মুসলমানদের জাতির পিতা হযরত ইব্রাহীম (আঃ) তিনিই (আল্লাহ) জাতির নাম রেখেছেন মুসলমান
লিখেছেন লিখেছেন কুয়েত থেকে ১৯ নভেম্বর, ২০১৬, ০৪:২০:৪৩ বিকাল
মুসলমানদের জাতির পিতা হযরত ইব্রাহীম (আঃ) তিনিই (আল্লাহ) জাতির নাম রেখেছেন মুসলমান। এ জাতি তোমাদের পিতা ইব্রাহীমের জাতি তিনি পূর্বে তোমাদের নামকরণ করেছেন মুসলিম এবং এই কিতাবেও। (সুরা হাজ্জ্ব 78)
ইব্রাহীম (আঃ) কে মুসলমান হিসেবে টিকে থাকার জন্য যে পরিমাণ সংগ্রাম করতে হয়েছে তা ইতিহাসে বিরল।প্রতাপশালী জালিম সরকার নমরুদ,তাঁর নিজের পিতা আযর, তাঁর জাতি ও বিশ্ব বেঈমানদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করতে তিনি যে ঘোষণা দিয়েছিলেন, সেটাকে আল্লাহ তায়ালা বিশ্ববাসীর জন্য আদর্শ হিসেবে গ্রহণ করার নির্দেশ দিয়েছেন।
তোমাদের জন্য ইবরাহীম(আঃ) ও তাঁর সাথীদের মধ্যে একটি উত্তম আদর্শ বর্তমান৷ তিনি তাঁর কওমকে স্পষ্ট ভাষায় বলে দিয়েছিলেন : আমরা তোমাদের প্রতি এবং আল্লাহকে ছেড়ে যেসব উপাস্যের উপাসনা তোমরা করে থাক তাদের প্রতি সম্পূর্ণরূপে অসন্তুষ্ট৷ আমরা তোমাদের অস্বীকার করেছি৷
আমাদের ও তোমাদের মধ্যে চিরদিনের জন্য শত্রুতা ও বিদ্বেষের সৃষ্টি হয়ে গিয়েছে- যতদিন তোমরা এক আল্লাহর প্রতি ঈমান না আনবে৷(সূরা মুমতাহানা ৪)।এর পর আল্লাহ বল্লেন, তুমি “মুসলিম হয়ে যাও ৷ তখনই সে বলে উঠলো, আমি বিশ্ব-জাহানের প্রভুর ‘মুসলিম’ হয়ে গেলাম ৷(সুরা বাকারা ১৩১)
আল্লাহ বল্লেন, মৌখিক স্বীকৃতি যথেষ্ট নয়, তোমাকে পরীক্ষা দিয়ে প্রমাণ করতে হবে।একদিকে জাতির মোকাবেলা অন্য দিকে আল্লাহর পক্ষ থেকে পরীক্ষা। জাতি তাকে আগুনে নিক্ষেপ করলো, দেশ থেকে বহিস্কার করলো।
তিনি দরখাস্ত করলেন সন্তানের। আল্লাহ সন্তান দিলেন, সে সন্তানকে আবার নির্বাসনে দিতে হলো।এর পর সন্তানকে জবাই করার নির্দেশ। নির্দেশ পালনের ক্ষেত্রে শয়তান বাঁধা হয়ে দাঁড়ালো।একের পর এক সংগ্রাম চলছে।
অবশেষে আল্লাহর পক্ষ থেকে ঘোষণা আসলো, স্মরণ করো যখন ইবরাহীমকে তার রব কয়েকটি ব্যাপারে পরীক্ষা করলেন এবং সেসব পরীক্ষায় সে পুরোপুরি উত্রে গেলো, তখন তিনি বললেনঃ আমি তোমাকে সকল মানুষের নেতার পদে অধিষ্ঠত করবো ৷ ইবরাহীম বললোঃ আর আমার সন্তানদের সাথেও কি একই অংগীকার ? জবাব দিলেনঃ আমার এইঅংগীকার যালেমদের ব্যাপারে নয়৷(সুরা বাকারা ১২৪)
যালেমদের ব্যাপারে আল্লাহর কোন অংগীকার নেই তার মানে কি? এ থেকে সুস্পষ্ট হয়ে যায় যে, সত্যিকারে মুসলমান হতে হলে তাকে সংগ্রাম করতেই হবে। যার বাস্তবতায় রাসূল (সাঃ)ও সাহাবায়ে কেরাম সংগ্রাম করেছেন?
শুধু মুসলিম হওয়া নয়, জাতির উত্থান-পতন নির্ভর করছে এই সংগ্রামের ওপর। সংগ্রাম ই জীবন, সংগ্রাম বিহীন জীবন ই মরণ। কবি নজরুলের ভাষায়,ওরে মুসলিম ভীরু কাপুষ ভয় কেন আজ করিস রণে,কিসের সংঘাত ছুটে চল আজি জীবন পাবি রণাঙ্গনে, আরব মরুর সন্তান মোরা তলোয়ার দেখে কভু কি ডরি? আঘাতে আঘাতে জীবন মোদের গর্জে ওঠে নতুন করি।
বক্ষে আগুন আজো আছে মোর আমি যে অগ্নি গিরি,সে অগ্নি শিখা ভীষণ আত্ম বিস্মৃতি রেখেছে ঘিরি,
পাষান হয়ে পড়ে আছো আজ হায়রে আত্ম ভোলা, তোমরা জাগিলে সারা পৃথিবী খাইবে ভীষণ দোলা।
আল্লাহ তুমি জাতিকে সংগ্রামী চেতনায় উজ্জীবিত করে জাতির উত্থান ঘটাও।
বিষয়: বিবিধ
২৯২২ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
সুন্দর মর্মস্পর্শী লিখা ও কবি নজরুলের চির আবেদনময় পংত্তিমালা ভীষণ ভালো লাগলো।
জাযাকাল্লাহু খাইরান।
মন্তব্য করতে লগইন করুন