হযরত উমর ফারুক ( রাঃ) এর খেলাফত কাল। খোলাফায়ে রাশেদার সোনালী যুগে জনগণের কাছে জবাবদিহিতার নমুনা

লিখেছেন লিখেছেন কুয়েত থেকে ২১ জানুয়ারি, ২০১৮, ০২:৩৭:৪৪ রাত

খোলাফায়ে রাশেদার সোনালী যুগে জনগণের কাছে জবাবদিহিতার নমুনা ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা হযরত উমর ফারুক ( রাঃ) এর খেলাফত কাল। তিনি হিমসের গভর্নর নিযুক্ত করলেন সাঈদ ইবনে আমের আল জুমাহী (রঃ)কে।

সাঈদ ইবনে আমর(রাঃ) অত্যন্ত সুচারুরুপে এবং দক্ষতার সাথে হিমসের গভর্নরের দায়িত্ব পালন করতে থাকেন। হযরত সাঈদ ইবনে আমর সম্পর্কে খলীফা অত্যান্ত উচ্চ ধারনা পোষন করতেন।

একদিন হিমসের জনগণ গভর্নরের বিরুদ্বে আমিরুল মুমেনিন হযরত উমরের নিকট চারটি অভিযোগ পেশ করেন। আমিরুল মুমেনিন হিমসের জনগণ ও গভর্নরকে একত্র করে জবাবদিহিতার কাঠ গড়ায় দার করালেন

আমিরুল মুমেনিনঃ- গভর্নর সম্পর্কে তোমাদের প্রথম অভিযোগটি কি?

হিমসের জনগণঃ- ' তিনি প্রত্যহ তাঁর দফতরে বিলম্বে আসেন।

আমিরুল মুমেনিন এ অভিযোগের জবাব দানের জন্য গভর্নরকে আহবান জানালেন। গভর্নর সাঈদ কিছুক্ষণ নিরব থেকে বললেন: আমি এর উত্তর দেয়া পছন্দ করছি না এ জন্যে যে, এটি একান্ত ভাবে আমার ব্যক্তিগত ব্যাপার। কিন্তু আপনার নির্দেশের কারণে আমাকে বাধ্য হয়ে তা বলতে হচ্ছে।'

এর পর গভর্নর সাঈদ তাঁর অফিসে বিলম্বে আসার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বললঃ আমার ঘরে কোনো খাদেম বা চাকরাণী নেই। তাই আমি প্রত্যহ সকালে পরিবারের সদস্যদের জন্যে প্রথমে রুটির জন্য আটা দিয়ে খামির তৈরি করি, তারপর তা কিছু সময় রেখে দিতে হয় রুটি তৈরির উপযোগী করার জন্যে। এরপর রুটি বানিয়ে রেখেই ওযু- গোসল করে প্রস্তুত হয়ে দফতরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হই। এ কারণে অফিসে আসতে আমার সমান্য বিলম্ব ঘটে।

আতঃপর আমিরুল মুমেনিন জনগণকে উদ্দেশ্য করে বললেনঃ

তোমাদের দ্বিতীয় অভিযোগ কী?

তারা বললঃ আমাদের দ্বিতীয় অভিযোগ হলো, রাতের বেলা কোনো প্রয়োজনে গভর্নরকে ডাকা হলে তিনি আমাদের ডাকে সাড়া দেন না।

এ অভিযোগ শুনে আমিরুল মুমেনিন গভর্নর সাঈদের উদ্দেশে বললেনঃ

হে সাঈদ এ ব্যাপারে তোমার বক্তব্য কি? গভর্নর সাঈদ বললঃ-

এটিও আমার একান্তই ব্যক্তিগত ব্যাপার,যা আমি জনসমক্ষে প্রকাশ করা মোটেই পছন্দ করি না। এতদসত্বেও আপনার নির্দেশ পালনার্তে আমাকে বলতে হচ্ছে।

এর পর গভর্নর সাঈদ বলতে শুরু করেন

আমি দিনকে রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব ও জনসাধারনের খেদমতের জন্যে এবং রাতকে আল্লাহর ইবাদাতের জন্যে নির্দিষ্ট করে নিয়েছি। তাই রাত্রি বেলা তাদের প্রয়োজনে সাড়া দিতে পারি না বলে দুঃখিত।

এরপর আমিরুল মুমেনিন হিমসের জনগণকে তাদের তৃতীয় অভিযোগ পেশ করতে বলেন। তারা বললঃ গভর্নর সাঈদ বিন আমর মাসে একদিন তঁর কার্যালয়ে অনুপস্হিত থাকেন।

এ অভিযোগের উত্তর দেয়ার জন্য আমিরুল মুমেনিন গভর্নর সাঈদের প্রতি আহবান জানালেন। গভর্নর সাঈদ উত্তরে বললঃ-

আমীরুল মুমেনীন! আমার ঘরে কোনো কাজের লোক না থাকায় মাসে একবার আমাকে বাজার করতে হয়। এ ছাড়া পরনের এ পোষাক ছাড়া আমার অন্য কোনো পোষাক না থাকায় মাসে যেদিন বাজার করি সে দিনই বাজার শেষে এ পোষাক পরিষ্কার করি এবং তা শুকানো পর্যন্ত আমাকে অপেক্ষা করতে হয়। তাই মাসে একদিন অফিসে অনুপস্হিত থাকা ছাড়া আমার উপায় থাকে না।

অাজ আমরা কোথায় এবং আল্লাহর রাসুল (সঃ) এর সাহাবায়ে কেরাম (রাঃ) দের চিন্তা ধারা কেমন ছিল। আসুন একটু চিন্তা করে দেখী। আমাদের প্রিয় জন্ম ভূমি বাংলাদেশকে শোনার বাংলা করতে হলে শোনার মানুষ তৈরী করতে হবে। এই সোনার মানুষ তৈরী করতে হলে নবীজির (সঃ) আদর্শই গ্রহন করতে হবে এই জাতিকে

বিষয়: বিবিধ

১২৩০ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

384719
২১ জানুয়ারি ২০১৮ রাত ০৮:১১
মনসুর আহামেদ লিখেছেন : একমত। ভালো লাগলো , ধন্যবাদ
384720
২১ জানুয়ারি ২০১৮ রাত ০৯:২০
কুয়েত থেকে লিখেছেন : السلام عليكم ورحمة الله وبركاته ভালো লাগার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ
384722
২১ জানুয়ারি ২০১৮ রাত ০৯:৫৫
মিজান২০১৩ লিখেছেন : ভালো লাগলো
২২ জানুয়ারি ২০১৮ রাত ০৩:০২
317304
কুয়েত থেকে লিখেছেন : আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ লেখাটি পড়ে ভালো লাগার জন্য

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File