আজ দু'জনার দুটি পথ দু'টি দিকে গেছে বেঁকে.....( ১৯)
লিখেছেন লিখেছেন অন্য চোখে ২১ এপ্রিল, ২০১৩, ১১:৫৯:৫১ সকাল
আগের পর্ব : ১৮..Click this link
তারপর দিনের পর দিন বিষয়টাকে আমরা কিছুটা আধ্যাত্মিকতার আদলে চিন্তা ও চর্চা করছিলাম যদিও আমাদের একে অপরের সাথে কোন যোগাযোগ ছিলনা, আমার এমনিতেই নামাজ পড়ার অভ্যাস ছিল, প্রায়ই নামায এর পর সময় পেলে নফল নামায পড়তাম এবং আল্লাহর কাছে সমাধান চাইতাম, চর্চাটা এতো গভীর এবং ভেতর থেকে করছিলাম যে, আমার মনে হচ্ছিল আমি একটা সমাধান পাব, আল্লাহ নিশ্চয় আমার মোনাজাত বিবেচনা করবেন।
@
রুমির ব্যাপারটা জেনেছিলাম আরো অনেক পরে রিমির কাছ থেকে, কেমন জানি সবাইকে এড়িয়ে চলছিল সে, যদিও নামাজটা সে নিয়মিত পড়তোনা কিন্তু এখন ওটা নিয়মিত পড়তে লাগল, রাতে তাহাজ্জুত ও পড়া শুরু করল, ভেতরে ভেতরে সেও আমার প্রতি দূর্বল হয়ে পড়ল এবং কান্নাকাটি করে মোনাজাত করত আর আল্লাহর কাছে সমাধান চাইতো, চোখে পড়ার মতো পরিবর্তন হতে থাকল তার স্বভাব চরিত্রের, প্রথম দিকে সবাই গিয়ে রিমির কাছে জিজ্ঞেস করছিল কি হয়েছে রুমির! সে এমন চেন্জ হয়ে যাচ্ছে কেন? প্রেম জাতীয় কোন সমস্যা হচ্ছেনাতো! রিমি কিছুই জানাতে পারলনা কাউকে, রিমি শাকিল এর ব্যাপারে জানে কিন্তু সেটাতো ওয়ান সাইডেড, শাকিল এর প্রতি তো রুমির দূর্বলতা ছিলনা, তাই রিমির উত্তরটা ছিল সে কিছুই জানেনা, যার জন্য রিমির সাথে রুমির ফ্যামিলির একটা ভুল ভুঝাভুঝিও হয়েছিল।
@
অফিসে কাজ করছিলাম, জামাল ভাই একটা কল ট্রান্সফার করল, বলল কেউ একজন খুব জরুরী প্রয়োজনে আমার সাথে কথা বলতে চাইছে, জামাল ভাই হলো এমডির পিএস কাম ফোন অপারেটর, আমি হ্যালো বলতেই ওপার থেকে ভেসে আসল রুমির কন্ঠ, আকাশ থেকে পড়লাম ভুল শুনছিনাতো! রুমি আমাকে ফোন করেছে! এও কি সম্ভব! লক্ষ করলাম জামাল ভাই আড়ি পাতছে, ওনার এই স্বভাবটা আছে, যদিও অন্য কোন উদ্দেশ্য নেই, কৌতুহল কাজ করলে আড়ি পাতেন ওনি, আমাকে যে বলেছিল খুব জরুরী ফোন, আসলে সেটা নিজ থেকেই বলেছে, কেননা একজন নারীর কন্ঠ এবং যেহেতু কোন অফিসিয়াল ফোন না তায় দুষ্টামির ছলে কথাটা নিজ থেকেই বলেছিলেন।
@
= আজকে রেজাল্ট দিয়েছে জানতো? রুমি প্রশ্ন করল
- বললাম হুম জানি
= কলেজ যাবেনা রেজাল্ট দেখতে?
- যাব ভাবছিলাম তবে কখন যাব সেটা ঠিক করিনি
= আমি যাচ্ছি এখন, তুমি কি যাবে সংগে?
- তা যাওয়া যায়
= তাহলে তুমি জাষ্ট ত্রিশ মিনিট পর তোমার অফিসের পাশে যে মার্কেট টা আছে ওটার সামনে দাঁড়াও আমি রিকশায় তুলে নেব, ঠিক আছে রাখছি
- ওকে তুমি আসো, আমি অপেক্ষা করছি
@
সেদিন আমরা একসাথে কলেজে গেলাম, আমি মজুমদার বাবুকে বলে তিন ঘন্টার অফিস ছুটি করেছিলাম, কলেজে আমরা খুব বেশীক্ষণ ছিলামনা, নোটিশ বোর্ডে রেজাল্ট টা দেখেই আবার বেক করলাম, আমার যেহেতু আবার অফিসে যাবার তাড়া ছিল, রুমি অবশেষে মুখ ফোটে বলেই ফেলল, " আমি হার মানলাম তোমার কাছে, নিজের সাথে যুদ্ধ করে আমি আর পেরে উঠছিনা, যদিও আমি এখনো ভয়ের মধ্যেই আছি আমার প্যারেন্টস জানতে পারলে কি হুলুস্তুল কান্ড হবে আমি জানিনা, তবে আমার কিছুই করার ছিলনা, আমি ভাবিনি এমন কাউকে আমি এতটা ফি'ল করব, বর্তমান সমাজে সো কল্ড যে প্রেম ভালবাসা হচ্ছে বা চলছে এমন কিছু আমি কখনো ভাবিনি বা আদৌ ভাবিনা তবে নিজের অজান্তেই আমি তোমাকে ছাড়া এখন বিকল্প কিছুই আর ভাবতে পারছিনা।"
@
চেরাগ নেভার আগে ধূপ করে জ্বলে উঠে, আমাদের ব্যাপারটা বোধয় তেমনই হয়েছিল, আমি আল্লাহর কাছে বার বার শুকরিয়া জানাচ্ছিলাম, নফল নামাজ কিন্তু আমি তখনো ছাড়িনি, আল্লাহ যে আমার মোনাজাত কবুল করেছে তাই এখন নফল নামাজ এর উদ্দেশ্য হয়ে গেল শুকরিয়া জানানো, তাই চর্চাটা কন্টিনিউ করছিলাম
চলবে...........
বিষয়: বিবিধ
১৫১০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন