বাংলাদেশের মুসলিম ভাইদের ওপর আস্থা রেখে এই পাড়ে পৌছিয়ে দিয়ে গেছে নিজ স্ত্রী ও নিষ্পাপ সন্তানকে! বেঁচে থাকলে হয়তোবা দেখা হবে স্বাধীন আরাকানে আর নয় জান্নাতে!!
লিখেছেন লিখেছেন কুয়েত থেকে ০৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১০:৩২:২৭ রাত
অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ নিয়ে বাংলাদেশে প্রাণভয়ে ছুটে আসা রোহিঙ্গা বোনটির নিষ্পাপ মাসুম বাচ্চাটিকে কোলে তোলে নেওয়ার দায়িত্ব কি বাংলাদেশী মুসলিম ভাইদের ওপর বর্তায়..?
অসংখ্য ফুটফুটে মাসুম রোহিঙ্গা শিশু আমার আপনার কোলে ঠাই পেতে চায়! পিতা তার আরাকানে জিহাদের ময়দানে! নিরীহ মুসলিম ভাই বোনদের ওপর পৈশাচিক জুলুম ও নিজভূমি মুক্ত করতে স্বাধীনতা যুদ্ধে বৌদ্ধ জঙ্গিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধরত!
আমার আপনার মতো কিছু উদারপন্থী মুসলিম ভাইদের ওপর আস্থা রেখেই হয়তোবা এই পাড়ে পৌছিয়ে দিয়ে গেছে নিজ স্ত্রী ও ঔরসজাত নিষ্পাপ সন্তানকে! বেঁচে থাকলে হয়তোবা দেখা হবে স্বাধীন আরাকানে আর নয় জান্নাতে!!
এপাড়ে মা বোন ও স্ত্রী সন্তান পৌঁছে দিয়ে ওইপাড়ে যুদ্ধরত আমাদের আরাকানি রোহিঙ্গা ভাইয়েরা আমাদের কাছে তাঁদের স্ত্রী সন্তানকে, মা বোনকে দেখা শুনার ওদেখাশুনার আমানত হিসেবে রেখে গেছেন।
আমরা তাঁদের আমানতের খেয়ানত করতে পারিনা! আমাদের অবশ্যই যেতে হবে সীমান্তে! কোলে তুলে নিতে হবে এই মাসুম বাচ্চাগুলোকে! সান্ত্বনা দিতে হবে আমাদের মা বোনদের!
অর্থ, অন্ন, বস্ত্র যার কাছ যা আছে তাই দিয়ে তাঁদের সাহায্য করতে ছুটে চলে যেতে হবে। মুসলিম ভাই হিসেবে সাহায্য না করার কোনো অজুহাত দেখানো যায়না!
টেকনাফ, উখিয়ার রাস্তার ধারে ধারে অন্ন, বস্ত্রের অপেক্ষায় আমার আপনার হাজারো মা বোন ও তাদের নিষ্পাপ শিশুগুলো!
ওরা মুসলমান তথা ইসলামেরই সম্পদ অনুগ্রহ করে দয়া মায়া করে ছুটে চলুন সাহায্য নিয়ে!
আল্লাহ্ আমাদেরকে মজলুম রোহিঙ্গা মুসলিম ভাই বোনদের জন্য জান মাল কোরবানি দিতে প্রস্তুত করুন।হাত জোর করে সাহায্যের আহ্বান জানাচ্ছি আমার আপনারই মজলুম মা বোন ও নিষ্পাপ শিশু গুলোর জন্য। অনুগ্রহ করে একটু দয়া করুন তাঁদের প্রতি তথা মুসলিম জাতির আগামী প্রজম্মের প্রতি।
বিষয়: বিবিধ
১১৫৬ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
.
সা'দ আল আসওয়াদ আস-সুলুমী (রাঃ)।
তিনি ছিলেন গরীব, গায়ের রঙ কালো। কেউ তাঁর কাছে নিজের মেয়েও বিয়ে দিতে চাইতো না।
সা'দ (রাঃ) একদিন আল্লাহর রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এঁর কাছে দুঃখ করে বলেছিলেনঃ ❝ইয়া রাসূলুল্লাহ! আমিও কি জান্নাতে যাবো?
আমি তো নীচু মাপের ঈমানদার হিসেবে বিবেচিত হই।
কেউ আমাকে নিজের মেয়ে দিতে রাজি হয় না।❞
রাসূলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবীদের দুঃখ বুঝতেন নিজের আপন ভাইয়ের মত করে, নিজের সন্তানের মত করে। তিনি তাদেরকে অনুভব করতেন অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে। তিনি এই সা'দকে পাঠিয়েছিলেন ইবন আল-ওয়াহহাবের কাছে।
.
সাধারণ কোন ব্যক্তি ছিলেন না এই ইবনে আল-ওয়াহহাব। তিনি হলেন মদীনার নেতাদের একজন। কিছুদিন যাবৎ মুসলিম হয়েছেন। তাঁর মেয়ে অপরূপা সুন্দরী রমণী, রূপের জন্য বিখ্যাত। সেই ইবন আল-ওয়াহহাবের মেয়েকে বিয়ে করার জন্য রাসূলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সা'দ (রাঃ)-কে পাঠালেন।
নেতার মেয়ে বিয়ে করবে সা'দের মতো একজনকে? যে তার সৌন্দর্য্যের জন্য এতো প্রসিদ্ধ, সে হবে সা'দের বউ?? স্বাভাবিকভাবেই ইবন আল-ওয়াহহাবের প্রতিক্রিয়া ছিলঃ ❝আকাশ-কুসুম কল্পনা ছেড়ে বাড়ি যাও...।❞
কিন্তু তাঁর মেয়ে ততক্ষণে শুনে ফেলেছেন। সে বলে উঠলোঃ
❝বাবা! আল্লাহর রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) অনুরোধ করেছেন তাকে বিয়ে করার জন্যে, তুমি কিভাবে উনাকে ফিরিয়ে দিতে পারো?? রাসূলের উৎকণ্ঠা থেকে আমরা মুখ ফিরিয়ে নিলে আমাদের অবস্থানটা কি হবে?❞
এরপর সা'দের দিকে ফিরে বললোঃ ❝রাসূলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে যেয়ে বলে দিন, আমি আপনাকে বিবাহ করার জন্য প্রস্তুত।❞
.
সা'দের মন সেদিন আনন্দে পুলকিত...। সে যেন খুশিতে টগবগ করে ফুটছে...। রাসূলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ৪০০ দিনার মোহরানায় তাদেরকে বিয়ে দিয়ে দিলেন। আলহামদুলিল্লাহ! সুবহান আল্লাহ!
সা'দ (রাঃ) বললেনঃ ❝হে রাসূল, আমি তো জীবনে কোনদিন চারশ দিনার দেখিই নি! আমি এই টাকা কীভাবে শোধ করবো?❞
নবীজি (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাকে বললেনঃ ❝আলী আল-নু'মান ইবন আউফ আর উসমান (রাঃ) এঁর কাছ থেকে দুইশ দুইশ করে মোট চারশ দিনার নিয়ে নিতে।❞
দুজনেই উনাকে দুইশর বেশি করে দিনার দিলেন। আলহামদুলিল্লাহ!
টাকার যোগার ও হয়ে গেলো।এখন নতুন বউ এর কাছে যাবেন সা'দ (রাঃ)...।
বাজারে যেয়ে সুন্দরী বউ এর জন্যে টুকিটাকি কিছু উপহার কেনার কথা চিন্তা করলেন তিনি।বাজারে পৌঁছে গেছেন, হঠাৎ তাঁর কানে আসলো জিহাদের ডাক। ❝যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হয়ে যাও ...।❞
সা'দ (রাঃ) যেখানে ছিলেন সেখানেই দাঁড়িয়ে গেলেন। আকাশের দিকে তাকালেন একবার, বললেনঃ ❝হে আল্লাহ! আমি এই টাকা দিয়ে এমনকিছু কিনবো যা তোমাকে খুশি করবে।নতুন বউ এর জন্য উপহার কেনার বদলে তিনি কিনলেন একটি তরবারি আর একটি ঘোড়া।❞
এরপর ঘোড়া ছুটিয়ে চললেন জিহাদের ময়দানে,নিজের চেহারাটা কাপড় দিয়ে মুড়ে নিলেন,যেন আল্লাহর রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাকে দেখে চিনে ফেলতে না পারেন।কারণ রাসূলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে দেখলেই তো বাড়িতে পাঠিয়ে দিবেন! সে যে সদ্য-বিবাহিত! সাহাবারা (রাঃ) বলাবলি করছিলেনঃ ❝যুদ্ধ করতে আসা এই মুখ-ঢাকা লোকটি কে?❞
আলী (রাঃ) বললেনঃ ❝বাদ দাও, সে যুদ্ধ করতে এসেছে।❞
ক্ষিপ্রতার সাথে সা'দ (রাঃ) যুদ্ধ করতে থাকলেন, কিন্তু তাঁর ঘোড়ায় আঘাত হানা হলো, ঘোড়া পড়ে গেলো। সা'দ (রাঃ) উঠে দাঁড়ালেন। ঐ সময় নবীজি (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁর কালো চামড়া দেখে ফেললেনঃ
❝ইয়া সা'দ এ কি তুমি?!❞ রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এঁর প্রশ্নের জবাবে তিনি (রাঃ) বললেনঃ ❝আমার মা-বাবা আপনার উপর উৎসর্গিত হোক ইয়া আল্লাহর রাসূল! হ্যাঁ, আমি সা'দ।❞
.
রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ ❝হে সা'দ, জান্নাত ছাড়া তোমার জন্য আর কোন আবাস নেই।❞
সা'দ (রাঃ) আবারো জিহাদে ঝাঁপিয়ে পড়লেন। কিছু সময় পর কয়েকজন বললো সা'দ আহত হয়েছে। রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ছুটে গেলেন ময়দানে। সা'দকে খুঁজতে লাগলেন। সা'দের মাথা খানা নিজের কোলের উপর রেখে কাঁদতে শুরু করলেন। তাঁর অশ্রু গড়িয়ে গড়িয়ে সা'দের মুখের উপর এসে পড়ছিলো। তাঁর (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এঁর চোখ বেয়ে নেমে আসছিলো অঝোর ধারা। একটু পর রাসূলুল্লাহ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) হাসতে শুরু করলেন, আর তারপর মুখ ফিরিয়ে নিলেন।
.
আবু লুবাবা (রাঃ) নামের একজন সাহাবা উনাকে দেখে বিস্ময়ে বললেনঃ
❝হে রাসূলুল্লাহ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমি আপনাকে এমনটি কখনো করতে দেখি নি...।❞ আল্লাহর রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ ❝আমি কাঁদছিলাম কারণ আমার প্রিয় সঙ্গী আজ চলে গেলো! আমি দেখেছি সে আমার জন্য কী ত্যাগ করলো আর সে আমাকে কতো ভালোবাসতো... কিন্তু এরপর আমি দেখতে পেলাম তার কী ভাগ্য, আল্লাহর কসম, সে ইতিমধ্যে হাউদে পৌঁছে গেছে।❞
আবু লুবাবা জিজ্ঞেস করলেনঃ ❝হাউদ কি?❞
রাসূলুল্লাহ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ
❝এটি হলো এমন এক ঝর্ণা যা থেকে কেউ একবার পান করলে জীবনে আর কোনদিন পিপাসার্ত হবে না, এর স্বাদ মধুর চেয়েও মিষ্টি, এর রঙ দুধের চেয়েও সাদা! আর যখন আমি তাঁর এইরূপ মর্যাদা দেখলাম, আল্লাহর কসম, আমি হাসতে শুরু করলাম।❞
❝তারপর আমি দেখতে পেলাম সা'দের দিকে তাঁর জান্নাতের স্ত্রীগণ এমন উৎফুল্ল ভাবে ছুটে আসছে, যে তাদের পা গুলো বের হয়ে পড়ছে, তাই আমি চোখ ফিরিয়ে নিলাম।❞
.
✦ বই সাজেশনঃ আলোর কাফেলা সমগ্র।
- ড. আবদুর রহমান রাফাত পাশা
সাহাবা (রাঃ) দের জীবনের বিরল বিচিত্র বিস্ময়কর ঘটনাবলী।
৬৫ জন সাহাবা (রাঃ) দের জীবনী বর্ণনা করা হয়েছে এই #বই টি তে।
.
মন্তব্য করতে লগইন করুন