তুরষ্কের সেনা বিদ্রোহের সামান্য সময়ের ব্যবধানে মহান আল্লাহ তাদের আনন্দকে ধুলিস্যাত করে দিয়েছেন। তাদের উল্লাসকে ক্রন্দন দ্বারা পরিবর্তন করে দিয়েছেন।
লিখেছেন লিখেছেন কুয়েত থেকে ১৭ জুলাই, ২০১৬, ০২:০২:২৯ দুপুর
সাম্রাজ্যবাদীদের ষড়যন্ত্র নস্যাত হওয়া ও তুরষ্কের সর্বশেষ পরিস্থিতি।তুরষ্কের সেনা বিদ্রোহের সামান্য সময়ের ব্যবধানে মহান আল্লাহ তাদের আনন্দকে ধুলিস্যাত করে দিয়েছেন। তাদের উল্লাসকে ক্রন্দন দ্বারা পরিবর্তন করে দিয়েছেন।
সারা বিশ্বব্যাপী ফিতনা-ফাসাদ ছড়ানো, অসংখ্য রাষ্ট্রপ্রধানদেরকে গুপ্ত ঘাতক দিয়ে হত্যা করানো, দেশে দেশে অশান্তি সৃষ্টি করা, বিদ্রোহ লাগানো, নিজেই দালাল দিয়ে বিশৃংখলা সৃষ্টি করে আবার নিজেই মোড়ল হয়ে সেখানে গিয়ে সমাধান দেয়া, ইত্যাদির পেছনে আন্তর্জাতিক শয়তান জড়িত তার নাম হচ্ছে আমেরিকা। আমেরিকার কুখ্যাত গোয়েন্দা সংস্থা এ পর্যন্ত যতো অপকর্ম করেছে তার তালিকা করতে গেলে বিশাল বই হয়ে যাবে।
এই শতাব্দি হলো মুসলিম উম্মাহর বিজয়ের শতাব্দি। এই উম্মাহ হলো খায়রা উম্মাহ। আর আল্লামা ইবনে কাসীর রহ. এর ভাষায়- আর আল্লাহ যখন কোনো জাতির পূণর্জাগরণ চান তখন তিনি নিজেই তার জন্য ক্ষেত্র প্রস্তুত করে দেন। -যার সর্বশেষ উদাহরণ আমরা দেখতে পেলাম সাম্রাজ্যবাদী আমেরিকা, ইরান ও তাদের মিত্রদের সর্বাত্মক প্রচেষ্টায় তুরষ্কের কুলাঙ্গার সেনাবাহিনীর মাধ্যমে একটি বিদ্রোহ এবং তুরষ্কের মুসলিমদের সর্বাত্মক রুখে দাড়ানোর মাধ্যমে তা ব্যর্থ হওয়ার মধ্য দিয়ে। তুরষ্কের সাম্প্রতিক ইসলাম বিজয় হয়ে না গেলেও যা হয়েছে তাতে নাস্তিক, শাহবাগী এবং তার প্রভূ শয়তান গুলোর কলিজা পুড়ে গেছে।
তুরষ্কের সেনা বিদ্রোহের প্রাথমিক কয়েক ঘন্টায় যারা উল্লাসে ফেটে পড়েছিলো, মাত্র সামান্য সময়ের ব্যবধানে মহান আল্লাহ তাদের আনন্দকে ধুলিস্যাত করে দিয়েছেন। তাদের উল্লাসকে ক্রন্দন দ্বারা পরিবর্তন করে দিয়েছেন।
সাম্রাজ্যবাদী ও তাদের কুফরী শক্তিগুলোর একটি অন্যতম বড় প্রতারণা হচ্ছে মনস্তাত্ত্বিক লড়াই। তারা প্রত্যেকটি কাজের অনেকগুলো বেনিফিট নেবার চেষ্টা করে থাকে। যাতে মনস্তাত্বিকভাবে সবাই তাদেরকেই শ্রেষ্ঠ বলে মেনে নেয়। সব ক্ষেত্রে তাদেরকে সফলতা বলে মনে করে।তাদের দূর্বলতা আর ভীরু কাপুরোষিত জীবন ও কর্ম সম্পর্কে জানতে না পারে তার পাকাপোক্ত ব্যবস্থা তারা করে রেখেছে।
একইভাবে সর্বশেষ তুরষ্কের ঘটনায় সিআইএ এবং ইরান-ইসরাইলের সম্মিলিত চক্রান্ত যখন শুরু হলো তখন মুরতাদ ওবামা বললো তারা এটা পর্যবেক্ষণ করছে। এরপর বললো উভয় পক্ষ যেনো শান্ত থাকে। রক্তপাত যেনো এড়িয়ে চলে (তার দালালদেরকে যেনো সাইজ না করে) তারপর যখন পুরোপুরি ব্যর্থ হলো তখন তারা বললো আমরা এরদোগানের সাথেই আছি।
ভাবটা এমন, আরে আমরা সমর্থন না করলে কি আর এরদোগান টিকতে পারতো!
প্রথমে তার প্রচার করলো যে এই বিদ্রোহের ঘটনাটি কর্নেল লেভেলের কয়েকজন করার চেষ্টা করেছিলো, যেনো ঘটনাটিকে ছোট করে দেখানো যায়, কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে যে এর সাথে প্রায় ১৫০০ ক্রীড়নক, অনেক সিনিয়র আর্মি অফিসার এমনকি অনেক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল, মেজর জেনারেলও জড়িত।
মুসলমানেরা বুঝতে পারলো যে তাদের আগের প্রচারণা, বিবিসি, সিএনএন এর মিথ্যাচারগুলো এগুলো সবই তাদের মনস্ত্বাত্বিক অপপ্রচার ছিলো।
মিশরে মুরসীকে ক্ষমতাচ্যুত করে সিসিকে ক্ষমতায় আনার ঘটনায় আমেরিকা ও তাদের দালাল গুলো অনেকটা নিশ্চিত ছিলো যে খুব সহজেই তুরষ্কের ঘটনাটিও তাদের পক্ষে চলে যাবে। কিন্তু আল্লাহ কিছু অলৌকিক ঘটনার মধ্য দিয়ে অল্প সময়ের মধ্যে এর রূপটি ভিন্ন করে দিলেন।
এরদোগানের বিচক্ষণতা এবং তরিত সঠিক সিদ্ধান্ত এখানে বিরাট গুরুত্বপূর্ণ ছিলো। এরদোগান যেই হোটেলে অবস্থান করছিলেন সেই হোটেলে শয়তান গুলো বোমা হামলা করেছিলো এরদোগানকে মেরে ফেলার জন্য। কিন্তু অকল্পনীয়ভাবে তিনি তার আগেই সাহস ও বিচক্ষণতার সাথে সেখান থেকে বেড়িয়ে এয়ারপোর্টে লাখো জনতার মাঝে চলে যাওয়ায় তাদের এই চক্রান্তের বড় অংশটিই ব্যর্থ হয়ে যায়।
দেশের সকল মিডিয়া বন্ধ হওয়া সত্ত্বেও বিকল্প পথে অনলাইন ও সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে দেশবাসীকে রাজপথে নেমে আসার একটি মেসেজ বারুদের মতো কাজ করে। জাগিয়ে তোলে পুরো তুরষ্ককে।
এখন তুরষ্কের জন্য আমেরিকা, ইসরাইল-ইরানের কপটতা অনুধাবন করে তাদের সকল ক্রীড়নক, দালালকে সেনাবাহিনী ও রাষ্ট্রের উল্লেখযোগ্য সকল পদ থেকে ঝেটিয়ে বিদায় করে কারাগারে নিক্ষেপ করা।
বিদ্রোহীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা। এর পেছনের মূল শক্তিকে কড়া মেসেজ দেয়া। তার আশাও দেখা গেছে এরদোগানের সর্বশেষ বক্তব্যে। তিনি বলেছেন, "This uprising is a gift from God to us because this will be a reason to cleanse our army."
আমরা আশাবাদী যে, তিনি তার কথা রাখবেন। পূর্বের চাইতেও আরো বিচক্ষণভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করবেন।সাথে সাথে উম্মাহকে ঐক্যবদ্ধ করে গণতন্ত্র নয়, ইসলামী খিলাফতের জন্য এগিয়ে আসবেন।
আল্লাহ তার সহায় হোন। তুরষ্কের মুসলিম ভাইদেরকে আল্লাহ হিফাজত করুন। আমাদের হারানো গৌরবোজ্জল খিলাফাহকে আবারও ফিরিয়ে আনতে তাদেরকে প্রথম সাড়িতে কবূল করুন। আমীন।
বিষয়: বিবিধ
১৫৮১ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
০ বাংলাদেশেরও বেশ কিছু পত্রিকার গা জ্বলুনি বেশ বোঝা গেছে।
০ ক্যু সফল হলে বলতো যে - এবার তুরষ্ক সঠিক পথ খুঁজে নেবে । আমেরিকা নতুন সরকারের সাথে কাজ করার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। পশ্চিমা দেশগুলো এই ঘটনাকে স্বাগত জানাতে এগিয়ে আসতো।
মন্তব্য করতে লগইন করুন