মুত্তাফাকুন আলাইহি-২৫
লিখেছেন লিখেছেন ফাতিমা মারিয়াম ১৫ জানুয়ারি, ২০১৪, ০২:১০:২৫ দুপুর
আমানত আদায় করার নির্দেশঃ
৮৫) হযরত আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু এর বর্ণনামতে, রাসূলে আকরাম ﷺ বলেন, মুনাফিকের নিদর্শন হলো তিনটি। যখন সে কথা বলে মিথ্যা বলে, কোন ওয়াদা বা চুক্তি করলে তার উল্টো কাজ করে এবং তার কাছে কিছু আমানত রাখা হলে তার খিয়ানত করে।
অপর এক বর্ণনায় আছে, সে যদি নামায-রোযা আদায় করে এবং নিজেকে মুসলমান বলে মনে করে তবুও সে মুনাফিক রূপেই গণ্য হবে।
৮৬) হযরত হুযাইফা বিন্ ইয়ামান রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসূলে আকরাম ﷺ আমাদেরকে দু’টি হাদীস বলেছেন তার মধ্যে একটি আমি নিজেই প্রত্যক্ষ করেছি আর দ্বিতীয়টির জন্য প্রতীক্ষায় আছি। রাসূলে আকরাম ﷺ আমাদেরকে বলেন, প্রথমতঃ মানুষের হৃদয়ের গভীরে আমানত স্থাপন করা হয়, তারপর কুরআন অবতরণ করা হয়। এভাবে মানুষ কুরআনকে জানল এবং হাদীসকেও চিনল। এরপর রাসূলে আকরাম ﷺ আমাদের থেকে আমানত ও বিশ্বস্ততাকে তুলে নেয়ার ব্যাপারে বক্তব্য রাখলেন। তিনি বললেন, মানুষ স্বাভাবিক নিয়মে ঘুম থেকে জেগে উঠবে এবং তার অন্তর থেকে আমানত ও বিশ্বস্ততাকে তুলে নেয়া হবে।
এরপর তার মধ্যে এর সামান্য প্রভাব থেকে যাবে। সে আবার স্বাভাবিক নিয়মে ঘুমিয়ে পড়বে এবং তার অন্তর থেকে বিশ্বস্ততার বাকী প্রভাবটুকুও মুছে ফেলা হবে। এরপর অন্তরের মধ্যে ফোস্কার মতো একটি চিহ্ন শুধু বাকী থাকবে। যেমন, তুমি তোমার পায়ের ওপর আগুনের একটি স্ফুলিঙ্গ রাখলে এবং তাতে চামড়া পুরো ফোস্কা পড়ল। দৃশ্যত স্থানটিকে ফোলা দেখাবে; কিন্তু তার মধ্যে কিছুই থাকবে না। বর্ণনাকারী বলেন, এরপর তিনি কাঁকর তুলে নিয়ে নিজের পায়ের ওপর ছুড়ে মারলেন।
রাসূলে আকরাম ﷺ বলেন, এরূপ অবস্থায় তাদের সকাল হবে এবং তারা কেনা-বেচার কাজে লিপ্ত হবে। তাদের মধ্যে আমানত রক্ষার মতো একটি লোকও পাওয়া যাবে না। এমন কি, বলা হবে– অমুক বংশে একজন আমানতদার লোক রয়েছে। এ সময় তাকে পার্থিব বিষয়ে সুদক্ষ হওয়ার কারণে বলা হবে লোকটি কত সাবধান, সুচতুর, স্বাস্থ্যবান ও বুদ্ধিমান। অথচ তার মধ্যে সর্ষের দানা পারিমাণও ঈমান খুঁজে পাওয়া যাবে না।
বর্ণনাকারী হুযাইফা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আজ আমি এমন এক যুগে উপনীত হয়েছি যে, কার সাথে লেন-দেন বা বেচা-কেনা করছি তার কোন বাছ-বিচার নেই। কেননা, সে যদি মুসলমান হয় তবে সে তার দ্বীন ও ঈমানের কারণে আমার হক আদায় করবে। অন্যদিকে সে যদি খৃস্টান বা ইহুদী হয় তবে তার দায়িত্ববোধ আমার হক তার কাছ থেকে আদায় করে দেবে। আজ আমি তোমাদের কারোর সাথে কেনা-বেচা করবো না, তবে অমুক অমুক ব্যক্তির সাথে করবো।
(বুখারী ও মুসলিম)
.
[ রিয়াদুস সালেহীন থেকে সংগৃহিত। হাদিস নং- ১৯৯ ও ২০০]
মুত্তাফাকুন আলাইহি-২৪
বিষয়: বিবিধ
১৭৯৯ বার পঠিত, ৫১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
'যদি তোমরা সফরে থাকো এবং এ অবস্থায় দলীল লেখার জন্য কোন লেখক না পাও, তাহলে বন্ধক রেখে কাজ সম্পন্ন করো। যদি তোমাদের মধ্য থেকে কোন ব্যক্তি অন্যের ওপর ভরসা করে তার সাথে কোন কাজ কারবার করে, তাহলে যার ওপর ভরসা করা হয়েছে সে যেন তার আমানত যথাযথরূপে আদায় করে এবং নিজের রব আল্লাহকে ভয় করে। আর সাক্ষ্য কোনোক্রমেই গোপন করো না। যে ব্যক্তি সাক্ষ গোপন করে তার হৃদয় গোনাহর সংস্পর্শে কলুষিত। আর আল্লাহ তোমাদের কার্যক্রম সম্পর্কে বেখবর নন।'
[আল বাকারাহ ; আয়াত নং- ২৮৩]
'হে মুসলিমগণ! আল্লাহ তোমাদের যাবতীয় আমানত তার হকদারদের হাতে ফেরত দেবার নির্দেশ দিচ্ছেন। আর লোকদের মধ্যে ফায়সালা করার সময় “আদল” ও ন্যায়নীতি সহকারে ফায়সালা করো। আল্লাহ্ তোমাদের বড়ই উৎকৃষ্ট উপদেশ দান করেন। আর অবশ্যই আল্লাহ সবকিছু শোনেন ও দেখেন।'
[আন্ নিসা; আয়াত নং- ৫৮]
'হে ঈমানদারগণ! জেনে বুঝে আল্লাহ ও তাঁর রসূলের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করো না, নিজেদের আমানতসমূহের খেয়ানত করো না।'
[আল আনফাল; আয়াত নং- ২৭]
' নিশ্চিতভাবেসফলকাম হয়েছে মু’মিনরা যারাঃ নিজেদের নামাযে বিনয়াবনত হয়, বাজে কাজ থেকে দূরে থাকে, যাকাতের পথে সক্রিয় থাকে, নিজেদের লজ্জা-স্থানের হেফাজত করে, নিজেদের স্ত্রীদের ও অধিকারভুক্ত বাঁদিদের ছাড়া, এদের কাছে (হেফাজত না করলে) তারা তিরস্কৃত হবে না, তবে যারা এর বাইরে আরও কিছু চাইবে তারাই হবে সীমালংঘনকারী, নিজেদের আমানত ও প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে এবং নিজেদের নামায গুলো রক্ষণাবেক্ষণ করে, তারাই এমন ধরনের উত্তরাধিকারী যারা নিজেদের উত্তরাধিকার হিসেবে ফিরদাউস, লাভ করবে এবং সেখানে তারা থাকবে চিরকাল।'
[আল মুমিনূন; আয়াত নং; ১-১১]
'যারা আমানত রক্ষা করে ও প্রতিশ্রুতি পালন করে। আর যারা সাক্ষ্য দানের ক্ষেত্রে সততার ওপর অটল থাকে। যারা নামাযের হিফাযত করে। এসব লোক সম্মানের সাথে জান্নাতের বাগানসমূহে অবস্থান করবে।'
[আল মাআরিজ; আয়াত নং; ৩২-৩৫]
হযরত হুযাইফা রাদিয়াল্লাহু আনহু ও হযরত আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসূলে আকরাম ﷺ ইরশাদ করেন, মহিমাময় আল্লাহ (কিয়ামতের দিন) সমস্ত মানুষকে একত্রিত করবেন। তখন ঈমানদার লোকেরা উঠে দাঁড়াবে এবং জান্নাতকে তাদের কাছাকাছি নিয়ে আসা হবে। এ অবস্থায় তারা আদি পিতা আদম আলাইহিস সালাম এর কাছে গিয়ে নিবেদন করবে, 'হে আমাদের পিতা! আমাদের জন্য জান্নাতের দরজা খুলে দিন।'
তিনি বলবেন,' তোমাদের পিতার অপরাধই তো তোমাদেরকে জান্নাত থেকে বিতাড়িত করেছে। কাজেই আমি এর দরজা খোলার উপযুক্ত নই। তোমরা আমার পুত্র ইবরাহীম খলিলুল্লাহ্র কাছে যাও।’
রাসূলে আকরাম ﷺ বলেন,' এরপর তারা ইবরাহীম আলাইহিস সালামএর কাছে যাবে। তিনি [ইবরাহীমআলাইহিস সালাম] বলবেন,‘আমি এ দায়িত্ব পালনের যোগ্য নই। আমি শুধু বিনয়ী অর্থেই খলিল ছিলাম (কার্যত আমি এ মহান গৌরবের যোগ্য নই)।তোমরা বরং মূসা আলাইহিস সালাম-এর কাছে যাও; তিনি আল্লাহর সাথে কথা বলেছেন।'
এরপর সবাই হযরত মূসা আলাইহিস সালাম এর কাছে ছুটে যাবে। তিনিও বলবেন,' আমি এর যোগ্য নই; তোমরা ঈসা আলাইহিস সালাম-এর কাছে যাও। তিনি হচ্ছেন আল্লাহর কালেমা এবং রুহুল্লাহ হিসেবে ভাগ্যবান।'
হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম বলবেন,' জান্নাতের দরজা খোলার মতো যোগ্যতা তো আমার নেই।'
অবশেষে সবাই রাসূলে আকরাম ﷺ এর কাছে ছুটে আসবে। তিনি (মহান খোদার উদ্দেশ্যে) দণ্ডায়মান হবেন। তাঁকে (শাফ’আত করার) অনুমতি দেয়া হবে। আমানত ও দয়াশীলতা পুলসিরাতের ডান-বাম দুদিকে দাঁড়িয়ে যাবে। তোমাদের প্রথম দলটি বিদ্যুৎ বেগে পুলসিরাত অতিক্রম করবে। আমি (হুযাইফা কিংবা আবু হুরাইরা) বললাম,'(হে আল্লাহর রাসূল!) আমার পিতা-মাতা আপনার জন্য কুরবান হোক! বিদ্যুৎ বেগে অতিক্রম করার অর্থ কি?'
