নবী রাসুলদের সংখ্যা কত--? নবী রাসুলগণের মধ্যে পার্থক্যই বা কি এবং তাঁহাদের উপর কতখানা কিতাব মহান আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে নাযিল হয়ে ছিল
লিখেছেন লিখেছেন কুয়েত থেকে ১৩ অক্টোবর, ২০১৮, ০২:৩৪:১৫ দুপুর
নবী এবং রাসূলগনের মধ্যে পার্থক্য হ’ল, আল্লাহ তা‘আলা যাহাকে নতুন শরী‘আত দিয়ে যে সম্প্রদায়ের নিকট পাঠান তাঁহাকে রাসূল বলা হয়। আর যাহাকে নতুন শরী‘আত না দিয়ে পূর্বের রাসূলের শরী‘আতেরই প্রচারের দায়িত্ব দিয়ে পাঠান তাঁহাকে নবী বলা হয়। সিলসিলা ছহীহাহ হা। প্রত্যেক নবী রাসূল নন। তবে প্রত্যেক রাসূলই নবী।
নবী ও রাসূলের সংখ্যা বিষয়ে আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন, আমি আপনার নিকট ইতিপূর্বে বহু রাসূলের কথা বর্ণনা করেছি এবং অনেক রাসূলের কথা আপনাকে বলিনি। সুরা নিসা ১৬৪ তবে একটি প্রশ্নের জবাবে রাসূল (সাঃ) বলেছেন নবীগণের সংখ্যা হল, ১,২৪,০০০। তার মধ্যে ৩১৩ জন, অন্য বর্ণনায় ৩১৫ জন রাসূল।আহমাদ, মিশকাত।
চারজন রাসূলের উপর চারটি প্রধান কিতাব নাযিল হয়েছে। হযরত মূসা (আঃ) এর উপরে ‘তাওরাত’ হযরত দাঊদ (আঃ) এর উপরে ‘যাবূর’ হযরত ঈসা ইবনে মরিয়ম (আঃ) এর উপরে ‘ইনজীল’ এবং হযরত মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ (সাঃ)-এর উপরে ‘আল্ কুরআন’। কোন কোন নবী ও রাসূলের উপর ছহীফা (পুস্তিকা) আকারে কিতাব নাযিল হয়েছে। সুরা আ‘লা ১৯
إِنَّآ أَوْحَيْنَآ إِلَيْكَ كَمَآ أَوْحَيْنَآ إِلٰى نُوحٍ وَالنَّبِيِّۦنَ مِنۢ بَعْدِهِۦ ۚ وَأَوْحَيْنَآ إِلٰىٓ إِبْرٰهِيمَ وَإِسْمٰعِيلَ وَإِسْحٰقَ وَيَعْقُوبَ وَالْأَسْبَاطِ وَعِيسٰى وَأَيُّوبَ وَيُونُسَ وَهٰرُونَ وَسُلَيْمٰنَ ۚ وَءَاتَيْنَا دَاوُۥدَ زَبُورًا
নিশ্চয় আমি তোমার নিকট ওহী পাঠিয়েছি, যেমন ওহী পাঠিয়েছি নূহ ও তার পরবর্তী নবীগণের নিকট এবং আমি ওহী পাঠিয়েছি ইবরাহীম, ইসমাঈল, ইসহাক, ইয়া‘কূব, তার বংশধরগণ, ঈসা, আইয়ূব, ইউনুস, হারূন ও সুলায়মানের নিকট এবং দাঊদকে প্রদান করেছি যাবূর। সুরা নিসা ১৬৪
নবীগণের প্রতি প্রেরিত আল্লাহ তা'আলার বিশেষ নির্দেশ ও বাণীকে ওহী বলা হয়। হযরত হারিস ইবন হিশাম(রাঃ) রাসূলু ল্লাহ (সাঃ) কে জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আপনার উপর অহী কিভাবে আসে? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন অহী কোন সময় ঘন্টার আওয়াজের মত আমার নিকট আসে। আর ওটাই আমার পক্ষে হয় সবচেয়ে কষ্টদায়ক অহী, এরপর ফেরেশতা আমার থেকে পৃথক হতো এমতাবস্থায় যে, তিনি যা বলেন তা শেষ হতেই তার কাছ থেকে আমি তা আয়ত্ব করে ফেলি। আবার কোন কোন সময় ফেরেশতা মানুষের আকারে এসে আমাকে যে অহী বলেন, আমি তা সাথে সাথে আয়ত্ব করে নেই। বুখারী ২
