপারে উদ্যোগী হয়েছে এবং যারা পরে নিষ্ঠা সহকারে তাদের অনুসরণ করছে, আল্লাহ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন এবং তারা আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছে। আল্লাহ তাদের জন্য এমন বাগান তৈরী করে রেখেছেন যার নিম্নদেশে ঝরণাধারা প্রবাহিত হবে এবং তারা তার মধ্যে থাকবে চিরকাল। এটাই মহা সাফল্য।“
[সূরা আত তওবা; আয়াত নং -১০০]
সুন্দর বসন্তকালের শুভেচ্ছা
‘তাদের অবস্থা হয় এই যে, নিজেদের রবের সন্তুষ্টির জন্য তারা সবর করে, নামায কায়েম করে, আমার দেয়া রিযিক থেকে প্রকাশ্যে ও গোপনে খরচ করে এবং ভালো দিয়ে মন্দ দূরীভূত করে। আখেরাতের গৃহ হচ্ছে তাদের জন্যই। অর্থাৎ এমন সব বাগান যা হবে তাদের চিরস্থায়ী আবাস।
তারা নিজেরা তার মধ্যে প্রবেশ করবে এবং তাদের বাপ-দাদারা ও স্ত্রী-সন্তানদের মধ্য থেকে যারা সৎকর্মশীল হবে তারাও তাদের সাথে সেখানে যাবে। ফেরেশতারা সব দিক থেকে তাদেরকে অভ্যর্থনা জানাবার জন্য আসবে
এবং তাদেরকে বলবেঃ “তোমাদের প্রতি শান্তি।তোমরা দুনিয়ায় যেভাবে সবর করে এসেছো তার বিনিময়ে আজ তোমরা এর অধিকারী হয়েছো।”- কাজেই কতই চমৎকার এ আখেরাতের গৃহ!”
[সূরাআর্ রাদ; আয়াত নং -২২, ২৩ ও ২৪]
" অপরদিকে যারা দুনিয়ায় ঈমান এনেছে এবং যারা সৎ কাজ করেছে তাদেরকে এমন বাগীচায় প্রবেশ করানো হবে যার পাদদেশে নদী প্রবাহিত হবে। সেখানে তারা তাদের রবের অনুমতিক্রমে চিরকাল বসবাস করবে। সেখানে তাদেরকে অভ্যর্থনা জানানো হবে শান্তি ও নিরাপত্তার মোবারকবাদ সহকারে।"
[সূরা ইবরাহীম আয়াত নং -২৩]
হযরত জাবের রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ ﷺইরশাদ করেছেন, 'বেহেশতবাসীগণ বেহেশতের খাদ্য খাবে এবং পানীয় বস্তু পান করবে। কিন্তু সেখানে তাদের পায়খানার প্রয়োজন হবে না, তাদের নাকে শ্লেষ্মা বা ময়লা জমবে না এবং তারা পেশাবও করবে না। ঢেকুরের মাধ্যমে তাদের পেটের খাদ্য দ্রব্য হযম হয়ে মেশকের সুঘ্রাণের মতো বেরিয়ে যাবে। শ্বাস-প্রশ্বাস গ্রহণের মতই তারা তাসবীহ ও তাকবীরে অভ্যস্ত হয়ে যাবে।'
(মুসলিম)
হযরত আবু হোরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ ﷺ ইরশাদ করেছেন, আল্লাহ তায়ালা বলেন, আমি আমার পুণ্যবান বান্দাদের জন্য এমন সব বস্তু তৈরি করে রেখেছি, যা কোন চোখ কখনো দেখেনি, কোন কান তার বর্ণনা কখনো শুনেনি। আর কোন মানুষ কোন দিন তার ধারনা বা কল্পনাও করতে পারেনি। এ কথার সমর্থনে তোমরা এ আয়াত পাঠ করতে পার, ' তারপর কেউ জানে না তাদের কাজের পুরস্কার হিসেবে তাদের চোখের শীতলতার কি সরঞ্জাম লুকিয়ে রাখা হয়েছে।' ( সূরা আস সাজদাহ; আয়াত নং- ১৭)
(বুখারী ও মুসলিম)
হযরত আবু হোরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ ﷺ ইরশাদ করেছেন, 'সর্বপ্রথম যে দল বেহেশতে যাবে তাদের চেহারা পূর্ণিমার চাঁদের মতো উজ্জ্বল হবে। এরপর যারা যাবে তাদের চেহারা ঝিকমিক করা তারকার মতো আলোকিত হবে। তাদের চিরুনী হবে স্বর্ণের তৈরি। তাদের ঘাম হবে মেশকের মতো সুঘ্রাণ। তাদের ধুমদানী সুঘ্রাণ কাঠ দিয়ে জ্বালানো হবে। আয়তলোচনা হূর হবে তাদের স্ত্রী। তাদের দৈহিক গঠন হবে এক প্রকারের। দৈহিক অভ্যাস একই রকম হবে। উচ্চতায় তারা তাদের আদি পিতা হযরত আদম আলাইহিস সালাম এর মত ষাট হাত লম্বা হবে।'
(বুখারী)
বুখারী ও মুসলিম শরীফের অপর এক বর্ণনায় রয়েছে, 'তাদের ব্যবহার্য পাত্র হবে স্বর্ণের। তাদের ঘাম হবে মেশকের মতো সুগন্ধ। তাদের প্রত্যেককে দু’জন করে স্ত্রী দেয়া হবে। তারা এত সুন্দরী হবে যে, তাদের উরুর হাড়ের মজ্জা মাংসের ভিতর দিয়ে দেখা যাবে। তাদের পরস্পরের মধ্যে কোন মতানৈক্য বা হিংসা-বিদ্বেষ থাকবে না। তাদের মন হবে একই ব্যক্তির মনের মতো। সকাল-সন্ধ্যায় তারা আল্লাহর পবিত্রতা ও মহত্ত্ব বর্ণনা করতে থাকবে।'
হযরত মুগীরা ইবেন শু’বা রাদিয়াল্লাহু আনহু রাসূলুল্লাহ ﷺ থেকে বর্ণনা করেছেন। রাসূলুল্লাহ ﷺ ইরশাদ করেছেন, 'হযরত মূসা আলাইহিস সালাম তাঁর রবকে জিজ্ঞেস করেন, 'সবচেয়ে কম মর্যদায় বেহেশতী কে?'
মহান আল্লাহ বলেন, 'সে ঐ ব্যক্তি যে বেহেশবাসীদেরকে বেহেশতে দেয়ার পর আসবে। তাকে বলা হবে বেহেশতে যাও। সে বলবে হে বর! সব লোক নিজ নিজ বাসস্থানে অবস্থান নিয়েছে এবং নিজেদের প্রাপ্য অংশগ্রহণ করেছে, তাই আমি এখন বেহেশতে গিয়ে কিভাবে স্থান পাবো?'
তাকে বলা হবে,' তোমাকে যদি পৃথিবীর কোন বাদশাহ বা শাসকের রাজ্যের সমান এলাকা দেয়া হয় তবে কি সন্তুষ্ট হবে?'
সে বলবে,' হে রব! আমি এতে সন্তুষ্ট হলাম।'
এবার মহান আল্লাহ তাকে বলবেন, 'তোমাকে তাই দেয়া হল।'।
এরপরও তার সমান আরো, এরপর তার সমান আরো, এবং এরপর ঐগুলোর সমান আরও অতিরিক্ত দেয়া হল। পঞ্চমবারে সে বলবে, 'হে রব, আমি সন্তুষ্ট হলাম।'
এবার মহান আল্লাহ তাকে বলবেন, 'তোমাকে এসবের মত আরো দশগুণ দেয়া হল। তোমার অন্তর যা কামনা করে, তোমার চোখ যাতে পরিতৃপ্ত হয় সেসব বস্তু তোমাকে দেয়া হল।'
সে বলবে, 'হে আল্লাহ আমি সন্তুষ্ট হলাম।'
হযরত মূসা আলাইহিস সালাম বলেন, 'হে রব! বেহেশতে সবচেয়ে বেশি মর্যাদাবান কে হবে?'
মহান আল্লাহ বলেন, 'যাদেরকে আমি মর্যাদা আমি মর্যাদা দিতে চাইব আমি নিজে তাদের মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত করব। তাদেরকে সীলমোহর দিয়ে চিহ্নিত কর। তাদেরকে এমন কিছু দেয়া হবে যা কোন চোখ কখনো দেখেনি, কোন কন কোন দিন শোনেনি এবং মানবের কল্পনা তার ধারে কাছেও পৌঁছতে পারে না। '
(মুসলিম)
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ ﷺ ইরশাদ করেছেন, আমি জানি কোন দোযখী সর্বশেষ দোযখ হতে বেরিয়ে আসবে অথবা কোন বেহেশতী সর্বশেষ বেহেশত যাবে। এক ব্যক্তি নিতম্বের উপর ভর দিয়ে হেচড়েতে হেচড়েতে দোযখ হতে বেরিয়ে আসবে। মহান ও সর্বশক্তিমান আল্লাহর তাকে বলবেন, 'যাও বেহেশতে গমন কর।'
সে বেহেশতের কাছে গেল তবে তা ইতোমধ্যেই পরিপূর্ণ হয়ে গিয়েছে। সে ফিরে এসে বলবে, 'হে রব বেহেশত তো পরিপূর্ণ হয়ে গিয়েছে। মহান ও সর্বশক্তিমান আল্লাহ তাকে বলবেন, তুমি গিয়ে বেহেশতে যাও।'
সে আবার যাবে। কিন্তু তার মনে হবে বেহেশত তো ইতোমধ্যেই পরিপূর্ণ হয়ে গিয়েছে। সে ফিরে এসে বলবে, 'হে রব! আমি দেখলাম বেহেশত ভরপুর হয়ে গিয়েছে।'
মহান ও সর্বশক্তিমান আল্লাহ তাকে বলবেন, 'তুমি বেহেশত যাও। কেননা, তোমার জন্য পৃথিবীর সম পরিমাণ এবং অনুরূপ আরো দশ গুণ অথবা পৃথিবীর মত দশগুণ জায়গা নির্মিত হয়েছে।'
লোকটি ব্লবে,'হে আল্লাহ! আমার সাথে হাসি-ঠাট্টা করছেন? অথচ আপনি সব কিছুর একচ্ছত্র মালিক।'
ইবন মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন আমি দেখলাম রাসূলুল্লাহ ﷺ এ কথা বলে এনমভাবে হাসলেন যে তার পবিত্র দাঁত দেখা যাচ্ছিল । তিনি বলছিলেন এই ব্যক্তি হবে সবচেয়ে কম মর্যাদার বেহেশতী।'
( বুখারী ও মুসলিম)
হযরত আবু মূসা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। নবী করীম ﷺ ইরশাদ করেছেন 'বেহেশতের মধ্যে প্রত্যেক মু’মিন ব্যক্তির জন্য একক একটি ফাঁফা মুক্তার তৈরি তাবু থাকবে। তার উচ্চতা হবে ষাট মাইল। ঈমানদার ব্যক্তির পরিবারের ব্যক্তিরা এর মধ্যে বসবাস করবে। মু’মিন ব্যক্তি তাদের সাথে দেখা সাক্ষাৎ করবে। কিন্তু তারা অপরের কারো সাক্ষাৎ পাবে না। '
(বুখারী ও মুসলিম)
হযরত আবু মূসা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। নবী করীম ﷺ ইরশাদ করেছেন 'বেহেশতের মধ্যে প্রত্যেক মু’মিন ব্যক্তির জন্য একক একটি ফাঁফা মুক্তার তৈরি তাবু থাকবে। তার উচ্চতা হবে ষাট মাইল। ঈমানদার ব্যক্তির পরিবারের ব্যক্তিরা এর মধ্যে বসবাস করবে। মু’মিন ব্যক্তি তাদের সাথে দেখা সাক্ষাৎ করবে। কিন্তু তারা অপরের কারো সাক্ষাৎ পাবে না। '
(বুখারী ও মুসলিম)
( বুখারী ও মুসলিম)
হে চিরবসন্তের বাগানের মালিক! হে মহান প্রভু!! তুমি আমার সমস্ত কাজকে কবুল করে নাও, আমার সব গুনাহ ক্ষমা করে দিয়ে আমাকে তোমার চিরবসন্তের বাগানে একটুখানি ঠাঁই দিও। আমি যেন, তোমার আয়াত সমূহকে মেনে জীবন গঠন করতে পারি, তোমার জান্নাতের পথে চলতে পারি সেই তাওফিক দিও। আমীন..
হযরত আবু সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু আনহু নবী করীম ﷺ থেকে বর্ণনা করেছেন। নবী করীম ﷺ ইরশাদ করেছেন, 'বেহেশতবাসীরা তাদের উপরতলার কক্ষের ব্যক্তিদেরকে এমনভাবে দেখতে পাবে, যেমনভাবে তোমরা পূর্ব অথবা পশ্চিম দিগন্তে উজ্জ্বল তারকাসমূহ দেখতে পাও। তাদের পরস্পরের মর্যাদার পার্থক্যের হেতুতে এরূপ হবে।'
সাহাবায়ে কেরাম রাদিয়াল্লাহু আনহু জিজ্ঞেস করলেন, 'ইয়া রাসূলুল্লাহ! নবীদের ঐ স্তরসমূহ যা অপর কেউ লাভ করবে না?'
তিনি বলেন, 'কেন পৌঁছতে পারবে না! সেই সত্তার শপথ যাঁর হাতে আমার জান! যারা আল্লাহর প্রতি ঈমান এনেছে এবং নবীদেরকে সত্য মেনে নিয়েছে তারা ঐ স্তরে যেতে সক্ষম হবে।'
(বুখারী ও মুসলিম)
হযরত আবু সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, 'মহান ও সর্ব শক্তিমান আল্লাহ বেহেশতবাসীদেরকে বলবেন, হে বেহেশতের অধিবাসীগণ!'
তারা বলবে, 'আমরা উপস্থিত আছি। হে আমাদের প্রতিপালক! সব কল্যাণ তোমার হতে নিহিত!'
মহান আল্লাহ বলবেন,' তোমারা কি সন্তুষ্ট হয়েছ?'
তার বলবে, 'হে আমাদের রব! আমরা কেন খুশী হব না? তুমি আমাদেরকে যে অনুগ্রহ দিয়েছে তা অপর কোন সৃষ্টিকে দাও নি।'
মহান আল্লাহ বলবেন, 'এর চেয়ে উত্তম বস্তু আমি কি তোমাদের দেব না? '
তারা বলবে, 'এর চেয়ে উত্তম ও উন্নত বস্তু আর কি হতে পারে? '
মহান আল্লাহ বলবেন, 'আমি তোমাদের উপর আমার সন্তোষ অবতীর্ণ করব। এরপর আমি আর কখনো তোমাদের উপর অসন্তুষ্ট হব না।'
( বুখারী ও মুসলিম )
মন্তব্য করতে লগইন করুন