তিনি বললেন,' তোমরা কি দেখনি যে, চোখের পলকের মধ্যে বিদ্যুৎ আসে আবার তা চলে যায়?এরপর পালাক্রমে অন্যান্য দল বাতাসের গতিতে, পাখির গতিতে এবং দ্রুত দৌড়ানোর গতিতে পুলসিরাত অতিক্রম করবে। এ পার্থক্য তাদের কাজকর্ম বা আমলের কারণে ঘটবে।'
এ সময় তোমাদের নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পুলসিরাতের ওপর দাঁড়িয়ে আবেদন করতে থাকবেনঃ ‘প্রভু হে! (আমাদের ওপর) শান্তি বর্ষণ করুন, শান্তি বর্ষণ করুন।’
এভাবে অনেক বান্দা নেক কাজের পরিমাণ কম হওয়ায় সামনে এগুতে ব্যর্থ হবে। ফলে তারা পাছা ঘষতে ঘষতে সামনে এগুতে থাকবে। পুলসিরাতের উভয় দিকে কিছু লোহার আঁকড়া ঝুলানো থাকবে। যাকে পাকড়াও করার নির্দেশ দেয়া হবে, এগুলো তাকেই পাকড়াও করবে। তবে যার গায়ে শুধু আঁচড় লাগবে, সে রেহাই পাবে আর বাকী সবাইকে দোযখে ছুঁড়ে ফেলা হবে। বর্ণনাকারী (আবু হুরাইরা) বলেন, ‘যাঁর হাতে আমার প্রাণ তাঁর শপথ! দোযখের গভীরতা সত্তর বছরের পথের দূরত্বের সমান।'
(মুসলিম)
'যদি তোমরা সফরে থাকো এবং এ অবস্থায় দলীল লেখার জন্য কোন লেখক না পাও, তাহলে বন্ধক রেখে কাজ সম্পন্ন করো। যদি তোমাদের মধ্য থেকে কোন ব্যক্তি অন্যের ওপর ভরসা করে তার সাথে কোন কাজ কারবার করে, তাহলে যার ওপর ভরসা করা হয়েছে সে যেন তার আমানত যথাযথরূপে আদায় করে এবং নিজের রব আল্লাহকে ভয় করে। আর সাক্ষ্য কোনোক্রমেই গোপন করো না। যে ব্যক্তি সাক্ষ গোপন করে তার হৃদয় গোনাহর সংস্পর্শে কলুষিত। আর আল্লাহ তোমাদের কার্যক্রম সম্পর্কে বেখবর নন।'
[আল বাকারাহ ; আয়াত নং- ২৮৩]
'হে মুসলিমগণ! আল্লাহ তোমাদের যাবতীয় আমানত তার হকদারদের হাতে ফেরত দেবার নির্দেশ দিচ্ছেন। আর লোকদের মধ্যে ফায়সালা করার সময় “আদল” ও ন্যায়নীতি সহকারে ফায়সালা করো। আল্লাহ্ তোমাদের বড়ই উৎকৃষ্ট উপদেশ দান করেন। আর অবশ্যই আল্লাহ সবকিছু শোনেন ও দেখেন।'
[আন্ নিসা; আয়াত নং- ৫৮]
'হে ঈমানদারগণ! জেনে বুঝে আল্লাহ ও তাঁর রসূলের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করো না, নিজেদের আমানতসমূহের খেয়ানত করো না।'
[আল আনফাল; আয়াত নং- ২৭]
প্লিজ, কন্টিনিউ ইট!
জাযাকাল্লাহ খাইরান!
' নিশ্চিতভাবেসফলকাম হয়েছে মু’মিনরা যারাঃ নিজেদের নামাযে বিনয়াবনত হয়, বাজে কাজ থেকে দূরে থাকে, যাকাতের পথে সক্রিয় থাকে, নিজেদের লজ্জা-স্থানের হেফাজত করে, নিজেদের স্ত্রীদের ও অধিকারভুক্ত বাঁদিদের ছাড়া, এদের কাছে (হেফাজত না করলে) তারা তিরস্কৃত হবে না, তবে যারা এর বাইরে আরও কিছু চাইবে তারাই হবে সীমালংঘনকারী, নিজেদের আমানত ও প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে এবং নিজেদের নামায গুলো রক্ষণাবেক্ষণ করে, তারাই এমন ধরনের উত্তরাধিকারী যারা নিজেদের উত্তরাধিকার হিসেবে ফিরদাউস, লাভ করবে এবং সেখানে তারা থাকবে চিরকাল।'
[আল মুমিনূন; আয়াত নং; ১-১১]
[আল মাআরিজ; আয়াত নং; ৩২-৩৫]
হযরত হুযাইফা রাদিয়াল্লাহু আনহু ও হযরত আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসূলে আকরাম ﷺ ইরশাদ করেন, মহিমাময় আল্লাহ (কিয়ামতের দিন) সমস্ত মানুষকে একত্রিত করবেন। তখন ঈমানদার লোকেরা উঠে দাঁড়াবে এবং জান্নাতকে তাদের কাছাকাছি নিয়ে আসা হবে। এ অবস্থায় তারা আদি পিতা আদম আলাইহিস সালাম এর কাছে গিয়ে নিবেদন করবে, 'হে আমাদের পিতা! আমাদের জন্য জান্নাতের দরজা খুলে দিন।'
তিনি বলবেন,' তোমাদের পিতার অপরাধই তো তোমাদেরকে জান্নাত থেকে বিতাড়িত করেছে। কাজেই আমি এর দরজা খোলার উপযুক্ত নই। তোমরা আমার পুত্র ইবরাহীম খলিলুল্লাহ্র কাছে যাও।’
রাসূলে আকরাম ﷺ বলেন,' এরপর তারা ইবরাহীম আলাইহিস সালামএর কাছে যাবে। তিনি [ইবরাহীমআলাইহিস সালাম] বলবেন,‘আমি এ দায়িত্ব পালনের যোগ্য নই। আমি শুধু বিনয়ী অর্থেই খলিল ছিলাম (কার্যত আমি এ মহান গৌরবের যোগ্য নই)।তোমরা বরং মূসা আলাইহিস সালাম-এর কাছে যাও; তিনি আল্লাহর সাথে কথা বলেছেন।'
এরপর সবাই হযরত মূসা আলাইহিস সালাম এর কাছে ছুটে যাবে। তিনিও বলবেন,' আমি এর যোগ্য নই; তোমরা ঈসা আলাইহিস সালাম-এর কাছে যাও। তিনি হচ্ছেন আল্লাহর কালেমা এবং রুহুল্লাহ হিসেবে ভাগ্যবান।'
হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম বলবেন,' জান্নাতের দরজা খোলার মতো যোগ্যতা তো আমার নেই।'
অবশেষে সবাই রাসূলে আকরাম ﷺ এর কাছে ছুটে আসবে। তিনি (মহান খোদার উদ্দেশ্যে) দণ্ডায়মান হবেন। তাঁকে (শাফ’আত করার) অনুমতি দেয়া হবে। আমানত ও দয়াশীলতা পুলসিরাতের ডান-বাম দুদিকে দাঁড়িয়ে যাবে। তোমাদের প্রথম দলটি বিদ্যুৎ বেগে পুলসিরাত অতিক্রম করবে। আমি (হুযাইফা কিংবা আবু হুরাইরা) বললাম,'(হে আল্লাহর রাসূল!) আমার পিতা-মাতা আপনার জন্য কুরবান হোক! বিদ্যুৎ বেগে অতিক্রম করার অর্থ কি?'
তিনি বললেন,' তোমরা কি দেখনি যে, চোখের পলকের মধ্যে বিদ্যুৎ আসে আবার তা চলে যায়?এরপর পালাক্রমে অন্যান্য দল বাতাসের গতিতে, পাখির গতিতে এবং দ্রুত দৌড়ানোর গতিতে পুলসিরাত অতিক্রম করবে। এ পার্থক্য তাদের কাজকর্ম বা আমলের কারণে ঘটবে।'
এ সময় তোমাদের নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পুলসিরাতের ওপর দাঁড়িয়ে আবেদন করতে থাকবেনঃ ‘প্রভু হে! (আমাদের ওপর) শান্তি বর্ষণ করুন, শান্তি বর্ষণ করুন।’
এভাবে অনেক বান্দা নেক কাজের পরিমাণ কম হওয়ায় সামনে এগুতে ব্যর্থ হবে। ফলে তারা পাছা ঘষতে ঘষতে সামনে এগুতে থাকবে। পুলসিরাতের উভয় দিকে কিছু লোহার আঁকড়া ঝুলানো থাকবে। যাকে পাকড়াও করার নির্দেশ দেয়া হবে, এগুলো তাকেই পাকড়াও করবে। তবে যার গায়ে শুধু আঁচড় লাগবে, সে রেহাই পাবে আর বাকী সবাইকে দোযখে ছুঁড়ে ফেলা হবে। বর্ণনাকারী (আবু হুরাইরা) বলেন, ‘যাঁর হাতে আমার প্রাণ তাঁর শপথ! দোযখের গভীরতা সত্তর বছরের পথের দূরত্বের সমান।'
(মুসলিম)
'যদি তোমরা সফরে থাকো এবং এ অবস্থায় দলীল লেখার জন্য কোন লেখক না পাও, তাহলে বন্ধক রেখে কাজ সম্পন্ন করো। যদি তোমাদের মধ্য থেকে কোন ব্যক্তি অন্যের ওপর ভরসা করে তার সাথে কোন কাজ কারবার করে, তাহলে যার ওপর ভরসা করা হয়েছে সে যেন তার আমানত যথাযথরূপে আদায় করে এবং নিজের রব আল্লাহকে ভয় করে। আর সাক্ষ্য কোনোক্রমেই গোপন করো না। যে ব্যক্তি সাক্ষ গোপন করে তার হৃদয় গোনাহর সংস্পর্শে কলুষিত। আর আল্লাহ তোমাদের কার্যক্রম সম্পর্কে বেখবর নন।'
[আল বাকারাহ ; আয়াত নং- ২৮৩]
'হে মুসলিমগণ! আল্লাহ তোমাদের যাবতীয় আমানত তার হকদারদের হাতে ফেরত দেবার নির্দেশ দিচ্ছেন। আর লোকদের মধ্যে ফায়সালা করার সময় “আদল” ও ন্যায়নীতি সহকারে ফায়সালা করো। আল্লাহ্ তোমাদের বড়ই উৎকৃষ্ট উপদেশ দান করেন। আর অবশ্যই আল্লাহ সবকিছু শোনেন ও দেখেন।'
[আন্ নিসা; আয়াত নং- ৫৮]
হে ঈমানদারগণ! জেনে বুঝে আল্লাহ ও তাঁর রসূলের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করো না, নিজেদের আমানতসমূহের খেয়ানত করো না।'
[আল আনফাল; আয়াত নং- ২৭]
' নিশ্চিতভাবেসফলকাম হয়েছে মু’মিনরা যারাঃ নিজেদের নামাযে বিনয়াবনত হয়, বাজে কাজ থেকে দূরে থাকে, যাকাতের পথে সক্রিয় থাকে, নিজেদের লজ্জা-স্থানের হেফাজত করে, নিজেদের স্ত্রীদের ও অধিকারভুক্ত বাঁদিদের ছাড়া, এদের কাছে (হেফাজত না করলে) তারা তিরস্কৃত হবে না, তবে যারা এর বাইরে আরও কিছু চাইবে তারাই হবে সীমালংঘনকারী, নিজেদের আমানত ও প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে এবং নিজেদের নামায গুলো রক্ষণাবেক্ষণ করে, তারাই এমন ধরনের উত্তরাধিকারী যারা নিজেদের উত্তরাধিকার হিসেবে ফিরদাউস, লাভ করবে এবং সেখানে তারা থাকবে চিরকাল।'
[আল মুমিনূন; আয়াত নং; ১-১১]
'যারা আমানত রক্ষা করে ও প্রতিশ্রুতি পালন করে। আর যারা সাক্ষ্য দানের ক্ষেত্রে সততার ওপর অটল থাকে। যারা নামাযের হিফাযত করে। এসব লোক সম্মানের সাথে জান্নাতের বাগানসমূহে অবস্থান করবে।'
[আল মাআরিজ; আয়াত নং; ৩২-৩৫]
মন্তব্য করতে লগইন করুন