আজ দু'জনার দুটি পথ দু'টি দিকে গেছে বেঁকে........(২৮)
লিখেছেন লিখেছেন অন্য চোখে ২৬ জুন, ২০১৩, ১১:২৭:৩৯ সকাল
আগের পর্ব :.......২৭... Click this link
তারপর শুরু হল নতুন ঝামেলা, মধ্যরাতে ফোন আসা শুরু, রিসিভ করলে কেউ কথা বলেনা, মার এবার চিল্লাচিল্লি মাঝরাতে, কার সাথে কি করে বেড়াস রাতে ঘুমাতে পারছিনা, এসব কি মাঝরাতে! ইত্যাদি বলে মা বকা শুরু করত, প্রথম প্রথম আমি চুপ মেরে থাকতাম পরে আমিও প্রতিবাদ করতে শুরু করলাম, মাকে কথার উপর বলে দিয়েছি আমার সাথে এমন কোন কারো সাথে পরিচয় নেই যে মাঝরাতে কেন দিনের বেলায় ডিস্টার্ব করবে এমন ফালতু কারো সাথে আমার পরিচয় নেই, আমাকে সহ্য করতে না পারলে বিয়ে দিযে দাও চলে যায়।
আচ্ছা সেটাতো বললেনা, আমার মোবাইল নাম্বার কোথায় পেলে? আমি যে এখন ব্যাংক জব করছি সেটাইবা কিভাবে, উত্তরটা বেশ মজার এবং অবাক করা ছিল, সে জানাল " তোমার এবং আমার প্রিয় গল্পকার পলাশ ভাইয়া থেকে।" অবাক হলাম বটে, পলাশ ভাইয়া মানে ভাইয়ার বন্ধু খুব ভাল গল্প লিখেন সেই পলাশ ভাইয়া!! রুমি জানাল হুম...
পলাশ ভাইয়ার সাথে রুমির পরিচয়টা কিছুটা কাকতালিয়, পলাশ ভাইয়া সবসময় ছোটদের সাথে মজা করে চলেন, পিচ্ছি ছোটদের দেখলেই উনি তার সাথে কথা বলবেনই, আর ছোটরাও খুব সহজে পলাশ ভাইয়ার সাথে মিশে যায় সেই গুণটা জানা ছিল, ওনি যে এলাকায় থাকতেন সেখানে একদল পিচ্ছি আছে যাদের সাথে পলাশ ভাইয়ার খুব বন্ধুতা, প্রায়ই চকলেট এটা সেটা গিফ্ট দিয়ে জামিযে রাখেন সেসব পিচ্ছিদের এসব আমিই রুমিকে বলেছিলাম একদিন
রুমিরা যখন ভাড়া বাসায় চলে এল আরো এদিকটায় মূল শহরের দিকে তার বড়ভাইয়ার পিড়াপিড়িতে তখন সাথে তার চাচাত ভাইকেও নিয়ে এসেছিল, বাসা চেন্জ এর টুকটাক হ্যাল্প লাগবে বলে, নাম ছিল মুকিম, হাই স্কুলে পড়তো, সিক্স কি সেভেনে হবে, রুমির মা তাকে রেখেই দিলেন, এখানে ভাল স্কুলে পড়াও হলো আর রুমিদের ছোট একটা ভাই এর দরকারও ছিল টুকটাক অনেক কাজ যেগুলো বয়স্ক বা মহিলাদের দিয়ে হয়না্, নিচের তলার তামান্না ষ্টোর থেকে হঠাৎ প্রয়োজনীয় কিছু আনতে হলে সেই দায়িত্বটা মুকিম উপরই বর্তায়
স্কুলটা একটু দূরেই ছিল, মুকিম কখনো বাসে কখনো রিক্সায় যাওয়া আসা করত, যদিও রিক্সা ভাড়া বরাদ্ধ ছিল তবুও সে বাসে গিয়ে টাকাটা সেইভ করত, আর সেই পথেই পলাশ ভাইয়া যেতেন কলেজে, উনি শিক্ষকতা করতেন, যদিও উনার আচরণ আর শরীর গঠন দেখে ষ্টুডেন্টরা ভুল করে তাদের সহপাঠি মনে করারা সম্ভবনাই বেশী, এমনই একদিন যাওয়া আসার পথে পরিচয় হয় মুকিম এর সাথে এবং সম্পর্কটা বড় ভাই এবং বন্ধু এই দুইমিলে অনেকটা ঘনিষ্টই হয়ে গেল
পলাশ ভাই প্রায়ই আসতে লাগলেন মুকিম এর খোঁজে, তবে কখনো রুমিদের বাসার প্রবেশ করতেননা, কলিং ব্যাল টিপে সরে দাঁড়াতো একটু দুরুত্বে সিড়িতে, তারপর মুকিম থাকলে বাসায় দু'জন বেড়ীয়ে পড়তো, আশে পাশে ঘুরে আসতো, আর মুকিম বাসায় না থাকলে দরজা খুলে একটা মেয়েলি কন্ঠ ভেসে আসতো, মুকিম বাসায় নেই বলে, পলাশ ভাইয়া নিচের দিকে তাকিয়ে শুনতেন শব্দগুলো, কখনো তাকিয়ে দেখেননি কন্ঠ টা কার
রুমি প্রায়ই শুনতো কলিং ব্যাল এর পর মুকিম বলে কেউ একজন ডাক দিয়ে বাইরে দাঁড়িয়ে আছে, মুকিম সেন্টো গেঞ্জির উপর টি শার্টটা গায়ে দিয়ে বোতম লাগাতে লাগাতে মনের আনন্দে বের হয়ে গেল, যেন কোন সহপাঠি বন্ধু ডাক দিল, বিকেলে ক্রিকেট খেলবে বলে, কি জানি হয়তো সত্যিই সত্যিই ক্রিকেটই খেলতে গেছে হয়তো
এমনই একদিন মুকিম ছিলনা বাসায়, রুমিরও হঠাৎ মনে হল পরিচয় হবে লোকটার সাথে, বয়সের এতো ব্যাবধান থেকেও কিভাবে তারা বন্ধু হল, নিশ্চয় কোন রহস্য আছে! রুমি দরজায় দাঁড়িযে সেদিন বলেনি মুকিম নেই, বলল বাসায় আসুন, প্রতিদিন বাইরে থেকে চলে যান, আজকে আসুন বাসায়, চা খেতে খেতে পরিচয় হওয়া যাবে, পরিচয় পর্ব হতে গিয়ে রুমির মনে হল ইনি পলাশ ভাইয়াই হবেন গল্প পড়ার সুবাদে আগে থেকেই চেনা, তাই রুমি বলল " আমার মনে হয় আপনাকে আমি অনেক আগে থেকেই জানি, আজকে চেনা হল, আপনার গল্পের ভক্ত আমি আর শাকিল, খুব ভাল লাগে আপনার গল্পগুলো, ইত্যাদি।" পলাশ ভাইয়াও কিছুটা অবাক হলেন, এমন কাকতালিয় পরিচয় হবার কারনে।
চলবে................
বিষয়: বিবিধ
১৪২৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন