ছন্দে ছন্দে আল কুরআন -২৯

লিখেছেন লিখেছেন ফাতিমা মারিয়াম ১৩ নভেম্বর, ২০১৩, ১০:৫২:০৮ সকাল

বিশ্ব-জাহানের কর্তৃত্ব

************************


অতি মহান ও শ্রেষ্ঠ তিনি,

যাঁর হাতে রয়েছে সমগ্র বিশ্ব-জাহানের কর্তৃত্ব জানি।

তিনিই সবকিছুর ওপর ক্ষমতা রাখেন,

(তিনি যা ইচ্ছা তা-ই করতে পারেন)।

.

তোমাদের মধ্যে কে উত্তম তা পরীক্ষা করার তরে,

তিনি মৃত্যু ও জীবন সৃষ্টি করেছেন (হিসেব নেবেন পরে)।

পরাক্রমশালী ও ক্ষমাশীল তিনি,

সাতটি আকাশ স্তরে স্তরে সাজিয়েছেন যিনি।

.

রহমানের সৃষ্টিকর্মে পাবে না কোন অসঙ্গতি,

আবার চোখ ফিরিয়ে দেখ, কোন ত্রুটি দেখতে পাচ্ছ কি?

দৃষ্টি ফিরিয়ে দেখ তুমি বারবার!

ক্লান্ত ও ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসবে দৃষ্টি তোমার!!!

.

তোমাদের অতি কাছের আসমানকে,

সুবিশাল প্রদীপমালায় সজ্জিত করেছি তাকে।

এগুলো শয়তানদের মেরে তাড়ানোর উপকরণ,

এসব শয়তানের জন্য প্রস্তুত করে রেখেছি জ্বলন্ত আগুন।

.

যেসব লোক অস্বীকার করে তাদের রবকে,

তাদের জন্য প্রস্তুত করে রেখেছি জাহান্নামের শাস্তিকে।

সেটি খারাপ জায়গা অতি।

(সেখানে তাদের দেয়া হবে কঠিন শাস্তি)।

.

যখন তাদেরকে সেখানে নিক্ষেপ করা হবে,

তখন তারা তার ভয়ানক গর্জনের শব্দ শুনতে পাবে।

টগবগ করে ফুটতে থাকবে সেই জ্বলন্ত আগুন,

অত্যধিক রোষে ফেটে পড়ার উপক্রম হবে তখন।

.

এর মধ্যে যখনই কোন দলকে নিক্ষেপ করা হবে।

'সাবধানকারী আসেনি কি কেউ?' ব্যবস্থাপকরা জিজ্ঞেস করবে।

জবাবে তারা বলবে, 'হ্যাঁ, এসেছিলো!

আমাদের কাছে তারা মিথ্যাবাদী আখ্যা পেয়েছিলো।'

.

'তাদেরকে আমরা বলেছিলাম,'আল্লাহ কিছুই করেননি নাযিল,

ভুলের মধ্যে পড়ে আছো তোমরাই(আমাদের ভুল নেই একতিল)।

অসহায় কণ্ঠে তারা আরো বলবে,'আহা!

আমরা যদি শুনতাম- বুঝতাম (বলেছিল তারা যাহা)।

.

তাহলে আজ এ জ্বলন্ত আগুনে নিক্ষিপ্ত হতাম না,

সাজাপ্রাপ্ত হয়ে আল্লাহর কাছে শাস্তি পেতাম না।

এভাবেই তারা নিজেদের অপরাধ স্বীকার করবে,

এসব দোযখবাসীদের ওপর আল্লাহর লানত পড়বে।

.

না দেখেও যারা তাদের রবকে অতিশয় ভয় করে,

নিশ্চয়ই তারা ক্ষমা পাবে, ভূষিত হবে বিরাট পুরস্কারে।

নীচুস্বরে অথবা উচ্চস্বরে যেভাবেই বলো কথা,

আল্লাহর কাছে দু'টোই সমান তিনি জানেন মনের অবস্থা।

.

সৃষ্টি করেছেন যিনি,

জানবেন না কি তোমাদের সব কিছুই তিনি?

তিনি সূক্ষ্মদর্শী ও সব বিষয় ভালভাবে অবগত,

তিনিই তো ভূপৃষ্ঠকে করেছেন তোমাদের অনুগত।

.

এর ওপর চলাফেরা করো তাঁর দেয়া রিযিক খাও,

তাঁর কাছেই ফিরে যেতে হবে (এই কথা জেনে নাও)।

আসমানে আছেন যিনি,

মাটির মধ্যে তোমাদের ধ্বসিয়ে দেবেন তিনি।

.

অকস্মাৎ ভুপৃষ্ঠ ঝাঁকুনি খেতে থাকবে জোরে,

তোমরা কি নির্ভয় হয়ে গিয়েছো এ ব্যাপারে ?

যিনি আসমানে আছেন,

তিনি তোমাদের ওপর পাথর বর্ষণকারী হাওয়া পাঠাবেন।

.

এ ব্যাপারেও কি তোমরা হয়ে গেছ নির্ভয়?

আমার সাবধানবাণী কেমন ছিলো? তখন জানবে নিশ্চয়!

তাদের পূর্বের লোকেরাও মিথ্যা আরোপ করেছিল,

ফলে আমার পাকড়াও কত না কঠিন হয়েছিল!

.

তারা কি দেখেনা উড়ন্ত পাখীগুলোকে?

তাদের মাথার ওপর ডানা মেলতে ও গুটিয়ে নিতে?

রহমান ছাড়া আর কেউ নেই যিনি তাদেরকে ধরে রাখেন,

তিনিই সব কিছুর রক্ষণাবেক্ষণ করেন।

.

বলো তো, তোমাদের কাছে কি এমন কোন বাহিনী আছে?

যা রহমানের বিরুদ্ধে তোমাদেরকে সাহায্য করতে পারে?

বাস্তব অবস্থা হলো এই,

এসব কাফেররা ধোঁকায় পড়ে আছে (সঠিক পথে নেই)।

.

অথবা যদি রহমান তোমাদের রিযিক দেন বন্ধ করে,

তবে এমন কি কেউ আছে তোমাদের রিযিক দিতে পারে?

প্রকৃতপক্ষে এইসব লোক,

বিদ্রোহ ও সত্য বিমুখতায় বদ্ধপরিকর(বন্ধ এদের চোখ)।

.

ভেবে দেখো, কে সঠিক পথে আছে?

যে ব্যক্তি মুখ নিচু করে বাঁকাপথে চলছে?

না কি মাথা উঁচু করে সোজাপথে চলে যে,

সে-ই সঠিক সমতল পথে হাঁটছে?

.

এদেরকে বলো, আল্লাহই তো তোমাদের সৃষ্টি করেছেন,

তিনি শ্রবণশক্তি, দৃষ্টিশক্তি ও বিবেক-বুদ্ধি দিয়েছেন।

তোমরা খুব কমই প্রকাশ করো কৃতজ্ঞতা,

(নিয়ামতরাজী ভোগ করে চলো অবনত নয় মাথা)।

.

আল্লাহই তোমাদের পৃথিবীব্যাপী ছড়িয়ে দিয়েছেন,

তোমরা সেই সত্তার কাছেই সমবেত হবে (তা জানিয়েছেন)।

এরা বলে, 'তোমরা যদি সত্যবাদী হও; তবে

বলো এ ওয়াদা কবে বাস্তবায়িত হবে?'

.

বলে দাও তাদের, ' এ বিষয়ে জ্ঞান আছে,

শুধুমাত্র আল্লাহতা'লার কাছে।

আমি স্পষ্ট সতর্ককারী আর কিছুই না।'

(মেনে নাও আজ তার কথা সেদিন ধ্বংস হয়োনা)।

.

তারপর এরা যখন ঐ জিনিসকে কাছেই দেখতে পাবে,

অস্বীকারকারীদের চেহারা বিবর্ণ হয়ে যাবে।

তাদেরকে বলা হবে তখন,

এ-তো সেই জিনিস যা দেখতে চাচ্ছিলে (কি করবে এখন)?

.

হে নবী! এদেরকে দাও বলে,

'তোমরা কখনো ভেবেছো কি (কি হবে আল্লাহর আযাব এলে)?

আল্লাহ যদি আমাকে ও আমার সাথীদেরকে,

ধ্বংস কিংবা রহম করেন তোমাদের কি লাভ তাতে?

.

কঠিন শাস্তি থেকে তোমাদের রক্ষা করবে কে?

(ভাবতে থাক কে বাঁচাবে তোমাদেরকে?)

মহান রব অতি দয়ালু, ঈমান এনেছি তাঁর ওপর,

একমাত্র তাঁরই ওপর করেছি আমরা নির্ভর।

.

অচিরেই তোমরা জানতে পারবে,

কে স্পষ্ট বিভ্রান্তির মধ্যে আছে ডুবে?

(হে নবী!) তুমি এদেরকে বলো, ভেবে দেখেছ কি?

তোমাদের কুয়াগুলোর পানি মাটির গভীরে নেমে যায় যদি?

.

তাহলে পানির এ বহমান স্রোত কে ফিরিয়ে এনে দেবে?

(সেই রবের ওপর ঈমান আনো পরকালে নাজাত পাবে )।

.

[সূরা আল মূলক]

.

ছন্দে ছন্দে আল কুরআন -২৮

বিষয়: বিবিধ

১৮৮৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File