হাদিসে কুদসী- ৪
লিখেছেন লিখেছেন ফাতিমা মারিয়াম ২৯ জানুয়ারি, ২০১৪, ১২:৪৮:৫০ দুপুর
১০) আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। নবী ﷺ তাঁর মহান ও কল্যাণময় রবের কাছ থেকে বর্ণনা করে বলেন, 'কোন বান্দাহ একটি গুনাহ করে বললো, 'হে আল্লাহ! আমার গুনাহ মাফ করে দাও।'
তখন বিপুল বরকতের অধিকারী আল্লাহ বলেন, 'আমার বান্দাহ একটি গুনাহ করেছে। সে জানে যে তার একজন রব আছেন, যিনি গুনাহ মাফ করেন, আবার এজন্য পাকড়াও করেন।'
সে পুনরায় গুনাহ করে বললো, 'হে আমার রব! আমার গুনাহ মাফ করে দাও।'
তখন মহান কল্যাণময় আল্লাহ বলেন, 'আমার বান্দাহ একটি গুনাহ করেছে। সে জেনেছে যে, তার একজন রব আছেন যিনি গুনাহ মাফ করেন এবং গুনাহর জন্য পাকড়াও করেন।'
সে আবারও একটি গুনাহ করলো এবং বললো, 'হে রব! আমার গুনাহ মাফ করে দাও। তখন আল্লাহ তা’আলা বলেন, আমার বান্দাহ একটি গুনাহ করেছে এবং সে জেনেছে যে, তার একজন রব আছেন যিনি গুনাহ মাফ করেন এবং এর জন্য শাস্তিও দেন। সুতরাং আমি আমার বান্দাহকে মাফ করে দিলাম। অতএব সে যা ইচ্ছা তাই করুক।'
[বুখারী, মুসলিম]
মহান আল্লাহর বাণী “সে যা ইচ্ছা তাই করুক “-এর অর্থ হলো- সে যতদিন এরূপ গুনাহ করবে এবং তওবা করবে, আমি ততদিন তাকে মাফ করতে থাকবো। কেননা তওবা তার আগের সমস্ত গুনাহ খতম করে দেয়।
১১) আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন যে, মহামহিম আল্লাহ বলেন, 'আমি আমার বান্দার ধারণা অনুযায়ীই আছি (অর্থাৎ যে আমার সম্পর্কে যেরূপ ধারণা রাখে, আমিও তার সাথে সেরূপ ব্যবহার করি) সে যেখানেই আমাকে স্মরণ করে, আমি সেখানেই তার সাথে আছি।'
'আল্লাহর শপথ! তোমাদের কেউ বৃক্ষলতাহীন মরু প্রান্তরে তার হারানো বস্তু পেয়ে যেরূপ আনন্দিত হয়, আল্লাহ তাঁর বান্দার তাওবায় এর চাইতেও অনেক বেশি আনন্দিত হন।'
(আল্লাহ আরো বলেন) 'যে ব্যক্তি আমার কাছে আসতে এক বিঘত অগ্রসর হয়, আমি তার দিকে এক হাত এগিয়ে যাই; আর যে ব্যক্তি আমার দিকে এক হাত অগ্রসর হয়, আমি তার দিকে এক গজ অগ্রসর হই। সে যখন আমার দিকে হেঁটে হেঁটে এগিয়ে আসে, আমি তার দিকে দৌড়ে এগিয়ে যাই।'
[বুখারী, মুসলিম]
.
[ রিয়াদুস সালেহীন থেকে সংগৃহিত। হাদিস নং ৪২১ ও ৪৪০]
.
হাদিসে কুদ্সী-১
.
হাদিসে কুদ্সী- ২
.
হাদিসে কুদসী-৩
বিষয়: বিবিধ
১৮২৬ বার পঠিত, ৮৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
হযরত আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসূলে আকরাম ﷺ বলেছেন, ‘মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, "আমার মুমিন বান্দার জন্যে আমার কাছে জান্নাত ছাড়া আর কোনো পুরস্কার নেই, যখন আমি দুনিয়া থেকে তার কোনো প্রিয়জনকে নিয়ে যাই আর সে তখন সওয়াবের আশায় সবর করে।"
(বুখারী)
ঠিক
হযরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, আমি রাসূলে আকরাম ﷺ কে বলতে শুনেছি যে, মহান আল্লাহ বলেছেন,"আমি যখন আমার বান্দাকে তার দু’টি প্রিয় বস্তুর মাধ্যমে পরীক্ষা করি (অর্থ্যাৎ তার দুই চোখের দৃষ্টিশক্তি নষ্ট করে দেই) এবং তাতে সে সবর করে, তখন এর বিনিময়ে আমি তাকে জান্নাত দান করি।"
(বুখারী)
হযরত আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসূলে আকরাম ﷺ বলেছেন, 'আল্লাহ বলেন, "যে ব্যক্তি আমার বন্ধু কে কষ্ট দেয়, আমি তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করি। আমার বান্দাহ আমার আরোপিত ফরজ কাজের মাধ্যমে, যা আমার নিকট প্রিয় এবং নফল কাজের মাধ্যমে সর্বদা আমার নৈকট্য লাভ করতে থাকে। এভাবে (এক পর্যায়ে) আমি তাকে ভালোবাসতে থাকি। আর আমি যখন তাকে ভালোবাসি, তখন আমি তার কান হয়ে যাই যা দিয়ে সে শোনে, তার চোখ হয়ে যাই যা দিয়ে সে দেখে, তার হাত হয়ে যাই যা দিয়ে সে ধরে এবং তার পা হয়ে যাই যা দিয়ে সে হাঁটা-চলা করে। আর যদি সে আমার নিকট কিছু চায়, আমি তাকে দেই এবং যদি সে আমার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করে, তাহলে আমি তাকে আশ্রয় দান করি।"
(বুখারী)
হযরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি রাসূলে আকরাম ﷺ থেকে বর্ণনা করেন যে, মহান আল্লাহ বলেছেন," বান্দাহ যখন আমার দিকে আধ হাত পরিমান এগিয়ে আসে, আমি তার দিকে এক হাত পরিমান এগিয়ে যাই। আর যখন সে আমার দিকে এক হাত এগিয়ে আসে, আমি তার দিকে দুই হাত এগিয়ে যাই। আর যখন সে আমার দিকে হেঁটে আসে, আমি তার দিকে দৌড়ে যাই।"
[বুখারী]
জাযাকাল্লাহু খাইরান।
হযরত আবু যার জুনদুব ইবনে জুনাদা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি রাসূলে আকরাম ﷺ থেকে বর্ণনা করেন যে, মহান আল্লাহ বলেছেন," হে আমার বান্দারা! আমি নিজের ওপর জুলুমকে হারাম করে রেখেছি এবং তোমাদের জন্যও তা হারাম করেছি।কাজেই তোমরা পরস্পর জুলুম করো না।
হে আমার বান্দারা! আমি যাকে হিদায়াহ্ দিয়েছি, সে ছাড়া তোমাদের প্রত্যেকেই পথভ্রষ্ট। অতএব, তোমরা আমার কাছে হিদায়াহ্ চাও। আমি তোমাদের হিদায়াহ্ দান করবো।
হে আমার বান্দারা! আমি যাকে খাদ্য দিয়েছি, সে ছাড়া তোমাদের আর সবাই ক্ষুধার্ত। কাজেই তোমরা আমার কাছে খাদ্য চাও, আমি তোমাদেরকে খাদ্য দেব।
হে আমার বান্দারা! আমি যাকে কাপড় দিয়েছি, সে ছাড়া তোমাদের প্রত্যেকেই উলঙ্গ। কাজেই আমার কাছে কাপড় চাও, আমি তোমাদেরকে কাপড় দেব।
হে আমার বান্দারা! তোমরা দিন-রাত ভুল করে থাকো, আর আমি সমস্ত গুনাহ ক্ষমা করে দিই। অতএব, তোমরা আমার কাছে ভুল-ত্রুটির জন্য ক্ষমা চাও, আমি তোমাদেরকে ক্ষমা করে দেব।
হে আমার বান্দারা! তোমরা আমার কোন ক্ষতি করতে পারবে না, আমার কোন উপকারও করতে পারবে না।
হে আমার বান্দারা! যদি তোমাদের পূর্বের ও পরের সমস্ত জিন ও মানুষ তোমাদের মধ্যকার শ্রেষ্ঠতম খোদাভীরু ব্যক্তির দিলের মতো হয়ে যায়, তবুও তাতে আমার রাজত্বের এতটুকু মর্যাদা বৃদ্ধি পাবে না।
হে আমার বান্দারা! যদি তোমাদের পূর্বের ও পরের সমস্ত জিন ও মানুষ তোমাদের মধ্যকার সবচেয়ে খারাপ মানুষের দিলের মতো হয়ে যায়, তবুও তাতে আমার রাজত্বের এতটুকুও মর্যাদা ক্ষুন্ন হবে না।
হে আমার বান্দারা! যদি তোমাদের পূর্বের ও পরের সমস্ত জিন ও মানুষ কোন এক ময়দানে দাঁড়িয়ে আমার কাছে চায় এবং আমি তাদের প্রত্যেককে তার প্রয়োজন পূর্ণ করে দেই তাহলে তাতে আমার নিকট যে ভাণ্ডার আছে তার এতটুকু কমে যেতে পারে, যতটুকু সমুদ্রে একটি সূচ ফেললে তার পানি কমে যায়।
হে আমার বান্দারা! আমি তোমাদের নেক আমলকে তোমাদের জন্যে জমা করে রাখছি, তারপর একদিন আমি তোমাদেরকে তার পূর্ণ বিনিময় দেব। সুতরাং যে ব্যক্তি কোন কল্যাণের অধিকারী হয়, সে যেন আল্লাহর প্রশংসা করে। আর যে ব্যক্তি অকল্যাণের কিছু পায়, সে যেন নিজেকেই তিরস্কার করে।"
[মুসলিম]
হযরত আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসূলে আকরাম ﷺ বলেন, 'আল্লাহ তাঁর সৃষ্টির কাজ শেষ করে যখন অবসর হলেন, তখন ‘রাহেম’ (আত্নীয়তার সম্পর্ক) দাঁড়িয়ে বললো, এ জায়গাটি কি সেই ব্যক্তির জন্য যে আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করা থেকে বাঁচার জন্য আপনার কাছে আশ্রয় চায়?'
তিনি (আল্লাহ) বললেন, ‘হ্যাঁ। তুমি কি একথায় সন্তুষ্ট হবে, যে তোমায় বজায় রাখবে, আমিও তার প্রতি দয়া করবো এবং যে তোমার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করবে আমিও তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করবো?'
‘রাহেম’ বলল,‘হ্যাঁ, আমি সন্তুষ্ট হব।’
আল্লাহ বললেন, 'এ জায়গাটি তোমার।'
এরপর রাসূলে আকরামﷺ (সাহাবীদের) বললেন,'যদি তোমরা (অবিচল) থাকতে চাও, তবে এই আয়াত পাঠ করো। "তবে ক্ষমতায় আরোহন করলে হয়ত তোমরা দুনিয়ায় চরম অশান্তি ও ফিতনার সৃষ্টি করবে এবং আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করবে? (মূলত) এরা এমন লোক যাদের ওপর আল্লাহ লা’নত বর্ষণ করেছেন এবং তাদেরকে অন্ধ ও বধির করে দিয়েছেন। "(সূরা মুহাম্মদঃ ২২-২৩)
(বুখারী ও মুসলিম)
বুখারীর অপর এক বর্ণনায় বলা হয়েছে, মহান আল্লাহ বলেন, 'যে তোমায় বহাল রাখবে আমি তাকে অনুগ্রহ করবো আর যে তোমার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করবে, আমিও তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করবো।'
হযরত মুয়ায রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন আমি রাসূলে আকরাম ﷺ কে বলতে শুনেছি," মহাসম্মানিত পরাক্রমশালী আল্লাহ বলেন,'আমার সন্তুষ্টির লক্ষ্যে যারা পরস্পরকে ভালোবাসে, তাদের জন্য (আখিরাতে) থাকবে নূরের মিম্বার (মঞ্চ) আর নবীগণ ও শহীদগণ তাদের প্রতি ঈর্ষা করবেন।'
(তিরমিযী)
সুবাহানাল্লাহ।
হযরত আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসূলে আকরাম ﷺ বলেছেন, মহান আল্লাহ বলেন,' যে ব্যক্তি আমার বন্ধুর সাথে শত্রুতা পোষণ করে, আমি তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করি। আমি আমার বান্দার ওপর যা কিছু ফরয করেছি, তার চেয়ে বেশি প্রিয় কোন জিনিস নিয়ে সে আমার নিকটবর্তী হয় না। আর আমার বান্দা সব সময় নফলের মাধ্যমে আমার কাছাকাছি আসতে থাকে। শেষ পর্যন্ত আমি তাকে ভালোবেসে ফেলি। আর আমি যখন তাকে ভালোবেসে ফেলি তখন সে যে কানে শুনে, আমি তার সেই কান হয়ে যাই; সে যে চোখে দেখে, আমি তার সেই চোখ হয়ে যাই। সে যে হাতে ধরে, আমি সেই হাত হয়ে যাই এবং সে যে পায়ে হাঁটে আমি তার সে পা হয়ে যাই। সে যখন আমার কাছে কিছু প্রার্থনা করে, আমি তাকে তা প্রদান করি এবং সে যদি আমার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করে আমি তাকে আশ্রয় প্রদান করি।'
(বুখারী)
হযরত আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসূলে আকরাম ﷺ বলেছেন,' মহান আল্লাহ যখন কোন বান্দাকে ভালোবাসেন, তখন জিবরীল(আ) কে ডেকে বলেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ অমুক বান্দাকে ভালোবাসেন; কাজেই তুমিও তাকে ভালোবাস।'
তারপর জিবরীল(আ) তাকে ভালোবাসেন এবং আসমানবাসীদের মাঝে ঘোষণা করেন যে, 'আল্লাহ অমুক ব্যক্তিকে ভালোবাসেন; কাজেই তোমরাও তাকে ভালোবাস।'
অতঃপর আসমানবাসীরা তাকে ভালোবাসে। অতঃপর দুনিয়ায় সে জনপ্রিয় হয়ে যায়।
(বুখারী ও মুসলিম)
মুসলিমের অপর একটি বর্ণনায় আছে, রাসূলে আকরাম ﷺ বলেন, আল্লাহ তা’আলা যখনই কোন বান্দাকে ভালোবাসেন, তখনই জিবরীল(আ)কে ডেকে বলেন,'আমি তো অমুক ব্যক্তিকে ভালোবাসি। সুতরাং তোমারা তাকে ভালোবাস।'
তারপর জিবরীল(আ)ও তাকে ভালোবাসেন এবং আসমানবাসীদের মাঝে ঘোষণা করতে থাকেন, 'আল্লাহ অমুক ব্যক্তিকে ভালোবাসেন সুতরাং তোমরাও তাকে ভালোবাস।'
তারপর আসমানবাসীরাও তাকে ভালোবাসে এবং দুনিয়ায় সে জনপ্রিয় হয়ে যায়। আর যখন তিনি (আল্লাহ) কোন বান্দাকে ঘৃণা করেন তখন জিবরীল(আ)কে ডেকে বলেন,' আমি অমুককে ঘৃণা করি, কাজেই তুমিও তাকে ঘৃণা করো।'
তারপর জিবরীল(আ) তাকে ঘৃণা করেন এবং আসমানবাসীদের মাঝে ঘোষণা করতে থাকেন, 'আল্লাহ অমুক ব্যক্তিকে ঘৃণা করেন; সুতরাং তোমরাও তাকে ঘৃণা করো।'
তারপর আসমানবাসীরা তাকে ঘৃণা করতে থাকে আর দুনিয়ায়ও তাকে ঘৃণিত ও লাঞ্ছিত করা হয়।
হযরত আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসূলে আকরাম ﷺ বলেছেন, ‘মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, "আমার মুমিন বান্দার জন্যে আমার কাছে জান্নাত ছাড়া আর কোনো পুরস্কার নেই, যখন আমি দুনিয়া থেকে তার কোনো প্রিয়জনকে নিয়ে যাই আর সে তখন সওয়াবের আশায় সবর করে।"
(বুখারী)
মহান আল্লাহ আমাদর সবাইকে হেদায়েত দিয়ে দুনিয়া ও আখেরাতে নেক কামিয়াবী দান করুন, আমীন।
হযরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, আমি রাসূলে আকরাম ﷺ কে বলতে শুনেছি যে, মহান আল্লাহ বলেছেন,"আমি যখন আমার বান্দাকে তার দু’টি প্রিয় বস্তুর মাধ্যমে পরীক্ষা করি (অর্থ্যাৎ তার দুই চোখের দৃষ্টিশক্তি নষ্ট করে দেই) এবং তাতে সে সবর করে, তখন এর বিনিময়ে আমি তাকে জান্নাত দান করি।"
(বুখারী)
হযরত আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসূলে আকরাম ﷺ বলেছেন, 'আল্লাহ বলেন, "যে ব্যক্তি আমার বন্ধু কে কষ্ট দেয়, আমি তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করি। আমার বান্দাহ আমার আরোপিত ফরজ কাজের মাধ্যমে, যা আমার নিকট প্রিয় এবং নফল কাজের মাধ্যমে সর্বদা আমার নৈকট্য লাভ করতে থাকে। এভাবে (এক পর্যায়ে) আমি তাকে ভালোবাসতে থাকি। আর আমি যখন তাকে ভালোবাসি, তখন আমি তার কান হয়ে যাই যা দিয়ে সে শোনে, তার চোখ হয়ে যাই যা দিয়ে সে দেখে, তার হাত হয়ে যাই যা দিয়ে সে ধরে এবং তার পা হয়ে যাই যা দিয়ে সে হাঁটা-চলা করে। আর যদি সে আমার নিকট কিছু চায়, আমি তাকে দেই এবং যদি সে আমার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করে, তাহলে আমি তাকে আশ্রয় দান করি।"
(বুখারী)
ভাল লাগল।
হযরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি রাসূলে আকরাম ﷺ থেকে বর্ণনা করেন যে, মহান আল্লাহ বলেছেন," বান্দাহ যখন আমার দিকে আধ হাত পরিমান এগিয়ে আসে, আমি তার দিকে এক হাত পরিমান এগিয়ে যাই। আর যখন সে আমার দিকে এক হাত এগিয়ে আসে, আমি তার দিকে দুই হাত এগিয়ে যাই। আর যখন সে আমার দিকে হেঁটে আসে, আমি তার দিকে দৌড়ে যাই।"
[বুখারী]
হযরত আবু যার জুনদুব ইবনে জুনাদা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি রাসূলে আকরাম ﷺ থেকে বর্ণনা করেন যে, মহান আল্লাহ বলেছেন," হে আমার বান্দারা! আমি নিজের ওপর জুলুমকে হারাম করে রেখেছি এবং তোমাদের জন্যও তা হারাম করেছি।কাজেই তোমরা পরস্পর জুলুম করো না।
হে আমার বান্দারা! আমি যাকে হিদায়াহ্ দিয়েছি, সে ছাড়া তোমাদের প্রত্যেকেই পথভ্রষ্ট। অতএব, তোমরা আমার কাছে হিদায়াহ্ চাও। আমি তোমাদের হিদায়াহ্ দান করবো।
হে আমার বান্দারা! আমি যাকে খাদ্য দিয়েছি, সে ছাড়া তোমাদের আর সবাই ক্ষুধার্ত। কাজেই তোমরা আমার কাছে খাদ্য চাও, আমি তোমাদেরকে খাদ্য দেব।
হে আমার বান্দারা! আমি যাকে কাপড় দিয়েছি, সে ছাড়া তোমাদের প্রত্যেকেই উলঙ্গ। কাজেই আমার কাছে কাপড় চাও, আমি তোমাদেরকে কাপড় দেব।
হে আমার বান্দারা! তোমরা দিন-রাত ভুল করে থাকো, আর আমি সমস্ত গুনাহ ক্ষমা করে দিই। অতএব, তোমরা আমার কাছে ভুল-ত্রুটির জন্য ক্ষমা চাও, আমি তোমাদেরকে ক্ষমা করে দেব।
হে আমার বান্দারা! তোমরা আমার কোন ক্ষতি করতে পারবে না, আমার কোন উপকারও করতে পারবে না।
হে আমার বান্দারা! যদি তোমাদের পূর্বের ও পরের সমস্ত জিন ও মানুষ তোমাদের মধ্যকার শ্রেষ্ঠতম খোদাভীরু ব্যক্তির দিলের মতো হয়ে যায়, তবুও তাতে আমার রাজত্বের এতটুকু মর্যাদা বৃদ্ধি পাবে না।
হে আমার বান্দারা! যদি তোমাদের পূর্বের ও পরের সমস্ত জিন ও মানুষ তোমাদের মধ্যকার সবচেয়ে খারাপ মানুষের দিলের মতো হয়ে যায়, তবুও তাতে আমার রাজত্বের এতটুকুও মর্যাদা ক্ষুন্ন হবে না।
হে আমার বান্দারা! যদি তোমাদের পূর্বের ও পরের সমস্ত জিন ও মানুষ কোন এক ময়দানে দাঁড়িয়ে আমার কাছে চায় এবং আমি তাদের প্রত্যেককে তার প্রয়োজন পূর্ণ করে দেই তাহলে তাতে আমার নিকট যে ভাণ্ডার আছে তার এতটুকু কমে যেতে পারে, যতটুকু সমুদ্রে একটি সূচ ফেললে তার পানি কমে যায়।
হে আমার বান্দারা! আমি তোমাদের নেক আমলকে তোমাদের জন্যে জমা করে রাখছি, তারপর একদিন আমি তোমাদেরকে তার পূর্ণ বিনিময় দেব। সুতরাং যে ব্যক্তি কোন কল্যাণের অধিকারী হয়, সে যেন আল্লাহর প্রশংসা করে। আর যে ব্যক্তি অকল্যাণের কিছু পায়, সে যেন নিজেকেই তিরস্কার করে।"
[মুসলিম]
হযরত আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসূলে আকরাম ﷺ বলেন, 'আল্লাহ তাঁর সৃষ্টির কাজ শেষ করে যখন অবসর হলেন, তখন ‘রাহেম’ (আত্নীয়তার সম্পর্ক) দাঁড়িয়ে বললো, এ জায়গাটি কি সেই ব্যক্তির জন্য যে আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করা থেকে বাঁচার জন্য আপনার কাছে আশ্রয় চায়?'
তিনি (আল্লাহ) বললেন, ‘হ্যাঁ। তুমি কি একথায় সন্তুষ্ট হবে, যে তোমায় বজায় রাখবে, আমিও তার প্রতি দয়া করবো এবং যে তোমার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করবে আমিও তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করবো?'
‘রাহেম’ বলল,‘হ্যাঁ, আমি সন্তুষ্ট হব।’
আল্লাহ বললেন, 'এ জায়গাটি তোমার।'
এরপর রাসূলে আকরামﷺ (সাহাবীদের) বললেন,'যদি তোমরা (অবিচল) থাকতে চাও, তবে এই আয়াত পাঠ করো। "তবে ক্ষমতায় আরোহন করলে হয়ত তোমরা দুনিয়ায় চরম অশান্তি ও ফিতনার সৃষ্টি করবে এবং আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করবে? (মূলত) এরা এমন লোক যাদের ওপর আল্লাহ লা’নত বর্ষণ করেছেন এবং তাদেরকে অন্ধ ও বধির করে দিয়েছেন। "(সূরা মুহাম্মদঃ ২২-২৩)
(বুখারী ও মুসলিম)
বুখারীর অপর এক বর্ণনায় বলা হয়েছে, মহান আল্লাহ বলেন, 'যে তোমায় বহাল রাখবে আমি তাকে অনুগ্রহ করবো আর যে তোমার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করবে, আমিও তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করবো।'
সুবহানাআল্লাহ! সুবহানাআল্লাহ! সুবহানাআল্লাহ!
জাযাকিল্লাহু খাইরান আপুজ্বী।
হযরত মুয়ায রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন আমি রাসূলে আকরাম ﷺ কে বলতে শুনেছি," মহাসম্মানিত পরাক্রমশালী আল্লাহ বলেন,'আমার সন্তুষ্টির লক্ষ্যে যারা পরস্পরকে ভালোবাসে, তাদের জন্য (আখিরাতে) থাকবে নূরের মিম্বার (মঞ্চ) আর নবীগণ ও শহীদগণ তাদের প্রতি ঈর্ষা করবেন।'
(তিরমিযী)
হযরত আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসূলে আকরাম ﷺ বলেছেন, মহান আল্লাহ বলেন,' যে ব্যক্তি আমার বন্ধুর সাথে শত্রুতা পোষণ করে, আমি তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করি। আমি আমার বান্দার ওপর যা কিছু ফরয করেছি, তার চেয়ে বেশি প্রিয় কোন জিনিস নিয়ে সে আমার নিকটবর্তী হয় না। আর আমার বান্দা সব সময় নফলের মাধ্যমে আমার কাছাকাছি আসতে থাকে। শেষ পর্যন্ত আমি তাকে ভালোবেসে ফেলি। আর আমি যখন তাকে ভালোবেসে ফেলি তখন সে যে কানে শুনে, আমি তার সেই কান হয়ে যাই; সে যে চোখে দেখে, আমি তার সেই চোখ হয়ে যাই। সে যে হাতে ধরে, আমি সেই হাত হয়ে যাই এবং সে যে পায়ে হাঁটে আমি তার সে পা হয়ে যাই। সে যখন আমার কাছে কিছু প্রার্থনা করে, আমি তাকে তা প্রদান করি এবং সে যদি আমার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করে আমি তাকে আশ্রয় প্রদান করি।'
(বুখারী)
হযরত আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসূলে আকরাম ﷺ বলেছেন,' মহান আল্লাহ যখন কোন বান্দাকে ভালোবাসেন, তখন জিবরীল(আ) কে ডেকে বলেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ অমুক বান্দাকে ভালোবাসেন; কাজেই তুমিও তাকে ভালোবাস।'
তারপর জিবরীল(আ) তাকে ভালোবাসেন এবং আসমানবাসীদের মাঝে ঘোষণা করেন যে, 'আল্লাহ অমুক ব্যক্তিকে ভালোবাসেন; কাজেই তোমরাও তাকে ভালোবাস।'
অতঃপর আসমানবাসীরা তাকে ভালোবাসে। অতঃপর দুনিয়ায় সে জনপ্রিয় হয়ে যায়।
(বুখারী ও মুসলিম)
মুসলিমের অপর একটি বর্ণনায় আছে, রাসূলে আকরাম ﷺ বলেন, আল্লাহ তা’আলা যখনই কোন বান্দাকে ভালোবাসেন, তখনই জিবরীল(আ)কে ডেকে বলেন,'আমি তো অমুক ব্যক্তিকে ভালোবাসি। সুতরাং তোমারা তাকে ভালোবাস।'
তারপর জিবরীল(আ)ও তাকে ভালোবাসেন এবং আসমানবাসীদের মাঝে ঘোষণা করতে থাকেন, 'আল্লাহ অমুক ব্যক্তিকে ভালোবাসেন সুতরাং তোমরাও তাকে ভালোবাস।'
তারপর আসমানবাসীরাও তাকে ভালোবাসে এবং দুনিয়ায় সে জনপ্রিয় হয়ে যায়। আর যখন তিনি (আল্লাহ) কোন বান্দাকে ঘৃণা করেন তখন জিবরীল(আ)কে ডেকে বলেন,' আমি অমুককে ঘৃণা করি, কাজেই তুমিও তাকে ঘৃণা করো।'
তারপর জিবরীল(আ) তাকে ঘৃণা করেন এবং আসমানবাসীদের মাঝে ঘোষণা করতে থাকেন, 'আল্লাহ অমুক ব্যক্তিকে ঘৃণা করেন; সুতরাং তোমরাও তাকে ঘৃণা করো।'
তারপর আসমানবাসীরা তাকে ঘৃণা করতে থাকে আর দুনিয়ায়ও তাকে ঘৃণিত ও লাঞ্ছিত করা হয়।
আল্লাহু আকবারআল্লাহু আকবারআল্লাহু আকবারআল্লাহু আকবারআল্লাহু আকবারআল্লাহু আকবার
হযরত আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসূলে আকরাম ﷺ বলেছেন, ‘মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, "আমার মুমিন বান্দার জন্যে আমার কাছে জান্নাত ছাড়া আর কোনো পুরস্কার নেই, যখন আমি দুনিয়া থেকে তার কোনো প্রিয়জনকে নিয়ে যাই আর সে তখন সওয়াবের আশায় সবর করে।"
(বুখারী)
আল্লাহর বান্দারা খুবই উপকৃত হবে।
হযরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, আমি রাসূলে আকরাম ﷺ কে বলতে শুনেছি যে, মহান আল্লাহ বলেছেন,"আমি যখন আমার বান্দাকে তার দু’টি প্রিয় বস্তুর মাধ্যমে পরীক্ষা করি (অর্থ্যাৎ তার দুই চোখের দৃষ্টিশক্তি নষ্ট করে দেই) এবং তাতে সে সবর করে, তখন এর বিনিময়ে আমি তাকে জান্নাত দান করি।"
(বুখারী)
হযরত আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসূলে আকরাম ﷺ বলেছেন, 'আল্লাহ বলেন, "যে ব্যক্তি আমার বন্ধু কে কষ্ট দেয়, আমি তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করি। আমার বান্দাহ আমার আরোপিত ফরজ কাজের মাধ্যমে, যা আমার নিকট প্রিয় এবং নফল কাজের মাধ্যমে সর্বদা আমার নৈকট্য লাভ করতে থাকে। এভাবে (এক পর্যায়ে) আমি তাকে ভালোবাসতে থাকি। আর আমি যখন তাকে ভালোবাসি, তখন আমি তার কান হয়ে যাই যা দিয়ে সে শোনে, তার চোখ হয়ে যাই যা দিয়ে সে দেখে, তার হাত হয়ে যাই যা দিয়ে সে ধরে এবং তার পা হয়ে যাই যা দিয়ে সে হাঁটা-চলা করে। আর যদি সে আমার নিকট কিছু চায়, আমি তাকে দেই এবং যদি সে আমার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করে, তাহলে আমি তাকে আশ্রয় দান করি।"
(বুখারী)
হযরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি রাসূলে আকরাম ﷺ থেকে বর্ণনা করেন যে, মহান আল্লাহ বলেছেন," বান্দাহ যখন আমার দিকে আধ হাত পরিমান এগিয়ে আসে, আমি তার দিকে এক হাত পরিমান এগিয়ে যাই। আর যখন সে আমার দিকে এক হাত এগিয়ে আসে, আমি তার দিকে দুই হাত এগিয়ে যাই। আর যখন সে আমার দিকে হেঁটে আসে, আমি তার দিকে দৌড়ে যাই।"
[বুখারী]
হযরত আবু যার জুনদুব ইবনে জুনাদা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি রাসূলে আকরাম ﷺ থেকে বর্ণনা করেন যে, মহান আল্লাহ বলেছেন," হে আমার বান্দারা! আমি নিজের ওপর জুলুমকে হারাম করে রেখেছি এবং তোমাদের জন্যও তা হারাম করেছি।কাজেই তোমরা পরস্পর জুলুম করো না।
হে আমার বান্দারা! আমি যাকে হিদায়াহ্ দিয়েছি, সে ছাড়া তোমাদের প্রত্যেকেই পথভ্রষ্ট। অতএব, তোমরা আমার কাছে হিদায়াহ্ চাও। আমি তোমাদের হিদায়াহ্ দান করবো।
হে আমার বান্দারা! আমি যাকে খাদ্য দিয়েছি, সে ছাড়া তোমাদের আর সবাই ক্ষুধার্ত। কাজেই তোমরা আমার কাছে খাদ্য চাও, আমি তোমাদেরকে খাদ্য দেব।
হে আমার বান্দারা! আমি যাকে কাপড় দিয়েছি, সে ছাড়া তোমাদের প্রত্যেকেই উলঙ্গ। কাজেই আমার কাছে কাপড় চাও, আমি তোমাদেরকে কাপড় দেব।
হে আমার বান্দারা! তোমরা দিন-রাত ভুল করে থাকো, আর আমি সমস্ত গুনাহ ক্ষমা করে দিই। অতএব, তোমরা আমার কাছে ভুল-ত্রুটির জন্য ক্ষমা চাও, আমি তোমাদেরকে ক্ষমা করে দেব।
হে আমার বান্দারা! তোমরা আমার কোন ক্ষতি করতে পারবে না, আমার কোন উপকারও করতে পারবে না।
হে আমার বান্দারা! যদি তোমাদের পূর্বের ও পরের সমস্ত জিন ও মানুষ তোমাদের মধ্যকার শ্রেষ্ঠতম খোদাভীরু ব্যক্তির দিলের মতো হয়ে যায়, তবুও তাতে আমার রাজত্বের এতটুকু মর্যাদা বৃদ্ধি পাবে না।
হে আমার বান্দারা! যদি তোমাদের পূর্বের ও পরের সমস্ত জিন ও মানুষ তোমাদের মধ্যকার সবচেয়ে খারাপ মানুষের দিলের মতো হয়ে যায়, তবুও তাতে আমার রাজত্বের এতটুকুও মর্যাদা ক্ষুন্ন হবে না।
হে আমার বান্দারা! যদি তোমাদের পূর্বের ও পরের সমস্ত জিন ও মানুষ কোন এক ময়দানে দাঁড়িয়ে আমার কাছে চায় এবং আমি তাদের প্রত্যেককে তার প্রয়োজন পূর্ণ করে দেই তাহলে তাতে আমার নিকট যে ভাণ্ডার আছে তার এতটুকু কমে যেতে পারে, যতটুকু সমুদ্রে একটি সূচ ফেললে তার পানি কমে যায়।
হে আমার বান্দারা! আমি তোমাদের নেক আমলকে তোমাদের জন্যে জমা করে রাখছি, তারপর একদিন আমি তোমাদেরকে তার পূর্ণ বিনিময় দেব। সুতরাং যে ব্যক্তি কোন কল্যাণের অধিকারী হয়, সে যেন আল্লাহর প্রশংসা করে। আর যে ব্যক্তি অকল্যাণের কিছু পায়, সে যেন নিজেকেই তিরস্কার করে।"
[মুসলিম]
আপনার জন্যও অসংখ্য ধন্যবাদ
হযরত আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসূলে আকরাম ﷺ বলেন, 'আল্লাহ তাঁর সৃষ্টির কাজ শেষ করে যখন অবসর হলেন, তখন ‘রাহেম’ (আত্নীয়তার সম্পর্ক) দাঁড়িয়ে বললো, এ জায়গাটি কি সেই ব্যক্তির জন্য যে আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করা থেকে বাঁচার জন্য আপনার কাছে আশ্রয় চায়?'
তিনি (আল্লাহ) বললেন, ‘হ্যাঁ। তুমি কি একথায় সন্তুষ্ট হবে, যে তোমায় বজায় রাখবে, আমিও তার প্রতি দয়া করবো এবং যে তোমার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করবে আমিও তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করবো?'
‘রাহেম’ বলল,‘হ্যাঁ, আমি সন্তুষ্ট হব।’
আল্লাহ বললেন, 'এ জায়গাটি তোমার।'
এরপর রাসূলে আকরামﷺ (সাহাবীদের) বললেন,'যদি তোমরা (অবিচল) থাকতে চাও, তবে এই আয়াত পাঠ করো। "তবে ক্ষমতায় আরোহন করলে হয়ত তোমরা দুনিয়ায় চরম অশান্তি ও ফিতনার সৃষ্টি করবে এবং আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করবে? (মূলত) এরা এমন লোক যাদের ওপর আল্লাহ লা’নত বর্ষণ করেছেন এবং তাদেরকে অন্ধ ও বধির করে দিয়েছেন। "(সূরা মুহাম্মদঃ ২২-২৩)
(বুখারী ও মুসলিম)
বুখারীর অপর এক বর্ণনায় বলা হয়েছে, মহান আল্লাহ বলেন, 'যে তোমায় বহাল রাখবে আমি তাকে অনুগ্রহ করবো আর যে তোমার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করবে, আমিও তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করবো।'
হযরত মুয়ায রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন আমি রাসূলে আকরাম ﷺ কে বলতে শুনেছি," মহাসম্মানিত পরাক্রমশালী আল্লাহ বলেন,'আমার সন্তুষ্টির লক্ষ্যে যারা পরস্পরকে ভালোবাসে, তাদের জন্য (আখিরাতে) থাকবে নূরের মিম্বার (মঞ্চ) আর নবীগণ ও শহীদগণ তাদের প্রতি ঈর্ষা করবেন।'
(তিরমিযী)
হযরত আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসূলে আকরাম ﷺ বলেছেন, মহান আল্লাহ বলেন,' যে ব্যক্তি আমার বন্ধুর সাথে শত্রুতা পোষণ করে, আমি তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করি। আমি আমার বান্দার ওপর যা কিছু ফরয করেছি, তার চেয়ে বেশি প্রিয় কোন জিনিস নিয়ে সে আমার নিকটবর্তী হয় না। আর আমার বান্দা সব সময় নফলের মাধ্যমে আমার কাছাকাছি আসতে থাকে। শেষ পর্যন্ত আমি তাকে ভালোবেসে ফেলি। আর আমি যখন তাকে ভালোবেসে ফেলি তখন সে যে কানে শুনে, আমি তার সেই কান হয়ে যাই; সে যে চোখে দেখে, আমি তার সেই চোখ হয়ে যাই। সে যে হাতে ধরে, আমি সেই হাত হয়ে যাই এবং সে যে পায়ে হাঁটে আমি তার সে পা হয়ে যাই। সে যখন আমার কাছে কিছু প্রার্থনা করে, আমি তাকে তা প্রদান করি এবং সে যদি আমার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করে আমি তাকে আশ্রয় প্রদান করি।'
(বুখারী)
হযরত আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসূলে আকরাম ﷺ বলেছেন,' মহান আল্লাহ যখন কোন বান্দাকে ভালোবাসেন, তখন জিবরীল(আ) কে ডেকে বলেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ অমুক বান্দাকে ভালোবাসেন; কাজেই তুমিও তাকে ভালোবাস।'
তারপর জিবরীল(আ) তাকে ভালোবাসেন এবং আসমানবাসীদের মাঝে ঘোষণা করেন যে, 'আল্লাহ অমুক ব্যক্তিকে ভালোবাসেন; কাজেই তোমরাও তাকে ভালোবাস।'
অতঃপর আসমানবাসীরা তাকে ভালোবাসে। অতঃপর দুনিয়ায় সে জনপ্রিয় হয়ে যায়।
(বুখারী ও মুসলিম)
মুসলিমের অপর একটি বর্ণনায় আছে, রাসূলে আকরাম ﷺ বলেন, আল্লাহ তা’আলা যখনই কোন বান্দাকে ভালোবাসেন, তখনই জিবরীল(আ)কে ডেকে বলেন,'আমি তো অমুক ব্যক্তিকে ভালোবাসি। সুতরাং তোমারা তাকে ভালোবাস।'
তারপর জিবরীল(আ)ও তাকে ভালোবাসেন এবং আসমানবাসীদের মাঝে ঘোষণা করতে থাকেন, 'আল্লাহ অমুক ব্যক্তিকে ভালোবাসেন সুতরাং তোমরাও তাকে ভালোবাস।'
তারপর আসমানবাসীরাও তাকে ভালোবাসে এবং দুনিয়ায় সে জনপ্রিয় হয়ে যায়। আর যখন তিনি (আল্লাহ) কোন বান্দাকে ঘৃণা করেন তখন জিবরীল(আ)কে ডেকে বলেন,' আমি অমুককে ঘৃণা করি, কাজেই তুমিও তাকে ঘৃণা করো।'
তারপর জিবরীল(আ) তাকে ঘৃণা করেন এবং আসমানবাসীদের মাঝে ঘোষণা করতে থাকেন, 'আল্লাহ অমুক ব্যক্তিকে ঘৃণা করেন; সুতরাং তোমরাও তাকে ঘৃণা করো।'
তারপর আসমানবাসীরা তাকে ঘৃণা করতে থাকে আর দুনিয়ায়ও তাকে ঘৃণিত ও লাঞ্ছিত করা হয়।
হযরত আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসূলে আকরাম ﷺ বলেছেন, ‘মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, "আমার মুমিন বান্দার জন্যে আমার কাছে জান্নাত ছাড়া আর কোনো পুরস্কার নেই, যখন আমি দুনিয়া থেকে তার কোনো প্রিয়জনকে নিয়ে যাই আর সে তখন সওয়াবের আশায় সবর করে।"
(বুখারী)
মন্তব্য করতে লগইন করুন