তথ্য সন্ত্রাসের শিকার ইসলাম ও ইসলামী আন্দোলন .................... মুহাম্মদ আবদুল জব্বার
লিখেছেন লিখেছেন বিবেকবান ২৭ ডিসেম্বর, ২০১৩, ১০:৩৭:৪৯ রাত
[এক] ইসলাম এক শাশ্বত জীবন বিধানের নাম। আল্লাহর একমাত্র মনোনীত জীবন বিধান। রাসূল (সাঃ) তার সাহাবীদের মাঝে এক অনুকরণীয় আদর্শ ছিলেন। আল্লাহর নির্দেশের আলোকে যা বলতেন তা করতেন। এ দর্শন অন্য দার্শনিকের দর্শন নয় যে, তারা পৃথিবীতে যা বলতেন তা করতেন না। ইসলামের সুমহান আলোকদ্যুতি রাসূলে আকরাম (সাঃ)-এর সময় থেকে ছড়িয়ে পড়তে থাকে প্রাচ্য-পাশ্চাত্যের চৌদিকে। খোলাফায়ে রাশেদার শাসনকালে ইসলামী শাসনের পরিধি ছিল প্রায় অর্ধ জাহান। শিক্ষা-দীক্ষা, জ্ঞান-বিজ্ঞানে মুসলমানদের অবস্থান ছিল উতুঙ্গশীর্ষে। মুসলমানদের নৈতিক ও জাগতিক যোগ্যতার প্রভাবে কয়েকশ’ বছর ছিল নেতৃত্ব-কর্তৃত্বে। ইসলামের সুশীতল ছায়াতলে পথহারা ক্লান্ত অসংখ্য বনিআদম আশ্রয় গ্রহণে জীবনকে ধন্য করে। সুশাসন, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার অনন্য নজির ছিল এই সময়কাল। আশরাফুল মাখলুকাতের সৃষ্টির প্রকৃত তত্ত্ব মানবজাতির আয়ত্ত করতে লাগল। ইসলামের এই অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রাকে রুদ্ধ করার জন্য যুগে যুগে বিরুদ্ধবাদীদের প্রয়াস ছিল সম্মিলিতভাবে। আব্দুল্লাহ ইবনে উবাই রাসূল (সাঃ)-এর সাহাবী ছিলেন। তিনি মুনাফিকদের সর্দার ছিলেন। তিনি মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর কথার মাধ্যমে সাহাবীদের ঐক্যে ফাটল ধরাতেন , এমন কি রাসূল (সাঃ) ও তাঁর স্ত্রী হযরত আয়েশা (রাঃ)-এর মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি করেছিলেন; ইতিহাসে যা ইফকের ঘটনা নামে পরিচিত। আদর্শের লড়াইয়ে পরাজিত ব্যক্তি ও দল ইসলামের সুমহান যাত্রাকে স্তিমিত করে দেয়ার জন্য ইসলাম পন্থীদের উপর চাপিয়ে দিচ্ছে পাহাড়সম মিথ্যা অভিযোগ। বর্তমান যুগটা মিডিয়ার, চলছে মিডিয়ার অপ্রতিরোধ্য দাপট। মিডিয়ার দাপটের কাছে হার মানছে সবাই। মিডিয়া দিনকে বানাচ্ছে রাত, রাত কে বানাচ্ছে দিন, সাদাকে বলছে কালো, কালো কে বলছে সাদা, চোরকে বলছে মহাসাধু, সাধুকে বলছে মহাচোর, তবুও যেতে হয় মিডিয়ার কাছে। প্রতারকের কাছে সততা ও নিষ্ঠা কিংবা ছলনাময়ীর কাছে নির্ভেজাল ভালবাসার প্রত্যাশায়। কেননা মিডিয়াই অনবরত করছে তিলকে তাল, তালকে তিল। প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার কেরামতিতে পাল্টে দেওয়া হচ্ছে মানুষের বোধ-বিশ্বাস, আচার-আচরণ ও সব কিছু। মিডিয়ার তথ্য সন্ত্রাসের গোলক ধাঁধায় হাবুডুবু খাচ্ছে গোটা বিশ্ব।
কোন এক পক্ষকে বিশেষ উদ্দেশ্যে অভিযুক্ত করা হচ্ছে মৌলবাদ, জঙ্গিবাদ, সাম্প্রাদায়িক সম্প্রীতি নষ্টকারী ইত্যাদি অবয়বে। ইসলামের অগ্রযাত্রাকে রুদ্ধ করার জন্য বহুরূপী সন্ত্রাসী কার্যক্রম ইহুদী-খৃষ্টান ও জায়নবাদীরা যুগে যুগে পরিচালনা করেছে। এর মধ্যে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় আইন আদালতকে অপব্যবহারের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় সরকারী-রেসরকারী প্রচার যন্ত্রের মাধ্যমে অবদমিত করার প্রয়াস উল্লেখযোগ্য। তবে সভ্যতার কথিত চরম উৎকর্ষতার সাথে সাথে সন্ত্রাসবাদের বহুরূপী খোলস প্রতিনিয়ত উন্মোচন হয়ে উঠছে। এখন রাষ্ট্রীয় সীমানা পেরিয়ে আন্তর্জাতিকভাবে সন্ত্রাস ও নানামুখী অপপ্রচারের মাধ্যমে ইসলাম ও ইসলামী আদর্শ প্রতিষ্ঠায় প্রচেষ্টারত সংগঠনগুলোকে নিশ্চিহ্ন ও সেগুলোর কার্যক্রমকে আপত্তিকর বা প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য বিভিন্ন কায়দায় মিশন চলছে। সন্ত্রাসের জন্মদাতা ও লালনকারী ইসলাম বিদ্বেষীরা উল্টো ইসলামের উপর সন্ত্রাসবাদ চাপিয়ে দিচ্ছে। এসকল সন্ত্রাসের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ হচ্ছে তথ্য সন্ত্রাস। এ সন্ত্রাস মারাত্মক ফিতনা সৃষ্টিকারী, যা মানব হত্যাকা-ের চেয়ে ও জঘন্য। আল্লাহ তা’য়ালা বলেন-‘যারা মানুষের উপর যুলুম করে এবং পৃথিবীতে অন্যায়ভাবে বাড়াবাড়ি করে তাদেরকে অবশ্যই দোষ দেয়া যায়। এরা ঐ সব লোক যাদের জন্য যন্ত্রনাদায়ক আযাব রয়েছে ( সূরা শুরা-৪২)।
তার চেয়ে বড় যালিম কে হতে পারে, যে আল্লাহর প্রতি মিথ্যাচার আরোপ করে, অথবা সত্য তার সামনে এসে যাওয়া সত্ত্বেও তাকে মিথ্যা মনে করে? দোযখই কি এ ধরনের কাফেরদের ঠিকানা নয়? (সূরা আনকাবুত-৬৮)।
ইসলামের পরিচয় :
ইসলাম এক শাশ্বত জীবন বিধানের নাম। কুরআনে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে ইসলাম আল্লাহ মনোনীত জীবনব্যবস্থা। ইসলাম মানে শান্তি, নিরাপত্তা ও পরিপূর্ণ জীবনব্যবস্থা। ইসলাম প্রচলিত কোন ধর্মের নাম নয়। ইসলামকে complete cord of life বলা হয়। ইসলামকে অধিকাংশ মুসলমানরা না বুঝে অন্যান্য ধর্মের মত মনে করে এবং অন্যান্য ধর্মের মতই আনুষ্ঠানিকতা পালন করে। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ, রোজা, হজ্ব ও যাকাতেই ইসলাম হিসেবে তারা গ্রহণ করে নিয়েছে। তাদের মতে ইসলাম সম্পূর্ণ আলাদা একটা পবিত্র সত্তা, এটির সাথে জীবনের কোন সম্পর্কে নেই। ধর্ম বা জীবন সম্পূর্ণ আলাদা। অথচ ইসলাম মানুষের পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা। মানুষের জীবনের প্রতিটি অংশই এর সাথে জড়িত। পারিবার থেকে রাষ্ট্র পরিচালনা পর্যন্ত ইসলামের পূর্ণাঙ্গ ও নির্ভুল পরিচালনা বিধি আল্লাহ তায়ালা নির্দেশ করেছেন। মোদ্দাকথা ইসলাম মানে হচ্ছে স্বভাবজাত জীবন প্রণালী। যাতে মানুষের সমৃদ্ধি ও কল্যাণ সুনিশ্চিত নিহিত রয়েছে। ইসলামের গোড়পত্তন হয়েছিল হযরত আদম (আঃ)-এর সময় থেকে। পৃথিবীতে আগত প্রত্যেক নবী ও রাসূল ইসলামেরই প্রতিনিধিত্ব