প্রজন্ম তুমি ভুল মানুষকে ফাঁসি দিয়েছ এবং একজন কানাডিয়ান মোজাম্মেলের মিথ্যাচার
লিখেছেন লিখেছেন চেয়ারম্যান ০৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪, ১১:৪৪:১৪ রাত
প্রজন্ম গত বছরের ৫ ই ফেব্রুয়ারী কাদের মোল্লার ফাসির জন্য আন্দোলন শুরু করেছিলো। আপাদত দৃষ্টিতে তোমরা তোমাদের দাবি পূরণ করতে পেরেছ। কিন্তু প্রজন্ম তুমি কি কখনই চিন্তা করেছ , কাদের মোল্লা আর কসাই কাদের একই ব্যক্তি না ও হতে পারে। তুমি যা দেখনি আর যা শুনেছ তা মিথ্যা ও হতে পারে , তা কি কখনো ভেবেছ ?
তুমি কি কখনো ভেবেছ কসাই কাদের কিভাবে স্বাধীনতার পরে ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে ? তোমার কি চিন্তা জাগ্রত হয়নি যে একজন কসাইয়ের নাম স্বাধীনতার পর রাজাকারদের তালিকায় কেন তার নাম নেই?
তুমি কি ভেবে দেখেছ সিম্পল জীবন পরিচালনাকারী কাদের মোল্লা আর নিয়াজীর পিছনে দাড়ানো কসাই কাদের এক নয় ?
বিশ্বাস হয়না ? দেখনা ২ টা ছবি। অমি পিয়াল বা শাহরিয়ার কবিররা যাকে কাদের মোল্লা হিসাবে পরিচয় করে দিচ্ছে সেই রকম একটি ছবি তোমাদের দেখাচ্ছি। এই ছবিটি একটু গুরুত্বপূর্ন দলিল হিসেবে ট্রাইবুনালে জমা দিয়েছিলো রাষ্ট্রপক্ষ।
প্রজন্ম তুমি একটু অনুমান করো ৫ ফিট ১১ ইঞ্চি লম্বা নিয়াজির পিছনে দাড়ানো কসাই কাদের কতটুকু লম্বা হবে। তুমি হয়তো ভাবছ ৫ ফিট ৭ ইঞ্চি তো হবেই। তাহলে কাদের মোল্লার উচ্চতা কত ছিলো ?
দেখনা কাদের মোল্লার একটি ছবি
দেখো এই লোকটাকে কি ৫ ফুট ৭ ইঞ্চি লম্বা মনে হয় ?
আরেকটা ছবি দেখো প্রজন্ম
ছবির লাল বৃত্ত দিয়ে চিহ্নিত লোকটি কাদের মোল্লা।তাকে কি মনে হচ্ছে ৫ ফিট ৭ ইঞ্চি লম্বার ?
আচ্ছা প্রজন্ম তুমি একটু ভাবো তো নিয়াজির পাশ যে লোকটাকে তুমি কাদের মোল্লা ভাবছ তার বয়স কত হবে ? অন্তত ৩৫ বা ৪০ হবে।
কিন্তু তুমি কি জানো যেই কাদের মোল্লাকে ফাসি দেওয়ার জন্য তুমি শাহবাগে দিনরাত আন্দোলন করেছ, ১৯৭১ সালে সেই কাদের মোল্লার বয়স ছিলো ২২ বছর। বিশ্বাস হয়না ? দেখো না ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করা কাদের মোল্লার মার্কশিট
মার্কসিটে দেওয়া ছবি আর নিয়াজির পিছনে দাড়ানো লোকটির ছবিটি একটু তুলনা কর তো ? ৭১ আর ৭৩ এর ছবির মাঝে তো বেশি পার্থক্য হওয়ার কথা নয়।
প্রজন্ম এবার তোমাকে আরেকটি ছবি দেখাবো
ছবিতে ৯২ সালের রোকন সম্মেলনে তৎকালীন জামায়াত আমির গোলাম আযমমের পাশে দাঁড়ানো আব্দুল কাদের মোল্লা। যদি নিয়াজির পিছনে দাড়ানো ৫ ফিট ৭ ইঞ্চির কসাই কাদের,৫ ফিট ৯ ইঞ্চি লম্বা গোলাম আজমের সাথে দাড়ায় তাহলে তো পউচ্চতায় প্রায় একই রকম হওয়ার কথা।
কি হিসাব মিলছে না ? তাহলে তুমি কি ভেবেছ প্রজন্ম ? তুমি কি নিরপরাধ কাদের মোল্লাকে হত্যার একজন সহযোগী নয় ?
কাদের মোল্লা সাক্ষী দেওয়ার সময় দাবি করেছিলো তিনি মুক্তিযুদ্বা ছিলেন। মুক্তিযুদ্বের ট্রেনিং নিয়েছিলেন। কিন্তু তুমি শুনো নি। আওয়ামী এমপি গোলাম মাওলা রনি ও তোমাদেরকে বলেছিলো কাদের মোল্লার গ্রামে গিয়ে খোজ নিতে। কিন্তু তোমরা তা করো নি। এবার শুনো এবং দেখো কাদের মোল্লাকে যিনি মুক্তিযুদ্বের ট্রেনিং দিয়েছিলেন সেই লোকের সাক্ষ্য।
ভাল করে শুন প্রজন্ম। তোমরা কাকে হত্যা করেছ ? একজন মুক্তিযুদ্বাকে রাজাকার বানিয়ে ফাসি দিয়েছ ?
তুমি কি জানো কাদের মোল্লা প্রেসক্লাবের সহসভাপতি ছিলো।
দেখনা প্রেসক্লাব থেকে দেওয়া একটি কপি।
প্রজন্ম তুমি কি জানো মোমেনা বেগম তিনবার তিন রকম সাক্ষ্য দিয়েছিলো। মুক্তিযুদ্বা জাদুঘরে সংরক্ষিত সাক্ষীতে দেখা যায় মোমেনা বেগম কখনই কাদের মোল্লার নাম বলে নাই।
প্রজন্ম তোমাদেরকে কিভাবে মিথ্যা ও ভুল তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করছে , তা তুমি হয়তো জানো না। কাদের মোল্লা সম্পর্কে এই রকম একটি মিথ্যা তথ্য দিয়ে তোমাদের বিভ্রান্ত করেছিলো কানাডা প্রবাসী বাংলাদেশী প্রফেসর মোজাম্মেল হক। ওই মোজাম্মেল হক নিজেকে কাদের মোল্লার সহপাঠি হিসেবে দাবি করেন। কাদের মোল্লার ফাসির দিন ফেসবুকে সেই মোজাম্মেলের স্টাটাস দেখো
প্রজন্ম দেখ মোজাম্মেল হক কাদের মোল্লা সম্পর্কে কি লিখেছেন
কাদের মোল্লা হলেন আমাদের রাজেন্দ্র কলেজের ১৯৬৪-১৯৬৬ এইচএসসি ব্যাচের সবচেয়ে পরিচিত মুখ এবং তিনি জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সমধিক পরিচিত ব্যক্তি, তা সে যে কারণেই হোক না কেন।
আমাদের ব্যাচের সবাই ১৯৭২ সালের মধ্যেই এমএ বা এমএসসি ডিগ্রী শেষ করে। প্রকৃত ঘটনা হলো ১৬ ডিসেম্বর আমাদের বিজয়ের পর কাদের আত্মগোপন করে এবং ১৯৭৬ সালে জিয়াউর রহমান যখন প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক হন তখন সে আত্মগোপনতা থেকে বেরিয়ে এসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পুনরায় ভর্তি হয় এবং ১৯৭৭ অবধি সে ছাত্র ছিল।
সূত্র : দৈনিক জনকন্ঠ
প্রজন্ম দেখ মোজাম্মেল কি লিখেছে
প্রকৃত ঘটনা হলো ১৬ ডিসেম্বর আমাদের বিজয়ের পর কাদের আত্মগোপন করে এবং ১৯৭৬ সালে জিয়াউর রহমান যখন প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক হন তখন সে আত্মগোপনতা থেকে বেরিয়ে এসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পুনরায় ভর্তি হয় এবং ১৯৭৭ অবধি সে ছাত্র ছিল।
কিন্তু তুমি তো আগেই দেখেছ ঢাবি থেকে ৭৫ সালে পাশ করা কাদের মোল্লার মার্কশিট। এবার সার্টিফিকেট দেখ
কি কাদের মোল্লা ৭৫ সালে পাশ করেনি ? তাহলে এই মোজাম্মেল কেন দাবি করলো কাদের মোল্লা ৭৬ এর আগে ঢাবিতে আসে নি ? তুমি কনফিউজ প্রজন্ম ? ঢাবিতে গিয়ে সার্টিফিকেটটি চেক কর।
মোজাম্মেল আরো লিখেছে
এইচএসসি ফলাফলে কাদের গড়পড়তা ছাত্রের থেকে নিচে ছিল যার ফলে সরাসরি সে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স পড়ার যোগ্যতা অর্জন করেনি। যার ফলে সে রাজেন্দ্র কলেজেই বিএসসি পড়ে (১৯৬৬-১৯৬৮) এবং ১৯৬৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পাস কোর্সে এমএসসিতে ভর্তি হয়
কিন্তু প্রজন্ম এই মেজাম্মেল তোমাদের কিভাবে মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করেছে দেখ :
ঢাবি থেকে ১৯৬৮ পাশ করা কাদের মোল্লারসার্টিফিকেট দেখ :
তাহলে মোজাম্মেল কিভাবে বললো কাদের মোল্লা ১৯৬৮ সালে রাজেন্দ্র কলেজেই বিএসসি পড়ে। সেটি কি মিথ্যে নয় ?
এইভাবে প্রজন্ম তুমি মিথ্যা ইতিহাসে বিভ্রান্ত হয়ে পিছু পিছু হাটতেছ। তুমি কখনই কাদের মোল্লার নিজের কথা শুনতে ছাও নি। তুমি শুধু শুনেছ মোজাম্মেলদের কথা। প্রজন্ম তুমি যদি কোনো অপরাধ না করে ও ফাসির দড়ির সামনে দাড়াও , তাহলে তোমার কথা শোনা তো তোমার ফাসি চাওয়া লোকদের কর্তব্য। যদি না শোনে তুমি কি মনে করবে ? তুমি কি তাদের ক্ষমা করে দিবে ?
প্রজন্ম মাথাটা ঠান্ডা করে কয়েকটি পয়েন্ট আবার ভাবো।
১) নিয়াজীর পিছনে দাড়ানো লোকটি কি সত্যিই কাদের মোল্লা ?
২) নিয়াজির পিছনের লোকটির উচ্চতা ও বয়স ৭১ সালে কত ছিলো ?
৩) মিরপুরে ৩০০ মানুষকে খুন করে ৭২ সালে কিভাবে কাদের মোল্লা ঢাবিতে পড়তে পারে ?
৪) কাদের মোল্লা কি সত্যিই মুক্তিযুদ্বা ছিলো ?
৫) কানাডিয়ান মোজাম্মেল কি তোমাদের মিথ্যা তথ্য দেয়নি ?
৬) কাদের মোল্লাকে মুক্তিযুদ্বের ট্রেনিং দেওয়া লোকটির কথা শুনে তোমার কি মনে হয় ?
৭) কসাই কাদের কিভাবে প্রেসক্লাবের সহসভাপতি হয় ?
প্রজন্ম এই প্রশ্নগুলো তোমাকে ভাবতে হবে। ভেবে ভেবে উত্তর না পেলে ও তোমাকে ফরিদপুরের আলোকদি গ্রামে গিয়ে একটু খোজ নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।
বিষয়: বিবিধ
৬০২৯ বার পঠিত, ৪৭ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
অনেক কিছু জানলাম ,এই হত্যার বিচার বাংলার জমিনে হবেই ইনশা আল্লাহ।শহীদ কাদের মল্লার বাংলাদেশে একদিন খুনিদের বিচার হবে। তাছাড়া পরকালের বিচার তো রয়েছেই। আল্লাহ সকলের বিচারকের বিচারক।
কাদের মোল্লা যদিও শহিদ হয়েগেছেন তবুও এই প্রমানগুলি থাকবে ঐতিহাসিকদের জন্য। যারা সত্যিই নিরপেক্ষভাবে বিচার করবেন।
এ অন্যয়োর প্রতিবাদ হবে যেমনটি শেখ মুজিবর প্রতি হয়েছিল। একজন কাদের মোল্লার ফাসীর মাধ্যমে পৃথিবীবাসী তার প্রতি যে শ্রদ্ধা দেখিয়েছে তা তার সৌভাগ্য যা শেখ মুজিবের ভাগ্য হয়নি।
অর্থাৎ রক্তই সমাধান.........
বারুদেই অন্তিম তৃপ্তি.........।
আমি নিশ্চিত- দেশের ৭০ ভাগ লোক এর বিপক্ষে ভোট দিবেন।
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
লিগে কি ভাবে সেটা দেখার বিষয়।
ইনশাল্লাহ লিগ তার প্রতিদান পেয়ে যাবে
আমাদের প্রার্থনা, ওহ আল্লাহ এই খুনের সাথে জড়িত প্রত্যেকটি মানুষকে তুমি তাদের জন্য উপযুক্ত বিচারের আওতায় এনো - কারন তুমি ছাড়া আর কোন স্বত্তা নেই - যে প্রতারক ও খুনীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে পারে।
মন্তব্য করতে লগইন করুন