হজ্জ্ব ও ওমরার গুরুত্ব ও ফযীলত। ইসলামের মূল স্তম্ভসমূহের পঞ্চমটি হল হজ্বে বায়তুল্লাহ। ঈমান, নামায, যাকাত ও রোযার পরই হজ্বের অবস্থান
লিখেছেন লিখেছেন কুয়েত থেকে ১৪ আগস্ট, ২০১৮, ০১:৪৩:৩৯ রাত
হজ্জ্ব ও ওমরার গুরুত্ব ও ফযীলত ইসলামের মূল স্তম্ভসমূহের পঞ্চমটি হল হজ্বে বায়তুল্লাহ। ঈমান, নামায, যাকাত ও রোযার পরই হজ্বের অবস্থান। হজ্ব মূলত কায়িক ও আর্থিক উভয়ের সমন্বিত একটি ইবাদত। তাই উভয় দিক থেকে সামর্থ্যবান মুসলিমের উপর হজ্ব পালন করা ফরয।
অর্থাৎ হজ্ব আদায়ে সক্ষম এমন শারীরিক সুস্থতার পাশাপাশি নিত্যপ্রয়োজনীয় খরচ পাতি ও আসবাব পত্রের অতিরিক্ত হজ্বে যাওয়া আসার ব্যয় এবং হজ্ব আদায়কালীন সাংসারিক ব্যয় নির্বাহে সক্ষম এমন সামর্থ্যবান ব্যক্তির উপর হজ্ব আদায় করা ফরয যা সক্ষম ব্যক্তির জীবনে একবারই হজ্ব ফরজ।
হজ্জ অস্বীকারকারী ইসলাম থেকে খারিজ হয়ে যায়। আল্লাহ তা’লা বলেন, وَلِلَّهِ عَلَى ٱلنَّاسِ حِجُّ ٱلْبَيْتِ مَنِ ٱسْتَطَاعَ إِلَيْهِ سَبِيلًا ۚ وَمَن كَفَرَ فَإِنَّ ٱللَّهَ غَنِىٌّ عَنِ ٱلْعَٰلَمِينَ এবং সামর্থ্যবান মানুষের উপর আল্লাহর জন্য বায়তুল্লাহর হজ্জ করা ফরয। আর যে কুফরী করে, তবে আল্লাহ তো নিশ্চয় সৃষ্টিকুল থেকে অমুখাপেক্ষী। ( সূরা আলে ইমরান,আয়াতঃ ৯৭)
হজ্জকে আরবিতে মানাসিক مناسك বলা হয়। পবিত্র কুরআন ও হাদিসে একাধিক স্থানে মানাসিক বলে হজ্জকে বুঝানো হয়েছে। হজ্জ শব্দের অর্থ হলো ইচ্চা করা, সংকল্প করা ইত্যাদি।কোনো জিনিসের উদ্দেশ্যে সংকল্প করাকেই হজ্জ বলা হয়। কোনো মহৎ জিনিসের উদ্দেশ্যে সংকল্প করাকেও হজ্জ বলা হয়। যারা হজ্জ করেন তারা সাধারণত একটি বিশেষ পর্যায়ের সংকল্প, আকাঙ্ক্ষা ও মানসিক প্রস্তুতি নিয়ে হজ্জ করে থাকেন বিধায় একে হজ্জ বলে।
হজ্জ আরবি শব্দ। অর্থ নিয়ত করা, দর্শন করা, সঙ্কল্প করা, এরাদা করা, গমন করা, ইচ্ছা করা, প্রতিজ্ঞা করাসহ , কোনো মহৎ কাজে ইচ্ছা করা। আর শরিয়তের পরিভাষায় নির্দিষ্ট দিনে নিয়তসহ ইহরামরত অবস্থায় আরাফার ময়দানে অবস্থান করা এবং বায়তুল্লাহ শরীফ তাওয়াফ করা। আল্লামা ইবনে হাজার আসকালানী রহমাতুল্লাহ আলাইহি বলেন, هوالقصد إلى البيت الحرام باعمال مخصوصة অর্থাৎ বিশেষ কিছু আমল সম্পাদনসহ পবিত্র কা’বাগৃহের উদ্দেশ্যে গমন করাকে হজ্জ বলে।
আবার কেউ কেউ বলেন, নির্দিষ্ট আমলসহ নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট স্থানে গমন করাকে হজ্জ বলে। হজ্জের প্রধান লক্ষ্য হলো বায়তুল্লাহ শরিফের যিয়ারত إِنَّ أَوَّلَ بَيْتٍ وُضِعَ لِلنَّاسِ لَلَّذِى بِبَكَّةَ مُبَارَكًا وَهُدًى لِّلْعَٰلَمِينَ নিশ্চয় প্রথম ঘর, যা মানুষে জন্য স্থাপন করা হয়েছে, তা মক্কায়। যা বরকতময় ও হিদায়াত বিশ্ববাসীর জন্য। (সূরা আলে ইমরান,আয়াত ৯৬)
হজ্জ পালন উত্তম ইবাদাত عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ سُئِلَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَيُّ الأَعْمَالِ أَفْضَلُ قَالَ إِيمَانٌ بِاللهِ وَرَسُولِهِ قِيلَ ثُمَّ مَاذَا قَالَ جِهَادٌ فِي سَبِيلِ اللهِ قِيلَ ثُمَّ مَاذَا قَالَ حَجٌّ مَبْرُورٌ হযরত আবূ হুরাইরাহ্ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত যে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস করা হলো, সর্বোত্তম আমল কোনটি? তিনি বললেন আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি ঈমান আনা। জিজ্ঞেস করা হলো, অতঃপর কোনটি? তিনি বললেনঃ আল্লাহর পথে জিহাদ করা। জিজ্ঞেস করা হলো, অতঃপর কোনটি? তিনি বলেন হাজ্জ-ই-মাবরূর। (বুখারী,হাদিস নং-১৫১৯)
অন্য রেওয়াতে রয়েছে: عَنْ عَائِشَةَ أُمِّ الْمُؤْمِنِينَ أَنَّهَا قَالَتْ يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم نَرَى الْجِهَادَ أَفْضَلَ الْعَمَلِ أَفَلاَ نُجَاهِدُ قَالَ لاَ لَكِنَّ أَفْضَلَ الْجِهَادِ حَجٌّ مَبْرُورٌ উম্মুল মু‘মিনীন ‘আয়িশাহ্ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহা হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, হে আল্লাহর রাসূল! জিহাদকে আমরা সর্বোত্তম ‘আমল মনে করি। কাজেই আমরা কি জিহাদ করবো না? তিনি বললেনঃ না, বরং তোমাদের জন্য সর্বোত্তম জিহাদ হল, হাজ্জে মাবরূর। (সহীহ বুখারী,হাদিস নং-১৫২০) عن أبي هريرة رضي الله عنه أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال : العمرة إلى العمرة كفارة لما بينهما ، والحج المبرور ليس له جزاء إلا الجنة ،، আবু হুরায়রা থেকে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, এক উমরা হতে অন্য উমরা, এ দুয়ের মাঝে যা কিছু (পাপ) ঘটবে তার জন্য কাফফারা। আর মাবরুর হজের বিনিময় জান্নাত ভিন্ন অন্য কিছু নয়।(বোখারি : হাদিস নং ১৬৫০)
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, إن الإسلام يهدم ما كان قبله ، و أن الهجرة تهدم ما كان قبلها ، وأن الحج يهدم ما كان قبله কারো ইসলাম-গ্রহণ পূর্বকৃত সকল পাপকে মুছে দেয়। হিজরত তার পূর্বের সকল গুনাহ মুছে দেয়, ও হজ তার পূর্বের সকল পাপ মুছে দেয়। (মুসলিম : হাদিস নং১৭৩)
ইবনে মাসউদ হতে বর্ণিত, تابعوا بين الحج والعمرة ، فإنهما ينفيان الفقر والذنوب كما ينفي الكير خبث الحديد والذهب والفضة وليس للحج المبرور ثواب إلا الجنة ‘তোমরা পর পর হজ ও উমরা আদায় করো। কেননা তা দারিদ্র্য ও পাপকে সরিয়ে দেয় যেমন সরিয়ে দেয় কামারের হাপর লোহা-স্বর্ণ-রুপার ময়লাকে। আর হজ্জে মাবরুরের ছোয়াব তো জান্নাত ভিন্ন অন্য কিছু নয়।(সহিহুন্নাসায়ি ২/৫৫৮)
উপরে উল্লেখিত হাদিসসমূহের বক্তব্য অত্যন্ত স্পষ্ট। তাই হজ পালনেচ্ছু প্রতিটি ব্যক্তিরই উচিত পবিত্র হজের এই ফজিলতসমূহ ভরপুরভাবে পাওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে চেষ্টা করে যাওয়া। হজ কবুল হওয়ার সকল শর্ত পূর্ণ করে সমস্ত পাপ ও গুনাহ থেকে মুক্ত থেকে কঠিনভাবে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করা। হাজ্ব ও ওমরা পালনকারীগন আল্লাহর মেহমান عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَ “ الْغَازِي فِي سَبِيلِ اللَّهِ وَالْحَاجُّ وَالْمُعْتَمِرُ وَفْدُ اللَّهِ دَعَاهُمْ فَأَجَابُوهُ وَسَأَلُوهُ فَأَعْطَاهُمْ হযরক ইবনে উমার রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণিত। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন: আল্লাহর পথের সৈনিক, হজ্জযাত্রী ও উমরা যাত্রীগণ আল্লাহর প্রতিনিধি। তারা আল্লাহর নিকট দোয়া করলে তিনি তা কবুল করেন এবং কিছু চাইলে তা তাদের দান করেন। (ইবনু মাজাহ,হাদিস নং-২৮৯৩)
অন্য রেওয়াতে রয়েছে عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ أَنَّهُ قَالَ “ الْحُجَّاجُ وَالْعُمَّارُ وَفْدُ اللَّهِ إِنْ دَعَوْهُ أَجَابَهُمْ وَإِنِ اسْتَغْفَرُوهُ غَفَرَ لَهُمْ হযরত আবূ হুরায়রা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন: হজ্জযাত্রীও উমরার যাত্রী আল্লাহর প্রতিনিধি। তারা তাঁর নিকট দোয়া করলে তিনি তাদের দোয়া কবুল করেন এবং তাঁর নিকট মাফ চাইলে তিনি তাদের ক্ষমা করেন। (ইবনু মাজাহ, হাদিস নং-২৮৯২)
মাবরুর হজের প্রতিদান: মাবরুর হজের প্রতিদান জান্নাত ভিন্ন অন্য কিছু নয়। যে হজ করল ও শরিয়ত অনুমতি দেয় না এমন কাজ থেকে বিরত রইল, যৌন-স্পর্শ রয়েছে এমন কাজ ও কথা থেকে বিরত থাকল, সে তার মাতৃ-গর্ভ হতে ভূমিষ্ট ‘হওয়ার দিনের মতো পবিত্র হয়ে ফিরে এল। حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ سَعْدٍ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ سُئِلَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَىُّ الأَعْمَالِ أَفْضَلُ قَالَ ” إِيمَانٌ بِاللَّهِ وَرَسُولِهِ ”. قِيلَ ثُمَّ مَاذَا قَالَ ” جِهَادٌ فِي سَبِيلِ اللَّهِ ”. قِيلَ ثُمَّ مَاذَا قَالَ ” حَجٌّ مَبْرُورٌ ”. হযরত আবূ হুরাইরাহ্ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত যে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস করা হলো, সর্বোত্তম আমল কোনটি? তিনি বললেনঃ আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রতি ঈমান আনা। জিজ্ঞাসা করা হল, তারপর কোন্টি? তিনি বললেনঃ আল্লাহর পথে জিহাদ করা। জিজ্ঞাসা করা হল, তারপর কোন্টি? তিনি বলেনঃ হাজ্জ-ই-মাবরূর ।(বুখারী, পরিচ্ছদঃ ৯৬৪.
হজ্জে মাবরুর এর ফযীলত, হাদীস নং-১৪২৯) حَدَّثَنَا آدَمُ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، حَدَّثَنَا سَيَّارٌ أَبُو الْحَكَمِ، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا حَازِمٍ، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُول مَنْ حَجَّ لِلَّهِ فَلَمْ يَرْفُثْ وَلَمْ يَفْسُقْ رَجَعَ كَيَوْمِ وَلَدَتْهُ أُمُّهُ হযরত আবূ হুরাইরাহ্ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছিঃ যে ব্যাক্তি আল্লাহর উদ্দেশ্যে হাজ্জ (হজ্জ) করলো এবং অশালীন কথাবার্তা ও গুনাহ থেকে বিরত রইল, সে নবজাতক শিশু, যাকে তাঁর মা এ মুহূর্তেই প্রসব করেছে, তার ন্যায় নিষ্পাপ হয়ে ফিরবে।(বুখারী, হাদীস নং-১৪৩১
হজ্জ এমন একটি ইবাদাত যার প্রত্যেকটি কাজে আল্লাহর যিকর করা হয়। তাওয়াফ, সাঈ, রমঈল জিমার (পাথর নিক্ষেপ), মিনা,মুযদালিফাহ, আরাফাহসহ প্রত্যেকটি নির্দেশনায় আল্লাহর যিকরে ধ্বনিত, প্রতিধ্বনিত হচ্ছে। আল্লাহ তায়ালা বলেন,فَإِذَا قَضَيْتُم مَّنَٰسِكَكُمْ فَٱذْكُرُوا۟ ٱللَّهَ كَذِكْرِكُمْ ءَابَآءَكُمْ أَوْ أَشَدَّ ذِكْرًا ۗ فَمِنَ ٱلنَّاسِ مَن يَقُولُ رَبَّنَآ ءَاتِنَا فِى ٱلدُّنْيَا وَمَا لَهُۥ فِى ٱلْءَاخِرَةِ مِنْ خَلَٰقٍ‘তারপর যখন তোমরা তোমাদের হজের কাজসমূহ শেষ করবে, তখন আল্লাহকে স্মরণ কর, যেভাবে তোমরা স্মরণ করতে তোমাদের বাপ-দাদাদেরকে, এমনকি তার চেয়ে অধিক স্মরণ। আর মানুষের মধ্যে এমনও আছে যে বলে, হে আমাদের রব, আমাদেরকে দুনিয়াতেই দিয়ে দিন। বস্ত্তত আখিরাতে তার জন্য কোন অংশ নেই। (সূরা আল বাকারাহ,আয়াতঃ২০০)
আল্লাহ আরো বলেন,لَيْسَ عَلَيْكُمْ جُنَاحٌ أَن تَبْتَغُوا۟ فَضْلًا مِّن رَّبِّكُمْ ۚ فَإِذَآ أَفَضْتُم مِّنْ عَرَفَٰتٍ فَٱذْكُرُوا۟ ٱللَّهَ عِندَ ٱلْمَشْعَرِ ٱلْحَرَامِ ۖ وَٱذْكُرُوهُ كَمَا هَدَىٰكُمْ وَإِن كُنتُم مِّن قَبْلِهِۦ لَمِنَ ٱلضَّآلِّينَ তোমাদের উপর কোন পাপ নেই যে, তোমরা তোমাদের রবের পক্ষ থেকে অনুগ্রহ অনুসন্ধান করবে। সুতরাং যখন তোমরা আরাফা থেকে বের হয়ে আসবে, তখন মাশআরে হারামের নিকট আল্লাহকে স্মরণ কর এবং তাকে স্মরণ কর যেভাবে তিনি তোমাদেরকে দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। যদিও তোমরা এর পূর্বে অবশ্যই পথভ্রষ্টদের অন্তর্ভুক্ত ছিলে। (সূরা আল-বাকারাহ,আয়াতঃ-১৯৮
বিষয়: বিবিধ
১০০৯ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
১. জামায়াতের বিপ্লবী দাওয়াত। জামায়াত দুনিয়াবী কোন উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে মানুষকে আহ্বান করে না। দুনিয়ার কোন সফলতার লোভ দেখায় না। একান্ত পরকালীন সাফল্যের কথা সামনে নিয়ে আসে, যেভাবে আল্লাহর রাসূল দাওয়াত দিয়েছেন।
২. ইসলামী সমাজ গঠনের উপযোগী ব্যক্তিগঠন পদ্ধতি। জামায়াত মনে করে ব্যক্তিগঠনের জন্য তিন ধরণের যোগ্যতা লাগবে।
এক, ঈমানী যোগ্যতা।
দুই, ইলমী যোগ্যতা।
তিন, আমলী যোগ্যতা।
যোগ্যতা হাসিলে কঠোর প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করেছে সংগঠনটি।
৩. জামায়াত ইসলামীর তৃতীয় বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এটি একটি তাকওয়া ভিত্তিক সংগঠন। জামায়াত কোন লোককে দায়িত্ব প্রদানকালে তাকওয়ার বিষয়টি সামনে রাখে।
৪. জামায়াতের অনন্য বৈশিষ্ট্য হচ্ছে “নেতৃত্ব সৃষ্টির পদ্ধতি”। অসাধারণ এই পদ্ধতিতে নেতৃত্ব বা পদলোভীদের কোন স্থান নেই।
৫. ক্ষমতা দখলের রাজনীতি করে না জামায়াত। জামায়াত ইসলামী সূরা নূরের ৫৫ নং আয়াতকে সামনে রেখে বিশ্বাস করে, ইসলামী সরকার চালানোর যোগ্য কর্মীবাহিনী তৈরী হলে আল্লাহ পাক সরকারী দায়িত্ব দেয়ার পথ করে দিবেন।
৬. জামায়াতের অর্থের উৎস জামায়াতের দায়িত্বশীল, কর্মী এবং শুভাকাংখীরা। জামায়াত বাইরের অন্য কারো অর্থে চলে না। কারো ক্রীয়ানক হিসেবে কাজ করে না।
৭. বিরোধীদের প্রতি জামায়াতের আচরণ। জামায়াত তার বিরোধীদের মধ্যে যারা অশালীন ও অভদ্র ভাষা প্রয়োগ করে তাদের করুণার পাত্র মনে করে। জামায়াতের দাওয়াত আদর্শ ও কর্মসুচীর বিরুদ্ধে বেচারাদের কিছু বলার সাধ্য নেই বলে বেসামাল হয়ে গালাগালি করে মনের ঝাল মেটানোর চেষ্টা করে। জামায়াত তাদের হিদায়াতের জন্য দোয়া করে।
মন্তব্য করতে লগইন করুন