চীন কি তার এক সন্তান নীতি' তুলে নিতে পারবে .........?
লিখেছেন লিখেছেন বিবেকবান ৩০ অক্টোবর, ২০১৫, ০৯:৪১:২৩ রাত
............... প্রকৃতির বিরুদ্ধে গেলে প্রাকৃতিক নিয়মে তার ফল ভোগ করতে হয় যাকে বলে ন্যাচারাল পানিশমেন্ট(natural punishment)।একটা সময় চীন তার দেশের জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য এক সন্তান নীতি চালু করলো যা ছিল স্বাভাবিকভাবে প্রকৃতি বিরুদ্ধ। এক সন্তান নীতি চালু করার কারণে চীন সাময়িকভাবে তার দেশের লোকসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ,দরিদ্রতা বিমোচন,সামাজিক ভারসাম্য রক্ষা ইত্যাদি ক্ষেত্রে বেশ সাফল্য লাভ করেছিল।কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের ফলে নানামূখী সমস্যা সম্মূখীন হচ্ছে।যে চীন ১৯৯০ এর পর থেকে ২০০৮ পর্যন্ত টানা ১০% এর উপরে জিডিপির প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে সেই চীনের প্রবৃদ্ধি হার এখন ৭% নিচে নেমে গেছে এবং ক্রমে আরো নিজের দিকে যাচ্ছে,মুদ্রার মান কমে যাচ্ছে,কারখানা চালানোর মত শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। এক শিশু নীতি চালু করার কারণে চীন যে সকল সমস্যা মুখোমুখি হচ্ছে:
১।চীন এখন বুড়ো-বুড়িদের দেশ।তরুণ বনাম বয়স্কদের যে হার সেক্ষেত্রে বয়স্করা এগিয়ে আছে এবং যাচ্ছে.........
২।নারী-পুরুষের ভারসাম্যহীনতা (বিবাহ না করা,সমকামিতা)ফলে সমাজের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা হচ্ছে না......
৩।কর্মক্ষম জনসংখ্যার বিপুল হারে হ্রাস এক সময় জাপানের নানা ক্ষেত্রে চীনারা কাজ করতো কিন্তু বর্তমানে চীনই কর্মক্ষম জনসংখ্যার অভাবে ভুগছে......
৪।জনসংখ্যার বিশাল একটা অংশ আজ পশ্চিমা ভাবধারা পুষ্ঠ এবং পশ্চিমা দেশগুলোতে লেখাপড়াসহ স্থায়ী বাসিন্দা হয়ে যাচ্ছে......
৫।হোয়াইট কালার জবহোল্ডার পাইলেও চীনের পক্ষে আর হলুদ কালার জবহোল্ডার পাওয়া সম্ভব হচ্ছে না......কল-কারখানা চালানো লোকের সংকট......
৬।নারীরা বিপুল সংখ্যায় বাইরে কাজ করছে ফলে বাচ্চা নেওয়ার যে মানসিকতা সেটা আস্তে আস্তে বিলুপ্তির পথে......
..................... সাম্প্রতিক সময়ে চীন তার এক সন্তান নীতি হতে ফিরে আসছে কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে চীনের নারীরা কি অধিক শিশু গ্রহণ করবে।চীনা সমাজ যে ধরেনের ভোগবাদীতার দিকে যাচ্ছে তাতে এক সন্তান নীতি চালু হতে ফিরে আসার যে প্রক্রিয়া সফল হওয়া কঠিন কারণ
১।প্রাশ্চত্য ভাবধারায় তারা এখন ইনজয় ইউর নাইভ থিওরিতে অভ্যস্ত হয়ে গেছে...
২।নারীরা বিপুল সংখ্যায় বাইরে কাজ করছে ফলে তাদের পক্ষে আর একাধিক সন্তান গ্রহণ সহজ ব্যাপার নয়......
৩।ইউরোপে নরওয়ে, সুইডেন,জার্মানিসহ বিভিন্ন দেশে পুরুস্কার ঘোষনা করেও জন্মহার বাড়ানো যায়নি ফলে চীনের ক্ষেত্রেও একই অবস্থা সৃষ্টি হবে......
৪।বর্তমান সময়ে লিভ টু গেদার,সমকামিতা,বিবাহ না করাসহ নানা কারণে চীন আর পূর্বের রুপে ফিরে যেতে পারবে না
............... এক সময় চীনের বিখ্যাত দার্শনিক কনফুসিয়াস এর আধ্যাত্নিক নীতি দ্বারা চীনের সমাজ পরিচালিত হতো কিন্তু বর্তমানে চীন বস্তুবাদ ও পুঁজিবাদ এর সমন্বয়ে এক জগাখিচুড়ি মার্কা সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র।প্রশ্চিমা ভাবধারা পুষ্ঠ চীনের নারীরা বিপুল সংখ্যায় বাইরে কাজ করছে এর ফলে তারা তাদের পার্থিব সুখ,ক্যারিয়ার ধ্বংস করে বারবার সন্তান নেওয়ার কষ্ট মেনে নেবে না।সুতারাং সন্তান গ্রহনের যে নীতি সেটা সফলতার মুখ দেখা চীনের জন্য বড় চেলেঞ্জ্যিং হবে......
বিঃদ্রঃপৃথিবীতে মানব সন্তানরা স্বাভাবিক ভাবে সংকীর্ণ দৃষ্টির অধিকারী ফলে চীন তার সাময়িক সমস্যা সমাধানের জন্য যে বস্তুবাদীর সৌধের উপর তার প্রাসাদ গড়ে তুলেছে তা রক্ষা করা অবশ্যই কঠিন হবে।সময়ের এক ফোঁড় অসময়ের দশ ফোঁড়...
বিষয়: বিবিধ
১৩৩০ বার পঠিত, ৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন