হে-আল্লাহ! আমাদেরকেও আপনার অল্পসংখ্যক ঈমানদার লোকদের মধ্যেই গন্য করে নাও
লিখেছেন লিখেছেন কুয়েত থেকে ০৩ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১২:৩৫:০৫ দুপুর
হে-আল্লাহ! আমাদকেরও আপনার অল্পসংখ্যক ।
ঈমানদার লোকের মধ্যেই গন্য করে নাও।' যারা জেগে থেকে ঘুমায় তাদের ঘুম ভাংবেনা আপনি আমাকে এবং আমাদেরকে তাদের মতো করোনা
যেসব মুসলিম উম্মাহ অবুঝ এবং অধিকসংখ্যক
লোক দলাদলির মধ্যে রয়েছে অমুক দল আমেরিকার সৃষ্টি, ইসরাইলের সৃষ্টি কিংবা অমুক নেতা আমেরিকার দালাল, তমুক নেতা ইহুদীদের এজেন্ট মনে করে। যেসব মর্ডান মুসলিম দাজ্জালী মিডিয়াকে সত্য মনে করে ধোকা খেয়ে পথভ্রষ্ট হচ্ছে, ইমাম মাহদির আত্নপ্রকাশের পর তারা বলবে, ইমাম মাহদি বলে কেউ নাই, এই ব্যাক্তি (ইমাম মাহদি) আমেরিকার এজেন্ট! নাউজুবিল্লাহ।
অধিকসংখ্যক উম্মাহই ইমাম মাহদিকে চিনতেই পারবে না, অল্পসংখ্যকই ইমাম মাহদির দলে শরীক হতে পারবেন।
একবার হযরত উমর (রাঃ) বাজারের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিলেন। তো বাজারে যখন এক ব্যক্তির পাশদিয়ে অতিক্রম করছিলেন, তখন শুনতে পেলেন সেই ব্যক্তি দো'আ করতেছিলেন 'হে-আল্লাহ! আমাকে আপনার অল্পসংখ্যক লোকের মধ্যে গন্য করে নিন, হে-আল্লাহ।আমাকে আপনার অল্পসংখ্যক লোকের মধ্যে গন্য করে নিন।'
হযরত উমর (রাঃ) সেই ব্যক্তিকে জিজ্ঞেস করলেন- 'তুমি এই দো'আ কোথা থেকে শিখেছো?' উত্তরে সেই ব্যক্তি বললো-'আল্লাহর কোরআন থেকেই।
আল্লাহ কোরআনে বলেছেন, "এবং আমার বান্দাদের মধ্যে অল্পসংখ্যকই কৃতজ্ঞ। সূরা সাবা-১৩।
উত্তর শুনে হযরত উমর (রাঃ) কাঁদতে লাগলেন এবং নিজেকে উপদেশ দিতে লাগলেন, 'হে-উমর! মানুষ তোমার থেকে অধিক জ্ঞানি।'
সাথে তিনিও দো'আ করতে লাগলেন, 'হে-আল্লাহ! আমাকেও আপনার অল্পসংখ্যক লোকের মধ্যে গন্য করে নাও।'
আল্লাহ তায়ালা অধিকাংশ ব্যক্তির ব্যাপারে বলেছেন, তারা জ্ঞানপাপী, অকৃতজ্ঞ, অবিশ্বাসী, অবাধ্য, মূর্খ, অবুঝ এবং এই অধিকাংশই সত্য জানে না এবং জানার পরেও সত্য থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়।
আল্লাহ তায়ালা আল কুরআনে বলেছনে, "অধিকাংশ ব্যক্তিই তা জানে না"। সূরা আল আরাফ-১৮৭।
"অধিকাংশ ব্যক্তিই কৃতজ্ঞতা আদায় করে না"। সূরা আল বাকারা-২৪৩।
"অধিকাংশ ব্যক্তিই বিশ্বাস করে না"। সূরা হুদ-১৭।
"তোমাদের অধিকাংশই অবাধ্য"। সূরা আল মায়েদাহ-৫৯।
"তাদের অধিকাংশই মূর্খ"। সূরা আল আনআম-১১১।
"তাদের অধিকাংশই সত্য জানে না"। সূরা আল আম্বিয়াগ২৪।
"তাদের অধিকাংশই বুঝে না"। সূরা আল হুজরাত-৪।
"অতঃপর তাদের অধিকাংশই মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে, তারা শুনে না"। সূরা হা-মীম সেজদাহ-৪।
অধিকাংশের ব্যাপারে রাসুল (সাঃ) কে সতর্ক করে আল্লাহ বলেন, "আর যদি আপনি (সাঃ) পৃথিবীর বেশিরভাগ লোকের কথা মেনে নেন, তবে তারা আপনাকে আল্লাহর পথ থেকে বিপথগামী করে দেবে। তারা শুধু অলীক কল্পনার অনুসরণ করে এবং সম্পূর্ণ অনুমানভিত্তিক কথাবার্তা বলে থাকে।” সূরা আল আনআম-১১৬।
অন্যদিকে অল্পসংখ্যক বান্দার ব্যাপারে আল্লাহ বলেছেন, তারা কৃতজ্ঞ, ইমানদার এবং সত্যবাদী।
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন, "আমার বান্দাদের মধ্যে অল্পসংখ্যকই কৃতজ্ঞ"। সূরা সাবা-১৩।
"অল্পসংখ্যকই তাঁর সাথে ঈমান এনেছিলো"। সূরা হুদ-৪০।
"একদল পূর্ববর্তীদের মধ্য থেকে এবং অল্পসংখ্যক পরবর্তীদের মধ্য থেকে"। সূরা আল ওয়াক্বিয়া-১৩-১৪।
রাসুল (সাঃ) এই অল্পসংখ্যক লোকেদের ব্যাপারে সুসংবাদ দিয়ে গেছেন এবং বলেছেন গরিবদের মাধ্যমেই বিজয় অর্জিত হবে।
রসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, “ইসলামের শুরু হয়েছে এক গারীব (অপরিচিত/আজব/আত্মীয়-বান্ধবহীন) বিষয় হিসেবে। এটা আবার ফিরে যাবে সে গারীব অবস্থায়। আর সে সময়ের গরিবদের জন্য সুসংবাদ।” বলা হলো, “হে আল্লাহ্র রসূল (সাঃ)! কারা গুরাবা?” তিনি (সাঃ) বললেন, “যারা অপরিচিত/বান্ধবহীন অবস্থায় যখন লোকেরা ইসলামের মধ্যে বিপর্যয় সৃষ্টি করেছে সে সময় এর সংশোধন করবে তারাই গুরাবা।” মুসনাদ আহমদ, মুসলিম, ইবন মাজাহ্।
নষ্ট স্রোতের সয়লাভে যখন দীনের মাঝে বিপর্যয় সৃষ্টি হয় তখন এই গুরাবারা স্রোতের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে সত্যের ঝাণ্ডা উঁচুতে তুলে ধরে রাখে। নষ্ট স্রোত এমনই প্রভাবশালী যে মানুষ তাকেই মনে করে মূলধারা। আব্দুল্লাহ্ ইবন মাসঊদ (রাঃ) বলেছেন, “তোমাদের কি হবে যখন ফিতনা (বিপর্যয়) তোমাদের ঘিরে ধরবে, এমনকি ফিতনার মাঝেই তোমাদের বড়রা বৃদ্ধ হবে, ছোটরা বড় হবে এবং লোকেরা এই ফিতনাগুলোকে মনে করবে সুন্নাহ্। আর যখন ফিতনাগুলোকে পরিবর্তন করা হবে তখন লোকেরা বলবে সুন্নাতকে পরিবর্তন করা হলো।” সুনান আদ-দারিমী।
যে দলটি কিয়ামত পর্যন্ত হকের উপর প্রতিষ্টিত থাকবে সেটি হলো মুজাহিদদের দল। সুতরাং তারাই হবে সাহায্যপ্রাপ্ত দল। আল্লামা আনোয়ার শাহ কাশ্মিরি (রহ
বর্তমানে মুসলিম উম্মাহর উপর ফেতনা বৃষ্টির ফোটার মত পতিত হচ্ছে। তাই অধিকাংশ উম্মাহই এই ফেতনায় নিপতিত হয়ে ইহুদী, নাসারাদের ফাদে পা দিয়ে ইমানহারা হচ্ছে। এই অধিকাংশই ইমাম মাহদিকে আমেরিকার এজেন্ট বলে বিশ্বাস করবে। নাউজুবিল্লাহ।
রাসুল (সাঃ) বলেছেন, শেষ জামানার ফেতনা সবার গালে চপেটাঘাত করবে। মানুষ সকালে ইমানদার হলে বিকালে কাফের হবে আর বিকালে ইমানদার হলে সকালে কাফেরে পরিনত হবে। এই ভয়ংকর ফেতনা থেকে শুধুমাত্র তারাই বাঁচবে যারা এই মরিচিকাময় দুনিয়া ছেড়ে পাহাড়ে নির্জনে মেষ বা বকরী পালন করে জীবিকা নির্বাহ করবে আর যারা জিহাদের ময়দানে আল্লাহর রাস্তায় জিহাদরত থাকবে। বর্তমানে অল্পসংখ্যকই এই বরকতময় জিহাদে শরীক আছে। সুতরাং "সুসংবাদ গুরাবাদের জন্য"।
হে আল্লাহ!!! আমাদের সবাইকে ইমাম মাহদিকে চেনার এবং তার দলে শরীক হয়ে "গুরাবা" হওয়ার তৌফিক দান করুন।
বিষয়: বিবিধ
১১৯৭ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন