হালাল মাংস নিয়ে ব্রিটেনে তোলপাড়..Kosher মাংস নিয়ে নয় কেন? Surprised

লিখেছেন লিখেছেন চেয়ারম্যান ১২ মে, ২০১৪, ০২:৫২:৪০ রাত



হালাল মাংস নিয়ে গত কয়েকদিন ব্রিটেনে ঝড় বয়ে গেছে। বৃটেনের মেইনস্ট্রিম এর সবগুলো মিডিয়া অভিযোগ তুলেছে এইদেশে ফাস্টফুড চেইনগুলো কাস্টমারদের না জানিয়ে পিজ্জা, কারীতে (তরকারী) হালাল গোশত ব্যবহার করে।





বলে রাখি উপরের যেই দুটি পত্রিকার পেপার কার্টিং দেখছেন , এই ২ টি পত্রিকা সব সময় ইসলামকে একটি জঙ্গি , সন্ত্রাসী ধর্ম হিসেবে পাঠকের কাছে তুলে ধরার চেষ্টায় থাকে। সান থেকে ডেইলি মেইল এই দিক দিয়ে ১০০ গুন এগিয়ে। কোথায় স্কুলে বোরকা পড়তে বলে টিচারেরা , জঙ্গি আবিস্কার করা, এগুলো ডেইলি মেইলের নিত্যদিনের কাজ। ডেইলি মেইলকে বলতে পারেন বাংলাদেশের হলুদ সাংবাদিকদের পথপ্রদর্শক।

যাই হোক আমরা সবাই জানি হালাল মাংস কিভাবে উত্পাদন হয়। জ্ঞান থাকা অবস্থায় গরুকে / বা যে পশু খাওয়া ইসলামে বৈধ সেই সব পশুকে আল্লাহর নামে জবাই করে হালাল মাংস উত্পাদন করা হয়। কিন্তু পশ্চিমা দেশে যেই সব গরু জবাই করা হয় তা সম্পুর্নভাবে অচেতন করে তারপর জবাই করে গোশত উত্পাদন করা হয়। তাদের যুক্তি হলো অচেতন না করে পশু জবাই করলে পশুদের কষ্ট হয়। এটি অমানবিক। কিন্তু যারা প্রত্যেক দিন ইরাক,বার্মা , মধ্য আফ্রিকা,আসাম,আফগানিস্তান, ফিলিস্তিনে নিরীহ মানুষদের হত্যা করছে , তখন তাদের মানবতাবোধ জাগ্রত হয় না। পশু কষ্টের মানবিক যুক্তিতে গত কয়েকদিন আগে ডেনমার্কে জবাই করে হালাল মাংস উত্পাদনের প্রক্রিয়া নিষিদ্ব করা হয়।

যাই হোক এখন আপনাদেরকে পরিচয় করিয়ে দিবো মাংস উত্পাদনের আরেকটি পপদ্বতির সাথে। ঠিক হালাল মাংস উত্পাদনের মতই। কিন্তু এটি নিয়ে কেউ চিত্কার করে না। মানবতার ধোয়া তুলে না। বৃটেনের পত্রিকায় ও দিনের পর দিন শিরোনাম হয় না। এই পদ্বতির নাম হলো Kosher (কশের) ।

কারণ Kosher (কশের) পদ্বতিতে মাংস উত্পাদন করে ইহুদিরা। আর এই ইহুদিরাই সারা বিশ্বের মিডিয়াগুলোর মতই বৃটেনের ডেইলি মেইল আর সান পত্রিকার মালিক।

এবার দেখুন Kosher (কশের) পদ্বতিতে কিভাবে পশু জবাই করা হয়।

১) প্রথমে তারা একটি ধারালো চুরি নির্বাচন করে।



২) তারপর পশুর সুস্থতা যাচাই করে। পশুর শরীরে যদি বড় কোনো দাগ বা অসুখ থাকে তাহলে সেই পশু Kosher (কশের) পদ্বতির জন্য অনুপযোগী হয়ে যাবে।



৩) পশুর সুস্থতা যাচাইয়ের পর পশুটির মাথাকে উপরের দিকে তুলে ধরে , এতে পশুর গলা টান টান হয়ে থাকে এবং কাটতে সুবিধা হয়.



৪) ছুরিটিকে ভালো করে পরীক্ষা করা হয়। ছুরিটি যেন তীক্ষ্ণ ধারালো হয় , এবং ছুরির কোথাও যেন অমসৃন না থাকে।



৫) তারপর দ্রুততার সাথে পশুর খাদ্যনালী , শ্বাসনালী , ক্যারোটিড ধমনী এবং গলার শিরা কাটতে হবে। ঠিকভাবে কাটলে পশুটি ২ সেকেন্ডে মারা যাবে।



৬) জবাই করার পর পশুর রক্তকে ভাল করে বের হতে দেওয়া। কারণ পশুর রক্ত থাকলে মাংস Kosher (কশের) হবে না। কারণ তারা বিশ্বাস করে রক্তে প্রাণীর প্রাণ থাকে।



৭) রক্ত ভালো করে বের হওয়ার পর, পশুর হার্ট , কলিজা , ফুসফুস পরীক্ষা করা হয়। যদি ফুসফুস , কলিজা বা হার্টে গর্ত থাকে তাহলে মাংস Kosher (কশের) হবে না।



৮) পশুর শরীর থেকে নন-Kosher (কশের) অংশ বাদ দেওয়া। পশুর নন-Kosher (কশের) অংশ হলো চর্বি ,সায়াটিক নার্ভ ও রক্তনালী

এই হলো ইহুদিদের মাংস খাওয়ার সিস্টেম। আচ্ছা এবার আপনারাই বলুন ইহুদি আর মুসলিমদের পশু জবাইয়ের পার্থক্য কোথায় ? মুসলিমরা শুধু আল্লাহর নামে পশু জবাই করে। আর ইহুদিরা করে না। কিন্তু পশু জবাইয়ের পদ্বতি একই।

তাহলে কথা হলো বৃটেনের পত্রিকাগুলো শুধু হালাল মাংসের বিরুদ্বে কেন ? অবশ্যই ইসলাম বিরোধিতা। ইউরোপে মুসলিমদের সংখ্যা বৃদ্বির কারণে আজকে পশ্চিমারা শঙ্কিত।

( Kosher (কশের) মাংস সম্পর্কে গতকালকের আগে আমি নিজেও জানতাম না। বিখ্যাত কমেডিয়ান রাসেল ব্রান্ডের হালাল আতঙ্ক নিয়ে একটি কমেডির ভিডিওর কমেন্ট থেকে জানলাম। পরে গুগল সার্চ দিয়ে কিছুটা জেনে এই লেখা। ভুল থাকলে আন্তরিকভাবে দুঃখিত)

বিষয়: বিবিধ

২৩৭৯ বার পঠিত, ১৮ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

220472
১২ মে ২০১৪ রাত ০৩:০১
রসিক হাকিম লিখেছেন : ভালো লাগলো
২৪ জুন ২০১৪ রাত ০৯:৫৭
184940
চেয়ারম্যান লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ
220484
১২ মে ২০১৪ সকাল ০৫:১২
বেদনা মধুর লিখেছেন : ভালো লাগলো
২৪ জুন ২০১৪ রাত ০৯:৫৭
184941
চেয়ারম্যান লিখেছেন : জেনে খুশি হলাম
220488
১২ মে ২০১৪ সকাল ০৮:৩৮
আয়নাশাহ লিখেছেন : পত্রিকাগুলো তো ভাল কাজই করছে। কোশের এবং জবিহা এই দুই এর মধ্যে পারথক্য আপনি একজন মুসলমান এবং সচেতন মুসলমান হয়েও যখন জানেন না তখন একথা অনুমান করা যায় যে, বৃিটেনের বেশইরভাগ মানুষই এই বিষয়টি জানেনা। এখন যেহেতু মিডিয়া এ নয়ে হৈ চৈ শুরু করেছে তখন মানুষ এ নিয়ে জানতে আগরহী হবে এবং জানবে। আর জানলেই মুসলমানদের ব্যাপারে তাদের কুধারণা দুর হয়ে যাবে। ৯-১১ এর পর যেমন সব মুসলমানকে সন্ত্রাসী পরমান করতে মিডিয়াগুলো উঠে পড়ে লেগেছিল তার ফল কি হয়েছিল? সারা পশচিমা বিশ্বের অনুসন্ধিৎসু মানুষের মনে ইসলাম সম্পর্কে ভুল ধারনা দুর হয়ে যায় আর অনেকেই ইসলামকে গ্রহণ করে।
এই প্রপাগান্ডার ফলও একই হতে বাধ্য। সাথে সাথে এরেকটা জিনিস লাভের খাতায় যোগ হয় আর তা হলো এইসব মিডিয়া নিজেদের বিশবাস যোগ্যতা হারায় যা আর কখনো ফিরে পায়না।
বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও এমনটা ঘঠেছে। সবগুলো মিডিয়া জামায়াতের বিপক্ষে অবসথান নিয়ে মিথ্যার বেশাতি চালাচছে যুগ যুগ ধরে কিন্তু মানুষ এদেরকে বিশ্বাস করেনাই বরং তারা নিজেদের মিথ্যাবাদী প্রমান করেছে।
২৪ জুন ২০১৪ রাত ০৯:৫৭
184942
চেয়ারম্যান লিখেছেন : একদম সত্যি কথা। আল্লাহ উত্তম পরিকল্পনাকারী
220498
১২ মে ২০১৪ সকাল ০৯:৪৮
হতভাগা লিখেছেন : '' তাদের যুক্তি হলো অচেতন না করে পশু জবাই করলে পশুদের কষ্ট হয়। এটি অমানবিক। কিন্তু যারা প্রত্যেক দিন ইরাক,বার্মা , মধ্য আফ্রিকা,আসাম,আফগানিস্তান, ফিলিস্তিনে নিরীহ মানুষদের হত্যা করছে , তখন তাদের মানবতাবোধ জাগ্রত হয় না। ''

০ পশুধিকারের ব্যাপারে উনারা সচেতন কারণ উনারা পশুই । মানুষ হলেই তো মানবাধিকারের ব্যাপারে সচেতন হবে ।
১২ মে ২০১৪ দুপুর ০২:৩৬
168203
পললব লিখেছেন : হতভাগা লিখেছেন : 'পশুধিকারের ব্যাপারে উনারা সচেতন কারণ উনারা পশুই'। বাংলা প্রবাদে যাকে বলে-রতনে রতন চেনে।
১৮ মে ২০১৪ দুপুর ০৩:১৫
170342
আল্লাহর সন্তুষ্টি লিখেছেন : ০ পশুধিকারের ব্যাপারে উনারা সচেতন কারণ উনারা পশুই । মানুষ হলেই তো মানবাধিকারের ব্যাপারে সচেতন হবে ।
২৪ জুন ২০১৪ রাত ০৯:৫৮
184943
চেয়ারম্যান লিখেছেন : এদের দ্বিমুখী নীতির কারণেই আজ বিশ্বে এত সমস্যা। মানুষকে পশুর মত মারলেও সমস্যা নেই
220577
১২ মে ২০১৪ দুপুর ০২:৩৪
পললব লিখেছেন : ধন্যবাদ চেয়ারম্যান সাহেব সচেতনামূলক পোষ্ট করার জন্য। পজেটিভ এবং নেগেটিভের সংঘর্ষ ছাড়া কোন কিছুই সৃষ্টি হয় না। আসলে ইসলাম বিরোধিরাই ইসলামকে চিনতে, জানতে এবং মানতে সহযোগিতা করছে।
২৪ জুন ২০১৪ রাত ০৯:৫৯
184944
চেয়ারম্যান লিখেছেন : হ্যা সেটাই। এখন অনেকেই এই সম্পর্কে জানবে
220762
১২ মে ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:৫৩
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : কোশের আর হালাল একই পদ্ধতিতেই জবাই করা হয়। আর হালাল গোস্তে ক্ষতিকর কিছুই থাকেনা।
২৪ জুন ২০১৪ রাত ০৯:৫৯
184945
চেয়ারম্যান লিখেছেন : কিন্তু তবু ও হালাল নিয়ে উনাদের চুলকানি
220798
১২ মে ২০১৪ রাত ০৯:০০
বৃত্তের বাইরে লিখেছেন : Kosher শব্দটা নতুন শুনলাম, জানা ছিলনা। আমাদের চারপাশে এশিয়ান লোকজন বেশী তাই অনেক হালাল দোকান। এ নিয়ে কখনও সমস্যা হয়নি। তবে এটা একদিক দিয়ে ভাল আমার মত ব্রিটেনে বসবাসকারী যারা এ ব্যাপারে জানতোনা তারা আরও ভালো করে পার্থক্যটা জানতে পারলো। এভাবেই অজানাকে জানতে গিয়ে পশ্চিমারা ইসলামের দিকে ঝুঁকছে। ধন্যবাদ আপনাকে Good Luck Good Luck
২৪ জুন ২০১৪ রাত ০৯:৫৯
184946
চেয়ারম্যান লিখেছেন : হ্যা সেটাই। আর আমি ও জানতাম না
223011
১৮ মে ২০১৪ দুপুর ০৩:১৫
আল্লাহর সন্তুষ্টি লিখেছেন : ০ পশুধিকারের ব্যাপারে উনারা সচেতন কারণ উনারা পশুই । মানুষ হলেই তো মানবাধিকারের ব্যাপারে সচেতন হবে ।
২৪ জুন ২০১৪ রাত ১০:০০
184947
চেয়ারম্যান লিখেছেন : সত্যি ভাই

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File