মানুষকে মানুষের গোলামী থেকে উদ্ধার করে এক ও অদ্বিতীয় আল্লাহর বন্দেগীতে নিয়োগ করার জন্যই আল্লাহ আমাদের পাঠিয়েছেন

লিখেছেন লিখেছেন কুয়েত থেকে ১৫ নভেম্বর, ২০১৬, ০৮:৪৬:৪৫ রাত

কী নিয়ে এসেছে ইসলাম? আল্লাহ প্রেরিত নবীর মধ্যমে আল্ কুরআনই হল ইসলামের তথা মানব জাতির জন্য যা বিশ্ব মানবতার জন্য এক মাত্র হেদায়েতের মহা গ্রন্থ আল্ কুরআন।

কাদেসিয়া যুদ্ধের পূর্বে হযরত সাদ বিন আবি ওয়াক্কাস(রাঃ) রাবী বিন আমেরকে (রাঃ) পারস্য সম্রাটের সেনাপতি রুস্তমের দরবারে দূত হিসেবে প্রেরণ করেন।

রাবী বিন আমের (রাঃ) শিবিরে প্রবেশ করে দেখতে পান, দরবারকক্ষটি মূল্যবান কার্পেটে সাজানো রয়েছে। সোনার তাজ ও মণি-মুক্তা খচিত পোশাক পরিহিত রুস্তম একটি উঁচু মঞ্চের উপরে স্বর্ণ নির্মিত সিংহাসনে বসেছিল।

রাবী বিন আমের (রাঃ) ছিন্ন বস্ত্র পরিহিত অবস্থায় হাতে একটি ছোট ঢাল ও বর্শা নিয়ে সুক্ষ্ম ঘোড়ায় চড়ে দরবারে প্রবেশ করেন। একটি মূল্যবান কোল বালিশের সাথে ঘোড়াটিকে বেঁধে তিনি রুস্তুমের নিকটে যেতে উদ্যত হন। তাঁর শরীরে তখনও যুদ্ধের পোশাক ছিল। মস্তকে লৌহ শিরস্ত্রাণ ও বর্ম পরিহিত অবস্থায় অগ্রসর হলে দরবারীগণ তাঁকে যুদ্ধের পোশাক খুলে ফেলতে বললো।

রাবী বিন আমের (রাঃ) বললেন, আমি নিজে সাধ করে এখানে আসিনি। তোমরা আমন্ত্রণ করে নিয়ে এসেছ। যদি আমার এ পোশাক তোমাদের অপসন্দ হয় তাহলে ফিরে যাচ্ছি।

রুস্তুম বললেন, “তাকে আসতে দাও।

তিনি তাঁর হাতের বর্শায় ভর করে এগিয়ে গেলেন। বর্শার খোঁচায় কার্পেট খানা স্থানে স্থানে ক্ষত বিক্ষত হলো। রুস্তুম প্রশ্ন করলেন, তোমরা কি জন্যে এসেছ?

রাবী বিন আমের (রাঃ) জবাবে বললেন, মানুষকে মানুষের গোলামী থেকে উদ্ধার করে এক ও অদ্বিতীয় আল্লাহর বন্দেগীতে নিয়োগ করার জন্য আল্লাহ আমাদের পাঠিয়েছেন।

যারা দুনিয়ার সংকীর্ণতা থেকে নিজেদের মুক্ত করে আখেরাতের সীমাহীন কল্যাণ পেতে ইচ্ছুক, তাদের সে প্রশস্ত ময়দানে পৌছানো এবং মানব রচিত ধর্মের অত্যাচার থেকে রেহাই দিয়ে মানুষকে ইসলাম প্রদত্ত ন্যায়-নীতির অধীনে আনয়ন করা আমাদের লক্ষ্য।

[আল বিদায়া ওয়া আন নিহায়া]

বিষয়: বিবিধ

১৫১০ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

379750
১৫ নভেম্বর ২০১৬ রাত ০৯:৫০
স্বপন২ লিখেছেন :
ভালো লাগলো/ অনেক ধন্যবাদ / পিলাচ
১৫ নভেম্বর ২০১৬ রাত ১০:৪২
314365
কুয়েত থেকে লিখেছেন : আপনাকেও অনেক অনেক ধন্যবাদ ভালো লাগার জন্যGood Luck Good Luck
379825
১৯ নভেম্বর ২০১৬ রাত ১০:০১
কুয়েত থেকে লিখেছেন : যেহেতু শিরোনামে “বাংলাদেশ” ছিল, সেকারণে ইতিহাসের সময়সীমাটা নির্ধারিত করেছিলাম ১৯৭২-২০১৬।
যেহেতু বলা হয়েছে “ইসলামি রাজনীতি” সেহেতু ইসলামি লক্ষ্যপ্রসারী নয় এমন রাজনীতি, মতাদর্শ, দল বা আন্দোলন আলো্চ্য ছিল না। বরং ইসলাম লক্ষ্যপ্রসারী রাজনীতিক প্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় দল বা আন্দোলন এবং সংশ্লিষ্ট জোটসমূহের শুরু, নীতি-আদর্শ, কর্মকৌশল, সফলতা-ব্যর্থতা ও ভ্রষ্টতা এই আলোচনার অংশ ছিল। আলোচ্য দলসমূহ হচ্ছে নিম্নরূপ (স্বাধীন বাংলাদেশে পুনরুজ্জীবন, প্রতিষ্ঠা ও কর্মতৎপরতার ক্রমানুসারে):
১. জমিয়তে ওলামায়ে ইসলাম (১৯৭২ খ্রি.),
২. ইসলামিক ডেমোক্রেটিক লীগ (আইডিএল) (১৯৭৭ খ্রি.),
৩. জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ (১৯৭৯ খ্রি.),
৪. বাংলাদেশ নেজমে ইসলাম পার্টি (১৯৭৯ খ্রি.),
৫. ইত্তেহাদুল উম্মাহ বাংলাদেশ (১৯৮০ খ্রি.),
৬. খেলাফত আন্দোলন বাংলাদেশ (১৯৮১ খ্রি.),
৭. ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন (১৯৮৭ খ্রি.),
৮.বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস (১৯৮৯ খ্রি.),
৯. ইসলামী ঐক্যজোট (১৯৯১ খ্রি.),
১০. অনৈসলামিক কার্যক্রম প্রতিরোধমোর্চ (ইসলামী মোর্চা, পরে খেলাফতে ইসলামী বাংলাদেশ) (১৯৯৪ খ্রি.),
১১. হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ (২০১০ খ্রি.)।
379826
১৯ নভেম্বর ২০১৬ রাত ১০:০২
কুয়েত থেকে লিখেছেন : আলোচনাশেষে ইতিহাসের শিক্ষা হিসেবে মাত্র একটি বিষয়ে প্রশিক্ষণার্থী ছাত্রকর্মিবৃন্দের কাছে সবিশেষ আবেদন পেশ করি; সেটা হচ্ছে, “ত্যাগ”। বলেছি তাদের উদ্দেশ্যে:
১. পদের প্রতি লোভ-মোহ সর্বাত্মকভাবে ত্যাগ করবেন, বিন্দুমাত্র এ ধরনের আকাঙ্ক্ষা, চাহিদা মনে স্থানই দিবেন না। এ ক্ষেত্রে নফসের বিরুদ্ধে সার্বক্ষণিক জিহাদ করবেন। মাঝে মধ্যে লোভনীয় বা সম্মানজনক পদ-পদবির অফার ফিরিয়ে দিয়ে নিজের মনকে শাস্তি দিবেন।
২. পদের লোভত্যাগে একেজন কর্মিকে একেকটি দৃষ্টান্ত হতে হবে। এই প্রতিযোগিতা হওয়া উচিত যে, আমি এতোটি পদের অফার পেয়েছিলাম, গ্রহণ করিনি। এই প্রতিযোগিতা মোটেও হওয়া উচিত নয় যে, আমি এতোটি পদ-পদবির মালিক। এই ধরনের পদবিবিলাসিতা ত্যাগ করা না গেলে ইসলামি রাজনীতির ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল হবে না।
৩. প্রাপ্ত পদের চেয়ে নিজেকে সবসময় অযোগ্য মনে করবেন। শিক্ষায়, জ্ঞানে, বয়সে, স্বাস্থ্য-সৌন্দর্যে, বংশমর্যাদায় আপনি যতই বড় হোন না কেন নিজেকে সবচেয়ে অযোগ্য, ব্যর্থ এবং হীন মনে করবেন।
৪. আপনার দায়িত্ব আনুগত্য করা, সুপরামর্শ দেওয়া। উধ্বস্তন নেতৃত্বের সমালোচনা পরিহার করে চলবেন, সুপরামর্শ গ্রহীত না হলে বা উধ্বস্তন নেতৃবৃন্দের কোনো কর্মতৎপরতা পছন্দ না হলে সবর করবেন এবং তার কল্যাণ কামনা করে দোয়া কামনা করবেন, কখনই তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ কিংবা তার প্রকাশ্য শত্রুতামূলক প্রতিরোধ করবেন না।
৫. সবসময় নিজেকে প্রশ্ন করবেন আমি কি দিয়েছি। কি পেয়েছি এই প্রশ্ন এড়িয়ে চলবেন। কি পেয়েছি তা বলবেন না, কি দিয়েছি সেটাই ভাববেন।
যদি বন্ধুরা এসব বিষয় একজন আদর্শ কর্মি হিসেবে নিজের মধ্যে চর্চা করতে পারেন তবে আশা করতে পারি আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকতে পারবো, দল ভাঙবে না, নতুন দল তৈরি হবে না, বিভেদের প্রচীর সৃষ্টি হবে না আমাদের মাঝে। অসংখ্য দলের সংখ্যাটাও ধীরে ধীরে কমে আসবে, অনৈক্য আর থাকবে না ইনশাআল্লাহ।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File