মুত্তাফাকুন আলাইহি-২২
লিখেছেন লিখেছেন ফাতিমা মারিয়াম ২৯ নভেম্বর, ২০১৩, ১১:০৫:০৮ সকাল
বিদ’আত ( অথবা দ্বীনের মধ্যে নতুন বিষয়ের প্রচলন) নিষিদ্ধ
৭৪) হযরত আয়িশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বর্ণনা করেন, রাসূলে আকরাম ﷺ বলেছেন,‘ কোনো ব্যক্তি যদি আমাদের এই দ্বীনের ভেতর এমন কিছু প্রবর্তন করে, যা তার অন্তর্ভুক্ত নয়, তবে তা প্রত্যাখ্যাত। ‘
সহীহ মুসলিমের অন্য এক বর্ণনায় বলা হয়েছে। যে ব্যক্তি কোনো কাজ করে যা আমাদের দ্বীনের অন্তর্ভুক্ত নয় তা অগ্রহণযোগ্য।
.
ভালো কিংবা মন্দ পন্থা উদ্ভাবন
৭৫) হযরত ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসূলে আকরামﷺ বলেছেন, ‘যে ব্যক্তিই অন্যায়ভাবে নিহত হবে, তার রক্তপাতের দায়িত্ব হযরত আদম আলাইহিস সালাম এর প্রথম হত্যাকারী সন্তানের (কাবীল) ওপর বর্তাবে। কারণ সে-ই প্রথম ব্যক্তি, যে হত্যার নিয়ম চালু করেছে।’
.
কল্যাণের পথ প্রদর্শন এবং পুণ্য পথ কিংবা পথভ্রষ্টতার দিকে আহবান করার ফল
৭৬) হযরত আবুল আব্বাস সাহল ইবনে সা’দ সায়েদী রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসূলে আকরাম ﷺ খায়বার যুদ্ধের দিন বলেন,’ আমি আগামীকাল অবশ্যই এই পতাকা এমন এক ব্যক্তির হাতে তুলে দেব যার মাধ্যমে আল্লাহ নিশ্চিত বিজয় এনে দেবেন। সে ব্যক্তি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে ভালোবাসে এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসূলও তাঁকে ভালোবাসেন।
সাহাবীরা রাতভর চিন্তা-ভাবনা ও গবেষণা করতে লাগলেন যে, কার হাতে এই পতাকা তুলে দেয়া হবে। সকাল বেলা সবাই পতাকা লাভের আশায় রাসূলে আকরাম ﷺএর নিকট এসে হাজির হলেন। কিন্তু, রাসূলে আকরাম ﷺ জিজ্ঞেস করলেন,
‘আলী ইবনে আবু তালিব কোথায়?’
তাঁকে বলা হলো ‘হে আল্লাহর রাসূল! তিনি চোখের যন্ত্রণায় ভূগছেন।’
রাসূলে আকরাম ﷺ বলেন,’ তার কাছে লোক পাঠাও।’
তারপর তাকে ডেকে আনা হলো। রাসূলে আকরাম ﷺতার দুই চোখে থুথু ছিটিয়ে দিলেন এবং তার আরোগ্যের জন্য (আল্লাহর কাছে) দোয়া করলেন। তিনি এতে এমনভাবে আরোগ্য লাভ করলেন যেন তার (চোখে) কোন রোগই ছিল না। আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসূল! শত্রুরা আমাদের মতো (মুসলমান) না হওয়া পর্যন্ত আমি কি তাদের সাথে যুদ্ধ চালিয়ে যাবো?’
রাসূলে আকরাম ﷺ বললেন,’ তুমি তাদের এলাকায় উপনীত না হওয়া পর্যন্ত এগুতে থাকবে। এরপর তাদেরকে ইসলামের দিকে আহবান জানাবে এবং আল্লাহর হক আদায়ের ব্যাপারে তাদের করণীয় নির্দেশ করবে। আল্লাহর কসম! তোমার মাধ্যমে আল্লাহ একটি লোককেও সুপথ প্রদর্শন করলে সেটা তোমার জন্য (মূল্যবান) লাল উটের চেয়ে উত্তম। ‘
.
কল্যাণ ও আল্লাহভীতিকর কাজে পারস্পরিক সহযোগিতা
৭৭) হযরত আবু আবদুর রহমান যায়েদ ইবনে খালিদ আল জুহানী রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসূলে আকরাম ﷺ ইরশাদ করেন,’ যে ব্যক্তি কোন মুজাহিদকে জিহাদে সাজ-সরঞ্জাম সংগ্রহ করে দিল, সে যেন নিজেই জিহাদে অংশগ্রহণ করল। আর যে ব্যক্তি কোন মুজাহিদের পরিবারবর্গের সাথে তার অনুপস্থিতিতে কল্যাণময় আচরণ করল, সেও যেন জিহাদে অংশগ্রহণ করল।’
৭৮) হযরত আবু মূসা আশ’আরী রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসূলে আকরাম ﷺ বলেন, ‘মুসলমান কোষাধ্যক্ষ হচ্ছে আমানতদার ব্যক্তি, তাকে যা নির্দেশ দেয়া হয়, সে তা নির্দ্বিধায় পালন করে, যাকে কিছু দান করার জন্যে বলা হলে, সে মনের আনন্দে তা পূর্ণমাত্রায় দান করে। তাকে যে জিনিস যার কাছে হস্তান্তর করার নির্দেশ দেয়া হয়, সে তার কাছেই তা হস্তান্তর করে। এহেন ব্যক্তির নাম সদকাকারীদের নামের তালিকায় লিপিবদ্ধ করা হয়।’
.
(বুখারী ও মুসলিম)
.
[ রিয়াদুস সালেহীন থেকে সংগৃহিত। হাদিস নং- ১৬৯, ১৭২, ১৭৫, ১৭৭ ও ১৮০]
মুত্তাফাকুন আলাইহি-২১
বিষয়: বিবিধ
১৬১৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন