২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ রক্তাক্ত গণহত্যার দিন। একজন মাওলানা দেলোয়ার হোসাইন সাঈদীর জন্য এক দিনেই সারাদেশে প্রাণ দিয়েছিলো অন্তত ৭০ জন কুরআন পাগল মানুষ

লিখেছেন লিখেছেন কুয়েত থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ০১:৩৯:৩৭ রাত

২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ বাংলাদেশের ইতিহাসে এক রক্তাক্ত গণহত্যার দিন। একজন মাওলানা দেলোয়ার হোসাইন সাঈদীর জন্য এই এক দিনেই সারাদেশে প্রাণ দিয়েছিলো অন্তত ৭০ জন মানুষ এই দিনটি ছিলো মূলত ধারাবাহিক গণহত্যার প্রথম ও সবচেয়ে রক্তাক্ত দিন।

যুদ্ধাবস্থা ছাড়া একদিনে এত সংখ্যক লোক হত্যার ইতিহাস বাংলাদেশে আর নেই। এই বর্বরোচিত ইতিহাসের রচয়িতা বর্তমান ক্ষমতাসীন অবৈধ আওয়ামী লীগ সরকার এবং তাদের মদদপুষ্ট পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবির সম্মিলিত বাহিনী।

২০১৩ সালের এই সময়টিতে মাত্র ৮ দিনে নির্বিচার গণহত্যার শিকার হয় নারীসহ প্রায় দেড় শতাধিক ইসলাম প্রিয় প্রতিবাদি নিরস্ত্র মানুষ। জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির মাওলানা দেলোয়ার হোসাইন সাঈদীকে বিতর্কিত বিচারের মাধ্যমে ফাঁসির রায় ঘোষণা করে ট্রাইব্যুনাল।

রায় ঘোষণার পর পরই দেশব্যাপী ফুঁসে উঠে জনতা। বিক্ষোভে ফেটে পড়ে ইসলাম প্রিয় ও সাধারণ জনতা। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে হাজার হাজার সাঈদীভক্ত রাস্তায় নেমে আসে।যেই সংখ্যালঘুদের উপর কথিত নির্যাতনের অভিযোগে সাঈদীকে অভিযুক্ত করা হয়েছিলো, সেই সংখ্যালঘু হিন্দুরাও সাঈদীর মুক্তির দাবিতে নেমে পড়েছিলো রাজপথে।

এরপরই শুরু হয় রক্তাক্ত সেই গণহত্যার ইতিহাসের সূচনা। আওয়ামী লীগ সরকারের মদদপুষ্ট পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি এবং ছাত্রলীগ যুবলীগের সসস্ত্র ক্যাডাররা সাধারণ মানুষের উপর হামলে পড়ে। গুলি চালিয়ে নির্বিচারে মানুষ হত্যা করা হয়।

রায় পরবর্তি প্রায় এক সপ্তাহ জুড়ে চালানো গণহত্যায় সারাদেশ পরিণত হয় বধ্যভূমিতে। কোথাও বিক্ষোভ মিছিলে সরাসরি গুলি চালিয়ে হত্যা করা হয়। কোথাও আবার আটকের পর খুব কাছ থেকে গুলি করে হত্যা করা হয়! খেতে-খামারে, রাস্তা-ঘাটে পড়ে ছিলো লাশ। সেদিন লাশের দেশে পরিণত হয়েছিলো সমগ্র বাংলাদেশ।

শুধু ২৮ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার একদিনেই সারাদেশে হত্যা করা হয় নারীসহ অন্তত ৭০ জনকে। তখনকার পত্রিকার তথ্যমতে, ২৮ ফেব্রুয়ারিতে পুলিশের গুলিতে সাতক্ষীরায় ১০, রংপুরে ৭,পঞ্চগড়ে ৭, চট্টগ্রামে ৩, কক্সবাজারে ৪, সিরাজগঞ্জে ৩, নারায়ণগঞ্জে ৩,দিনাজপুরে ৩,ঠাকুরগাঁওয়ে ৭, চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৪, নোয়াখালীতে ৩, মৌলভীবাজারে ৩, গাইবান্ধায় ৩, ঢাকার মিরপুরে ১, উত্তরায় ১, কুমিল্লা, নাটোর, যশোর, লক্ষ্মীপুরে ১ জনসহ সারাদেশে মোট ৬৫ জন নিহত হয়েছে। সেদিনের পত্রিকায় অবশ্য সারাদেশের খবর ঠিকমত আসেনি। পরবর্তিতে নিহতের আসল সংখ্যা জানা যায় অন্তত ৭০জন

জামায়াতে ইসলামীর তথ্যমতে ২৮ ফেব্রুয়ারির আগের ও পরের ৮ দিনে সারাদেশে হত্যা করা হয় মোট ১৪৭ জনকে। তবে মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের পরিসংখ্যান মতে মৃতের সংখ্যা ১৫৫। এছাড়া পুলিশের গুলিতে একই সময়ে আহত হয়েছিলেন প্রায় ৫ সহস্রাধিক এবং গ্রেপ্তার করা হয় প্রায় ২ সহস্রাধিক আর নিখোঁজের সংখ্যাও ছিলো অনেক।

সরকারি বাহিনীর এমন নির্বিচার গণহত্যায় দেশ-বিদেশে উদ্বেগ উৎকন্ঠা দেখা দিয়েছিলো। সমালোচনার ঝড় উঠেছিলো সর্বত্র।একজন মাওলানা দেলোয়ার হোসাইন সাঈদীর জন্য দেড় শতাধিক মানুষের জীবন বিলিয়ে দেয়ার সেই শোকাবহ আর বর্বর ইতিহাস কখনো বাংলাদেশের মানুষ ভুলবে না।

বিষয়: বিবিধ

৯৬৪ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

384954
২০ মার্চ ২০১৮ বিকাল ০৪:২৭
কুয়েত থেকে লিখেছেন : আমার অনুরোধ বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি থেকে শুরু করে সকল প্রশাসনিক কার্যনির্বাহীরা এই পোষ্টটি পড়ুন, এবং প্রশ্নগুলির জবাব নিজেকে নিজে দিন- এই কি সেই সোনার বাংলা? নাকি কোনো আফ্রিকার গহীন জঙ্গল? এমন দেশ কি আমরা চেয়েছিলাম? এ জন্য কি যুদ্ধ হয়েছিল একাত্তরে? তাহলে আমরা কেনো পাক বাহিনীকে দুষি? এর নাম কি গণতন্ত্র নাকি রাষ্ট্রীয় মাস্তানতন্ত্র। রাষ্ট্র এখানে আইনের মোড়কে অত্যাচার করছে! এখানে আছে আদালত, যারা এসব দেখেও দেখে না? আছে পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, যারা সরকারের মাস্তান হয়ে মানুষের ওপর চালায় এই সব অনাচার! তাদের অপরাধ- কেবল ভিন্ন মত! যে দেশের সরকার এমন নির্মম হয় তারই নাগরিকের ওপর, সে দেশ টিকবে কি করে? এ সব অমানবিক নির্মম অত্যাচারে কি আল্লাহর আসমান কেঁপে উঠে না?
পরে যখন গজব নামে, তখন দোষ দেই আল্লাহর!
শুনতে পাই, দেশের অনেক নাগরিক নিরাপত্তার জন্য দেশ ছাড়ছে নানান অযুহাতে। কেউ ইমিগ্রান্ট, সেকেন্ড হোম, চাকরী, পড়াশুনা, আবার কেউ ভিজিট ভিসায় অবৈধ হয়েও যাচ্ছে। দেশের অনিশ্চিত জীবনের চেয়ে বিদেশে অবৈধ জীবনও নাকি নিরাপদ! বাংলাদেশ রাষ্ট্র এখন সবচেয়ে বিপজ্জনক হয়ে উঠছে, এখানে যে কেউ যখন তখন এর নিগড়ে পড়ে তার জীবন শেষ। কে বাস করবে এই দেশে? তবে কি এভাবেই ধংস হয়ে যাবে এ সভ্যতা?

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File