শাহবাগীসলাম
লিখেছেন লিখেছেন অন্য চোখে ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩, ১১:২৮:১১ সকাল
সেকুলারও একসময় ধর্ম হয়ে যেতে পারে যদিও তারা তা স্বীকার করতে ইচ্ছুক নন, ধার্মিক এর সাথে যেখানে বিশ্বাস আর যুক্তি সমান্তরাল হয়ে চলে সেখানে সেকুলার যুক্তি ছাড়া বিশ্বাস করতে নারাজ
@
একজন ধার্মিককে যদি প্রশ্ন করা হয় দেখাও তোমার স্রষ্টা, যদি দেখাতে পার তাহলে মেনে নেয়া যাবে তার অধীনতা, সেখানে ধার্মিক ইনিয়ে বিনিয়ে অনকে উদারণ দিতে পারে, যুক্তির পর যুক্তি দিয়ে মালা সাজাতে পারে কিন্তু স্রষ্টাকে আর দেখাতে পারেনা, সেই প্রশ্নের উত্তর আর মেলেনা আর সেকুলারও মুচকি হেসে বলে, এই যুগেও কি ধর্ম নিয়ে পড়ে থাকবে!
@
আচ্ছা যদি প্রশ্ন করা হয় প্রমাণ করো স্রষ্টা নেই তাহলে মেনে নেয়া যাবে ধর্ম বলতে কিছুই নেই, তারও কি সমাধান আছে! যাহা নেই তার অস্তিত্ব কি করে প্রমাণ করা যাবে! নেই প্রমাণ করতে হলেতো আছেটাই সত্য হয়ে যায়, কোথা হতে আসলাম কোথা যাব চলে এই প্রশ্নের উত্তরে এসে একজন নাস্তিক বা সেকুলার যে উত্তর দিয়ে থাকেন তা সে নিজে খুবই তৃপ্ত হলেও একজন আস্তিক বা ধার্মিক কখনো তৃপ্ত হতে পারেনা
@
আস্তিক আর নাস্তিকতার এই দ্বন্দটা পুরোনো হলেও আধুনিক সভ্য সমাজে দ্বন্দটাকে একাডেমিক হবারই কথা কিন্তু দূর্ভাগ্য জনক হলেও সত্য আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে বলা যায় আমরা যেমন সত্যিকার আস্তিক হতে যেমন পারিনি ঠিক তেমনি সত্যিকার নাস্তিকও হতে পারিনি তাই যে দ্বন্দটা একাডেমিক হবার কথা ছিল সেটা এখন হাতাহাতি যুদ্ধের রূপ নিয়ে পুরো দেশ এখন কেন্দিভূত হলো শাহবাগে
@
যে কথা বলছিলাম আমরা বাংগালী বা বাংলাদেশীরা এখনো সত্যিকার আস্তিক বা নাস্তিক কোনটাই হতে পারিনি তার একটা অন্যতম উদাহরণ দেয়া চলে বর্তমান দেশের চলমান বাদ প্রতিবাদের কেন্দ্রস্থল শাহবাগ। মানবতা বা যুদ্ধঅপরাধী বিচারকে কেন্দ্র করে শাহবাগে যে আন্দোলন এর সুত্রপাত তার সাথে যোগ হয়ে গেছে ধর্ম এবং ধর্মকে কেন্দ্র করে যেসব তর্ক এবং বিতর্ক উঠে এসেছে তার গুণগত মানটা খুবই নিম্নমানের বলেই মনে হয়, যেখানে যুক্তির চাইতে পেশী শক্তির ব্যাবহার যেমন দেখা গেছে ঠিক তেমনে ধর্মের চাইতে ধর্মান্ধ অধীক হয়েছে বলে মনে হয়
@
শাহবাগ থেকে দাবী উঠেছিল রাজনীতিতে ধর্ম থাকা বা রাখা যাবেনা, কিন্তু অবশেষে আপোষ করতেই হল, সর্ব ধর্মের বাণী দিয়ে তাদের শুরু করতে হয়েছে তাদের দ্বিতিয় আন্দোলনের প্রথম ভাগ, যদিও সব ধর্মের সাথে দ্বন্দ আছে বলে মনে হয়না, ইসলামটাকেই তারা চেলেজ্ঞ মনে করে, সরকার প্রশাসন সব স্বপক্ষে থাকার পরও তাদের এই নৈতিক পরাজয়টা মানতে হলো, শাহবাগ আন্দোলনে যদি কেউ নাস্তিকতার দৃষ্টিকোণ থেকে আন্দোলন করে থাকে তাহলে তার নৈতিক পরাজয় ওখানেই হয়ে গেছে বলে মনে করি
@
একজন আস্তিক এর কাছে সৃষ্টিকর্তা, মেসেজ্ঞার, স্বর্গীয় পুস্তক যেমন কোরান, বাইবেল, গীতা এসব এর মূল্য বা তাৎপর্য এতো অধীক যে যদি এগুলোর অবমাননা হয় তবে সে নিজের জীবন বাজি রেখে হলেও তার প্রতিবাদ করে, তখন কোন যুক্তির ধার ধারেনা সে, প্রতিবাদটা তখনি প্রতিশোধস্পৃহা ও হয়ে যেতে সময় লাগেনা, বিশেষ করে ইসলাম ধর্মের কথা বলা যায়, বর্তমান বিশ্বের যত যুদ্ধ বিগ্রহ তাতে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ইসলাম শব্দটা চলে আসে, তারা কোন ভাবেই ধর্মের প্রতি অবমাননা, অবহেলা মেনে নিতে পারেনা, একটা ছবি উদাহরণ দেয়া যেতে পারে, যেখানে দেখা যাচ্ছে পুলিশ জাপটে ধরছে দাংগা বা উশৃংখলতার অভিযোগে কিন্তু একজন ধার্মিক তার কোরানের অবমাননা হতে দেবেনা, সে পালিয়ে যাবার চেষ্টা না করে কোরানকেই তুলে নিতে চান রাস্তা থেকে, ছবিটা দেখুন...
একজন নাস্তিক এর চোখে এটাই ধর্মান্ধ, ধর্মের নামে দাংগা হাংগামা করে আবার কোরানকে আকড়ে ধরতে চাই অথচ কোরান পারেনি তাকে পুলিশ এর হাত থেকে বাঁচাতে, ঠিকই তাকে পুলিশ ধরে নিয়ে গেল, একজন নাস্তিক এখানে ব্যাপারটা হাস্যকর ও ভাবতে পারেন, তাদের জন্য অনুশোচনাও করতে পারেন ধর্মান্ধ বলে
@
এবার আসুন একটু দেখা যাক, আস্তিক এর পক্ষ থেকে শাহবাগ আন্দোলনের নাস্তিকদের প্রতি তাদের অভিযোগুলো কি ছিল, অভিযোগ ছিল রাজনীতিতে ধর্মীয় আন্দোলন বন্ধ করা যাবেনা, এবং এখানে তাদের আপাত জয় হয়েছে বলে মনে করা যায়, কেননা সরকারের এখন প্রস্তুতি চলছে জামাত ইসলামকে নিষিদ্ধ কি করে করা যায়, তবে ধর্মীয় রাজনীতিকে নয়, আস্তিক বা ইসলাম অনুরাগীদের আরো একটা গুরুতর অভিযোগ ছিল ব্লগার কর্তৃক আল্লাহ, নবী, এবং কোরানকে অবমাননা করা হয়েছে এবং যারা এসব করেছেন তাদের বিচার চাই, বিচার পাবে কি পাবেনা তার চাইতেও আমার কাছে যে বিষয়টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়েছে সেটা হলো একজন নাস্তিক সেতো সচেতন ভাবেই জেনে বুঝেই নাস্তিক, সে কেন ধর্মের নামে অধর্ম করবে, সে কেন ধর্মের অবমাননা করবে, সে তো যুক্তিবাদী, সে করবে যুক্তি তর্ক, সে তো না বুঝে বিশ্বাস করার লোক না, তবে কেন সে এমন কাজগুলো করবে, এসবতো তাকেই মানায় যার কাছে যুক্তি নেই, তায় কুৎসা রটিয়ে আত্মতৃপ্তি পেতে চায়, এখানেই একজন নাস্তিকের প্রকৃত নাস্তিক না হয়ে নাস্তিক সাজার ভান করা হয় বলে আমি মনে করি
@
যে কথাটা দিয়ে শুরু করেছিলাম সেটা দিয়ে শেষ করা যাক, "সেকুলারও একসময় ধর্ম হয়ে যেতে পারে যদিও তারা তা স্বীকার করতে ইচ্ছুক নন।" ধর্ম বিশ্বাসীরা যেমন তাদের স্রষ্টা, মেসেজ্ঞার, আসমানি গ্রন্থের অবমাননা সহ্য করেনা, এবং এগুলোকে আগলিয়ে রাখে নিজের জীবনের বিনিময়ে হলেও, নাস্তিকদের যদিও এসব নেই তবু তারা নিজের অজান্তেই এমন কিছু বানিয়ে নেয়, যেগুলোর অবমাননা, অপমান সে কোন ভাবেই মেনে নিতে পারেনা, এবং জীবন বাজী রেখে হলেও এসব অনুসংগের অবমাননা হতে দেবেনা, উদাহরণ দিতে গিয়ে আমার ভয় হচ্ছে হয়তো আমিও ব্যাক্তিগত ভাবে এটার স্বিকার হব, আমার লিখার বা বলার অর্থ আমি বোঝানোর অক্ষমতা কিংবা অন্য কেউ না বুঝার অক্ষমতা থেকে হয়তো আমিও আক্রমণের স্বিকার হতে পারি তাই আমি আর উদারণ দিলামনা, যারা বুঝার আন্তাজ করে নেবেন, আর কেউ না বুঝে থাকলে আমাকে ক্ষমা করবেন, শুধু এটুকু বলতে পারি, জাতীয়তার সূত্রে সার্বভৌমত্ব বা পতাকা অনেক সময় ধর্মিয় অনুসংগের মতো রূপ ধারণ করতে পারে.....
বিষয়: বিবিধ
১১০৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন