- দাঁড়িপাল্লায় কান্নাহাসি
লিখেছেন লিখেছেন অন্য চোখে ০২ মার্চ, ২০১৬, ০৫:৪০:০২ বিকাল
এটাকে মিনি বাংলাদেশ বলা চলে, অপিষ এর ব্র্যাঞ্চ ম্যানেজার হতে শুরু করে পিয়ন পর্যন্ত বাংলাদেশীদের দাপট। অন্যান্য দেশের লোকও আছে তবে ব্র্যাঞ্চ ম্যানেজার বাংলাদেশী হওয়াতে এবং তার একটা প্রভাব পড়েছে সব ক্ষেত্রে। সবাই জানে এই ব্র্যাঞ্চটা বাংলাদেশীদের দখলে।
করিম সাহেব এখানে জয়েন্ট করেছে বছর পাঁচেক হলো কিন্তু তার খুব একটা উন্নতি হয়েছে বলে মনে হয়না, প্রমোশান যেমন হয়না ডিমোশানও না, অন্যান্য সুযোগ সুবিধাও যেন স্থবির অন্যদের তুলনায়। আসলে নির্মোহ ভাবটাই কাল হলো করিম সাহেবের। কোন কিছুতে তার হাসি যেমন পায়না তেমনি কান্নাটাও। চমকে ওঠাও হয়না কোন কিছুতে। মুচকি একটা হাসি দিয়েকি আর সব বোঝানো যায়!
অপিস এর বড় কর্তা যখন বলল আজ রাতে দেশে যাচ্ছি, মা খুব অসুস্থ্য, সবাই হকচকিয়ে উঠলেন। কেন কি হয়েছে? কবে থেকে ইত্যাদি। নির্দিষ্ট করে কোন রোগ হয়নি, বয়েস হয়েছেতো তাই ঘনঘন হাসপাতালে আনা নেওয়া হচ্ছে। করিম সাহেব শুধু প্রশ্ন আর উত্তরটাই শুনে গেছেন, এ ক্ষেত্রে অবশ্য হাসিটাও প্রযোজ্য নয়।
কোথা থেকে আনিস সাহেব পোটলা একটা এনে ধরিয়ে দিলেন বড় সাহেবকে, স্যার আপনি শুধু সাথে করে নিয়ে গেলেই হবে, আমি কাউকে পাঠিয়ে কালেকশান করে নেব। করিম সাহেবের কাছে ব্যাপারটা ভালো ঠেকেনি। একজন লোক তার মা অসুস্থ্য তাই মাকে দেখতে দেশে যাচ্ছেন, তার কাঁধে চালানি নামক বস্তুটা ওঠিয়ে দেয়া উচিত হয়নি। এটা অমানবিক। সুন্দর দেখায়না। তাছাড়া ওনাকেতো কলিগ বলা চলেনা, বস বলে কথা। বস হয়তো লজ্বায় পড়ে পুটলিটা গ্রহণ করেছেন তবে আনিস সাহেব সম্পর্কে নিশ্চয় একটা ভুল ধারণা জন্মাবে। সেতো জয়েন্ট করেছে খুব বেশী দিন হয়নি, এইতো মাস ছয়েক।
প্রমোশান ইনক্রিম্যান্ট ইত্যাদি অনেকটা নির্ভর করে বড় সাহেব এর উপর। তিনিইতো সবার একটা মার্কশীট পাঠান হেড অপিষে। আনিস সাহেব এর পারফর্মেন্স খুব একটা সুবিধের হলো বলে মনে হলোনা। কাজ করার চাইতে কোন একটা অজুহাত নিয়ে বসের রুমে যাওয়া আসা করাটাই বেশী স্বাচ্ছন্দ বোধ করেন।
নতুন বছরের শুরুতে চমকটা আনিস সাহেবই দিলেন। বসের মায়ের মৃত্যু সংবাদটা শুনে তিনি খুব কেঁদেছিলেন। ঢুকরে ঢুকরে কাঁদেননি যদিও, টিস্যু পেপার ছিলো বলে ফাইলপত্তর ভেসে যায়নি বানের তোড়ে।তার একটা প্রভাব নিশ্চয় আছে। করিম সাহেব বরাবরের মতোই হাসিটা দিয়ে বছর শুরু করলেন।
বিষয়: বিবিধ
৮৭৬ বার পঠিত, ১৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
কেটে যায় বছর
তেল ছাড়া দুনিয়া চলে না । এটা দিতে পারাও একটা যোগ্যতা ।
ধন্যবাদ ভাইয়া ।
কান্নার প্র্যাকটিস করাটা খুব জরুরী
বরাবরের সেই হাসিটা কি তৃপ্তির ছিলো??
তবে এটা সত্য যে সবাই কে দিয়ে সব হয় না…
মন্তব্য করতে লগইন করুন