............ বয় ফ্রেন্ড বা র্গাল ফ্রেন্ড থাকার সংস্কৃতি ........
লিখেছেন লিখেছেন বিবেকবান ২৮ অক্টোবর, ২০১৫, ১০:৪৭:৫৬ রাত
................. ফেসবুকে থাকার কারণে বর্তমান প্রজন্মের(বর্তমান প্রজন্মের একজন হিসাবে) নানা চিন্তাচেতনার সাথে পরিচয় হওয়ার সুযোগ ঘটে।তাদের জীবনবোধ,ভবিষ্যতের ভাবনা,পারিবারিক আবেগ,নারীর বা পুরুষের প্রতি ধারনা ইত্যাদি সম্পর্কে জানা যায়।এর মধ্যে একটা বিষয় কয়েক দিন ধরে খুব ভাবাচ্ছে।বর্তমান সময়ে বয় ফ্রেন্ড বা র্গাল ফ্রেন্ড থাকা অতি সাধারণ একটি বিষয়(যদিও ৮০% তা নেই) । তবে আমাদের সমাজে এই সংস্কৃতি মোটামুটি প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে।ফলে বয় ফ্রেন্ড বা র্গাল ফ্রেন্ড না থাকা তরুণ-তরুণীদের জন্য বলা যায় অপমানজনক এবং এক ধরনের অপরাধও বটে। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যাযে দেখেছি একটি শ্রেণী আছে যাদের বয় ফ্রেন্ড বা র্গাল ফ্রেন্ড আছে তবে ৮০% এরই বয় ফ্রেন্ড বা র্গাল ফ্রেন্ড নাই অথচ প্রচার যন্ত্র ২০% পক্ষে।
.............................. আজকে ফেসবুকে একটি প্রসিদ্ধ গ্রুপের একজন গণ্যমান্য ফেসবুক সেলিব্রেটি ও একটি গ্রুপের এডমিন লিখেছেন ওনার র্গাল ফ্রেন্ড ঢাবিতে চান্স পাইছেন,তিনি দোয়া প্রার্থী এবং আরেকটি অনুরোধ যাদের র্গাল ফ্রেন্ড আছে তারা যেন কমেন্ট করে এই মহতী উদ্যোগকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যান।পাশপাশি তিনি একটি পেজ খুলেছেন এবং সকল র্গাল ফ্রেন্ড ওয়ালাদের র্গাল ফ্রেন্ডকে অ্যাড করে ভর্তি বিষয়ক সমস্যার সমাধান দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছেন।আমার খুব ভাল লাগলো তার এই মহতী উদ্যোগের।
........................ আচ্ছা আসুন দেখি আমার বা আপনার এক বা একাধিক র্গাল ফ্রেন্ড আছে এবং আমার বা আপনার বোনেরও এক বা একাধিক বয় ফ্রেন্ড আছে। তাহলে কি হতো............
১। আপনি আপনার র্গাল ফ্রেন্ডের সাথে গভীর রাতে ঘুম কামায় করে সাধারণ থেকে বেশ রসালো আলোচনা করেন এখন আপনার বোনের সাথে যদি কোন বয় ফ্রেন্ড একই কাজ করে......
২। আপনি আপনার র্গাল ফ্রেন্ড নিয়ে আগানে-বাগানে,চিপায়-চাপায়, ঊদ্যানে-পার্কে ঘুরে বেড়ান এখন আপনার বোনের সাথে যদি কোন বয় ফ্রেন্ড একই কাজ করে......
৩।আপনি আপনার র্গাল ফ্রেন্ডের দিকে অপলোক দৃষ্টিটি তাকিয়ে তার পা থেকে মাথা পর্যন্ত দেখেন এখন আপনার বোনের সাথে যদি কোন বয় ফ্রেন্ড একই কাজ করে......
৪।আপনি আপনার র্গাল ফ্রেন্ডের হাত ধরেন,চুলে হাত বুলিয়ে দেন এখন আপনার বোনের সাথে যদি কোন বয় ফ্রেন্ড একই কাজ করে......
৫।আপনি আপনার র্গাল ফ্রেন্ডকে মাঝে মাঝে লজ্জাহীন ভাবে কিস করেন ইত্যাদি ইত্যাদি এখন আপনার বোনের সাথে যদি কোন বয় ফ্রেন্ড একই কাজ করে......
৬। আপনি আপনার র্গাল ফ্রেন্ডকে দিয়ে লিটনের ফ্ল্যাটে যান বিভিন্ন ঊদ্যানে যান করেন এখন আপনার বোনের সাথে যদি কোন বয় ফ্রেন্ড একই কাজ করে......
৭।আপনার কারণে হয়তো আপনার র্গাল ফ্রেন্ডের এবরশন করা লাগছে এখন আপনার বোনের সাথে যদি কোন বয় ফ্রেন্ড একই কাজ করে......
.................. এটা নিশ্চিত আপনি যদি খুবই খোলা মনের মানুষ হন তাহলে ৩ বা ৪ নাম্বার পর্যন্ত ভাই হিসাবে সহ্য করতে পারবেন বাকিগুলো পারবেন না অথচ নিজে ঠিকই ৭ নাম্বার পর্যন্ত চলে আসছেন......
............... বয় ফ্রেন্ড বা র্গাল ফ্রেন্ড ছাড়া জীবন ব্যর্থ তাহলেতো আমাদের দাদা-নানা,দাদী-নানী,বাবা-মা ব্যর্থ।বর্তমানে আমাদের সমস্যা শুধু অবিকশিত মস্তিষ্কের নয় বরং ছাই-পাশ পড়া পচাগলা মগজেরও।
.................. এখন বিষয় হচ্ছে কয়টি ক্ষেত্রে এই সম্পর্কগুলো বিবাহে গড়াচ্ছে।অসংখ্য ক্ষেত্রে উভয়ই প্রতারণার স্বীকার হচ্ছে,অনেকে ব্যর্থ হয়ে আত্নহত্যা করছে,অসংখ্য পরিবার নানা ধরনের সমস্যায় পড়ছে।ধরে নিলাম আপনি ভাল কিন্তু আপনার বা আমার বোন যে কোন লম্পট বা খারাপ ছেলের হাতে পড়বে না তার গ্যারান্টি কি?ভাবনার সময় এসেছে আমারা কি পশ্চিমা এই বয় ফ্রেন্ড বা র্গাল ফ্রেন্ড থাকার সংস্কৃতির স্রোতে ভেসে যাব নাকি আমাদের দেশের নিজস্ব সংস্কৃতিকে ধরে রাখবো।জীবন আপনার সিদ্ধান্তও আপনার..........
বিষয়: বিবিধ
১৫৭৪ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
সুচিন্তিত লিখাটির জন্য শুকরিয়া। আধুনিক যোগাযোগ মাধ্যমের কারণে এই ব্যাধি সংক্রামক রোগের মতো ছড়িয়ে পড়েছে। আ্যান্টি ভাইরাস- শরীয়ত ঠিক মতো ইনস্টল করতে হবে আজকালকার ছেলে-মেয়েদের মাথায়!
জাযাকাল্লাহ খাইর।
আপনার ছোট বোন আপনার খুব স্নেহের । তার একজন বান্ধবী আছে , পাড়ার হেমা মালিনী ।
আপনার পাড়ারই রোমিওরা আপনার বোন ও তার বান্ধবীটিকে প্রায়শঃই উত্যক্ত করে । আপনি আপনার বন্ধুদের নিয়ে এদেরকে শায়েস্তা করলেন এবং এদের বিরুদ্ধে মহল্লাবাসীদের একজোড় করলেন । আপনার প্রতি সবার ভালোবাসা আরও বেড়ে গেল । আপনি পেয়ে গেলেন হেমার ভালবাসা । প্রেম থেকে পরিনয় ।
আপনার বোন তার প্রিয় বান্ধবীটিকে ভাবী হিসেবে পেয়ে যার পর নাই খুশী ।
কিন্তু বেশীদিন সুখ থাকলো না । আপনার বোনটি দেখতে পায় বা জানতে পারছে যে আপনার সেই প্রিয় বান্ধবী তার ভাই ও মাকে প্রতিনিয়ত মানসিক যন্ত্রনা দিচ্ছে এবং সংসারে সারাটা দিন একটা বিষময় পরিবেশের সৃষ্টি করে রাখছে ।
সদা প্রানোচ্ছল ভাইটি কেমন যেন বিমর্ষ হয়ে যাচ্ছে দিন কে দিন আর মা সব সময় মন খারাপ করে থাকে । আপনার বোন বুঝতে পারছে যে তার সেই বান্ধবীটি যাকে নিয়ে সে খুব গর্ব করতো এখন সেরকম আর নেই ।
আপনার সেই বোন কি এগিয়ে আসবে এবার তার ভাইয়ের জন্য তার স্বগোত্রীয় ভাবীর বিরুদ্ধে যে তার ভাই ও মাকে প্রতিনিয়ত কষ্ট দিচ্ছে ? সেই ভাইয়ের পক্ষে যে ভাই কি না একদিন নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বখাটেদের হাত থেকে সে সহ অন্য মেয়েদেরকে হয়রানীর হাত থেকে রক্ষা করার চেষ্টা করেছিল ?
ভাইয়েরা বোনদের এসব বিপদে এগিয়ে তো আসেই , প্রতিরোধ ও প্রতিবাদ করার চেষ্টা করে , অনেক সময় মারাও যায় ।
কখনও কি শুনেছেন কোন বোন তার ভাবীর বিরুদ্ধে তার ভাইয়ের কষ্ট লাঘবে নিজে ও দলবল সহ এগিয়ে এসেছে ? ভাবীকে নিরস্ত্র করছে এহেন কার্যকলাপ থেকে বিরত থাকতে ?
বোনেরা কি সবসময়ই ভাইদের কাছ থেকে উপকারই নিয়ে যাবে ? ভাইদের বিপদে কি তারা এগিয়ে আসবে না ?
মন্তব্য করতে লগইন করুন