তাকদীর বা ভাগ্যলিপির উপর ঈমান -১ম পর্ব
লিখেছেন লিখেছেন মুক্তিযোদ্ধার ভাগনে ২৫ মে, ২০১৩, ১০:১৮:০৩ সকাল
ভূমিকাঃ সুমহান সৃষ্টিকর্তা ও পরম প্রতিপালক বলছেনঃ “তুমি একনিষ্ট হয়ে নিজেকে দ্বীনে (ইসলামের জীবন বিধানে) প্রতিষ্ঠিতকর। আল্লাহর প্রকৃতির অনুস্মরণ কর, যে প্রকৃতি অনুযায়ী তিনি মানুষ সৃষ্টি করেছেন, আল্লাহর সৃষ্টির কোন পরবর্তন নেই । এটা সরল দ্বীন, কিন্তু অধিকাংশ মানুষ জানে না। বিশুদ্ধ চিত্তে তাঁর অভিমূখী হয়ে তাঁকে ভয় কর। তোমরা নামায কায়েম কর এবং মুশরিকদের অন্তর্ভূক্ত হয়ো না । যারা নিজেদের দ্বীনের মধ্যে মতভেদ সৃষ্টি করেছে এবং বিভিন্ন দলে (উপদলে) বিভক্ত হয়েছে, প্রত্যেক দলই নিজ নিজ মতমাদ নিয়ে উৎফুল্ল । মানুষকে যখন দূঃখ দন্য সর্প্শ করে তখন তারা বিশুদ্ধ চিত্তে তাদের প্রতিপালককে ডাকে, অতঃপর তিনি যখন তাদেরকে স্বীয় অনুগ্রহের আস্বাদন গ্রহন করান তখন তাদের একদল তাদের প্রতিপালকে শরীক সাব্যস্ত করে থাকে।” (সুরাঃ রূমঃ ৩০-৩৩) ।
উপরোক্ত সর্বশেষ আয়াতের উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, আমাদের মুসলমানের মধ্যে কেউ কেউ বলেন যে, খাঁজা বাবা আমাদেরকে সন্তান দিয়েছেন। নাউযুবিল্লাহ। এছাড়া বেশ কিছুদিন পূর্বে পত্রিকায় দেখতে পেলাম যে, আমাদের বাংলাদেশের একটি প্রভাবশালী রাজনৈতিক দলের মুসলমান মন্ত্রী বলেছিলেন যে,“ভারত (বাংলাদেশকে) পানি দেয়ার ফলেই বাংলাদেশে বাম্পার ফলন হয়েছে’’। এবং সেই দলের সর্বোচ্চ আসনের ক্ষমতাধর নেতা আরো একধাপ বাড়িয়ে বলেছেন: “আমরা ছোটকালে আমাদের মা-খালা এবং মুরুব্বীদেরকে বলতে শুনেছি যে, যে বছর ‘মা দূর্গা’ গজে চরে আসেন সে বছর নাকি জমিনের ফসল ভালো হয়। আর এ বছরও ‘মা দূর্গা’ গজে চরে এসেছেন তাই আমাদের দেশের ফসল ভালো হয়েছে।”
তাহলে খাজাবাবা কি সন্তান দেয়ার মালিক? নাকি ভারত পানির মালিক? নাকি ‘মা দূর্গা’ ফসল ফলানোর মালিক? এ তিনটি কথার মধ্যে একটি কথাও সঠিক নয়। এ কথাগুলোর মাধ্যমে সৃষ্টিকর্তার সাথে শরীক করা হয়েছে। মূল কথা হচ্ছে, কাউকে সন্তান দেয়া বা কোন এলাকায় পানি বর্ষন করা এবং জমিনের ফসল হ্রাস বৃদ্ধির একমাত্র ক্ষমতা শুধুমাত্র মহান আল্লাহ তায়ালার। তাই দয়াময় আল্লাহ তা’য়ালা বলছেনঃ
“আল্লাহই তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর তোমাদেরকে রিযিক দিয়েছেন, তিনি তোমাদের মৃত্যু ঘটাবেন ও পরে তোমাদেরকে (শেষ বিচারের দিন) জীবিত করবেন । তোমাদের শরীকদের এমন কেউ আছে কি যে, এসবের কোন একটিও করতে পারে ? তারা যাদেরকে শরীক করে আল্লাহ তা হতে পবিত্র, মহান । মানুষের কৃতকর্মের কারণে সমুদ্রে ও স্থলে বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়ে যার ফলে তাদেরকে কোন কোন কর্মের শাস্তির স্বাধ তিনি (এ দুনিয়াতে) আস্বাদন করান, যাতে তারা (তাওবা করে আল্লাহর পথে) ফিরে আসে।’’ (সূরাঃ রূমঃ ৪০-৪১)।
আজ আমরা যে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবো সেটি মানবজাতির জন্যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আর তা জানা ও বুঝার তারতম্যের ফলে আমরা আমাদের অজ্ঞতার কারণে কখনও কখনও এমনভাবে শিরক করছি, যার জন্যে আমাদের অজান্তেই আল্লাহর নিকট মহাপাপি হিসেবে পরিগনিত হয়ে জাহান্নামে চিরস্থায়ী জীবন-যাপনের পথ প্রশস্ত করছি। যার তিনটি উদাহরণ উপরে বর্ণিত হয়েছে। তবে বিষয়টি বুঝার জন্যে আমাদের আগে থেকে মগজে রক্ষিত সমস্ত ধারনা মুছে ফেলতে হবে। আর সমস্ত মন মগজকে নিরপেক্ষ করে বুঝার চেষ্টা করলে অবশ্যই তা আমাদের রিষয়টি বুঝে আসবে ইন্শা-আল্লাহ। আমরা যে বিষয়টি সম্পর্কে আলোকপাত করতে চাই সে পর্বে যাওয়ার পূর্বে বিষয়টির সাথে সম্পৃক্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্পর্কে ধারণা লাভ করা একান্ত প্রয়োজন। আর সেই বিষয়টির নাম হচ্ছে ঈমান বা বিশ্বাস।
ঈমান কি?
ঈমানের সরল অর্থ হলো, কারো উপরে বিশ্বাস আনা বা নির্ভর করা এবং নির্ভরতার কারণে তার কথা ও কাজকে সত্য বলে স্বীকার করা। মানুষ যখন কারো উপরে বিশ্বাস স্থাপন করে বা নির্ভর করে তখন তাকে সত্যবাদী হিসেবে তাঁর আদেশ নির্দেশ মাথা পেতে নেয়। এই আস্থা ও বিশ্বাসই হলো ঈমানের প্রাণশক্তি। আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর মাধ্যমে যে সমস্ত কথাগুলি এসেছে তার সবগুলোকে সত্য বলে স্বীকার করে আন্তরিকভাবে গ্রহণ করাই মুমিন বা ঈমানদার বা বিশ্বাসী হওয়ার জন্য জরুরী। তাই ঈমানদার হিসেবে পূর্ণতা অর্জনের জন্য সকল মানব জাতিকে লক্ষ্য করেই দয়াময় প্রতিপালক বলছেনঃ “হে মু’মিনগন! তোমরা পূর্নরূপে ইসলামে প্রবিষ্ট হও এবং শয়তানের পদাংক অনুসরণ করো না, নিশ্চয় সে শয়তান তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।’’ (সুরাঃ বাকারাঃ ২০৮)।
যেহেতু ইসলাম একটি সার্থক, সফল ও পূর্নাঙ্গ জীবন ব্যবস্থার নাম, সেহেতু ইসলামী জীবন ব্যবস্থায় পূর্নাঙ্গরূপে প্রবেশ করতে হবে। আর তাই ইসলামের কতকগুলি মৌলিক বিষয়ের উপর পরিপূর্ণরুপে ঈমান আনা প্রত্যেক মু’মিনের উপর অপরিহার্য কর্তব্য। অর্থাৎ মহান আল্লাহর পক্ষ প্রক্ষিপ্ত নাবি কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কর্তৃক আনিত সকল বিষয় যা স্পষ্টভাবে প্রমাণিত। বিস্তারিত হউক বা সংক্ষিপ্ত, রাসূলে পাক হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর প্রতি আস্থাশীল হয়ে মনে প্রাণে তার অর্পিত বিষয় সমূহের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করাকেই শরিয়তের পরিভাষায় ঈমান বলা হয় ।
আর আমাদের প্রিয় রাসুল হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর আনিত যেসকল মৌলিক বিষয়ের প্রতি প্রত্যেক মু’মিনকে ঈমান আনতে হবে, তা একটি পবিত্র ও বিখ্যাত হাদীসের মাধ্যমে নিম্নে উপস্থাপন করছি।
“হযরত উমর ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমরা একদিন মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর দরবারে উপস্থিত ছিলাম। হঠাৎ আমাদের নিকট এমন এক ব্যক্তি আর্বিভূত হলেন, যাঁর পরিচ্ছদ ছিল সাদা ধবধবে আর মাথার চুলগুলো ছিল কালো মিচ মিচে। সফরের কোন চিহ্নই তার শরীরে ছিল না, অথচ আমাদের মধ্যে কেউ তাঁকে চিনতেও পারলেন না, যিনি ছিলেন প্রকৃত পক্ষে জিবরীল (আঃ)। তিনি মানুষরূপ ধারণ করে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে জিজ্ঞেস করলেনঃ আমাকে ঈমান সম্পর্কে বলে দিন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ ঈমানের অর্থ হলো এই যে, তুমি আল্লাহ, তাঁর ফিরিশতা, তাঁর কিতাব, তাঁর পয়গম্বর ও পরকালের উপর দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস স্থাপন করবে। আর তকদীরের (লিখিত) ভাল মন্দের উপরও দৃঢ় বিশ্বাস আনবে..........।’’ (মুসলিম)।
আমরা বিশ্ব বিখ্যাত হাদীসে জিবরীল (আঃ) এর মাধ্যমে ঈমানের মৌলিক একটা ধরণা লাভ করলাম। ঈমানের এই মৌলিক বিষয় সমূহের মধ্য থেকেই একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন বিষয়ের আলোচনাই আমরা করবো। আর তা হচ্ছে তকদীর এর প্রতি ঈমান বা ভাগ্য লিপির প্রতি বিশ্বাস। দয়াময় প্রতিপালক তার এই জঠিল বিষয়টিকে সুন্দরভাবে উপস্থাপনের তাওফীক দিন এবং তা বুঝে সেই অনুযায়ী যথাযথভাবে আমাদের সকলকে আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন ।
আসুন তাহলে প্রথমেই আমরা জেনে নেই তকদীর কি? এটির সৃষ্টিকর্তা কে? এবং কখন এবং কিভাবে তার আর্বিভাব ঘটে? এবং তা প্রতিফলিত হয় কিভাবে? আর এ ব্যাপারেই মহান আল্লাহ বলছেনঃ “তুমি বলে দাও ! আল্লাহ আমাদের জন্যে যা নির্ধারন করে (লিখে) দিয়েছেন তা ছাড়া অন্য কোন বিপদ আমাদের উপর আসতে পারে না, তিনিই কর্ম বিধায়ক আর সকল মু’মিনেরই কর্তব্য হলো যে তারা যেন নিজেদের যাবতীয় কাজে আল্লাহর উপর নির্ভর করে’’ (তাওবাহ-৫১)।
হাদীসে তাকদীর লিখা সম্পর্কেই এভাবে এসেছেঃ “আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে আস (রাঃ) হতে বর্নিত, তিনি বলেন: আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে বলেত শুনেছি, আল্লাহ তায়ালা আকাশ মন্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টির পঞ্চাশ হাজার বছর আগে সমস্ত মাখলুকাতের তকদীর লিখে রেখেছেন।’’ (মুসলিম ও তিরমিযি)।
অন্য আরো একটি হাদীসের বর্ণনাঃ “আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) বর্ণনা করেন, সত্যবাদী ও সত্যের বাহক রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তোমাদের প্রত্যেকের সৃষ্টির উপাদান মাতৃগর্ভে চল্লিশদিন পর্যন্ত জমাট বাঁধতে থাকে। তারপর তা অনুরূপভাবে ভ্রুণ (চল্লিশদিনে) জমাটবদ্ধ হয়ে রক্ত পিন্ডে রূপ নেয়। পূনরায় রক্তপিন্ড তদ্রুপ চল্লিশদিনে গোশতের টুকরায় পরিণত হয়। অতঃপর আল্লাহ চারটি কথার নির্দেশসহ তার কাছে একজন ফেরেশতা পাঠান। সে তার আমল, মৃত্যু, রিযিক এবং পাপিষ্ট হবে না-কি নেক্কার হবে, এসব লিখে দেয়। এরপর তার মধ্যে ’’রূহ’’ ফুকে দেয়া হয়। জন্মের পর একব্যক্তি একজন জান্নামীর ন্যয় ক্রিয়া কর্ম করতে থাকে। এমন কি তার ও জাহান্নামের মধ্যে মাত্র এক হাতের ব্যবধান থাকে, এমনি সময় তাঁর (নিয়তি’র) লিখন এগিয়ে আসে। তখন সে জান্নাতবাসীদের অনুরূপ আমল (কাজকর্ম) করে যায় এবং ফলে সে জান্নাতে প্রবেশ করে। আর এক ব্যক্তি (শুরুতে) জান্নাতবাসীর অনুরূপ আলম করতে থাকে, এমন কি তাঁর (নিয়তি বা ভাগ্য) লিখন এগিয়ে আসে, তখন সে জাহান্নামবাসীদের মত আমল করতে থাকে, ফলে সে জাহান্নামী হয়ে জাহান্নামে প্রবেশ করে।’ (সহীহ আল বুখারী)।
এইরূপ অপর আর একটি হাদীসের বর্ননাঃ “হযরত আনাস ইবনে মালেক (রাঃ) থেকে বর্নিত নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ মাতৃগর্ভে একজন ফেরেশতা মোতায়েন করে রেখেছেন,(যখন উপযুক্ত সময় হয় তখন) ফেরেশতাটি বলেনঃ ইয়া রব! এখনোতো ভ্রুণ মাত্র। হে পরওয়ারদিগার! এখন জমাটবদ্ধ রক্ত পিন্ডে পরিণত হয়েছে। হে প্রতিপালক! এবার গোশতের টুকরায় পরিণত হয়েছে। তাঁরপর আল্লাহ যখন তাকে পয়দা করতে চাইবেন, তখন ফেরেশতাটি বলবেঃ হে আমার রব! (সন্তানটি) ছেলে হবে, না মেয়ে ? হে আমার রব ! পাপী হবে, না নেক্কার? তাঁর রিযিক কি পরিমাণ হবে? তার আয় কত হবে? অতএব এভাবে (সবকিছু) তার মাতৃগর্ভেই লিপিবদ্ধ করে দেয়া হয়।” (সহীহ আল বুখারী)।
আসল কথা হচ্ছে, মানুষের জন্য এই দুনিয়াটা একটি পরীক্ষাক্ষেত্র। আর সে পরীক্ষা হচ্ছে হক ও বাতিলের মধ্যে পার্থক্য নির্ণয়ের। আল্লাহর দল ও শয়তানের দলের পার্থক্য নির্ণয়ের। জান্নাত ও জাহান্নামীদের মধ্যে পার্থক্য নির্ণয়ের। তাই মহান আল্লাহ মানুষকে তার সৎ পথ ও অসৎ পথ দেখিয়ে দিয়ে সেই পথে চলার স্বাধিনতা দিয়েছেন। মানুষ যার যার ইচ্ছামত পথ বেঁচে নিয়ে চলতে থাকবে। কারন মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলছেনঃ “আমি কি তার জন্যে সৃষ্টি করিনি চক্ষুযুগল? আর জিহবা ও ওষ্ঠদ্বয়? এবং আমি কি তাকে (সৎপথ ও অসৎপথ) দুটি পথই দেখাইনি?” (বালাদ-৭-১০)।
দয়াময় মহান প্রতিপালক আরো বলছেনঃ “অতঃপর তাকে (অর্থাৎ মানুষকে) তার অসৎকর্ম ও তার সৎকর্মের জ্ঞা দান করেছেন। সে সফল কাম হবে, যে নিজেকে পবিত্র করবে এবং সে ব্যর্থ হবে যে নিজেকে কুলষিত করবে।’’ (সুরা শামস-৮-১০)।
আর আল্লাহ তায়ালা যে মানুষকে পরীক্ষা করবেন সে সম্পর্কে তিনি বলছেনঃ “মানুষ কি মনে করে যে, আমরা ঈমান এনেছি একথা বললেই তাদেরকে পরীক্ষা না করে অব্যাহতি দেয়া হবে? আমিতো তোমাদের পূর্ববর্তীদেরকেও পরীক্ষা করেছিলাম, আর আল্লাহ (পরীক্ষার মাধ্যমে) অবশ্যই প্রকাশ করে দিবেন কারা সত্যবাদী ও কার মিথ্যবাদী।’’ (আনকাবুতঃ ২-৩)।
মহান আল্লাহ আরো বলছেনঃ “আল্লাহ ইচ্ছা করলে মানুষকে একই উম্মত করতে পারতেন, বস্তুত তিনি যাকে ইচ্ছা তাকে স্বীয় অনুগ্রহের অধিকারী করেন, যালিমদের কোন অভিভাবক নেই, কোন সাহায্যকারী নেই।’’ (সুরাঃ শুরা-৮)।
সুমহান প্রতিপালক আরো বলছেনঃ “আমি ইচ্ছা করলে প্রত্যেক ব্যক্তিকে সৎ পথে পরিচালিত করতে পারতাম, কিন্তু আমার এই কথা অবশ্যই সত্য, আমি নিশ্চয়ই জ্বীন ও মানুষ উভয় দ্বারা জাহান্নাম পূর্ন করবো।’’ (সাজদাহ-১৩)।
মানুষ কোন কাজের দ্বারা জান্নাত এবং কোন কাজের দ্বারা জাহান্নামে প্রবেশ করবে, আল্লাহর নিকট তা পূর্ব হতেই নির্দিষ্ট করা আছে। তাকদীর অর্থাৎ অদৃষ্ট সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কালামে পাকে বিস্তারিতভাবে বর্ননা করেছেন এবং রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইহার সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা দিয়েছেন। এখন এটা মানুষের উপর নির্ভর করে, সে ব্যক্তি জাহান্নামের রাস্তা অবলম্বন করবে? না-কি জান্নাতের পথে অগ্রসর হবে? এ দু’পথের যেকোন একটিকে গ্রহন করার দায়িত্ব তার নিজের। আর এ দায়িত্ব তার উপর একারণে অর্পিত হয়েছে যে, আল্লাহ মানুষকে ইচ্ছার স্বাধীনতা দিয়েছেন। সু-পথ অথবা কু-পথ অবলম্বনের ক্ষমতা দান করেছেন। মানুষের ইচ্ছাশক্তির এ স্বাধীনতার জন্যেই মানুষকে জাহান্নামের শাস্তি অথবা জান্নাতের শান্তি প্রদান করা হবে। (চেলবে>>>>>)
বিষয়: সাহিত্য
২০৮৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন