কন্যা সমাচার-২
লিখেছেন লিখেছেন ফাতিমা মারিয়াম ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৩, ১২:৩৫:০৬ দুপুর
কন্যাসমাচার-১ যেদিন ব্লগে দিয়েছিলাম সেদিন আমার ছোট মেয়ে বেশ মন খারাপ করে বলল- ‘আপুকে সবাই কত্ত ভালো বলছে। আমিতো কবিতা লিখতে পারিনা। আমাকে কেউ কিছু বলেও না।‘
আমি ওকে উৎসাহ দিয়ে বললাম, ‘কে বলেছে তুমি কবিতা লিখতে পারনা? তুমি যখন ক্লাস ফোরে পড়বে তখন তুমিও এমন কবিতা লিখতে পারবে, ইনশা আল্লাহ।‘
-সেটাতো অনেক পরে। কিন্তু এখন?’ (অশ্রুভরা নয়নে......)
-আচ্ছা, ঠিক আছে তাহলে তুমিও লিখতে চেষ্টা কর। তবে তোমার পরীক্ষা শেষ হোক; তারপরে লিখো।‘
তখন ওর বার্ষিক পরীক্ষা শুরুই হয়নি। এই সমস্যারও সমাধান সে-ই করলো। ‘আচ্ছা মামণি প্রতিদিন একটু একটু করে লিখলে কেমন হয়?’
ওর আগ্রহ দেখে আমি ‘না’ বলতে পারলামনা।
আমার কাছ থেকে একটি ডায়েরী পেল। প্রবল উৎসাহ নিয়ে লেখার কাজে হাত দিলো। তবে লেখা শুরু করার আগে আমাকে বলল, ‘আমি কবিতা লিখবনা......... গল্প লিখবো।‘ প্রতিদিন কয়েক লাইন লিখে...... যে লাইনটা পছন্দ হয়না সেটা মুছে দিয়ে আবার লিখে......এভাবেই ৬/৭ দিনে পুরো একটি গল্প লিখে ফেলল। সে যে কী আগ্রহ!!! কয়েক লাইন লিখেই বাসার সবাইকে দেখায়...... আমার কাছে এসে বলে, ‘দেখতো বানান ঠিক আছে কিনা?’
অবশেষে পরীক্ষা শুরু হওয়ার আগেই সে গল্পটা লিখা শেষ করলো। তার দাবী হল আমার গল্পের সাথে তুমি আমার নাম দিয়ে দিবে। আমাদের ক্ষুদে গল্পকারের নাম উনাইসাহ্। সে এবার ক্লাস ওয়ান থেকে বার্ষিক পরীক্ষা দিয়েছে।
--------- ---------- ---------
বুদ্ধিমান ছেলে(গল্প)
-উনাইসাহ্
একদিন এক ছেলে হাঁটতে হাঁটতে গভীর বনে চলে গিয়েছে। সে জানত না যে গভীর বনে ভয়ঙ্কর কিছু থাকে নাকি। আশে পাশে কেউ নেই। শুধু গাছ আর গাছ। এখন অনেক রাত হয়ে গেছে। সে বাড়ী যাবে কি করে?
ছেলেটি ভাবছে - আমিতো অন্ধকারে কিছু দেখতে পাচ্ছিনা। পরে সে একটি গাছ দেখতে পেল। সেখানে বসে সে বিশ্রাম নিল।
সেখানে সে একটি সাপ দেখতে পেল। সাপের ভিতরে থাকে অ-নে-ক বিষ। ছেলেটির কাছে একটি লাঠি ছিল। সেই লাঠি দিয়ে সাপটিকে পিটাতে লাগলো। পরে সাপটি মরে গেল। বাড়ী যাওয়ার সময় হয়ে গেছে। ভাবতে ভাবতে তার মাথায় একটি বুদ্ধি এলো।
সে ভাবছে -আমিতো দুটি ছোট ছোট পাথর নিয়ে একটা শুকনা গাছের ডালের কাঠের ওপর আগুন জ্বালিয়ে বাড়ী যেতে পারবো। ছেলেটি তাই করলো। পরে সে কাঠটি হাতে নিয়ে হাঁটতে লাগলো।
হাঁটতে হাঁটতে একটি লোকের সাথে দেখা হল। লোকটি বলল – ‘ভাই এত রাতে কোথায় যাচ্ছ?’
ছেলেটি বলল- ‘আমিতো পথ হারিয়ে ফেলেছি। এখন পথ খুঁজে নিয়েছি। এবার আমি বাড়ী যাচ্ছি।‘
লোকটি বলল- ‘থাক, এত রাতে তোমার বাড়ি যাওয়া লাগবেনা। তুমি আমার বাড়ি থাক। কাল সকালে তোমার বাড়ি যেও।‘
ছেলেটি বলল- ‘না না এখন অনেক রাত হয়ে গেছে। কাল সকালে তোমার বাড়ি আসব।‘
লোকটি ওকে জোর করে তার বাড়ি নিয়ে গেল। লোকটির বাড়িতে একটি অদ্ভুত জিনিস ছিল। জিনিসটি দেখতে বাল্বের মত। সেখানে একটি সুইচ ছিল। সুইচটি টিপ দিলেই মানুষ মরে যায়।
লোকটি ওকে বলল- ‘সুইচ টিপ দাও।‘
ছেলেটি বলল- ‘না আমি এই সুইচ টিপ দেব না।‘
লোকটি বলল-‘টিপ দাও। কিছু হবে না।‘
ছেলেটি বলল-‘পিছনে তাকাও।‘
লোকটি তাকানোর পর ছেলেটি দৌড় দিয়ে পালিয়ে গেল। তারপরে সে বাড়ি চলে গেল। সে মনে মনে প্রমিজ করলো আর কখনো একা একা কোথাও যাবেনা।
[০৫-১২-১৩]
বিষয়: বিবিধ
১৯৯৫ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন