হামাস হতে পারে জামায়াতসহ ইসলামী আন্দোলনগুলোর রোল মডেল। এবং হওয়া উচিত
লিখেছেন লিখেছেন বর্ণক শাহরিয়ার ২৩ জুলাই, ২০১৪, ১০:২৬:৪৯ রাত
মাত্র ৩৬০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের জনপদ গাজা উপত্যকা। যেটি বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার সমান। আজ এই উপত্যকার ১৮ লক্ষ অধিবাসির জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ ইসলামী সংগঠন হামাস।
হামাস এমন এক কর্মপন্থা প্রণয়ণের মাধ্যমে শত্রুবাহিনীর মোকাবেলার পাশাপাশি জনগণের আস্থা ও ভালবাসায় টিকে আছে।
মূলত হামাস বিশ্বের সবকটি ইসলামী সংগঠনের চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে ইসলামী সংগঠনের কর্মপন্থা কেমন হতে হবে। ইখওয়ানুল ইসলাম, জামায়াতে ইসলামীসহ বিশ্বের সব ইসলামী আন্দোলনগুলো হামাস থেকে শিক্ষা নেয়া উচিত।
তিনটি সেক্টরে হামাস তাদের সংগঠন পরিচালনা করে আসছে,
১। সমাজ কল্যাণ সেক্টর,
২। পলিটিক্যাল ব্যুরো এবং
৩। সশস্ত্র বিভাগ।
জিহাদের ময়দানে দম পালানোর পুসরত না পাওয়া ক্ষুদ্র এই জনপদের গণমানুষের এই দলটির তিনটি কর্মকাণ্ডের ফলে হামাস সফল। মুসলিম দুনিয়ার ব্যার্থতার কারনে ইসরাইলের সাথে জয়-পরাজয়ের চাইতেও দল হিসেবে জনগণের কাছে হামাসের সফলতাকেই মূখ্য বিবেচনা করা উচিত।
হামাসের ৩ কর্মপন্থার পাশাপাশি অন্য আরেকটি কর্মসূচী থাকা উচিত ইসলামী দলগুলোর, সেটি হচ্ছে, ইন্টালেকচ্যুয়াল ডিপার্টমেন্ট। এটি এখন নাম্বার ওয়ান বিবেচেনার বিষয়।
বাংলাদেশে ইসলামের প্রতিনিধিত্বকারি সংগঠন জামায়াতে ইসলামী সবগুলো সেক্টরেরই ম্যান পাওয়ার আছে, শুধু সশস্ত্র ছাড়া। এটি আপাতত কমগুরুত্বপূর্ণ। তবে একটি সুনির্দিষ্ট বিপ্লব সংগঠণের জন্য এটির প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
জামায়াতের জনবল থাকলেও সেগুলোর সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা ও তদারকির যথেষ্ঠ ঘাটতি রয়েছে। শুধু তাই নয়, জামায়াতের কর্মপন্থাগুলো সব এককেন্দ্রিক।এগুলোকে বিকেন্দ্রী করন করা প্রয়োজন।
প্রতিটি সেক্টরের জন্য আলাদা আলাদা এবং সুনির্দিষ্ট জনবল থাকা উচিত। যারা মিছিল, মিটিংসহ অন্যান্য রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করবে, তাদের থেকে বুদ্ধিভিত্তিক আউটপুট আশা করা উচিত হবে না।
সমাজ কল্যাণ কাজের জন্য জামায়াতে ইসলামীকে দেশব্যাপী শক্তিশালি নেটওয়ার্ক গঠন করতে হবে। যারা সুনিয়ন্ত্রিত ডাটাব্যাজের মাধ্যমে পরিচালিত হবে। স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, মক্তব, হাসপাতাল, পানি ও সেনিটেশন, গৃহনির্মানসহ মানুষের বিপদগ্রস্থাতায় তারা সরকারের চেয়েও জামায়াতের উপর আশাবাদি বেশি হতে হবে।তবে খেয়াল রাখতে হবে শিক্ষা ও স্বাস্থখাতকে যেন ব্যাবসার মাধ্যম না বানানো হয়।
মিডিয়ার প্রতি বিশেষ নজর দিতে হবে। যারা বিনিয়োগ করেছে, তাদেরকে প্যাট্রোনাইজ করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক তৈরী করতে হবে। শিবিরে রয়েছে অনেক অদম্য মেধাবী ছাত্র। তাদেরকে যথাযথ নার্সিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। দিতে ৩টা টিউশনি না করিয়ে একটা করে অন্য সময়ে তার নিজের একাডেমিক উন্নয়নের জন্য তদারকি করতে হবে।
গতিশীল ও প্রশিক্ষিত নেতৃত্ব তৈরীর জন্য উদ্যোগ নেয়া উচিত। মনে রাখতে হবে নেতৃত্ব যত বিচক্ষণ হবে, আন্দোলন তত গতিশীল হবে। দশ বছর পর কি হবে, তা আজই কল্পনা করার মত বিচক্ষণ হওয়া চাই।
সবশেষ, সর্বস্তরের জনশক্তিকে ইসলামের আলোয় আলোকিত করতে হবে। ইলম ও আমলের সামঞ্জস্যতা থাকা উচিত।
পরিশেষে একটা কথা বলা প্রয়োজন, ২০১৩ সালে মিশরে মুরসী পতনের চুল ছেড়া বিশ্লেষণ জরুরী। আলজেরিয়া, মিশরসহ অনেক স্থানে শুধুমাত্র সেনাবাহিনীর কারনে ইসলামী আন্দোলন জয়ী হয়ে ব্যার্থতাকে বরণ করে নিতে হয়েছে। এর মোকাবেলায়, কর্মপন্থা হাতে নেয়া উচিত
বিষয়: বিবিধ
১৪০১ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
দুটো বাচ্চাকেই স্বযত্নে আমেরিকা ও বৃটেন লালন পালন করছে - যাতে তারা মুসলিমদের সম্পদ ই শুধু লুটছে না - সে সাথে মুসলিমদেরকে আলটিমেট স্লেইভ বানিয়ে ছেড়েছে।
দয়া করে ইতিহাস জানুন এবং ওদের প্রতারনা বুজুন এবং মানুষকে সচেতন করুন।
কিন্তু কোন কারনে জামায়াত যদি শিওর না হয় যে শেষ জামানার শেষ মূহুর্তটি আমাদের নাকের ডগায় এলো কি এলো না - তখন প্রথম কাজ হবে - কোরান হাদীস গেঁটে ও বিশ্ব পরিস্থিতিকে বিচার বিশ্লেষন করে সিদ্ধান্তে আসা - আসলেই কি নবী মোহাম্মদ সঃ এর বলা শেষ জামানার মেজর সাইনগুলো সব এক্সপোজড কিংবা এক্সপোজড হবার ক্ষনে এসে পৌছেছে কিনা?
দেখুন মোহাম্মদ সঃ এর আসার সময় যে হয়েছে - তা ইয়াহুদীরা যেমন রিয়ালাইজ করেছে - ঠিক তেমনি খৃষ্টান পুরোহিতরা ও রিয়ালাইজ করেছে - তাদের হাতে থাকা - তাওরাত ও বাইবেল এর খন্ডাংশের আওতায় (মদীনার রাবাই ও সালমান ফার্সী দ্রষ্টব্য)। আর আমাদের কাছে পূর্ন কোরআন, আল্লাহর কালাম, আর শত শত শেষ জামানার হাদীস থাকা স্বত্তেও আমরা শেষ জামানার কতটা কাছাকাছি তা রিয়ালাইজ করতে পারবো না - তা হয়না। বিশেষ করে আজকের তথ্য যোগাযোগ ব্যবস্থার এই সিচ্যুয়েশানে আপনি লিটারেলী পুরো পৃথিবীটা একটা কম্পিউটার স্ক্রীনে দেখতে পারছেন।
সো আসুন বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে জামায়াত, তাবলীগ, হেফাজত ইত্যাকার দল সমূহকে আহ্বান জানাই দয়া করে তারা যেন কোরান হাদীস ইত্যাদির আলোকে এবং আজকের রাষ্ট্র, সমাজ, পরিবার ও ব্যাক্তির কার্যকারন বিশ্লেষন করে সিদ্ধান্তে উপনীত হন এবং মুসলিমদের করনীয় কি হবে তার উপর গাইড লাইন দেন এবং দয়া করে দলের উপরে উঠে মুসলিম উম্মাহর বিষয়কে বিবেচনায় নেন - না হয় ফসল হয়তো উঠবে কিন্তু সে ফসল খাবে অন্য কেউ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন