মহিলা নেতৃত্বের স্বর্ণযুগে কেন এত নারী ধর্ষণ? বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম

লিখেছেন লিখেছেন কপি পোষ্ট ০৭ জানুয়ারি, ২০১৩, ১২:৪০:২৫ রাত

একবিংশ শতাব্দীতেও সভ্য সমাজে এমন জানোয়ারের বাস স্বপ্নেও কল্পনা করা যায় না। মেডিকেল পড়ুয়া ২৩ বছরের এক ছাত্রীর বাসে ধর্ষণজনিত মৃত্যু নিয়ে ভারতের দেড়শ’ কোটি মানুষ জেগেছে। দামিনী নামে মেয়েটির উপর এমন নিষ্ঠুর আচরণে ভারত আজ টলটলায়মান।সংসদে আইন সংশোধন করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে সোচ্চার ছোট-বড় সবাই। শেষ পর্যন্ত অপরাধীরা শাস্তি পাবে এ ব্যাপারে আমরা নিশ্চিত। কিন্তু একবিংশ শতাব্দীর বিজ্ঞানের এই দুর্দান্ত উন্নতির জমানায় আমাদের দেশে ২০১২ সালের শেষে মধুপুরে সংঘটিত বর্বর শিশু নির্যাতনের আদৌ কোনোবিচার হবে কিনা সন্দেহ থেকেই যাচ্ছে। আমাদের এখননারী ক্ষমতায়নের স্বর্ণযুগ। গত ২২-২৩ বছর বাংলাদেশ শাসিত হচ্ছে মেয়েদের হাতে। সুলতানা রাজিয়া দিল্লির শাসন ক্ষমতায় ছিলেন মাত্র এক বছর। এক বছরে সেই পশ্চাত্পদ সমাজে তিনি যে সংস্কার এনেছিলেন, নারী নেতৃত্বের দীর্ঘ দুই যুগেও আমাদের দেশে তা হয়নি। বরং হিংসা-বিদ্বেষ, মারামারি, রাহাজানির প্রাধান্য বেড়েছে অনেক বেশি। মানুষের সামাজিক সম্মান একেবারে শূন্যের কোঠায় নেমে গেছে। রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পদে বা স্থানে অবস্থানকারীরা যদি এত নিম্নমানের ভাষা ব্যবহার করেন, তাহলে তার সংক্রমণ তো সাধারণের উপর হবেই। অসহিষ্ণুতার একেবারে শেষ পর্যায়ে পৌঁছে গেছি আমরা। বঙ্গবন্ধুর হত্যার প্রতিবাদ করতে গিয়ে আমি গারো পাহাড়ের পাদদেশে বেশকয়েক বছর ছিলাম। সেখানে নারীপ্রধান সমাজ। আমাদের সমাজে যেমন বিয়ে করে বউ ঘরে নিয়ে আসে, ঠিক তেমনি গারো সমাজে মেয়েরা বিয়ে করে স্বামী বাড়ি নিয়ে যায়। স্ত্রীরা শ্বশুরবাড়ি যায় না, স্বামীরা স্ত্রীর বাড়ি যায়। মেয়েরা ক্ষেত-খোলায় হালচাষ করে, স্বামীরা ক্ষেতের আলে বসে তামুক খায়, বাঁশি বাঁজায়—এটাই তাদের সামাজিক রীতিনীতি। আমাদের সমাজে স্বামীরা উপার্জন করে, স্ত্রীরা সংসার চালায়, ছেলেমেয়ে দেখাশোনা করে। গারো সমাজেস্বামীরা ছেলেমেয়েকেও দেখাশোনা করে না। মেয়েরা হালচাষ করে, রান্নাবান্নাকরে, সন্তান টোপলা করে পিঠে নিয়ে বাজারঘাট করে—সবই করে মেয়েরা। তাইমেয়েপ্রধান সমাজ তাদের। কিন্তু আমাদের এখন প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী দলের নেত্রী, সংসদ নেতা-উপনেতা মহিলা, পররাষ্ট্র, কৃষিমন্ত্রী মহিলা। কত জজ, ব্যারিস্টার, রাষ্ট্রদূত, সচিব মহিলা। তবু কোনো মহিলার সম্ভ্রমের নিরাপত্তা নেই। সারা জীবনে খুব বেশি ধর্ষিতা নারী দেখিনি। দু’একটা যা দেখেছি তা খুবই বীভত্স। মুক্তিযুদ্ধের সময় বল্লার শহীদের বোনকে হানাদার কর্তৃক ধর্ষিতা দেখেছিলাম, কলিজা ফেটে গিয়েছিল। আর এই সেদিন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ওসিসি ওয়ার্ডে আগবেতৈর তারাবাড়ীর রফিকুল আলমের ধর্ষিতা বোন১৫ বছরের স্কুল ছাত্রীকে দেখলাম। বেদনায় অপমানে হৃদয় খান খান হয়ে গেছে। নারী নেতৃত্বের আমলে ১৫ বছরের কিশোরী এভাবে নির্যাতিতা হয়—কোনো প্রতিকার পায় না। তারপরও ওইসব নেত্রী লাখো মানুষেরসামনে মহিলা হিসেবে কথা বলেন কি করে? এদের নীতি-নৈতিকতা কোথায়, কিছু ভেবে পাই না। নীতি-নৈতিকতা, বিবেকবোধ, মানবতা থাকলে তারা এসবের প্রতিকার করে কথা বলতেন। আর না হলে জনসম্মুখে মুখ দেখাতেন না। আল্লাহতায়ালা সুরা মায়িদায় বলেছেন, ‘কেউ যদি অকারণ অহেতুক কাউকে হত্যাকরে, সে যেন মানব জাহানকে হত্যা করল। আর কেউ যদি মায়া-মমতা, সেবা-যত্ন দিয়েএকটি জীবনকে রক্ষা করে, তাহলে সে সমগ্র মানব জাহানকে রক্ষা করল।’ একজন নারী ধর্ষিতা হওয়া মানে বাংলাদেশ ধর্ষিতা হওয়া, বাংলাদেশের সমস্ত নারী ধর্ষিতা হওয়া। একটি শিশু ধর্ষিতা হওয়া মানে সব শিশু ধর্ষিতা হওয়া। সেই হিসেবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী দলের নেত্রী বা অন্য নেত্রীরা রফিকুলের ১৫ বছরের বোন ধর্ষণের লজ্জারহাত থেকে মুক্তি পান কি করে? জানি এসব বলে কোনো লাভ নেই। তবু বিবেক যন্ত্রণা দেয়, তাই বলি। যেদিন সাধারণ মানুষ পাশে এসে দাঁড়াবে সেদিন আমরা নিজেরাই এসবের প্রতিকার করব, কারও মুখ চেয়ে থাকতে হবে না। ঘটনাটা গোড়া থেকে বলি।

৬ ডিসেম্বর ২০১২ সালের ঘটনা। এক রিকশা চালকের ১৫ বছরের স্কুল পড়ুয়া মেয়ে মধুপুরের আউশনারায় নুরুজ্জামানের ঘরে এক নাগাড়ে তিনদিন তিন রাত ধর্ষিতা হয়েছে। দরিদ্র ঘরের দেখতে শুনতে সুশ্রী মেয়ে। বেতৈর বাজারে এক দোকানে সেলাইয়ের কাজ শিখত। অন্যদিকে নিয়মিত লেখাপড়া করত। এলাকার সবাইভালো মেয়ে বলে স্নেহ করত। হঠাত্ একদিন মহেলার বীথি আক্তার ইভা নামে এক দুশ্চরিত্রা সুন্দরী মেয়ের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। দেখতে শুনতে তারই মতো ছোটখাটো, সুশ্রী। এ ক’দিন তার সম্পর্কে যা শুনেছি তা কহতব্য নয়। আমি জানি আজকের লেখা সুন্দর হবে না,ভালো হবে না। কারণ আজ আমি ধীর, স্থির, শান্ত নই। অনেকচেষ্টা করেও শান্ত থাকতে পারছি না। মুক্তিযুদ্ধের মতো, বঙ্গবন্ধুর হত্যার মতো আজ আমার শান্তি নেই।বাকিটুকু এখানে....http://www.amardeshonline.com/pages/details/2013/01/07/181598

বিষয়: বিবিধ

১৩৩৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File