মুসলমান নামধারী ইসলামবিদ্বেষী চক্রের উত্থান : এ আমার এ তোমার পাপ
লিখেছেন লিখেছেন বিবেকবান ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩, ১২:৪৯:১৮ রাত
হান্টিংটন নামের এক চরম সাম্প্রদায়িক মার্কিন ‘পণ্ডিতের’ সভ্যতার সংঘাত শীর্ষক তত্ত্ব বাজারে আসার পর থেকে সাধারণভাবে এবং নয়/এগারোর রহস্যময় সন্ত্রাসী তত্পরতার পর বিশেষভাবে দুনিয়াজুড়ে মুসলমানদের বিরুদ্ধে যে ক্রুসেড শুরু হয়ে গেছে, এটা এখন আর কোনো অজানা তথ্য নয়। কিন্তু এর পাশাপাশি মুসলিম অধ্যুষিত বাংলাদেশে বসে মুসলমানের ঘরে জন্ম নেয়া গুটিকয়েক কুলাঙ্গার যে ইন্টারনেট প্রযুক্তির অপব্যবহার করে অত্যন্ত কুরুচিপূর্ণ মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে ইসলামবিদ্বেষী বিকৃত ও ঘৃণ্য মানসিকতার গরল উদগিরণ করে চলেছে, তা এতদিন আমাদের অজানা রয়ে গিয়েছিল। ঢাকায় শাহবাগ-তাণ্ডব শুরু না হলে এবং এই কথিত জাগরণের অন্যতম নেতা রাজীব থাবা বাবা রহস্যজনকভাবে খুন না হলে ইসলাম ধর্মের বিরুদ্ধে এসব উস্কানিমূলক উন্মত্ত আক্রমণের খবর হয়তো আমরা জানতেও পারতাম না। ইন্টারনেটের মাধ্যমে ফেসবুকে নিজস্ব ব্লগ বানিয়ে তারা যেসব কল্পনাতীত অশালীন শব্দ ও বাক্যের বিন্যাস ঘটিয়েছে তা উদ্ধৃত করলে আমার দেশ-এর সম্পাদকীয় পাতা অপবিত্র হওয়ার সমূহ আশঙ্কা আছে। অবশ্য যে ‘জাগ্রত তরুণ’ বাবা-মায়ের দেয়া সুন্দর নাম পরিহার করে নিজেকে থাবা বাবা নামে পরিচয় দিয়ে আনন্দ পায় সে এবং তার সাঙ্গপাঙ্গরা তাদের বিকৃত আকাঙ্খা চরিতার্থ করার জন্য কতটা নিচে নামতে পারে তা ধারণা করতে কারও অসুবিধা হওয়ার কথা নয়।
থাবা বাবা গংদের ব্লগে চোখ বুলালে স্পষ্ট ধরা পড়ে যে আমাদের তরুণ প্রজন্মের একটা অংশ একেবারে পচে গেছে। শাহবাগ চত্বরে তাদের কথার তালে তালে তালি দিয়ে নৃত্যরতদের সংখ্যা দেখে বলা যায়, এই পচে যাওয়া তারুণ্যের অবয়ব একেবারে ক্ষুদ্র নয়। এরা শিক্ষিত, ইন্টারনেট ব্যবহারে অভ্যস্ত এবং অবশ্যই কোনো না কোনো বিবাহিত দম্পতির সন্তান। তাদের বেশির ভাগের মা-বাবার বয়স ৫০ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে হওয়ার কথা। এই সন্তানদের অভিভাবকরা যে এমন কুিসত ভঙ্গিতে আপন চিন্তা-ভাবনা প্রকাশে একেবারেই অভ্যস্ত নয় সেটা আমরা এখনও বিশ্বাস করতে চাই। আমরা কয়েক হাজার বছরের সভ্যতার অহঙ্কার হৃদয়ে লালন করি। বাংলার সন্তান অতীশ দীপঙ্কর তিব্বতে গিয়ে ধর্মাশ্রয়ী জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে ছিলেন তাও হাজার বছর হয়ে গেল। বাঙালি মধ্যবিত্ত সমাজের ভদ্রতা, বিনয়, পারিবারিক বন্ধন, স্বীয় জিহ্বা শাসনে রাখার সহজাত ক্ষমতা ইত্যাদি গুণ বিশ্ববিদিত। মাত্র অর্ধ শতাব্দীরও কম সময়ের মধ্যে এ সবকিছু বিসর্জন দিয়ে যারা সর্বনাশের বাদ্য বাজাতে শুরু করেছে তাদের পরিবার কি এ ব্যাপারে নিজেদের অপরাধ অস্বীকার করতে পারবে?
খুব বেশিদিনের কথা নয়, তসলিমা নাসরিন আর হুমায়ুন আজাদ ইসলামবিরোধী জঙ্গিপনার প্রতীক হিসেবে নিজেদের হাজির করেছিলেন। এখন দেখা যাচ্ছে শাহবাগের ব্লগারদের তুলনায় তারা ছিলেন নস্যি। এই ব্লগার চক্র অত্যন্ত আপত্তিকর ভাষায় মহান আল্লাহ, অতি পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কোরআন, মহানবী হজরত মোহাম্মদ (সা.), ঈদ, নামাজ, রোজা ও হজ সম্পর্কে যেসব জঘন্য কথাবার্তা ব্লগে ছেড়ে মুসলমানদের ঈমান-আকিদায় আঘাত দিয়েছে, তাদের এই দুর্বৃত্তপনাকে যদি তারুণ্যের জাগরণ বলে বাহবা দেয়া হয় তবে বলতেই হবে জাতি হিসেবে আমরা ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছি। এই দুর্গন্ধ ছড়ানো তারুণ্য যে আমাদের সমবেত পাপের ফসল তা নত মস্তকে মেনে নিয়ে এখনই শক্তিশালী পচনরোধক ওষুধ প্রয়োগ করা না হলে চরম সর্বনাশের জন্য প্রস্তুতি নেয়া ছাড়া উপায় নেই। সময় বয়ে যাচ্ছে, আসুরিক বিকৃতি থেকে সমাজকে রক্ষা করতে হলে সব বিশ্বাসী মানুষকে নিজ নিজ ধর্মবিশ্বাসের অবস্থান থেকে ঐক্যবদ্ধ এবং সক্রিয় প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। প্রজ্ঞার জয় হোক, অন্ধকার সরে যাক—আসুন আমরা পরস্পরের হাত ধরে এই প্রার্থনা করি।
মুসলমান নামধারী ইসলামবিদ্বেষী চক্রের উত্থান : এ আমার এ তোমার পাপ
বিষয়: বিবিধ
১৩১৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন