মুত্তাফাকুন আলাইহি-১৪

লিখেছেন লিখেছেন ফাতিমা মারিয়াম ০৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৩, ০১:৩৬:৫৮ দুপুর



চেষ্টা-সাধনা---২

***********************


.

৪৮) হযরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, আমার চাচা আনাস ইবনে নাদ্‌র রাদিয়াল্লাহু আনহু বদরের যুদ্ধে অনুপস্থিত ছিলেন। এ কারণে তিনি বলেন, ‘হে আল্লাহর রাসূল মুশরিকদের বিরুদ্ধে আপনার পরিচালিত কোনো যুদ্ধে এই প্রথম আমি অনুপস্থিত ছিলাম। এখন আল্লাহ যদি আমায় মুশরিকদের বিরুদ্ধে কোনো যুদ্ধে সুযোগ করে দেন, তাহলে আমি কি করতে পারি, তা নিশ্চয়ই তিনি (আল্লাহ) (মানুষকে) দেখিয়ে দিবেন।’

অতঃপর ওহুদের যুদ্ধের দিন এলে মুসলমানরা কাফেরদের আক্রমণের সম্মুখীন হলেন। অর্থ্যাৎ দৃশ্যত তাদের পরাজয় ঘটলো। তখন ইবনে নাদ্‌র বললেন,’হে আল্লাহ! আমার সঙ্গীরা যা করেছে, আমি সেজন্য তোমার নিকট ওযর পেশ করছি এবং মুশরিকদের কার্যকলাপের সাথে আমার সম্পূর্ণ নিঃসম্পর্কতা ঘোষণা করছি।’

এরপর তিনি সামনে এগুতে থাকলে সা’দ ইবনে মু’আযের সাথে সাক্ষাত হলো। তখন তাকে তিনি বললেন, ‘হে সা’দ ইবনে মু’আয! কা’বার প্রভুর কসম! আমি ওহুদের পেছন থেকে জান্নাতের খুশবু পাচ্ছি।’

সা’দ বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসূল সে যে কি করেছে, আমি তা বর্ণনা করতে পারছি না।’

আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, ‘আমরা তার শরীরে তরবারীর অথবা বর্শার কিংবা তীরের আশিটির বেশি আঘাত দেখেছি। আরো দেখেছি সে শাহাদাত বরণ করেছে আর মুশরিকরা তার দেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ (বিশ্রীভাবে) কেটে ফেলেছে। ফলে আমরা কেউ তাকে চিনতেই পারলাম না। অবশ্য তাঁর বোন তাঁর আঙ্গুলের ডগা দেখে তাঁকে চিনতে পারলেন।’

আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন,’ আমরা ধারণা করলাম যে, তাঁর ও তাঁর মতো লোকদের ব্যাপারেই এই আয়াত নাযিল হয়েছে, “মু’মিনদের মধ্যে এমন সব লোক রয়েছে যারা আল্লাহর নিকট কৃত ওয়াদাকে সত্যে পরিণত করেছে। তাদের মধ্যে কেউ মৃত্যুবরণ করেছে আর কেউ (তার) অপেক্ষায় রয়েছে।”

.

৪৯) হযরত আবু মাসউদ উকবা ইবনে ‘আমর আনসারী বদরী রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন,’ যখন সাদকা সংক্রান্ত আয়াত নাযিল হলো তখন আমরা পিঠে বোঝা বহনের কাজ করতাম।

অর্থ্যাৎ এ কাজের মজুরি থেকে আমরা সাদকা দান করতাম। এরূপ অবস্থায় একটি লোক একটু বেশি পরিমাণে সাদকা দান করলো। মুনাফিকরা প্রচার করল, এ ব্যক্তি রিয়াকার, অর্থ্যাৎ লোক দেখানো কাজ করে। এরপর আর এক ব্যক্তি এসে এক সা’ পরিমাণ সাদকা দান করলো। তখন মুনাফিকরা বললো, ‘আল্লাহ মোটেই এই এক সা’ পরিমাণ সাদকার মুখাপেক্ষী নন।’

তখন এই আয়াত নাযিল হলো, (আল্লাহ সেই কৃপণ বৃত্তশালী লোকদেরকে খুব ভাল করে জানেন) যারা আন্তরিক সন্তোষ ও আগ্রহের সাথে দানকারী ঈমানদার লোকদের আর্থিক ত্যাগ স্বীকার সম্পর্কে বিদ্রুপাত্নক কথা বলে এবং তাদেরকে ঠাট্টা করে যাদের নিকট (আল্লাহর পথে দান করার জন্য) শুধু তাই আছে যা তারা নিজেদের অপরিসীম কষ্ট স্বীকার করেই দান করে, তাদের (বিদ্রুপকারীদের) প্রতি আল্লাহও বিদ্রুপ করেন এবং তাদের জন্য রয়েছে কষ্টদায়ক শাস্তি।’

.

.

[বুখারী ও মুসলিম]

.

.

[ রিয়াদুস সালেহীন থেকে সংগৃহিত। হাদিস নং যথাক্রমে ১০৯ ও ১১০]

.

.

মুত্তাফাকুন আলাইহি-১৩

বিষয়: বিবিধ

২২৫৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File