সন্তানের জন্য পিতা-মাতার করণীয়। সন্তান আল্লাহ্ তায়ালার দেয়া বিশেষ নেয়ামতেরই অংশ বিশেষ
লিখেছেন লিখেছেন কুয়েত থেকে ০৯ এপ্রিল, ২০১৮, ০৫:০৪:৪৭ বিকাল
সন্তানের জন্য পিতা-মাতার করণীয়।
১. কানে আযান দেয়া : সন্তান দুনিয়াতে আসার পর গোসল দিয়ে পরিষ্কার করে তার ডান কানে আযান দেয়া, তা ছেলে হোক বা মেয়ে হোক। এটি পিতা-মাতার উপর এজন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বযে, শিশুর কানে সর্বপ্রথম আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্বের আওয়াজ পৌঁছে দেয়া এবং ওত পেতে থাকা শয়তান যাতে তার কোন ক্ষতি না করতে পারে। হাদিসে এসেছে,
عَنْ عُبَيْدِ اللهِ بْنِ أَبِي رَافِعٍ ، عَنْ أَبِيهِ ، قَالَ : رَأَيْتُ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم «أَذَّنَ فِي أُذُنِ الْحَسَنِ بْنِ عَلِيٍّ حِينَ وَلَدَتْهُ فَاطِمَةُ بِالصَّلاَةِ».
আবূ রাফে রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে হাসান ইবনে আলীর কানে আযান দিতে দেখেছি [সুনান আবূ দাউদ:৫১০৫]
২. সুন্দর নাম রাখা :
বাচ্চার জন্য সুন্দর নাম নির্বাচন করা পিতা-মাতার অন্যতম দায়িত্ব ও কর্তব্য। নাম অর্থবহ হওয়া নামের সৌন্দর্য। কেননা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন অনেক অসুন্দর নাম পরিবর্তন করে দিয়েছিলেন। [আবু দাউদ ৪৯৫২-৪৯৬১]
৩. আক্বিকা করা :
ইসলামী সংস্কৃতির অন্যতম বিষয় হলো সন্তানের আকীকা করা। ছেলের পক্ষ থেকে ২টি ছাগল এবং মেয়ের পক্ষ থেকে ১টি ছাগল আল্লাহর নামে যবেহ করা। হাদীসে এসেছে,
عَنْ سَمُرَةَ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «كُلُّ غُلَامٍ رَهِينَةٌ بِعَقِيقَتِهِ تُذْبَحُ عَنْهُ يَوْمَ السَّابِعِ وَيُحْلَقُ رَأْسُهُ»
সামুরা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, সকল নবজাতক তার আক্বিকার সাথে আবদ্ধ। জন্মের সপ্তম দিন তার পক্ষ থেকে জবেহ করা হবে। ঐ দিন তার নাম রাখা হবে। আর তার মাথার চুল কামানো হবে। [সুনান আবূ দাউদ: ২৮৩৮]
৪. সদকাহ করা :
ছেলে হোক বা মেয়ে হোক সপ্তম দিবসে চুল কাটা এবং চুল পরিমাণ রৌপ্য সদকাহ করা সুন্নাত। আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাসান রা. এর পক্ষ থেকে ১টি বকরী আকীকা দিয়েছেন এবং বলেছেন, হে ফাতেমা ! তার মাথা মুণ্ডন কর এবং চুল পরিমাণ রৌপ্য সদকাহ কর। [সুনান আত-তিরমিযী: ১৫১৯] এছাড়া রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শিশুদেরকে খেজুর দিয়ে তাহনীক এবং বরকতের জন্য দো‘আ করতেন। [সহীহ বুখারী: ৩৯০৯; মুসলিম: ২১৪৬]
৫. খাতনা করা :
ছেলেদের খাতনা করানো একটি অন্যতম সুন্নাত। হাদীসে এসেছে,
عَنْ جَابِرٍ قَالَ : «عَقَّ رَسُولُ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم عَنِ الْحَسَنِ وَالْحُسَيْنِ وَخَتَنَهُمَا لِسَبْعَةِ أَيَّامٍ».
জাবির রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাসান এবং হুসাইন রাদিয়াল্লাহু আনহুমার সপ্তম দিবসে আকীকা এবং খাতনা করিয়েছেন। [আল-মু‘জামুল আওসাত: ৬৭০৮]
৬. তাওহীদ শিক্ষা দেয়া :
শিশু যখন কথা বলা আরম্ভ করবে তখন থেকেই আল্লাহর তাওহীদ শিক্ষা দতে হবে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুকে লক্ষ্য করে বলেন,
«يَا غُلَامُ إِنِّي أُعَلِّمُكَ كَلِمَاتٍ، احْفَظِ اللَّهَ يَحْفَظْكَ، احْفَظِ اللَّهَ تَجِدْهُ تُجَاهَكَ، إِذَا سَأَلْتَ فَاسْأَلِ اللَّهَ، وَإِذَا اسْتَعَنْتَ فَاسْتَعِنْ بِاللَّهِ، وَاعْلَمْ أَنَّ الأُمَّةَ لَوْ اجْتَمَعَتْ عَلَى أَنْ يَنْفَعُوكَ بِشَيْءٍ لَمْ يَنْفَعُوكَ إِلَّا بِشَيْءٍ قَدْ كَتَبَهُ اللَّهُ لَكَ، وَلَوْ اجْتَمَعُوا عَلَى أَنْ يَضُرُّوكَ بِشَيْءٍ لَمْ يَضُرُّوكَ إِلَّا بِشَيْءٍ قَدْ كَتَبَهُ اللَّهُ عَلَيْكَ، رُفِعَتِ الأَقْلَامُ وَجَفَّتْ الصُّحُفُ»
‘হে বৎস! আমি তোমাকে কয়েকটি বাক্য শিখাতে চাই। তুমি আল্লাহর অধিকারের হেফাযত করবে, আল্লাহও তোমার হেফাযত করবেন। তুমি আল্লাহর অধিকারের হেফাযত করবে, তুমি তাঁকে সর্বদা সামনে পাবে। যখন কোন কিছু চাইবে তখন আল্লাহর কাছেই চাইবে। আর যখন সহযোগিতা চাইবে তখন আল্লাহর কাছেই চাইবে। আর জেনে রাখ! যদি পুরো জাতি যদি তোমার কোন উপকার করার জন্য একতাবদ্ধ হয়, তবে তোমার কোন উপকার করতে সমর্থ হবে না, শুধু ততটুকুই করতে পারবে যতটুকু আল্লাহ তোমার জন্য লিখে রেখেছেন। আর যদি পুরো জাতি যদি তোমার কোন ক্ষতি করার জন্য একতাবদ্ধ হয়, তবে তোমার কোন ক্ষতি করতে সমর্থ হবে না, শুধু ততটুকুই করতে পারবে যতটুকু আল্লাহ তোমার জন্য লিখে রেখেছেন। কলমের লিখা শেষ হয়েছে এবং কাগজসমূহ শুকিয়ে গেছে। [তিরমিযী: ২৫১৬]
৭. কুরআন শিক্ষা দান :
ছোট বেলা থেকেই সন্তানকে কুরআন শিক্ষা দিতে হবে। কেননা কুরআন শিক্ষা করা ফরয। আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, তোমরা তোমাদের সন্তানদের তিনটি বিষয় শিক্ষা দাও। তন্মধ্যে রয়েছে তাদেরকে কুরআন তিলাওয়াত শিক্ষা ও কুরআনের জ্ঞান দাও। [জামিউল কাবীর]
কুরআন শিক্ষা দেয়ার চেয়ে উত্তম কাজ আর নেই। উসমান রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
«خَيْرُكُمْ مَنْ تَعَلَّمَ الْقُرْآنَ وَعَلَّمَهُ»
‘‘তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম ব্যক্তি সেই যে নিজে কুরআন শিক্ষা করে ও অপরকে শিক্ষা দেয়।’’ [সহীহ বুখারী:৫০২৭]
৮. সলাত শিক্ষা দেয়া ও সলাত আদায়ে অভ্যস্ত করা :
এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ অধিকার যে পিতা-মাতা তার সন্তানকে সলাত শিক্ষা দিবেন এবং সলাত আদায়ে অভ্যস্ত করাবেন। হাদীসে এসেছে,
عَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ جَدِّهِ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مُرُوا أَوْلَادَكُمْ بِالصَّلَاةِ وَهُمْ أَبْنَاءُ سَبْعِ سِنِينَ وَاضْرِبُوهُمْ عَلَيْهَا وَهُمْ أَبْنَاءُ عَشْرٍ وَفَرِّقُوا بَيْنَهُمْ فِي الْمَضَاجِعِ»
আমর ইবনে শূয়াইব রাদিয়াল্লাহু আনহু তার বাবা তিনি তার দাদা থেকে বর্ণনা করেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, তোমরা তোমাদের সন্তানদের সলাতের নির্দেশ দাও সাত বছর বয়সে। আর দশ বছর বয়সে সলাতের জন্য মৃদু প্রহার কর এবং শোয়ার স্থানে ভিন্নতা আনো। [সুনান আবূ দাউদ: ৪৯৫]
৯. আদব বা শিষ্টাচার শিক্ষা দেয়া :
সন্তানদের আচরণ শিক্ষা দেয়া পিতামাতার উপর দায়িত্ব ও কর্তব্যের অন্তর্ভূক্ত। লুকমান আলাইহিস সালাম তার সন্তানকে বললেন, ‘আর তুমি মানুষের দিক থেকে তোমার মুখ ফিরিয়ে নিয়ো না। আর যমীনে দম্ভভরে চলাফেরা করো না; নিশ্চয় আল্লাহ কোন দাম্ভিক, অহঙ্কারীকে পছন্দ করেন না। আর তোমার চলার ক্ষেত্রে মধ্যমপন্থা অবলম্বন কর, তোমার আওয়াজ নীচু কর; নিশ্চয় সবচাইতে নিকৃষ্ট আওয়াজ হল গাধার আওয়াজ।’ [ সূরা লুকমান ১৮,১৯]
১০.আদর স্নেহ ও ভালবাসা দেয়া :
সন্তানদেরকে স্নেহ করা এবং তাদেরকে আন্তরিকভাবে ভালবাসতে হবে। আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাসান ইবনে আলী রাদিয়াল্লাহু আনহুকে চুম্বন দিলেন এবং আদর করলেন। সে সময় আকরা ইবনে হাবিস রাদিয়াল্লাহু আনহুও উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলতে লাগলেন, আমারতো দশটি সন্তান কিন্তু আমিতো কখনো আমার সন্তানদেরকে আদর স্নেহ করিনি। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার দিকে তাকালেন এবং বললেন, যে অন্যের প্রতি রহম করে না আল্লাহও তার প্রতি রহম করেন না। [সহীহ বুখারী: ৫৯৯৭]
১১. দ্বীনি ইলম শিক্ষা দেয়া :
সন্তানকে দীনি ইলম শিক্ষা দেয়া ফরজ করা হয়েছে। কারণ দ্বীনি ইলম না জানা থাকলে সে বিভ্রান্ত এবং ক্ষতিগ্রস্থদের অন্তর্ভূক্ত হবে। হাদীসে এসেছে-
عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى الله عَليْهِ وسَلَّمَ : «طَلَبُ الْعِلْمِ فَرِيضَةٌ عَلَى كُلِّ مُسْلِمٍ»
আনাস বিন মালিক রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, প্রত্যেক মুসলিমের উপর জ্ঞানার্জন করা ফরয। [সুনান ইবন মাজাহ: ২২৪]
১২. প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়া পর্যন্ত লালন-পালন করা :
সন্তানদেরকে প্রাপ্ত বয়স্ক পর্যন্ত লালন-পালন করতে হবে এবং তাদের জন্য প্রয়োজনীয় খরচ করতে হবে।
عَنْ أُمِّ سَلَمَةَ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ هَلْ لِي مِنْ أَجْرٍ فِي بَنِي أَبِي سَلَمَةَ أَنْ أُنْفِقَ عَلَيْهِمْ وَلَسْتُ بِتَارِكَتِهِمْ هَكَذَا وَهَكَذَا إِنَّمَا هُمْ بَنِيَّ قَالَ: «نَعَمْ لَكِ أَجْرُ مَا أَنْفَقْتِ عَلَيْهِمْ»
উম্মে সালামাহ রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আমি জিজ্ঞাসা করলাম আবূ সালামার সন্তানদের জন্য আমি যদি খরচ করি এতে কি আমার জন্য প্রতিদান রয়েছে? নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হ্যাঁ যতদিন তুমি খরচ করবে ততদিন তোমার জন্য প্রতিদান থাকবে। [সহীহ বুখারী: ৫৩৬৯]
১৩. সক্ষম করে তোলা :
সন্তানদেরকে এমনভাবে সক্ষম করে গড়ে তোলা,তারা যেন উপার্জন করার মত যোগ্যতা অর্জন করতে পারে। সা‘দ ইবনে আবি ওয়াক্কাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাকে এভাবে বলেছেন,
«إِنَّكَ أَنْ تَدَعَ وَرَثَتَكَ أَغْنِيَاءَ خَيْرٌ مِنْ أَنْ تَدَعَهُمْ عَالَةً يَتَكَفَّفُونَ النَّاسَ فِي أَيْدِيهِمْ»
তোমাদের সন্তান সন্ততিদেরকে সক্ষম ও সাবলম্বি রেখে যাওয়া, তাদেরকে অভাবী ও মানুষের কাছে হাত পাতা অবস্থায় রেখে যাওয়ার চেয়ে উত্তম। [সহীহ বুখারী:১২৯৫]
১৪. বিবাহ দেয়া :
সুন্নাহ পদ্ধতিতে বিবাহ দেয়া এবং বিবাহর যাবতীয় কাজ সম্পাদন করা এবং উপযুক্ত সময়ে বিবাহর ব্যবস্থা করা। আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে এভাবে বর্ণনা করা হয়েছে যে, নিশ্চয়ই পিতার উপর সন্তানের হকের মধ্যে রয়েছে, সন্তান প্রাপ্তবয়স্ক হলে তাকে বিবাহ দেবে। [জামিউল কাবীর]
১৫. দ্বীনের পথে পরিচালিত করা :
পিতা-মাতার অন্যতম দায়িত্ব হলো সন্তানদেরকে দ্বীনের পথে, কুরআন-সুন্নাহর পথে পরিচালনা করা, দ্বীনের বিধান পালনের ক্ষেত্রে অভ্যস্ত করে তোলা। কুরআনে এসেছে,
﴿قُلۡ هَٰذِهِۦ سَبِيلِيٓ أَدۡعُوٓاْ إِلَى ٱللَّهِۚ عَلَىٰ بَصِيرَةٍ أَنَا۠ وَمَنِ ٱتَّبَعَنِيۖ وَسُبۡحَٰنَ ٱللَّهِ وَمَآ أَنَا۠ مِنَ ٱلۡمُشۡرِكِينَ ١٠٨﴾ [يوسف:108]
‘ বল, ‘এটা আমার পথ। আমি জেনে-বুঝে আল্লাহর দিকে দাওয়াত দেই এবং যারা আমার অনুসরণ করেছে তারাও। আর আল্লাহ পবিত্র মহান এবং আমি মুশরিকদের অন্তর্ভূক্ত নই’। [সূরা ইউসুফ : ১০৮]
সন্তানকে দ্বীনের পথে পরিচালনার মাধ্যমে সওয়াব অর্জন করার এক বিরাট সুযোগ রয়েছে। হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আলী রাদিয়াল্লাহু আনহুকে বললেন,
«فَوَاللَّهِ لَأَنْ يُهْدَى بِكَ رَجُلٌ وَاحِدٌ خَيْرٌ لَكَ مِنْ حُمْرِ النَّعَمِ»
তোমার মাধ্যমে একজনও যদি হিদায়াতপ্রাপ্ত হয়, তবে তা হবে তোমার জন্য লালবর্ণের অতি মূল্যবান উট থেকেও উত্তম। [সহীহ বুখারী]
১৬. সন্তানদের মাঝে ইনসাফ করা :
সন্তানগণ পিতামাতার কাছ থেকে ইনসাফ আশা করে এবং তাদের মাঝে ইনসাফ করা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ বিষয়ে বিশেষভাবে সতর্ক করে বলেছেন, ‘তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং তোমাদের সন্তাদের মাঝে ইনসাফ করো’। [সহীহ বুখারী: ২৫৮৭]
১৭. ইসলাম অনুমোদন করে না এমন কাজ থেকে বিরত রাখা :
ইসলাম অনুমোদন করে না এমন কাজ থেকে তাদেরকে বিরত না রাখলে এই সন্তানগনই কিয়ামাতে পিতামাতার বিরুদ্ধে দাঁড়াবে। কুরআনে এসেছে,
﴿ يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ قُوٓاْ أَنفُسَكُمۡ وَأَهۡلِيكُمۡ نَارٗا ﴾ [التحريم:6]
হে ইমানদারগণ! তোমরা তোমাদের নিজেদেরকে এবং তোমাদের পরিবারবর্গকে জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচাও। [সূরা আত-তাহরীম-৬]
﴿وَقَالَ ٱلَّذِينَ كَفَرُواْ رَبَّنَآ أَرِنَا ٱلَّذَيۡنِ أَضَلَّانَا مِنَ ٱلۡجِنِّ وَٱلۡإِنسِ نَجۡعَلۡهُمَا تَحۡتَ أَقۡدَامِنَا لِيَكُونَا مِنَ ٱلۡأَسۡفَلِينَ ٢٩﴾ [فصلت: 29]
আর কাফিররা বলবে, ‘হে আমাদের রব, জ্বিন ও মানুষের মধ্যে যারা আমাদেরকে পথভ্রষ্ট করেছে তাদেরকে আমাদের দেখিয়ে দিন। আমরা তাদের উভয়কে আমাদের পায়ের নীচে রাখব, যাতে তারা নিকৃষ্টদের অন্তর্ভুক্ত হয়। [সূরা হা-মীম আসসিজদাহ-২৯ ]
১৮. পাপকাজ, অশ্লিলতা, বেহায়াপনা, অপসংস্কৃতি থেকে বিরত রাখা :
সন্তান দুনিয়ার আসার সাথে সাথে শয়তান তার পেছনে লেগে যায় এবং বিভিন্নভাবে, ভিন্ন ভিন্ন রুপে,পোশাক-পরিচ্ছেদের মাধ্যমে, বিভিন্ন ফ্যাশনে, বিভিন্ন ডিজাইনে, বিভিন্ন শিক্ষার নামে জাহান্নামের দিকে নিয়ে যাওয়ার ষড়যন্ত্র করে। তাই পিতা-মাতাকে অবশ্যই এ বিষয়ে সতর্ক ও সজাগ থাকতে হবে। আল্লাহ বলেন,
﴿ يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوٓاْ إِنَّ مِنۡ أَزۡوَٰجِكُمۡ وَأَوۡلَٰدِكُمۡ عَدُوّٗا لَّكُمۡ فَٱحۡذَرُوهُمۡۚ وَإِن تَعۡفُواْ وَتَصۡفَحُواْ وَتَغۡفِرُواْ فَإِنَّ ٱللَّهَ غَفُورٞ رَّحِيمٌ ١٤ ﴾ [التغابن:14]
হে মুমিনগণ, তোমাদের স্বামী-স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততিদের কেউ কেউ তোমাদের দুশমন। অতএব তোমরা তাদের ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন কর। আর যদি তোমরা মার্জনা কর, এড়িয়ে যাও এবং মাফ করে দাও তবে নিশ্চয় আল্লাহ পরম ক্ষমাশীল, অসীম দয়ালু। [সূরা তাগাবুন-১৪]
হাদীসে এসেছে,
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ ، رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا ، قَالَ : «لَعَنَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم الْمُتَشَبِّهِينَ مِنَ الرِّجَالِ بِالنِّسَاءِ وَالْمُتَشَبِّهَاتِ مِنَ النِّسَاءِ بِالرِّجَالِ»
ইবনে আববাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলে করীম রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পুরুষের বেশ ধারণকারী নারী ও নারীর বেশ ধারণকারী পুরুষকে অভিসম্পাত করেছেন। [সহীহ বুখারী:৫৮৮৫]
আব্দুল্লাহ ইবন আমর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :
عَنِ ابْنِ عُمَرَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم « مَنْ تَشَبَّهَ بِقَوْمٍ فَهُوَ مِنْهُمْ ».
‘যে ব্যক্তি অন্য জাতির সাথে সা-দৃশ্যতা রাখবে সে তাদের দলভুক্ত বলে গণ্য হবে। [সুনান আবূ দাউদ:৪০৩১]
১৯. দো‘আ করা :
আমাদের সন্তানদের জন্য দো‘আ করতে হবে। আল্লাহ তা‘আলা আমাদেরকে দো‘আ শিক্ষা দিয়েছেন এভাবে,
﴿ وَٱلَّذِينَ يَقُولُونَ رَبَّنَا هَبۡ لَنَا مِنۡ أَزۡوَٰجِنَا وَذُرِّيَّٰتِنَا قُرَّةَ أَعۡيُنٖ وَٱجۡعَلۡنَا لِلۡمُتَّقِينَ إِمَامًا ٧٤ ﴾ [الفرقان: 74]
আল্লাহর নেক বান্দা তারাই যারা বলে, হে আমাদের রব, আমাদেরকে এমন স্ত্রী ও সন্তানাদি দান করুন যারা আমাদের চক্ষু শীতল করবে। আর আপনি আমাদেরকে মুত্তাকীদের নেতা বানিয়ে দিন। [সূরা আলফুরকান-৭৪]
যাকারিয়্যা আলাইহিস সালাম আল্লাহর নিকট দো‘আ করেছিলেন,
﴿ هُنَالِكَ دَعَا زَكَرِيَّا رَبَّهُۥۖ قَالَ رَبِّ هَبۡ لِي مِن لَّدُنكَ ذُرِّيَّةٗ طَيِّبَةًۖ إِنَّكَ سَمِيعُ ٱلدُّعَآءِ ٣٨ ﴾ [ آل عمران:38]
‘হে আমার রব, আমাকে আপনার পক্ষ থেকে উত্তম সন্তান দান করুন। নিশ্চয় আপনি প্রার্থনা শ্রবণকারী’। [সূরা আলে ইমরান ৩৮]
সম্মানিত পিতামাতাবৃন্দ, আমরা কি সন্তানের হকগুলো পালন করতে পেরেছি বা পারছি ? আসুন, আমরা আমাদের সন্তানদেরকে নেকসন্তান হিসাবে গড়ে তুলি। যে সম্পর্কে হাদিসে এসেছে,
عَنْ أَبِى هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- قَالَ « إِذَا مَاتَ الإِنْسَانُ انْقَطَعَ عَنْهُ عَمَلُهُ إِلاَّ مِنْ ثَلاَثَةٍ إِلاَّ مِنْ صَدَقَةٍ جَارِيَةٍ أَوْ عِلْمٍ يُنْتَفَعُ بِهِ أَوْ وَلَدٍ صَالِحٍ»
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, মানুষ মৃত্যুবরণ করলে তার যাবতীয় আমল বন্ধ হয়ে যায়, তবে ৩ টি আমল বন্ধ হয় না-
১. সদকায়ে জারিয়া
২. এমন জ্ঞান-যার দ্বারা উপকৃত হওয়া যায়
৩. এমন নেক সন্তান- যে তার জন্য দো‘আ করে [সহিহ মুসলিম:১৬৩১]
আল্লাহ তা‘আলা আমাদের সন্তানদেরকে কবুল করুন,
তাদের হকসমূহ যথাযথভাবে পালন করার তাওফীক দিন। আমীন!
বিষয়: বিবিধ
১০৮১ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ তাআলার যিনি আমাদেরকে নিয়ামত হিসেবে দিয়েছেন সৎকাজ করার বিভিন্ন মৌসুম। যিনি রমজানকে করেছেন মহিমান্বিত, বরকতময়। যিনি উৎসাহ দিয়েছেন মাহে রমজানে ইবাদত-বন্দেগী যথার্থরূপে পালন করতে। পুণ্যময় কাজসমূহে অধিকমাত্রায় রত হতে। আমি আল্লাহর প্রশংসা করছি তার অফুরান নেয়ামতের জন্য। শুকরিয়া করছি তাঁর অঢেল করুণার জন্য। দরুদ ও সালাম তাঁর প্রতি যিনি নামাজ ও রোজা আদায়কারীদের মধ্যে ছিলেন সর্বোত্তম। যিনি তাহাজ্জুদ ও কিয়ামুল লাইল সম্পাদনকারীদের মধ্যে ছিলেন সর্বশ্রেষ্ঠ। আল্লাহ তার প্রতি রহমত ও বরকত নাযিল করুন। তাঁর সাহাবাদের প্রতিও রহমত বর্ষণ করুন। তাবেয়ীন ও ঐকান্তিকতার সাথে, পৃথিবীতে আলো অন্ধকার যতদিন থাকবে, ততদিন যারাই তাদের অনুসরণ করবে তাদের সবার প্রতি বর্ষিত হোক আল্লাহর অফুরান রহতম ।
আল্লাহ তাআলা বড়-বড় উপলক্ষ্য রেখেছেন যা হৃদয়ে ইমানকে শানিত করে, অন্তরাত্মায় আন্দোলিত করে উচ্ছ্বসিত অনুভূতি। অতঃপর বাড়িয়ে দেয় ইবাদত আরাধনার অনুঘটনা, সঙ্কুচিত করে দেয় সমাজে পাপ ও অন্যায়ের ক্ষেত্রসমূহ । রমজান মুসলমানদেরকে দেয় ঐক্য, ভ্রাতৃত্ব, স্বচ্ছতা, সহমর্মিতা, আত্মীয়তার বন্ধন রক্ষা,পবিত্রতা, উত্তমতা, সবর ও শৌর্যবীর্যের দীক্ষা। ইহা একটি সুমিষ্ট পানিয়ের প্রস্রবণ। ইহা ইবাদতকারীদের জন্য একটি নিরাপদ ভূমি, আনুগত্যকারীদের জন্য দুর্পার দুর্গ। যারা পাপী তাদের জন্য ইহা একটি সুযোগ, যাতে তারা তাদের গুনাহ থেকে তাওবা করতে পারে। তাদের জীবন-ইতিহাসে স্বচ্ছ কিছু অধ্যায় রচিত করতে পারে। তাদের জীবনকে ভরে দিতে পারে উত্তম আমলে, উৎকৃষ্ট চরিত্রে।
রমজানের ফজিলত
কালের বিবেচনায় এসব উপলক্ষ্যের মধ্যে সর্বোৎকৃষ্ট, সম্মানের বিবেচনায় সর্বশ্রেষ্ঠ, প্রভাবের বিবেচনায় সুদূর বিস্তৃত উপলক্ষ্য হল সম্মানিত মাহে রমজান যার টলটলে রস আস্বাদন করে আমরা হই পরিতৃপ্ত । চুমুকে চুমুকে তুলে নিই তার মধু। নাক ভরে শুঁকে নেই তার সুগন্ধি। মাহে রমজান ছাওয়াব-পুণ্য বহুগুণে বেড়ে যাওয়ার মাস। দরজা বুলন্দ হওয়ার মাস। পাপ-গুনাহ মোচন হওয়ার মাস। পদস্খলন থেকে সোজা হয়ে দাঁড়ানোর মাস। এ মাসে জান্নাতের দরজাসমূহ খুলে দেওয়া হয়। দোযখের দরজাসমূহ বন্ধ করে দেওয়া হয়। শয়তানকে আবদ্ধ করে দেয়া হয়। যে ব্যক্তি এ মাসে রোজা রাখবে, তারাবিহ পড়বে ইমান ও ছাওয়াব লাভের আশায়, তার অতীত জীবনের সকল গুনাহ মাফ করে দেয়া হয়। সহিহ হাদিসে এভাবেই এসেছে:
আবু হুরায়রা (রাযি) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: যে ব্যক্তি ইমান ও ইহতেসাব – আল্লাহর কাছ থেকে ছাওয়াব প্রাপ্তির আশায় সিয়াম পালন করবে, তার অতীতের সকল গুনাহ মাফ করে দেয়া হবে।[ বুখারি ও মুসলিম] { যে ব্যক্তি ইমান ও ইহতেসাবসহ রমজানের রাত্রি যাপন করবে তার অতীতের সকল গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে। [ বুখারি ও মুসলিম]
মুসলিম ভ্রাতৃবৃন্দ: রমজান মুসলমানদের জন্য বিশাল এক আনন্দের মাস। মহাকালের পরিক্রমায় ঘুরে ঘুরে আসে রমজান। আসে এই সম্মানিত মৌসুম। আসে এই মহান মাস। আসে প্রিয় মেহমান হয়ে, সম্মানিত অতিথি হয়ে। এই উম্মতের জন্য মাহে রমজান আল্লাহর এক নেয়ামত। কেননা এ মাসের রয়েছে বহু গুণাবলি, বৈশিষ্ট্য। আবু হুরাইরা (রাযি) হতে বর্ণিত এক হাদিসে এসেছে:
যখন রমজান আসে বেহেশতের দরজাসমূহ খুলে দেয়া হয়। দোযখের দরজাসমূহ বন্ধ করে দেয়া হয়। শয়তানকে শিকল পড়িয়ে দেয়া হয়। [ বুখারি ও মুসলিম]
এটা নিঃসন্দেহে বড় সুযোগ। এটা এক সম্মানিত উপলক্ষ্য যেখানে স্বচ্ছতা পায় অন্তরাত্মা। ধাবিত হয় যার প্রতি হৃদয়। যাতে বেড়ে যায় ভাল কাজ করার উৎসাহ-উদ্যম। উন্মুক্ত হয়ে যায় জান্নাত, নাযিল হয় অফুরান রহমত। বুলন্দ হয় দরজা, মাফ করা হয় গুনাহ।
রমজান তাহাজ্জুদ ও তারাবির মাস। যিকির ও তাসবিহর মাস। রমজান কুরআন তিলাওয়াত ও নামাজের মাস। দান সাদকার মাস। যিকির-আযকার ও দুআর মাস। আহাজারি ও কান্নার মাস।
আসমান ভেঙ্গে টুকরা টুকরা হয়ে যাবে
পাহাড় গুলো তুলার মত উরতে থাকবে
সমস্থ প্রানী প্রান হারাবে
তখন আল্লাহ তা`য়ালা আজরাইল আঃ
কে বলবে মাম বাকিয়া আর কে বাকি
আজরাইলঃ আমি আপনি আসমানের ফেরেশতার
আর আরশ বহনকারি ৮ ফেরেশতা
আল্লাহ: আসমানের ফেরেশতাদেরও মরতে হবে,
তারাও মরে যাবে
আবার আল্লাহ বলবে মাম বাকিয়া
আজরাইল আ: বলবে হে আমার প্রতিপালক
আমি আপনি আর আরশ বহনকারি ফেরেশতা
আল্লাহঃ আরশ। বহনকারি ফেরেশতাদেরও
মরতে হবে
অতপর তারাও মরে যাবে
আল্লাহ বলবে মাম বাকিয়া আর কে বাকি..?
আজরাইল আঃ হে আমার প্রতিপালক
আমি আর আপনি আর আপনি তো
হলেন চিরন্জীব
তখন আল্লাহ বলবে
মুত ইয়া মালাকুল মাউত তুমিও মরে যাও
মৃত্যুর যন্ত্রনা আজরাইল আঃ এর ওপর
ডেলে দেওয়া হবে
রাসূল সাঃ বলেছেন আজরাঈল আঃ
এত জোরে চিৎকার করতে থাকবে
যদি দুনিয়া ভর্তি মানুষ থাকতো
তাহলে সবাই কলিজ্বা ফেটে মারা যাইত
আজরাইল বলবে ইয়া আল্লাহ আমি
আপনার ইজ্জত এর কসম করে
বলতাছি আমি যদি জানতাম মৃতুর এত
যন্ত্রনা তাহলে কোনো মুমিন এর রুহ
কবজ করতাম না
ইয়া আল্লাহ আমাদের ঈমান এবং
আছানের সহিত মৃতু দিও।
আমিন.
সংগ্রহ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন