মুত্তাফাকুন আলাইহি-১৭

লিখেছেন লিখেছেন ফাতিমা মারিয়াম ২৩ অক্টোবর, ২০১৩, ০৭:১৯:০৩ সন্ধ্যা



উত্তম/কল্যাণকর কাজ -২

.

.

৫৭) হযরত আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসূলে আকরাম বলেছেন, ‘জনৈক ব্যক্তি একটি রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিল। পথিমধ্যে তার খুব তৃষ্ণা লাগল। এমনি অবস্থায় সে একটি (অগভীর) কূয়া দেখতে পেল। লোকটি তাতে নেমে পানি পান করে বেরিয়ে এসে দেখল, একটি কুকুর পিপাসায় অস্থির হয়ে জিহ্‌বা বের করছে এবং ভিজামাটি চাটছে। লোকটি ভাবল, আমি যেমন পিপাসার্ত হয়েছিলাম, তেমনি এ কুকুরটিও পিপাসায় কাতরাচ্ছে। তাই সে কুয়ায় নেমে তার মোজায় পানি ভরে নিজের মুখ দিয়ে ধরে কুয়া থেকে উঠে এল। তারপর সে কুকুরটিকে পানি পান করিয়ে তাকে তৃপ্ত করল। এতে আল্লাহ তার প্রতি দয়া প্রদর্শন করলেন এবং তার গুনাহসমূহ মাফ করে দিলেন।’

সাহাবীগণ জিজ্ঞেস করলেন, ‘হে আল্লাহর রাসূল! পশুদের উপকার করলেও কি আমাদের সওয়াব হবে?’

তিনি বললেন,' প্রতিটি প্রাণীর ব্যাপারেই সওয়াব আছে।’

বুখারী ও মুসলিমের অপর এক বর্ণনায় উল্লেখিত হয়েছে,’একদা একটি কুকুর (অস্থিরভাবে) চারদিকে ঘুরছিল। কুকুরটির পিপাসায় মরে যাবার উপক্রম হয়েছিল। এমন সময় বনী ইসরাইলের এক ব্যাভিচারী নারী তাকে দেখতে পেল। সে নিজের মোজা খুলে কুয়া থেকে পানি তুলে কুকুরটিকে পান করালো এবং এ জন্যে তাকে ক্ষমা করে দেয়া হলো।’

৫৮) হযরত আবু মূসা আশ্‌আরী রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসূলে আকরাম বলেছেন, ‘ যে ব্যক্তি ফজর ও আসরের নামায (যথারীতি) আদায় করল সে জান্নাতে প্রবেশ করল।’

৫৯) হযরত ‘আদী ইবনে হাতিম রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, ‘আমি রাসূলে আকরাম কে বলতে শুনেছি ‘(তোমারা) আগুন থেকে বাঁচো, তা একটা খেজুরের অর্ধেকটা দান করে হলেও।’

বুখারী ও মুসলিমের অপর এক বর্ণনায় আছে, রাসূলে আকরাম বলেছেন, ‘তোমাদের প্রত্যেকের সাথে তার প্রভু (রব্ব) অচিরেই কথা বলবেন এমন অবস্থায় যে, উভয়ের মধ্যে কোন মাধ্যম বা দোভাষী থাকবে না। মানুষ তার ডান দিকে তাকালে নিজের কৃতকর্মই দেখতে পাবে। বাম দিকে তাকালেও নিজের কৃতকর্মই দেখতে পাবে। আর সামনে তাকালে তো তার মুখের সামনে আগুনই দেখতে পাবে। কাজেই একটা খেজুরের অর্ধেকটা দান করে হলেও তোমরা আগুন থেকে বাঁচো। আর কোন ব্যক্তি তাও না পারলে অন্তত ভালো কথা দ্বারা (আগুন থেকে বাঁচার চেষ্টা করবে)।'

৬০) হযরত আবু মূসা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসূলে আকরাম বলেছেন, ‘প্রতিটি মুসলিমের ওপর সাদাকা (দান-খয়রাত) ওয়াজিব।’

জনৈক সাহাবী বললেন, ‘কিন্তু সে যদি (সাদাকাহ) দেওয়ার কোন কিছু না পায়?’

তিনি বললেন, ‘তাহলে সে নিজ হাতে কাজ করে নিজেকে লাভবান করবে এবং সাদাকাও দেবে।’

‘আর সে যদি তাও না পারে?’

তিনি বললেন, ‘তাহলে সে দুঃস্থ ও অভাবী লোকদের সাহায্য করবে।’

সাহাবী বললেন, ‘সে যদি তাও না পারে?’

তিনি বললেন, ‘তাহলে সে (লোকদেরকে) ভালো কাজের আদেশ করবে।’

সাহাবী বললেন, ‘যদি সে এটাও না করতে পারে?’

তিনি বললেন,’তাহলে সে অন্তত নিজেকে মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখবে। কেননা, এটাও তার জন্য সাদাকাহ।’

.

.

[বুখারী ও মুসলিম]

.

.

[ রিয়াদুস সালেহীন থেকে সংগৃহিত। হাদিস নং যথাক্রমে ১২৬, ১৩২, ১৩৯ ও ১৪১ ]

.

.

মুত্তাফাকুন আলাইহি-১৬

.

.

এ বিষয় সংক্রান্ত আরো হাদিস পড়তে চাইলে দেখতে পারেন আলোকের ঝর্ণাধারা

বিষয়: বিবিধ

১৫১৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File