কুরআন নাযিল হয়েছে তা বুঝার জন্য ও সে অনুযায়ী আমল করার জন্য, অতএব আপনারা তার তেলাওয়াতকে বুঝে তা আমলে পরিণত করুন
লিখেছেন লিখেছেন কুয়েত থেকে ১২ নভেম্বর, ২০১৬, ০৭:৪১:৩২ সন্ধ্যা
আল্ কুরআন অনুধাবনের গুরুত্ব: আল্ কুরআন নাযিলের মূল উদ্দেশ্যই হ’ল তাকে বুঝা, অনুধাবন করা ও সে অনুযায়ী কাজ করা। শুধুমাত্র পাঠ করা ও মুখস্ত করা নয়। যদিও তাতে রয়েছে অশেষ নেকী।
কসাই বলে খ্যাত ইরাকের শাসক হাজ্জাজ বিন ইউসুফ (৪০-৯৫ হিজরি/৬৬১-৭১৪ খৃ.) প্রতি রাতে সিকি কুরআন অর্থাৎ চারদিনে কুরআন খতম করতেন এবং তাঁর উদ্যোগেই প্রথম কুরআনে নুকতা ও হরকত দেওয়া হয়। তাফসীর কুরতুবী, ভূমিকা অংশ ১/১০১।
অথচ আলেমদের উপর নির্যাতনের জন্য ইতিহাসে তিনি কুখ্যাত। সেকারণ হাসান বাছরী (২১-১১০ হিজিরী./৬৪২-৭২৮ খৃ.) বলেন, আল্লাহর কসম! কুরআন অনুধাবনের অর্থ কেবল এর হরফগুলি হেফয করা এবং এর হুদূদ বা সীমারেখাগুলি বিনষ্ট করা নয়।
যাতে একজন বলবে যে, সমস্ত কুরআন শেষ করেছি। অথচ তার চরিত্রে ও কর্মে কুরআন নেই’ ইবনু কাছীর, তাফসীর সূরা ছোয়াদ ২৯ আয়াত।
তিনি বলতেন, কুরআন নাযিল হয়েছে তা বুঝার জন্য ও সে অনুযায়ী আমল করার জন্য। অতএব তোমরা তার তেলাওয়াতকে আমলে পরিণত কর’। ইবনুল ক্বাইয়িম, মাদারিজুস সালিকীন (বৈরূত : তাহকীক সহ দারুল কিতাবিল ‘আরাবী, ৩য় সংস্করণ ১৪১৬ হিজরি/১৯৯৬ খৃ.) ১/৪৫০।)
জ্যেষ্ঠ তাবেঈ মুহাম্মাদ বিন কা‘ব আল-কুরাযী বলেন, ফজর পর্যন্ত পুরা রাতে সূরা যিলযাল ও ক্বারে‘আহ পাঠ করা এবং তার বেশী পাঠ না করা আমার নিকটে অধিক প্রিয়, সারা রাত্রি কুরআন তেলাওয়াতের চাইতে’। আব্দুল্লাহ বিন মুবারক, আয-যুহ্দ (বৈরূত : দারুল কিতাবিল্ ইলমিয়াহ, তাহকীক : হাবীবুর রহমান আ‘যামী, তাবি) ক্রমিক ২৮৭, পৃ. ৯৭। এর দ্বারা তিনি কুরআন অনুধাবনের গুরুত্ব বুঝিয়েছেন।
ইবনু জারীর ত্বাবারী (২২৪-৩১০ হিজরী./৮৩৯-৯২৩ খৃ.) বলেন, কুরআন অনুধাবন অর্থ আল্লাহর অস্তিত্বের প্রমাণসমূহ অনুধাবন করা, তাঁর বিধান সমূহ জানা, তাঁর উপদেশ সমূহ গ্রহণ করা ও সে অনুযায়ী আমল করা।ইবনু জারীর, তাফসীর ত্বাবারী সূরা ছোয়াদ ২৯ আয়াত।
সিয়ূতী (৮৪৯-৯১১ হিজরি./১৪৪৫-১৫০৫ খৃ.) বলেন, কুরআন অনুধাবন করাটাই হ’ল মূল উদ্দেশ্য। কেননা কুরআনই হবে কর্মপদ্ধতি ও আচরণে পথ প্রদর্শক। এর মাধ্যমেই মানুষ দুনিয়া ও আখেরাতে সর্বোচ্চ স্থান লাভ করবে’।সিয়ূত্বী, আল-ইতক্বান (মিসর : আল-হাইআতুল মিছরিইয়াহ, ১৩৯৪/১৯৭৪) ১/৩৬৮।
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন,إِنَّ اللهَ يَرْفَعُ بِهَذَا الْكِتَابِ أَقْوَامًا وَيَضَعُ بِهِ آخَرِينَ- ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ এই কিতাবের মাধ্যমে বহু সম্প্রদায়কে উঁচু করেন ও অনেককে নীচু করেন’। মুসলিম হাদিস৮১৭; মিশকাত হাদিস/২১১৫।
কুরআনের অনুধাবনকারী ও আমলকারীদের পরকালীন উচ্চ মর্যাদা সম্পর্কে নাউওয়াস বিন সাম‘আন (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-কে বলতে শুনেছি যে, ক্বিয়ামতের দিন কুরআন ও তার বাহককে আনা হবে। যারা তার উপর আমল করেছিল। যাদের সম্মুখে থাকবে সূরা বাক্বারাহ ও আলে ইমরান। সে দু’টি হবে মেঘমালা সদৃশ। যার মধ্যে থাকবে চমক’। মুসলিম হাদিস/৮০৫; মিশকাত হাদিস/২১২১।
বিষয়: বিবিধ
১৫৪৩ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ভালো লাগলো / অনেক ধন্যবাদ
মন্তব্য করতে লগইন করুন