কন্যা সন্তান পিতার জন্য সবচেয়ে আদরের, কিন্তু বিয়ের পর দেখাযায় এই কন্যার নামের সাথে স্বামির নাম যুক্ত হয়ে গেছে পিতার নাম বাদপড়ে গেল। এ ব্যপারে ইসলাম কি বলে
লিখেছেন লিখেছেন কুয়েত থেকে ২৯ জুলাই, ২০১৮, ১২:৪৯:৪৭ রাত
বিয়ের পর স্ত্রী কি তাঁর স্বামীর নাম নিজের নাম এর সাথে যুক্ত করতে পারবে? অথচ কন্যা সন্তান পিতার জন্য সবচেয়ে আদরের, কিন্তু বিয়ের পর দেখাযায় এই কন্যার নামের সাথে স্বামির নাম যুক্ত হয়ে গেছে পিতার নাম বাদপড়ে গেল। এ ব্যপারে ইসলাম কি বলে..?
যাবতীয় প্রশংসা মহান আল্লাহ তায়ালার প্রতি, দুরূদ ও সালাম বিশ্ব নবী জনাবে রসূলুল্লাহ (সাঃ) এর উপর বর্ষিত হোক।
পরম করুণাময় ও অসীম দয়ালু মহান আল্লাহ তায়ালার নামে শুরু করছি। নিজ পরিবারের ও বংশের নাম পরিবর্তন করে অন্য পরিবারের ও বংশের নাম লাগানো সম্পূর্ণ হারাম এবং বড় গুনাহ।
আর এটাই হচ্ছে জাহেলিয়াত ও বিজাতীয় অনুসরণ বা অনুকরণ। আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মাদ (সাঃ) এর স্ত্রীদের নামের দিকে দৃষ্টিপাত করলে দেখতে পাবেন তাদের নামের সাথে নবী মুহাম্মাদ (সাঃ) এর নাম যুক্ত ছিল না, তারা তাদের নামের সাথে স্বামীর নাম যুক্ত করেন নি। বরং তাদের নামের সাথে তাদের পিতার নাম যুক্ত ছিল।
যেমন হযরত আয়েশা সিদ্দিকা (রাঃ) এর বিয়ের পরেও তাঁর নামের সাথে আয়েশা সিদ্দিকা তাঁর পিতার নাম যুক্ত ছিল। তাঁর নামের সাথে মুহাম্মাদ (সাঃ) এর নাম যুক্ত করে "আয়েশা মুহাম্মাদ" রাখা হয় নি। সুতরাং কারো নাম হবে তার বংশের নামে ও তার বাবার নামে।
মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন তোমরা তাদের সন্বোধন কর তাদের বাপেদের নামে, এটিই আল্লাহর কাছে বেশি ন্যায়সংগত।
সূরা আহযাব আয়াত ৫ ।
আবূ মা'মার (রাঃ)আবূ যার (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে নবী করিম (সাঃ) কে বলতে শুনেছেন, কোন ব্যক্তি যদি নিজ পিতা সম্পর্কে জ্ঞাত থাকা সত্ত্বেও অন্য কাউকে তার পিতা বলে দাবী করে তবে সে আল্লাহর (নিয়ামতের) কুফরী করল এবং যে ব্যক্তি নিজেকে এমন বংশের সাথে নসবী সম্পৃক্ততার দাবী করল, যে বংশের সাথে তার কোন নসবী সম্পর্ক নেই, সে যেন তার ঠিকানা জাহান্নামে করে নেয়। সহিহ বুখারী অধ্যায় ৫৬ হাদিস ৭১১
নবী করিম (সাঃ) আরো বলেন, যে ব্যক্তি তার পিতা বাদ দিয়ে অন্যের সাথে সম্পর্কের দাবি করে পরিচয় দেয় অথবা নিজের মনিবকে ত্যাগ করে অপরকে মনিব বলে পরিচয় দেয়, তার উপর আল্লাহ, তাঁর ফেরেশতাগন এবং সকল মানুষের অভিশাপ। তার নফল বা ফরয কোন ইবাদতই কবুল করা হবে না।
ইবনে মাজাহ হাদিস ২৭১২।
যেহেতু স্বামী রক্তে সম্পর্কে অন্য বংশের তাই তার নাম নিজের বংশীয় নাম পরিবর্তন করে লাগানো যাবে না। আর এটা এক ধরনের জাহেলিয়াত ও বিজাতির অনুসরণ।
অতএব, বিয়ের আগে এবং পরে নারীরা সব সময়েই নিজের পিতার নামে পরিচিত হবে। বিয়ের পরে নামের সাথে স্বামীর নাম লাগানো- এটা সম্পূর্ণরূপে ইহুদী এবং খ্রিস্টানদের সংস্কৃতি। মহান আল্লাহ তায়ালা আল্ কুরআনে বলেছেন, ইহুদী এবং খ্রিস্টানরা জাতি হিসেবে নির্বোধ, কারণ তারা ইব্রাহীম (আঃ) এর দ্বীনে হানীফ (এক আল্লাহর ইবাদত করা এবং সমস্ত শিরক থেকে বেঁচে থাকার ধর্ম) থেকে ফিরে কুফুরীতে লিপ্ত হয়েছে। সেজন্যে ইহুদী এবং খ্রিস্টানদের সংস্কৃতি অনুকরণ করা মুসলমানদের জন্যে হারাম।
এই বিষয়টি চিন্তা করে দেখুন এই কাজটা কত বোকামী, এক মেয়ে বিয়ের পরে স্বামীর নাম যুক্ত করলো, হয়তো কোন একসময় তালাক হয়ে অন্য পুরুষের ঘরে গেলো। তখন আবার নাম পাল্টানো ইসলাম আমাদেরকে নিজের বাবার নামে পরিচিত হতে আদেশ করেছেন। স্বামী স্ত্রী সম্পর্কের দ্বারা একজন নারীর প্রকৃত পরিচয় হতে পারে না।
ইবনে উমার (রাঃ) বর্ণনা করেন। রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি কোন সম্প্রদায়ের অনুকরণ করবে সে ঐ কাওমের বলেই গণ্য হবে। বুলুগূল মারাম ১৪৭১।
আল্লাহ তায়ালা আমাদের এই সকল গুনাহ হতে রক্ষা করুন এবং সঠিক পথে থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন
বিষয়: বিবিধ
১১৮০ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
-নোংরা রাজনীতির গর্ভ থেকে যে গণতন্ত্র পয়দা হয়েছে,তা ১২ মাস অসুস্থ থাকবেই স্বাভাবিক-
#নীতির রাজ বা নীতিরাজ যদি হয় রাজনীতি,তাহলে মেনে নিতে হবে এই রাজনীতি করা তাদের পক্ষে শোভা পায়,যাদের কলিজা বড়,মনটা উদার,যারা বিবেকবান,যারা ভদ্র,ব্যবহার ভালো,গভীর জ্ঞানী ও সুশিক্ষিত লোক,যারা সকল সংকীর্ণতার ঊর্ধ্বে।জবান যাদের মিষ্টি,উচ্চারিত হয় সেসব বাক্য,তা হয় মার্জিত।
-রাজনীতি ফকির-নীতি নয় এবং কোন ফকিরের ছাওয়াল বা নিম্ন কৃষ্টির উৎস থেকে নির্গত নন্দনদের অথবা যদু,মধু,মনা মিয়া,টেংরা মিয়ার ব্যবহারের বস্তুুও নয় এই রাজনীতি।
-ডাক্তারি আর ইজ্ঞিনিয়ারিং পড়ার জন্য ভর্তি হতে হলে বিদ্যার একটা স্ট্যান্ডার্ড থাকতে হয়।আগে দুটি পরিক্ষায় কৃতিত্বপূর্ণ সাফল্য দেখাতে হয়,মেধাবী ছাত্র বলে পরিচয় দিতে হয়,ভালো নম্বর নিয়ে হাজির হতে হয়।ভর্তি পরিক্কায় উত্তীর্ণ হতে হয়।অতপর পাওয়া যায় ভর্তির অনুমতি।রাজনীতি করার জন্য এ ধরনের কোনো মাপকাঠি বা স্ট্যান্ডার্ড রাখা হয়নি,কিন্তু এই পলিটিক্স কোন তঙ্গ-নজ্রী,কম নজ্রী অথবা নিম্ন কৃষ্টির পরিবার থেকে আগত কোন নর-নারীর জন্য নয় এবং ভালো পরিবারের কোন কুলাঙ্গার সন্তানের জন্যও নয়।
--আমাদের দেশে বর্তমান রাজনীতি একটা শিল্প বা ব্যবসা হয়ে গেছে।এই শিল্প বা ব্যবসায় অনেকে নেমেছেন।এর দ্বারা অনেকের ভাগ্য সুপ্রসন্ন হয়েছে।এ ব্যবসায় সকলে নামার ফলে রাজনীতি হয়েগেছে ভলিবলের মত ঝাপটা-ঝাপটির বস্তুু।
!!-এই জন্য রাজ-অন্তরের অধিকারী সুশিক্ষিত ভদ্রজনেরা কাড়াকাড়ির এই রাজনৈতিক প্রতিযোগিতা থেকে সরে পড়তে বাধ্য হচ্ছেন।ফলে মস্তান মার্কানব্য রাজনীতি-ব্যবসায়ী তাদের চরিত্রের ধুর্তামী নিয়ে এই ময়দানে নেমেছেন।এ কারণে রাজনীতিও তার মৌলিক চরিত্র হারিয়ে ফেলেছে,এখন রাজনীতির অবস্থা হচ্ছে এই
'কোন ঘরে নেই আবার সব ঘরে ঠাঁই'।
--সেকালে যারা রাজনীতি করতেন সেই নামগুলো উচ্চারণ করলে মনটা ভরে উঠে।এখন যারা রাজনীতি করছেন, তাদের কারো কারো নাম উচ্চারণ করলে মনটা বেদনায় ভরে উঠে।
-রাজনীতির ভাষা কি হওয়া উচিত আর কি অনুচিত বোধ হয় আর ব্যাখ্যা না করলেও চলবে,তবুও কিছু ব্যাখ্যা দরকার।
--সেকালের কথা,ব্রিটিশ ভারতের দু'টি প্রধান রাজনৈতিক দলের দুই নেতা নেতৃত্ব দিচ্ছেন নিজ নিজ দলের প্রতিনিধিদের।আগামীকাল ১০ টায় একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুর ওপর বৈঠক।বৈঠকে প্রচণ্ড বিতর্ক হবে।শাসক গোষ্ঠীর প্রতিনিধিরা থাকবেন এই বৈঠকে।বোম্বেতে বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
দু'টি প্রধান দলের দুই নেতা রাত্রি যাপন করছেন একই হোটেলের পাশাপাশি রুমে।গভীর রাত পর্যন্ত একই কক্ষে বসে তারা খোশগল্প করলেন। কি মধুর পরিবেশ।যেন অন্তরঙ্গ দুই বন্দু।কিন্তু আসলে দুই প্রতিদ্বন্দ্বী।খবরটা ইংরেজদের কানেও গেল।তারা ভাবলেন,হয়ত রাতে একটা সমঝোতা হয়ে গেছে দুই নেতার মধ্যে,কিন্তু না,পরদিন দেখা গেল দুই নেতা প্রচণ্ড বিতর্কে লিপ্ত।উভয়ের ভাষণে যেন আগুন ঝরছে।ভাষণে শাণিত ভাষা উভয়েই প্রয়োগ করছেন।আপোসের যে গুজব শুনেছিলেন ইংরেজ প্রতিনিধিরা,তা মিথ্যা প্রমাণিত হয়ে গেল।উভয় নেতা বৈঠক শেষে একই গাড়িতে করে হোটেলে ফিরলেন।অবসর সময়ে আবার গল্প-গুজবে মেতে উঠলেন।এ দৃশ্য অনেকের কাছে স্বপ্নের মত মনে হলো।ইংরেজরা দেখলো দু:স্বপ্ন।
এই ছিল সেকালের রাজনীতি।এ ধরনের আরও বহু দৃষ্টান্ত ইতিহাসে লিপিবদ্ধ আছে।জিন্নাহ-গান্ধীর মুখে হাসি,জিন্নাহর হাত গান্ধীর কাঁধে,গান্ধীর হাতও জিন্নাহর কাঁধে।
""এমন ছবির মলাটের বইও নিশ্চয় অনেকের কাছে আছে,আমার কাছেও আছে।
--আজকাল রাজনীতির ভাষা এত নিচে নেমেগেছে যে,এর নিচে আর কোন স্হান বোধ হয় নেই।দেশের জাত ইতররাও এভাষায় কথা বলে না,যে ভাষায় এক শ্রেণীর নেতা-নেত্রী কথা বলেন।মাসোহারা ভোগী লেখক-রাজনীতিক'তুই-তুকারি' সম্বোধনের ভাষা শুরু করেন এই ভাষায় প্রতিদিন রচনা করতে থাকেন মিথ্যা নানা কাহিনী।কয়েকটি দৈনিক এবং অধিকাংশ সাপ্তাহিক রাজনীতিতে আমদানি করেছেন তাদের বাপ-দাদা ও পারিবারিক সংস্কৃতির ভাষা।বুলডোজার ছাড়া মুখ দিয়ে তারা মানুষ পিষে মারছেন।
এই পিষে মারার ভাষা রাজনীতিতে আনা হয়েছে।প্রতিপক্ষের কর্মী ধরে সকাল-বিকাল নাস্তা করার,অমুক-তমুকের চামড়া তুলে নেয়ার ভাষা চলমান রাজনীতিতে আমদানি করা হয়েছে।
""কয়েকবছর আগে দুই বিরোধী দলের দুই নেতা জাতীয় সংসদে দাঁড়িয়ে একে অন্যের স্ত্রী প্রসঙ্গ নিয়েও টানাটানি করলেন অনেকক্ষণ।সৌভাগ্য,ঐদিন সংসদে উভয় নেতার বউরা অনুপস্থিত ছিলেন।সংসদের একজন স্পিকার খুন হয়েছেব অনেক আগে,তবে সদস্যদের মধ্যে মারামারি আর গালাগালি হয়েছে কয়েকবার।
-একবার এক সরকারি দলের এক মন্ত্রী হঠাৎ মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে একটা দলের সকল কর্মী ও নেতার মা-বোনকে উদ্দেশ্য করে এমন সব বাক্য উচ্চারণ করলেন,যা পত্র-পত্রিকায় তার জবানের 'পবিত্র বাক্য'পাঠ করে কেউ কেউ মন্তব্য করলেন,মন্ত্রী মহোদয় নেশায় দিওয়ানা।ধাক্কা দেয়া,ঠ্যালা দেয়া,ঝাকি দিয়ে ফেলে দেয়া,নাকে খত দেয়া ইত্যাদি শব্দ আমাদের বর্তমান রাজনীতিতে সংযোজিত ভাষা।এসব রাজনীতির গর্ভ থেকে যে গণতন্ত্র পয়দা হয়েছে, সেই গণতন্ত্র বার মাস অসুস্থ থাকবে তা অত্যন্ত স্বাভাবিক।বর্তমান রাজনীতিতে উন্নত কৃষ্টির রাজনীতিবিদ ও আছেন,কিন্তু তারা দেখছেন খিস্তিখেউড় সর্বদা উৎক্ষিপ্ত হচ্ছে।এসব দেখে দেখে তারা ক্রমশ পিছিয়ে পড়ছেন।নিম্ন কৃষ্টির রাজনীতিবিদদের দাপটই বেশি।
--নিম্ন কৃষ্টির মস্তান-রাজনীতিবিদদের কাছে আমার আাবেদন,রাজনীতি করা যদিও আপনাদের পক্ষে শোভা পায় না,তবুও যখন এ লাইনে এসেছেন,তখন যে কৃষ্টি ঐতিহ্য সাথে নিয়ে এসেছেন,তা আগে ত্যাগ করুন।পরিবারে একজন অন্যজনকে গালাগালি করে যেভাবে কথা বলেছেন,ভাইয়ে ভাইয়ে যেভাবে কিলাকিলি করেছেন,এখন এসব অভ্যাস ছাড়ুন।ভালো হয়েযান নিজের ভালোর জন্য,দেশ ও জাতির ভালোর জন্য।চরিত্র থাকবে ডিক্টেটরের,অথচ বক্তৃতা ঝাড়বেন গণতন্ত্রের জন্য,এমন লোকের বক্তৃতা শুনে হাসি পায়, শয়তানও হাততালি বাজায়।
মন্তব্য করতে লগইন করুন