করেছেন। এর অনুসারীরা আল্লাহর নির্দেশিত বিধান অনুয়ায়ী জীবন পরিচালনা করেছেন। ইসলাম রাষ্ট্রীয়ভাবে কায়েম হলে সেটাকে ইসলামী রাষ্ট্র বলে। এ রাষ্ট্রে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার অধিকার সমান। কোন ধরনের বৈষম্য এখানে গ্রহণীয় নয়। ভোগ নয় ত্যাগের মহিমায় এর অনুসারীরা নিজদেরকে উজ্জীবিত করেন। ইসলামী রাষ্ট্রের সমনীতির উদাহরণ হচ্ছে খোলাফায়ে রাশেদার শাসনামল। যারা ইসলমামের অনুসারী তাদেরকে মুসলমান বলে। মুসলমান মানে আত্মসমর্পণকারী। যারা জীবনের সবকিছু আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন, যারা আল্লাহর আদেশ-নিষেধ ও রাসূল (সাঃ)-এর নির্দেশিত পথে চলবেন। বর্তমান সময়ে ইসলামের অনুসারীরা যথাযথভাবে ইসলামের অনুসরণ করতে ব্যর্থ। যার কারণে ইসলামের বিকৃতিপূর্ণ পরিচয় অন্য ধর্মাবলম্বীরা ধারণ করছে। অনেকাংশেই তাদের ধর্ম ও ইসলামের মধ্যে তেমন কোন বিশেষত্ব খুঁজে পায় না। ইসলামের অনুসারীরা তাদের নাম ইসলামের অনুসরণে রাখছে এবং ইসলামকে কিছু আনুষ্ঠানিক ইবাদতের মধ্যে সীমাবদ্ধ রেখেছে। অথচ আল্লাহর কুরআন ও রাসূল (সাঃ)-এর গাইডলাইন হচ্ছে নির্ভুল গাইডলাইন; যেটি যথাযথাভাবে অনুসরণ করলে মুসলমানরা বিশ্ব সভায় বীরের বেশে নেতৃত্ব দিতে পারবে। এটিকে তারা অনুসরণ করলে তারা অশান্ত পৃথিবীকে শান্তির নীড় হিসেবে উপহার দিতে পারত। রাসূল (সাঃ) বিদায় হজ্বের সময় বলেছেন, আমি তোমাদের জন্য দুটি জিনিস রেখে গেলাম একটি কুরআন ও অপরটি সুন্নাহ বা হাদীস। তোমরা যদি এ দু’টিকে আঁকড়ে ধর তাহলে পথভ্রষ্ট হবে না। কিন্তু আমরা কি দেখছি? কুরআন ও হাদীসকে ঝাড়-ফুঁ-তাবিজ প্রদানের কাজে ব্যবহার করছে। কুরআন-হাদীসের শিক্ষাকে মুসলমানরা মসজিদ,মাদ্রাসা ও আমাদের বাসা বাড়ীর মাঝে সীমাবদ্ধ রেখেছে। আমাদের বাড়ী ঘরে যে সব কুরআন ও হাদীস সুন্দর কাপড়ে মোড়ানো আছে সেগুলো পড়ার সময় সাধ্য নেই। এসব পড়ার ও গবেষণার ও জানা-মানার দায়িত্ব শুধু যেন আলেমদের। আর মুসলমানরা পড়লেও সওয়াবের নিয়্যতে পড়ে থাকেন, পড়া শেষে চুমো খেয়ে আবার সুন্দরভাবে রেখে দেন। সেখানে থেকে জানার ও মানার জন্য চেষ্টা সাধনার ভয়াবহ ঘাটতি সর্বত্র। উম্মাহর ভয়াবহ মহামারী চলছে বললেও ভুল হবে না। ইসলামের সুমহান আদর্শ, শিক্ষা, কল্যাণমুখী কার্মকা- ও জীবনাচরণ মুসলমানদের জীবনে ধারণ করে পৃথিবীতে শান্তি ও আখেরাতে মুক্তি নিশ্চিত করার জন্য উম্মাহর সকল নেতৃবৃন্দকে প্রয়োজনীয় পরিকল্পনা ও কার্যক্রমের উদ্যোগ গ্রহণের কোন বিকল্প নেই। ইসলাম আগমনের স্লোগানই হল সত্য সামাগত, মিথ্যা বিদূরিত, সত্যের জয় অবশ্যম্ভাবী।
ইসলামী আন্দোলনের পরিচয় : ইসলামের কল্যাণ সমৃদ্ধি ও সত্যবার্তা যথাযথভাবে মানবতার কাছে পৌঁছে দেয়ার জন্য সংঘবদ্ধ ভাবে প্রচেষ্টার কোন বিকল্প নেই। নবী ও রাসূলরা যুগে যুগে এভাবে সংঘবদ্ধভাবে চেষ্টা করেছেন। কুরআনে কারীমে এ সংঘবদ্ধ প্রচেষ্টাকে জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ বলা হয়েছে। বাংলায় আমরা যাকে ইসলামী আন্দোলন বলি। সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছার জন্য সংঘবদ্ধ উম্মাহর যে প্রচেষ্টা তাই জিহাদ, তাই আন্দোলন। নেতৃত্বের পরিকল্পনা কর্মতৎপরতা দৃষ্টিভঙ্গি কর্মী বাহিনীর নিরলস প্রচেষ্টার উপর নির্ভর করে আন্দোলনের সফলতা ও ব্যর্থতা। পৃথিবীর সৃষ্টিলগ্ন হতে অদ্যবধি অনেক আন্দোলনের উত্থান পতন হয়েছে। ইসলামী আন্দোলনের অনুসারীরাও এক্ষেত্রে পিছিয়ে নেই। তবে কোথাও কোন আন্দোলন প্রচেষ্টা ছাড়া, চ্যালেঞ্জহীন বাধা বিপত্তিহীনভাবে সফলতার মুখ দেখেছে তার কোন নজির নেই। তবে ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের ত্যাগ কুরবানী প্রচেষ্টায় খুশি হয়ে আল্লাহ নিজেই সাহায্যকারী হয়ে যান। বিরুদ্ধবাদীদের পাহাড়সম কুটকৌশল মোকাবিলায় আল্লাহর উপর দৃঢ়তা সাথে পরিকল্পনা ও ক্লান্তিহীন কর্মনিষ্ঠা বাঞ্ছনীয়। সাহসীকতা তবে হটকারিতা নয়। কৌশলী তবে পিছুটান নয়, অপপ্রচারের জবাব তবে মিথ্যাচার নয়, আক্রমণের প্রতিরোধ কিন্তু বাড়াবাড়ি বা জুলুমবাজী নয়। সত্যপন্থীদের অসত্যের আস্তরণের ভিড়েও সতেজ বীজ বপন করে ফুলে-ফলে সুশোভিত সোনালী সমাজ প্রতিষ্ঠার সংঘবদ্ধ প্রচেষ্টাই ইসলামী আন্দোলন। ইসলামী জাগরণে যারা ভীত সন্ত্রস্ত তার মনে করেন ইসলামে রাজনীতি নেই। তাদের মতে ইসলাম ঘর, মসজিদ ও মাদ্রাসার মাঝে সীমাবদ্ধ থাকবে। অনেক আলেম ওলামারা ও একসময় মনে করতেন যে, ইসলামী রাজনীতি হারাম, বাংলাদেশে ও জামায়াতে ইসলামী ছাড়া তেমন কোন রাজনৈতিক দল ছিল না আশির দশকের আগ পর্যন্ত। সুসংবাদদের বিষয় হলো অনেক আলেম-ওলামা বর্তমান সময়ে মনে করেন যে, ইসলামকে যদি বিজয়ী শক্তি হিসাবে দেখতে চায় তাহলে ইসলামী হুকুমাত কায়েমের কোন বিকল্প নেই। তাই তারা চেষ্টা সাধনা ও করে যাচ্ছে। তবে আরেকটা সতর্কতার বিষয় হলো যে ইসলামের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারীরা এর অগ্রযাত্রাকে নিঃশেষ করার জন্য ইসলামী সংগঠনের মোড়কে ইসলামী সংগঠনের নামে সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেছে। যাতে যে সকল ইসলামী সংগঠনগুলো তাদের কার্যক্রমে পরিচালনা করছে তাদের ব্যাপারে জনমনে বিভ্রান্তি ছড়াতে পারে এবং জনতার হৃদয়ে ইসলামের ব্যাপারে যে পজেটিভ চেতনা বোধ আছে তাকে ম্লান করা যায়। সুতরাং সব কিছুর Action ও Reaction থাকবে সেটি ধরে নিয়েই উম্মাহর নকীবদেরকে কঠিন স্রোত পাড়ি দিতে হবে । কোন প্রকার পিছুটান শঠতা ও ভীরুতা আন্দোলনের সিপাহসালাহদের জন্য বড়ই বেমানান।
সন্ত্রাসের পরিচয়: Terrorism- অতিশয় ত্রাস, ভয়ের পরিবেশ (Terror a cause of create fear) আর সন্ত্রাসবাদ হলো রাজনৈতিক ক্ষমতা লাভের জন্য অত্যাচার, হত্যা প্রভৃতি হিংসাত্মক ও ত্রাস জনক কর্ম অবলম্বনীয়। সন্ত্রাস এর যথার্থ সংজ্ঞা সর্বসম্মত ভাবে সংজ্ঞায়িত হয়নি। বিভিন্ন সভা-সেমিনারে ক্ষমতাধরদের বিভিন্নভাবে সন্ত্রাসবাদের ব্যাখ্যার বয়ান করতে দেখা যায়। যা একটি গোষ্ঠীর কাছে স্বাধিকার আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম বা গণতান্তিক প্রক্রিয়া, তা অন্যের ভাষায় চরম ধিকৃত বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগ্রাম। কারো ভাষায় মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। আর কারো ভাষায় ঠিক তা-ই আত্মরক্ষামূলক ব্যবস্থা। এ সংজ্ঞাটি মূলত: পশ্চিমাদের ইচ্ছার উপর নির্ভরশীল। তাই চতুরতার সাথে এর সুনির্দিষ্ট সংজ্ঞায় তারা স্থির নয়। যাতে পরিস্থিতির আলোকে যাকে যেভাবে সন্ত্রাসী সাজাবার অবারিত সুযোগ থাকে।
একজন সমীক্ষায় লিখেছেন-
''United states’ reluctance to come up with a working definition for terrorism out of fears that a Clear-cut definition terrorism but of fears that a clear cut definition would change the fight against terrorism from a political issue into an ethical one......... in its capacity of a superpower, America does not need ethical laws restricting its ambition and targets. Rather, it wants to have spacious room for movement and maneuvering and as such keeping the definition ambisous fits perfectly with this strategy”.
world of Book’ encyclopedia সন্ত্রাসের সংজ্ঞা দিতে গিয়ে বলেছে- Terrorism is the use or threat of violence to create feare and alarm. Terrorists murder, kidnap people, sat of bombs, hijack airplanes, set fires and commit other serious crimes. common victims of terrorist kidnappings and associations include diplomats, business executives, political leaders, judges and police”
সন্ত্রাসের ইতিহাস : সন্ত্রাসবাদ (Terrorism) প্রথম দেখা মেলে ফরাসী বিপ্লবের সময় (১৭৪৯-১৭৯৯)। ক্ষমতা দখলকারী কিছু বিপ্লবী তখন তাদের প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে হিংসাত্মক আচরণের নীতি গ্রহণ করে। এই শাসনামলকে বলা হয় ÔRegion of Terror’’। এটা ঘটেছিল শাসনবর্গের অধীনে। কিন্তু বেসরকারীভাবে রাজনৈতিক বা ভিন্নমতাবলম্বী গ্রুপের দ্বারা সন্ত্রাসের প্রথম যাত্রা শুরু হয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। সেখানে ১৮৬৫ সালের গৃহযুদ্ধের পর এবং পুনরায় উনিশ শতকে ক্লু ক্ল্যাক্স ক্ল্যান নামক একটা শ্বেতাঙ্গ গ্রুপ কৃষ্ণাঙ্গ ও তাদের প্রতি সহানুভুতিশীলদের বিরুদ্ধে বর্ণবাদী সন্ত্রাস চালায়। [চলবে]
বিষয়: বিবিধ
১৫২৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন