দাওয়াতী টার্গেটে নিজ সন্তানদেরকেও অগ্রাধিকার দেয়া উচিৎ । নিজের সাথে পরিবারের সসকলকেও বাছাতে হবে

লিখেছেন লিখেছেন কুয়েত থেকে ০৬ মার্চ, ২০১৮, ০৫:৪৫:৫৭ বিকাল

দাওয়াতী টার্গেটে নিজ সন্তানদের অগ্রাধিকার দেয়া উচিৎ । বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কর্মীদের ব্যক্তিগত রিপোর্ট বইটিতে দেখলাম। এতে রয়েছে কুরআন-হাদীস-ইসলামী সাহিত্য ধ্যয়ন এবং জামায়াতে নামাজ আদায়ের হিসেব রাখার কলাম, দাওয়াতী টার্গেট, কর্মী টার্গেট, কর্মী যোগাযোগ, বই বিলি, সামাজিক কাজ এবং আত্ম-সমালোচনা করা হয়েছে কিনা, কতটুকু হয়েছে তার হিসেব রাখার কলামও। খুব সুন্দর।

আমার দৃষ্ট নিবন্ধ হয়েছে দাওয়াতী এবং কর্মী টার্গেট কলাম দু'টির প্রতি। প্রত্যেক জামায়াত কর্মীর কমপক্ষে চারজন দাওয়াতী এবং চারজন কর্মী টার্গেট থাকা বাঞ্চনীয়। অনেক বন্ধু টার্গেট খুঁজে পান না। আমি মনে করি বর্তমান পরিস্থিতিতে দাওয়াতী এবং কর্মী টার্গেটে নিজের সন্তানদেরকে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিৎ। তারা লাইনে আসার পর সে শুণ্যস্থানে অন্যদেরকে বসানোর চেষ্টা করুন। আমাদের অসচেতনতার ফলে আমাদের সন্তানগুলো ইসলাম বিরোধীদের টার্গেটে যেন পরিণত না হয়।

চট্টগ্রামের মাননীয় মেয়ের সাহেবের সম্মানীত পিতা চট্টগ্রাম শাহী জামে মসজিদের দীর্ঘ দিনের ইমাম ছিলেন। একজন ইমামের সন্তান চট্টগ্রামের মেয়র হয়েছন। অনেক বড় পাওনা। কিন্তু একজন ইসলামি ব্যক্তিত্বের সন্তানের আরো কিছু ইসলামী পরিচয় থাকা বাঞ্চনীয় ছিল, যা হয়নি। খুঁজলে এমন অনেক পাওয়া যাবে যে, পিতা বড় বুজুর্গ-পীর ছিলেন কিন্তু সন্তান সম্পূর্ণ ইসলাম বিরোধী, এমনকি নাস্তিকও হয়ে গেছেন। সন্তানদের প্রতি নিজেদের যদি কোন প্রচেষ্টা না থাকে তাহলে সেজন্য নিঃসন্দেহে পিতা-মাতা দায়ী হবেনই।

মাওলানা মওদূদীকে (রাহিমাহুল্লাহ) তাঁর স্ত্রী যখন নিজের সন্তানদের প্রতি মনোযোগী হতে বলতেন তখন তিনি জবাব দিতেন, 'আমার কয়েকজন সন্তান নিয়ে পড়ে থাকলে লাখ লাখ সন্তানের কী হবে, যারা উচ্ছন্নে যেতে বসেছে?'

আলহামদুলিল্লাহ্! মাওলানার প্রচেষ্টায় পাক-ভারত-বাংলা উপমহাদেশ ডিঙ্গিয়ে সমগ্র বিশ্বের লাখো ছেলে মেয়ে উচ্ছন্নে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষা পেয়ে ছহীহ দ্বীনের পথ ধরেছেন।

তবে তাঁর এক ছেলে ফারু মওদূদী তাঁর(র) মৃত্যুর পর জামায়াতের সম্পত্তি তাঁর বাবার মনে করে এবং অন্যান্য দলের মতো বাবার পরে সন্তান দলীয় প্রধান হওয়ার খায়েশ পূরণ করতে না পেরে উচ্ছনে গিয়েছেন। পাকিস্তান জামায়াতের সাথে মামলা মোকদ্দমায় জড়িয়েছেন এবং এ সুযোগে তাঁকে মামপন্থীরা হাতে করেছেন। আপনাদের জানা থাকার কথা, কিছুদিন আগে আমাদের মুরগী কবীর(১৯৭১ পাক হানাদারদের নিকট মুরগী সাপ্লাইয়ার) তাকে দাওয়াত করে এনেছিলেন জামায়াতের বিরুদ্ধে ফতোয়া(!) আদায় করার জন্য।

যাই হোক, মাওলানা মওদূদী (র) যে নিজের সন্তানদের প্রতি একেবারে নজর দেননি তা নয়। তাঁর অন্যান্য সন্তানেরা দ্বীনের উপর অটল আছেন, আলহামদুলিল্লাহ্!

তবে ইতিহাস বলে, হেদায়াত নসীব না থাকলে নবীর(আঃ) সন্তানও কাফের থেকে যায় আবার আল্লাহর ইচ্ছায় কাফেরের সন্তানও

নবী( আঃ) হয়ে যেতে পারেন। হযরত নূহ (আঃ) এর ছেলে কেনান এবং হযরত ইবরাহীম (আঃ)এর পিতা আজর এর বড় উদাহরণ।

তবে নসীবের উপর ছেড়ে দিয়ে বসে থাকার কোন সুযোগ নেই। আমাদের চেষ্টার পরও যদি কেউ হেদায়াত প্রাপ্ত না হয়, তাহলে বলতে হবে হেদায়াত তার নসীবে নেই। কিন্তু আমাদের গাফলতির কারণে যদি আমাদের সন্তান সন্ততি উচ্ছন্নে যায় এজন্য আমরাই দায়ী হবো।

আল্লাহ আমাদের সন্তানদের প্রতি রহম করুন।

লেখাটি জামায়াত ইসলামীর দায়িত্বশীলগন বেশী করে পড়া প্রয়োজন যারা বর্তমান সময়ে নিজেদের সন্তানকে ইসলামী আন্দোলনে কাজ করতে দিতে ভয় পান!!!

করতে দিলে ও নিরাপদ জায়গা খুজে দেন যেখানে রাস্তায় নেমে কাজ করতে হয়না! দাওয়াতী টার্গেটে নিজ সন্তানদেরকেও অগ্রাধিকার দেয়া উচিৎ । নিজের সাথে পরিবারের সসকলকেও বাছাতে হবে। আল্লাহ আমাদেরকে সঠিক ইসলামের শিক্ষা গ্রহণ করার তাওফিক দান করুন আমিন

collected

বিষয়: বিবিধ

৯৯৮ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

384878
০৯ মার্চ ২০১৮ রাত ০১:০৪
নূর আয়েশা সিদ্দিকা জেদ্দা লিখেছেন : এজন্য বলা হয়েছে- তোমরা নিজেরা দোযখের আগুন হতে বাঁচ এবং তোমাদের পরিবার পরিজনকে ও বাঁচাও। সূরা তাহরীম-৬ এত সুন্দর একটি লিখার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
১০ মার্চ ২০১৮ রাত ১১:০৫
317431
কুয়েত থেকে লিখেছেন : লেখাটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আল্লাহ্ তায়ালা পরিবারের সকলকে জাহান্নাম থেকে বাছাতে বলছে।
384932
১৯ মার্চ ২০১৮ সকাল ০৮:৫২
কুয়েত থেকে লিখেছেন : ব্যবহার
(মেথি)
মেথিকে মসলা, খাবার, পথ্য—তিনটাই বলা চলে। মেথির স্বাদ তিতা ধরনের। এতে রয়েছে রক্তের চিনির মাত্রা কমানোর বিস্ময়কর শক্তি। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে মেথি চিবিয়ে খেলে বা এক গ্লাস পানিতে মেথি ভিজিয়ে রেখে সেই পানি খেলে শরীরের রোগ-জীবাণু মরে, বিশেষত কৃমি মরে, রক্তের চিনির মাত্রা কমে। রক্তে ক্ষতিকর কোলেস্টেরল বা চর্বির মাত্রা কমে যায়। এই গরমে ত্বকে যে ঘা, ফোড়া, গরমজনিত ত্বকের অসুখ হয়, এই অসুখগুলো দূর করে মেথি। বার্ধক্যকে দূরে ঠেলে দিয়ে তারুণ্যকে দীর্ঘস্থায়ী করতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে মেথি। গবেষণা করে দেখা গেছে, যে ডায়াবেটিক রোগীরা নিয়মিত মেথি খান, তাঁদের ডায়াবেটিসজনিত অসুখগুলো কম হয় এবং স্ট্রোক হওয়ার প্রবণতা তুলনামূলকভাবে কম। ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য মেথি শ্রেষ্ঠ পথ্য।
385111
১৫ এপ্রিল ২০১৮ রাত ০৯:১৬
কুয়েত থেকে লিখেছেন : শবে মেরাজ উৎযাপন করা বিদ’আত
===========================
মেরাজ, এক অলৌকিক ঘটনা, যা ঘটেছিল তা সত্য এবং তা আমরা কুরআন ও হাদীস হতে জানতে পারি। শরিয়তে এই দিন উপলক্ষে বিশেষ কোন আমল করার দলিল নেই। আমাদের সমাজে শবে মেরাজ উপলক্ষে যে আমল গুলো দেখা যায় তা হলো-
◉ নিদিষ্ট নিয়মে ১২ রাক’আত সালাত আদায় করা।
◉ রোজা রাখা।
◉ উমরার নিয়্যাত করা ও আদায় করা।
◉ কবর জিয়ারত করা।
ঐ দিন এই সকল ইবাদত সমূহ পালন করা বিদ’আত। জ্ঞানহীন ও দ্বীন এর ব্যপারে গাফেল কিছু মাওলানাদের ফতোয়ার ভিত্তিতে আমাদের সমাজের মুসলীমদের মেরাজ উপলক্ষে সারা রাত নফল নামাজ এবং দিনে রোজা রাখতে দেখা যায়। অথচ তাঁদের কাছে এর প্রমানে কোন দলিল নেই। তাঁদের দলিল হলো বিদ’আতি বই-পুস্তক!
.
অনেকেই প্রশ্ন করে থাকেন যে-
- নফল সালাত পড়া, নফল রোজা রাখা এগুলো কি বিদ’আত?
- নফল ইবাদতের আবার দলিল লাগবে কেন?
- ঐ দিন এই সকল নফল ইবাদত করা যাবে না তার দলিল কোথায়?
.
❏ জবাবঃ
আপনার কথা সত্য, কিন্তু উদ্দেশ্য খারাপ। এগুলো সব শয়তানের শয়তানী যুক্তি! সমাজে বিদ’আত এই ভাবেই প্রতিষ্ঠা পায়। কোন ইবাদতকে যখন কোন দিবসের সাথে সম্পৃক্ত করবেন তখন তার দলিল লাগবে। দলিলবিহীন আমল করলে তা কখনও আল্লাহ গ্রহন করবেন না; বরং বিদ’আত করার কারণে আপনি কঠিন গুনাহগার হবেন। আর দলিল হলো কোরআন, হাদীস অথবা সাহাবাদের আমল।
.
লক্ষ্য করুন, রাসুল ﷺ কিন্তু মেরাজের পরের দিন-ই ইন্তিকাল করেন নাই; পরের বছরও ইন্তিকাল করেন নাই, তিনি বেঁচে ছিলেন আরও প্রায় ১০/১১ বছর! এই বছরগুলোতে তিনি কোনদিন মেরাজের রাত উপলক্ষে ১২ রাক’আত সালাত আদায় করেছেন অথবা নফল রোজা রেখেছেন এর প্রমানে ১টি সহীহ হাদীসও পৃথিবীতে নেই। রাসুল ﷺ যেই দিনকে কোন ইবাদতের উপলক্ষ বানালেন না, সেই দিবসকে আপনি ইবাদতের উপলক্ষ বানাবেন কি করে? আপনি কি রাসুল ﷺ থেকে শরীয়ত বেশী বুঝে গেছেন? অথবা আপনি মনে করেন যে, রাসুল ﷺ এই ইবাদত করার কথা তাঁর উম্মতদের বলতে ভুলে গেছেন? [নাউযুবিল্লাহ...]
.
এমনকি তার কোন সাহাবী, তাবেঈ, তাবে-তাবেঈণগ এমন কোন আমল করেছেন তার প্রমান নেই। তারা যা করেন নি, তা আমরা করছি কি কারনে? মায়ের চাইতে মাসির দরদ বেশী-র মতো হয়ে গেলো না ব্যাপারটি?
.
সালফে সালেহীনগণ এ মর্মে একমত যে, ইসলামী শরীয়তে অনুমোদিত দিন ছাড়া অন্য কোন দিবস উৎযাপন করা বা আনন্দ-উৎসব পালন করা বিদ’আত। কারণ-
مَنْ أَحْدَثَ فِي أَمْرِنَا هَذَا مَا لَيْسَ مِنْهُ فَهُوَ رَدّ
-যদি কেউ আমাদের এই দ্বীনে নতুন কিছু উদ্ভাবন করে যা তাতে নেই, তা প্রত্যাখ্যাত।
[বোখারী হা/২৬৯৭; মুসলিম হা/৪৩৮৪,৪৩৮৫; আবূ দাঊদ ৪৬০৬; আহমাদ হা/২৬০৯২]
.
সুতরাং মিরাজ দিবস অথবা শবে মেরাজ পালন করা দ্বীনের মধ্যে সৃষ্ট বিদ’আতের অর্ন্তভূক্ত। রাসুল ﷺ এর মৃত্যূর পর তার সাহাবী, তাবেঈ, তাবে-তাবেঈন থেকেও এদিনকে উপলক্ষ করে কোন ইবাদত করার প্রমান পাওয়া যায় না; অথচ সকল ভাল কাজে তারা ছিলেন আমাদের চেয়ে অনেক বেশি অগ্রগামী। সুতরাং এ দিবসকে কেন্দ্র করে যে কোন ইবাদত করা হউক না কেন, তা বিদ’আত হিসাবেই পরিগণিত হবে।
.
আসুন এই বিদ’আত থেকে নিজে বাঁচি ও পরিবার পরিজনকে বাঁচাই।
.
আল্লাহ আমাদের বিদ’আত ছেড়ে সারা জীবন সহিশুদ্ধ আমল করার তৌফিক দিন।
-

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File