এ আয়াতে বলা হয়েছে যে, পূর্ববতী নবীগণের প্রতি যেমন আল্লাহর পক্ষ থেকে ওহী নাযিল হয়েছিল, মুহাম্মাদ (সাঃ) এর প্রতিও তেমনি ভাবে আল্লাহ্ তা’আলা ওহী নাযিল করেছেন। অতএব, পূর্ববর্তী নবীগণকে যারা মান্য করে, তারা মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কেও মান্য করতে বাধ্য। আর যারা তাকে অস্বীকার করে তারা যেন অন্যসব নবীকে এবং তাদের প্রতি প্রেরিত ওহীকেও অস্বীকার করলো।
وَرُسُلًا قَدْ قَصَصْنٰهُمْ عَلَيْكَ مِن قَبْلُ وَرُسُلًا لَّمْ نَقْصُصْهُمْ عَلَيْكَ ۚ وَكَلَّمَ اللَّهُ مُوسٰى تَكْلِيمًا
আর অনেক রাসূল, যাদের বর্ণনা তোমাকে পূর্বে দিয়েছি এবং অনেক রাসূল, যাদের বর্ণনা তোমাকে দেইনি আর আল্লাহ মূসার সাথে সুস্পষ্টভাবে কথা বলেছেন।সুরা নিসা ১৪৬
এ আয়াতে নূহ ‘আলাইহিস সালাম-এর পরে যেসব নবী-রাসূল আগমন করেছেন, তাদের সম্পর্কে প্রথমে সাধারণভাবে বলার পর তন্মধ্যে বিশিষ্ট ও মর্যাদাসম্পন্ন কয়েকজনের নাম বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। এতে বোঝানো হয়েছে যে, এরা সবাই আল্লাহর রাসূল এবং তাদের নিকটও বিভিন্ন পন্থায় ওহী প্রেরিত হয়েছে।
কখনো ফিরিশতাদের মাধ্যমে ওহী পৌছেছে, কখনো লিপিবদ্ধ কিতাব আকারে এসেছে, আবার কখনো আল্লাহ্ তা’আলা রাসূলের সাথে পর্দার আড়াল থেকে কথোপকথন করেছেন।
যে কোন পন্থায়ই ওহী পৌঁছুক না কেন, তদানুযায়ী আমল করা মানুষের একান্ত কর্তব্য। অতএব, ইয়াহুদীদের এরূপ আবদার করা যে, তাওরাতের মত লিখিত কিতাব নাযিল হলে আমরা মান্য করবো, অন্যথায় নয় তা স্পষ্ট কুফরী।
আবু যর গিফারী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত আছে যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন আল্লাহ তা’আলা এক লাখ চব্বিশ হাজার নবী-রাসূল প্রেরণ করেছেন, যাদের মধ্যে স্বতন্ত্র শরীআতের অধিকারী রাসূলের সংখ্যা ছিল তিনশ তের জন। ইবন হিব্বান ৩৬১
আসুন মানবতার কল্যাণ এবং মানবতার মুক্তির জন্য ইসলামের আলো ছড়িয়ে দিই। নবীজি (সাঃ) বলেছেন কেউ হেদায়েতের দিকে আহবান করলে যতজন তা অনুসরণ করবে প্রত্যেকের সমান সওয়াবের অধিকারী সেই হবে, তবে যারা অনুসরণ করেছে তাদের সওয়াবের কোন অংশই কমতি
হবেনা। তিরমিযী ২৬৭৪
বিষয়: বিবিধ
১৯০৫ বার পঠিত, ৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস!!
ফেরাউন কন্যার চুল আঁচড়ানোর কাজে নিয়োজিত ছিল একজন মহিলা,কোনো একদিন ফেরাউন কন্যার চুল আঁচড়ানোর সময় সহসা চিরুণি তার হাত থেকে মাটিতে পড়ে গেল,তা ওঠাতে গিয়ে আনমনে তার মুখ থেকে বের হয়ে পড়ল,
বিসমিল্লাহ্,আল্লাহু আকবর!!
এ কথায় ফেরাউনের কন্যার সন্দেহ হলে জিজ্ঞেস করল, ফেরাউন ছাড়াও কি তোমার কোনো আল্লাহ আছে নাকি,দাসী জবাবে বলল,
“আমার আল্লাহ সেই যে ফেরাউনেরও আল্লাহ,শুধু ফেরাউন নয় সে আকাশ জমিনেরও আল্লাহ!তিনি একক তাঁর কোনো শরীক নেই!!
একথা শুনে রাগে ফেরাউনের কন্যা অগ্নিশর্মা হয়ে পিতার কাছে গিয়ে বলল, আব্বা আমার চুল বিন্যাসকারিণী বলে কি, আমার আল্লাহ সেই যে ফেরাউনেরও আল্লাহ, আসমান জমিনেরও আল্লাহ,তার কোনো শরীক নেই!!
ফেরাউন বলল, এক্ষুণি তাকে হাজির কর, সাথে সাথে তাকে হাজির করা হলো,সেও নির্ভয়ে হাজির হলো,আজ তার আল্লাহর প্রতি ভালোবাসার ঈমানী পরীক্ষার দিন!এতে প্রাণ দিতে হলে দেবে!তারই ভালোবাসায় যদি জীবন দেওয়া যায় তবেই তো ধন্য!!
ফেরাউন জিজ্ঞেস করল, তুমি আমাকে ছাড়া অন্য কারও ইবাদত কর! তিনি বললেন, “হ্যাঁ”ফেরাউন বলল, সে আল্লাহকে ছেড়ে এখনই আমার সামনে আমার আল্লাহয়ী স্বীকার কর!!
তিনি বললেন, না কিয়ামত পর্যন্তও তা আমার দ্বারা সম্ভব হবে না” নির্দেশ দেওয়া হলো তাকে সিকল দিয়ে বেধে ফেলার! তৎক্ষণাৎ তাকে শুইয়ে তার হাতে ও পায়ে সিকল বাধা হলো!!
তারপর আল্লাহ ওয়ালাদেরকে কষ্ট দেওয়ার জন্য যে বিষাক্ত সাপ, বিচ্ছু রাখা হতো তাও এনে তার উপর ছেড়ে দেওয়া হলো,বলা হলো, এখনো সময় আছে তোমার আল্লাহকে ছাড় নতুবা তোমাকে লাগাতার এ শাস্তি দেওয়া হবে’ তিনি বললেন, “তুমি আমাকে যত পার শাস্তি দিয়ে দেখ আল্লাহর প্রতি ভালোবাসা এক বিন্দুও কমবে না, বরং বাড়বে!!
ঈমানের অবস্থা এই রকম যে, যখন তার স্বাদ কোনো অন্তরে প্রবেশ করে তখন তা আর বের হয়না,হে ফেরাউন শুনে রাখ, তুমি যদি বছরের পর বছর আমাকে শাস্তি দিতে থাক তবুও আমি আমার মহান প্রভুকে পরিহার করব না!!
এ নেক মহিলার পাচটি সন্তান ছিল একটি ছিল দুগ্ধপোষ্য! ফেরাউন তাকে উচিত শিক্ষা দিতে সন্তানদেরকে তার মায়ের সামনে এনে,প্রথমে বড় সন্তানকে গরম তেল এর পাতিলে ফেলে দেয়!
তারপর বলল, এখনও সুযোগ আছে নতুবা সব সন্তানকে হারাবে,তোমার দুগ্ধপোষ্য এ শিশুটিকেও হত্যা করা হবে,তিনি বললেন, তুমি যাই কর, তবুও আমি আমার আল্লাহকে ছাড়ব না!!
একথা শুনে হুকুম দেওয়া হলো পর পর চারটি শিশুকে গরম তেল এ ফেলে দেওয়া হল!আর কিছুক্ষণ পরেই ভেসে উঠছিল তাদের হাড়গুলো,দুদ্ধপুষ্ট শিশু সন্তানটি মায়ের বুকের উপর চড়ে দুধ পান করছিল তাকেও টেনে হিছড়ে নিয়ে যেতে ধরল,এ অবস্থা দেখে মায়ের চোখে পানি আর ধরছিল না!!
৬ মাসের এ শিশুর মুখ থেকে কথা বের হলো, বলল, মা কেন কাঁদ,
জান্নাত তোমার জন্য সুসজ্জিত করা হচ্ছে! মা জান্নাতে পৌঁছে আল্লাহর দীদার হাসিল হবে,
এখনো কথা বলতে পারে না এমন শিশুর মুখ থেকে একথা শুনে মা অবাক হলেন,ঈমান আরও মজবুত হলো!!
জালিমরা শিশুটিকে হত্যা করল!এরপর তাকেও গরম তেল এ ফেলা হল,মা প্রভুর ডাকে সাড়া দিয়ে চির জান্নাত বাসিনী হলেন! তাফসিরে দুররে মানসুরে আছে,
রাসুল (সাঃ) যখন মেরাজে যাচ্ছিলেন, বোরাক মিসরের কাছাকাছি এক ময়দানে পৌঁছল,তখন জান্নাতের খুশবু তিনি অনুভব করলেন!!
বললেন, “খুব সুন্দর সুঘ্রাণ পাচ্ছি, মনে হয় এটা জান্নাতের সুঘ্রাণ,জিবরাঈল (আঃ) বললেন, জান্নাত তো অনেক দূরে, মনে হয়,ফেরাউন কন্যার কেশ বিন্যাসকারিণী মহিলার কবর থেকে এ সুঘ্রাণ আসছে!!
সুবাহাহাল্লাহ্!!
তিনি বন্দি মানুষ। বন্দি অবস্হায় আইন শৃন্খলা বাহিনির সাথে আদলতে উপস্হিত হয়েছিলেন।
সেখানে সরকারী দলের লোকজন তাঁর উপর হামলা করেছে।
কয়দিন আগে মাহমুদুর রহমানের উপর হামলা হল। এটা কিসের আলামত?
ব্যারিষ্টার মইনুল হোসেন একজন সম্পাদক।
তিনি দৈনিক ইত্তেফাকের সম্পাদক মনডলীর সভাপতি।
তিনি আইনজীবি সমিতির সভাপতি ছিলেন।
সাবেক উপদেষ্টা।
স্বাধীতা উত্তর প্রথম পর্লামেন্টের সদস্য ছিলেন।
মাহমুদুর রহমান ও আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক, সাবেক মন্ত্রী।
তারা আদলতে হাজিরা দিতে গিয়েছিলেন।
মাহমুদুর রহমান গিয়েছিলেন স্বেচ্ছায়।
আর ব্যারিষ্টার মইনুল নিজে স্বেচ্ছায় যায়নি।
তাকে বন্দি করে নেয়া হয়েছিল।
তাঁদের উপর সরকারী দলের লোকজনের এই নিলর্জ হামলা জাতি হিসেবে আমরা লজ্বিত।
আমি জানি সরকারী দলে যথেষ্ট বিবেকমান মানুষ আছেন।
আমি তাদের বিবেকের প্রতি সন্মান দেখিয়ে বলব এগুলো কি হচ্ছে?
আমাদের আগামী বংশদরদের জন্য আমরা কি রেখে যাচ্ছি?
নিশ্চয় এগুলো মুক্তি যুদ্বের চেতনা ছিল না।
মন্তব্য করতে লগইন করুন