আজ দু'জনার দুটি পথ দু'টি দিকে গেছে বেঁকে........(২৪)
লিখেছেন লিখেছেন অন্য চোখে ১৮ মে, ২০১৩, ০২:২৮:২৬ দুপুর
আগের পর্ব :২৩..Click this link
অপেক্ষার সময়গুলো যে কত বেদনাদায়ক সেটা অনুধাবন করলাম, প্রথমে ঘন্টা গেল তারপর গেল দিন, আমি অপেক্ষায় আছি, মাসও গেল, আমি অপেক্ষায়, তারপর গেল বছর আমি পড়লাম দ্বন্দ্বে এখনো কি অপেক্ষায় থাকতে হবে! পুরো একটা বছর গেল একবার ফোন করে কি বলা যায়না ঢের হয়েছে আর অপেক্ষায় থেকনা, বিদায় টা কি নেয়া যায়না!
অপেক্ষার দিনগুলোই হৃদয়ে কি রক্তক্ষরণ হয়েছে সেটা শুধু আমিই জানি, কখনো কখনো মনে হত বুকের মধ্যে হাতটা ঢুকিয়ে দিই আর হৃদয়টা হাতে নিয়ে দেখি কি পরিমাণ অত্যাচার করেছি আমি তার উপর, কি দিন কি রাত সে শুধু কেঁপেই গেছে প্রতিনিয়ত, বেচারা বিন্দু পরিমাণ বিশ্রামটুকু পেলনা
আমার কেন জানি বদ্ধমূল ধারণা ছিল রুমি আবার আসবেই, কেননা আমি আল্লাহর কাছে চেয়েই তাকে পেয়েছি, প্রথমবার তো সে নিজ থেকেই এসেছে নিজের সাথে বোঝাপড়া করে, এবারও নিশ্চয় আসবে আবার তার মা কিংবা অভিভাবকদের মোকাবেলা করে,
আমি চাইলে খবর নিতে পারতাম রিমিকে ফোন করে কিংবা সরাসরি তাদের বাসায় গিয়ে, কিন্তু তা করিনি, আমি চাইছিলাম সে আবার আসুক তার মত করে, আমার সততা, তার প্রতি আমার অগাধ ভাল লাগা এসব যদি সে যোগ্যতার মাপকাঠি বিবেচনা করে তাহলে সে আসবে, আর যদি ভাবে বৈষয়িক বৈষম্য আছে তাহলে তো আমি নিজেও প্রয়োজন বোধ করিনা
এই সময়টা একটা কান্ড করতাম আমি, সন্ধ্যায় যখন অফিস ছুটি হতো আমি আমার সবুজ ব্যাগটা কাঁধে ঝুলিয়ে দিয়ে উল্টো পথে হেটে যেতাম, একা একা হাটতাম আমি, প্রায়ই এই কাজটা করতাম, প্রতিদিন একই পথে একা একা একা আর আমি হেটে হেটে হেটে .....
এই হেটে যাবার ব্যাপারটাকে একটা নাম দিয়েছিলাম আমি, "দ্যা রোড টু রুমি," কেননা আমার গন্তব্য ছিল রুমিদের বাসা পর্যন্ত, তারা যে বাসায় ভাড়া থাকতো তার নিচের তলায় ছিল কিছু দোকানাপাট, ফোন ফ্যাক্স এর দোকান, একটার নাম ছিল তামান্না ষ্টোর, ওটা টি স্টল বলা চলে তবে সেখানে চা বিস্কিট এর পাশাপাশি কসমেটিক সহ হরেক রকম মাল্টি ঘরোয়া জিনিসপত্র বিক্রি হতো এবং সেটা মনির ভবন এর ভাড়াটিয়া ফ্ল্যাটগুলো লক্ষ্য রেখে
ব্যাপারটা নিয়ে ইমতিদা নাহিম ভাইরা খুব হাসা-হাসি করত, তবুও একজন সংঙ্গি পেয়া গেলাম, অফিসে নতুন জয়েন্ট করেছে ইমন সাহেব, যথারীতি হয়ে গেলেন ইমন ভাই, ওনার বাসাটা ওদিকটাই এবং তার কাছে খুব ইন্টেরেস্টিং মনে হল, সন্ধ্যার পর রাস্তায় হাটা-টা, অনেকদিন আমার সাথে হেটেছিলেন তিনি
আমি আর ইমন ভাই যখন তামান্না ষ্টোরে গিয়ে বসতাম প্রায়ই দেখতাম এক ভদ্রগেলোক পাজ্ঞাবী টুপি পড়া মসজিদের দিকে ছুটতেন ঈশার নামাজ পড়বে বলে, আমার কেন জানি ধারনা হয়েছিল ওনি নিশ্চয় রুমির বাবা হবেন, ইমন ভাই এর সাথে কথাটা শেয়ার করেছিলাম তারপর থেকে যতবারাই আমরা ভদ্রলোকটাকে দেখেছি ততবারই ইমন ভাই আমার সাথে ঠাট্টা করেছেন, "আপনার শ্বশুর মসায় যাচ্ছেন।"
ইমন ভাই এর সিগেরেট খাওয়ার অভ্যাস ছিল, ওনি চা এর সাথে সিগেরেট ধরাতেন আর আমি বিস্কিট নিতাম, আমার সিগারেট খাবার অভ্যাস নেই তবে চা বেশী খাবার বদভ্যাস আছে, চা পর্ব সেরে তারপর আমরা চলে যেতাম দুজন দুই দেকে বাসার উদ্দেশ্যে
চলবে.......
বিষয়: বিবিধ
১০৯৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন