আজ দু'জনার দুটি পথ দু'টি দিকে গেছে বেঁকে........(২৩)

লিখেছেন লিখেছেন অন্য চোখে ১৩ মে, ২০১৩, ০১:০৬:৪৯ দুপুর



আগের পর্ব :২২..Click this link

জেসমিন এর সাথে কথা বলে একটা লিষ্ট নিলাম রুমিকে কি গিফ্ট দেয়া যায় সেই ব্যাপারে, তার মধ্যে একটা ছিল, শাল বা চাদর গিফ্ট করা যায়, বিষয়টা খুব মনে ধরেছে, চাদর যখন শরীরে বাড়তি উষ্ণতা আনবে তখন নিশ্চয় আমার কথা মনে পড়বে, আচ্ছা প্রেমের সাথে কি উষ্ণতার কোন সম্পর্ক আছে! কি জানি আছে হয়তো!

তখন অবশ্য শীত এর শেষ দিকে, মার্কেটে শীতের পোশাক এখন আর পাওয়া যাবেনা, সব মার্কেটে এখন ঈদের পোশাক, তবুও অনেক ঘুরে একটা শাল পাওয়া গেল ওটাই নিলাম, যদিও আমার নিজেরও খুব একটা পছন্দ হয়নি তবুও ওটাই নিতে হল, অন্য উপায় ছিলনা, আরো কিছু কেনাকাটা হয়েছিল সেদিন, সেটা নাহয় নাইবা বললাম, গোপনই থাক

বিপত্তিটা বাঁধালাম গিফ্টটা দিতে গিয়ে, রুমিকে জিজ্ঞেস করেছিলাম কোন কাজে বের হবার সম্ভবনা আছে কিনা, সে বুঝে নিয়েছে কেন আমি প্রশ্নটা করেছি, সোজা সাপ্টা উত্তর "কোনই সম্ভবনা নেই", আমিও গো ধরে বলে বসলাম আমি এক্ষুনি আসছি, তোমাদের বাসায় কলিংব্যাল এর রিং পড়লেই বুঝে নেবে সেটা আমি, আমার একটা ছোট কাজ আছে, সে না না না করতে লাগল আমি আর শুনলামনা সত্যিই চলে গেলাম তাদের বাসায়

বেল টিপতেই রুমি দরজা খুলে দাঁড়াল, খানিকটা কিংকর্তব্যবিমূঢ়, তবুও নিজেকে সামলিয়ে নিয়ে বাসায় বসতে বলল, আমি আর সময় নিলামনা, একটা প্যাকেট ধরিয়ে দিয়ে বিদায় নিলাম, ওদিকে শুনতে পেলাম রুমির আম্মু, কে... বলে জিজ্ঞাসা করছিল, রুমি কি উত্তর দিয়েছিল আমার আজও জানা হয়নি, তবে এটা বুঝেছি সে নিশ্চয় প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছিল

আমি দ্রুত সিড়ি দিয়ে নেমে আসলাম, তিন তলা থেকে দ্রুত নামতে গিয়ে কিছুটা হাপিয়ে উঠেছিলাম, আর আমার এ্যাডভেঞ্চারসুলভ কাজের জন্য এমনিতেই বুকটা একটু দুরু দুরু কাঁপছিল, নিচে নেমে এসে রাস্তা থেকে দাঁড়িয়ে আবার ফিরে তাকালাম রুমিদের করিডোর এর দিকে, দেখলাম রুমি দাঁড়িয়ে আছে, চোখে চোখ পড়তেই হাতের ইশারায় আমাকে টা-টা জানাল, দৃশ্যটা এমন অদ্ভূত সুন্দর লেগেছিল যে, আমি অনেকদিন ভুলতে পারিনি, কিংবা আজও...

সেই টা-টা দেবার দৃশ্যটা যে আরো কিছু একটা অর্থ বহন করছিল আমি সেদিন বুঝতে পারিনি, বুঝেছিলাম আরো মাস খানেক পর, আমাদের আর দেখা হয়নি দীর্ঘ সময়, এমনকি কোন যোগাযোগ, কেননা পারতপক্ষে আমি ফোন করতামনা রুমির প্রবলেম হবে ভেবে, রুমি যখন সুযোগ পেত আমাকেই কল করত আর আমি কেটে দিয়ে কলব্যাক করতাম, ভেবেছি সে নিশ্চয় সুযোগ করে উঠতে পারেনি তায় আর রিং আসছেনা, আমিও একটু অস্থিরতার মধ্যে রিংটোনের অপেক্ষায় ছিলাম কখন বাজবে মোবাইলটা

ঈদ এর আমেজ চলে গেল কিন্তু রুমির কোন খবর নেই, আমি অফিসের কাজে ব্যাস্ত ছিলাম, জামাল ভাই একটা কল ট্রান্সফার করল, বলল খুব জরুরী, বলার ধরণ দেখেই বুঝে গেলাম নিশ্চয় রুমি ফোন করেছে, রিসিভ করতেই ভেসে আসল রুমির কন্ঠ, সে এখন ঢাকায়, তার ছোট মামার বাসায়, বাসার ল্যান্ড ফোন থেকেই ফোনটা করা হয়েছে, " কথা নেই বার্তা নেই হঠাৎ আবার ঢাকায় কেন?" প্রশ্ন করেছিলাম, সে বলেছিল, ঢাকায় আসার কারণ হলো রুমির আম্মুর চালাকি, ঈদ এর সময় রুমির ছোট মামা পুরো ফ্যামিলি নিয়ে বাড়ী গিয়েছিল, তার ছোট মামী খুব করে রিকোয়েষ্ট করেছে তাদরে সংগে ঢাকা যেতে, রুমি বুঝতে পেরেছে এখানে ওর আম্মুর হাত আছে তবুও সে ঢাকা গেল এক প্রকার চ্যালেজ্ঞ ছুড়ে দিয়ে, "দেখি মা আমার সাথে কত চালাকি করতে পারে!" বলার ধরণটায় আমি বিদ্রোহের সূর আন্দাজ করছিলাম, তায় প্রশ্ন করেছিলাম, "কেন তোমাদের ঘরে কি কোন ঝামেলা হয়েছে! আমাদের ব্যাপারে?" সে বলেছিল "না কিছুই হয়নি", তবুও আমার মনে হচ্ছিল নিশ্চয় কিছু একটা হয়েছে।

এর পরের বার রুমি ফোনে জানাল, " শুন আমার মামার বাসা চেন্জ হচ্ছে আমাদের হয়তো কিছুদিন আর যোগাযোগ হবেনা, তুমি চিন্তা করনা আমি সুযোগ বুঝে তোমাকে ফোন দেব

চলবে.........

বিষয়: বিবিধ

১৭১২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File