পির মুরিদের স্থান ইসলামে কত টুকু....? মুরীদ না হলে বে-ঈমান অবস্থায় মৃত্যু হবে কেন ? বাইয়াত গ্রহন ওয়াজিব কিন্তু কার কাছে তা করতে হবে...?
লিখেছেন লিখেছেন কুয়েত থেকে ২০ জুলাই, ২০১৬, ০৪:৪১:১০ বিকাল
বাইয়াত করতে হবে খলিফার নিকট, কিন্তু বর্তমানে খলিফা নেই এখন বাইয়ার কার কাছে করতে হবে..? বর্তমান প্রেক্ষাপটে কোন ব্যাক্তির হাতে বা তার নিযুক্ত প্রতিনিধির কাছে কি বাইয়াত করা যাবে..?
এর উত্তর হলো কোন ব্যক্তির কাছে বাইয়াত করা যাবেনা। কারন ব্যক্তি ভুলের উর্দেনয় যদি শরিয়ত সম্মত ইসলামী সংগঠন শুরা ভিত্তিক নিয়ন্ত্রীত হয় যারা কুরআন সুন্নাহ প্রতিষ্ঠার জন্য প্রচেষ্টা চালাতে গিয়ে বাতিলের সাথে মোকাবেলা করতে হয় সে শুরা ভিত্তিক নেজামের অধীনে বাইয়াত করা ওয়াজিব।
যারা ইসলামের নামে সংগঠন করে পিরের কতাছাড়া চলেনা এবং বাতিলের সাথে আতাত করেই সকল কর্মসুচী র্নিবিগ্নে পালনকরে তাদের হাতে বাইয়াত করা আদো কি জায়েজ হবে..? বাইয়াত হবে আল্লাহর পথে বিনা সর্থে জান মাল কোরবানী করার জন্য।
মুরীদ না হলে বে-ঈমান অবস্থায় মৃত্যু হবে কেন
ﻋﻦ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻠﻪ ﺑﻦ ﻋﻤﺮﺭﺽ ﻗﺎﻝ ﺳﻤﻌﺖ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻳﻘﻮﻝ ﻣﻦ ﺧﻠﻊ ﻳﺪﺍﻣﻦ ﻃﺎﻋﺔ ﻟﻘﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻳﻮﻡ ﺍﻟﻘﻴﺎﻣﺔ ﻻﺣﺠﺔ ﻟﻪ ﻭﻣﻦ ﻣﺎﺕ ﻭﻟﻴﺲ ﻓﻰ ﻋﻨﻘﻪ ﺑﻴﻌﺔ ﻣﺎﺕ ﻣﻴﺘﺔ ﺟﺎﻫﻠﻴﺔ ( ﻣﺴﻠﻢ ﺷﺮﻳﻒ ﺝ ২ ﺹ ২৮১)
অর্থ : হযরত আব্দুল্ল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বলেন, রাসূলুল্ল্ল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি আল্ল্ল্লাহ ও তাঁর রাসূলের অনুকরণ করা থেকে হাত সরিয়ে নিবে কেয়ামতের দিন তার নাজাতের জন্য কোন দলীল থাকবে না। আর যে ব্যক্তি বাইয়াত হওয়া ছাড়া মরবে তার মৃত্যু জাহেলী যুগের বে-ঈমানদের মত হবে। (মুসলিম শরীফ ২ খ. ১২৮ পৃ.)
উপরোক্ত হাদীসের ব্যাখ্যায় ও ততসঙ্গিক নিম্নের আলোচনা প্রসঙ্গ মদীনা ভার্সিটির প্রসিদ্ধ আলেম ড. আলী মুহাম্মদ, মুহাম্মদ সলাবী, হযরত আবু বকর সিদ্দিক (রা.) এর জীবনীতে আরবী ভাষায় যা কিছু লিখেছেন তার থেকে কিছু অংশের অনুবাদ করা হচ্ছে। আগেই ইসলামী রাষ্ট্রপ্রধান, খলীফা ও তাঁদের খেলাফতের বাইয়াত করার নিয়ম বন্ধ হয়ে গেছে।
মুরীদ না হলে উভয় জগতে কেন গোমরাহ হতে হবে?
ﻗﺎﻝ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻣﻦ ﻣﺎﺕ ﻭﻟﻴﺲ ﻓﻰ ﻋﻨﻘﻪ ﺑﻴﻌﺔ ﻣﺎﺕ ﻣﻴﺘﺔ ﺟﺎﻫﻠﻴﺔ، ﻓﻬﺬﺍ ﺍﻟﺤﺪﻳﺚ ﻓﻴﻪ ﺣﺚ ﻋﻠﻰ ﻭﺟﻮﺏ ﺇﻋﻄﺎﺀ ﺍﻟﺒﻴﻌﺔ ، ﻭﺍﻟﺘﻮﻋﺪ ﻋﻠﻰ ﺗﺮﻛﻬﺎ، ﻓﻤﻦ ﻣﺎﺕ ، ﻭﻟﻢ ﻳﺒﺎﻳﻊ ، ﻋﺎﺵ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﻀﻼﻝ ، ﻭﻣﺎﺕ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﻀﻼﻝ ( ﻧﻈﺎﻡ ﺍﻟﺤﻜﻢ ﻓﻰ ﺍﻹﺳﻼﻡ ﺹ ২৫০) ( ﺳﻴﺮﺕ ﺍﺑﻰ ﺑﻜﺮ ﺍﻟﺼﺪﻳﻖ ﺭﺿﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ﺹ ১২৭)
অর্থ : রাসূলুল্ল্ল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি বাইয়াত হওয়া ছাড়া মরবে তার মৃত্যু জাহেলী যুগের বে'ঈমানদের মত হবে।
উক্ত হাদীস দ্বারা বাইয়াত হওয়া যে ওয়াজিব সে বিষয়ের প্রতি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। আর বাইয়াত হওয়া সম্পর্কে অবজ্ঞাকারীদের প্রতি কঠোর শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। সুতরাং যে ব্যক্তি বাইয়াত হওয়া ছাড়া মরবে দুনিয়ার জীবনে সে গোমরাহ ও পথভ্রষ্ট হয়ে থাকবে এবং সে গোমরাহী ও পথভ্রষ্ট অবস্থায় মৃত্যুবরণ করবে। (নিজামুল হুকুম ফিল ইসলাম ২৫০ পৃ.) (হযরত আবু বকর সিদ্দিক (রা.) এর জীবনী ১২৭ পৃ.)
উপরোক্ত হাদীস শরীফের এ ব্যাখ্যা দ্বারা প্রমাণিত হল বাইয়াত না হলে দুনিয়ায় বে-ঈমান হয়ে থাকতে হবে এবং বে-ঈমান হয়েই মরতে হবে। যদিও বর্তমানে অনেকে বাইয়াত করার প্রতি কোন গুরুত্ব দেন না।
তাদের ধারণা মতে, উক্ত হাদীসটি রাষ্ট্রপ্রধানদের কাছে বাইয়াত হওয়ার কথা বলা হয়েছে। অথচ এ হাদীসে রাষ্ট্রপ্রধান বা কারো কথা উল্ল্লেখ করা হয়নি। সাধারণভাবে বলা হয়েছে, বাইয়াত না হয়ে মরলে বে-ঈমান হয়ে মরতে হবে এবং দুনিয়া ও আখেরাতে গোমরাহ হতে হবে।
সুতরাং ইতিহাস দেখলে তারাও বলতে বাধ্য হবেন, বর্তমান ইসলামী সংগঠনের কাছে বাইয়াত হওয়া জরুরী। কেননা বিগত ইতিহাসের পাতায় পাওয়া যায়, বনী উমাইয়ার রাষ্ট্রপ্রধানরা ফাসেক হয়ে যাওয়ার কারণে সে সময় থেকে তারা বাইয়াত করার ঈমানী কাজ ছেড়ে দেয়।
সুতরাং তৎকালীন হক্কানী আলেম ও পীর মাশায়েখেগণ ঈমান জিন্দা করার জন্য বাইয়াত করার কাজকে মজবুতভাবে ধরেন এবং মু'মিন মুসলমানদেরকে বাইয়াত করে তাদের ঈমানী সত্যতা যাচাই করতে থাকেন।
যেমন রাসূলুল্ল্ল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং খোলাফায়ে রাশেদীন (রাঃ) এর যুগে নামাযের ইমামতী তাঁরাই করতেন। কিন্তু পরবর্তীতে খলীফারা তারা নামাযের ইমামতী করা বন্ধ করে দেয়। তখন থেকে হক্কানী আলেমগণ ঈমানের পর ইসলামের এই গুরুত্বপূর্ণ প্রথম আমল নামাযের ইমামতীকে আঁকড়ে ধরেন এবং নামায পড়ানোর দায়িত্ব নিজেদের কাঁধে তুলে নেন।
এমনিভাবে রাসূলুল্ল্ল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও খোলাফায়ে রাশেদীন (রাঃ) এর যুগে ইসলামের দ্বিতীয় ফরজ আমল 'যাকাত' তাঁরাই জমা করতেন এবং তাঁরাই তা বন্টন করতেন। কিন্তু পরবর্তীতে রাষ্ট্রপ্রধানরা ফাসেক হয়ে যাওয়ার কারণে জনগণ তাদেরকে যাকাত না দিয়ে নিজেরাই গরীব মিসকিনদেরকে দিয়ে আসছেন।
কেননা রাষ্ট্রপ্রধানরা ফাসেক হয়ে নিজেরাই ঈমানের ব্যাপারে দুর্বল হয়ে গেছে। তারা ইসলামের বিধি-বিধান পালন করার যোগ্যতা হারিয়ে ফেলেছে। ইসলামের আরো অন্যান্য বিষয় একই কারণে রাষ্ট্রপ্রধানদের থেকে আলাদা হয়ে গেছে।
ইসলামের সে সোনালী যুগ পিরিয়ে আন্তে হলে কুরআন সুন্নাহ ভিত্তিক ইসলামী সংগঠন এর মাধ্যমেই বাইয়াত গ্রহন করে ইসলামের জন্য নিরলস ভাবে দাওয়াতের কাজ আন্জাম দিতে হবে তাহলেই পিরে আসবে সে কাংখিত খেলাফতে রাসেদার যুগ।
বিষয়: বিবিধ
২৩৪৬ বার পঠিত, ৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
চমৎকার বিশ্লেষণ। খুব ভালো লাগলো।
জাজাকাল্লাহু খাইর
মন্তব্য করতে লগইন করুন