অভিবাসী শ্রমিকদের পাঠানো রেমিটেন্সের ওপর ১০ শতাংশ ট্যাক্স আরোপ করতে যাচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কুয়েত ও ওমান।
লিখেছেন লিখেছেন কুয়েত থেকে ১১ জুলাই, ২০১৬, ০৫:২৮:৫৯ বিকাল
প্রবাসীরা অনেক কষ্টের বিনিময়ে যা অর্থ রোজগার করে তা নিজদেশে পরিবার পরিজনের জন্য পাঠায় এতে দেশ লাভবান হয় বৈদেশীক মুদ্রা তথা রেমিটেন্স অর্জনের মাধ্যমে।
কিন্তু এই ধনী দেশ গুলার নাগরিকরা যে অর্থ খরচ করে তার তুলনায় প্রবাসিদের অর্থ উর্পাজন খুবই সামান্য। তার পরো তারা গরিবের অর্থের উপর তাদের লোভ।
অভিবাসী শ্রমিকদের পাঠানো রেমিটেন্সের ওপর ১০ শতাংশ ট্যাক্স আরোপ করতে যাচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কুয়েত ও ওমান।
রাজস্ব বৃদ্ধির মাধ্যমে অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে এ পদক্ষেপের বিষয়টি বিবেচনা করছে দেশ দুটি।
এ উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে ওই দুটি দেশে কর্মরত হাজার বাংলাদেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।
গত জুনে সৌদি আরবও অভিবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্সের ওপর ৬ শতাংশ করারোপের প্রস্তাব করে।
জানা গেছে, দেশ দুটির আয়ের মূল উত্স তেলসম্পদ। আর ১০ শতাংশ ট্যাক্স আরোপের মাধ্যমে ১০ বিলিয়ন ডলারের তেলবহির্ভূত আয় হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বিশ্বব্যাংকের এক হিসাব অনুযায়ী, গত বছর গালফভুক্ত দেশগুলো থেকে অভিবাসী শ্রমিকদের মাধ্যমে ১০০ বিলিয়ন ডলার বেরিয়ে গেছে, যা দেশগুলোর মোট দেশজ উত্পাদন বা জিডিপির ৭.৭ শতাংশ।
দেশগুলো মনে করছে, অভিবাসীদের বিনিয়োগের সুযোগ না থাকার কারণে সেখান থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ বেরিয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে পুঁজিবাজার এবং সম্পদে বিনিয়োগের সুযোগ না থাকার কারণকে মূল প্রতিবন্ধকতা হিসেবে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। যদিও সংযুক্ত আরব আমিরাত ও কাতার বিদেশীদের জন্য পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ উন্মুক্ত করেছে। কিন্তু এ সুযোগের পূর্ণ ব্যবহার এখনো নিশ্চিত হয়নি।
এদিকে অভিবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্সের ওপর ট্যাক্স আরোপের কারণে অবৈধ পথে অর্থপ্রবাহ বেড়ে যাবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। সাম্প্র্রতিক সময়ে কমে এলেও নতুন সিদ্ধান্তের মাধ্যমে অবৈধ পন্থাগুলো পুনরায় জনপ্রিয় হতে শুরু করবে। এশিয়ার অভিবাসীদের জন্য গালফভুক্ত দেশের শ্রমবাজার আকর্ষণ হারাবে।
এ প্রসঙ্গে জনশক্তি রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সিজের (বায়রা) সভাপতি বেনজির আহমেদ জানান, এখনো বাংলাদেশের রেমিটেন্স আয়ের প্রধান উত্স মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো। ট্যাক্স আরোপ হলে এতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
তিনি বলেন, এখন ব্যাংকিং চ্যানেল আগের তুলনায় অনেক উন্নত হয়েছে। আগে হুন্ডিনির্ভর ছিল। এখনো হুন্ডির মাধ্যমে টাকা আসে। তবে আগের তুলনায় কমেছে।
গত জুনে সৌদি আরবের সূরা কাউন্সিলের অর্থনৈতিক কমিটি, সৌদি থেকে অভিবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্সের ওপর ৬ শতাংশ করারোপের প্রস্তাব করে। প্রস্তাবনায় আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে তা পর্যায়ক্রমে ২ শতাংশে নেমে আসার কথা বলা হয়েছে।
দেশটির জেনারেল অডিটিং ব্যুরোর প্রধান হোসাম আল আংকারি এ প্রস্তাব করেন। তিনি বলেন, এর ফলে অভিবাসীরা তাদের টাকা সৌদি আরবেই বিনিয়োগ অথবা ব্যয় করতে বাধ্য হবেন।
প্রস্তাবে বলা হয়, একজন অভিবাসী কত টাকা পাঠাতে পারবেন তারও একটা সীমা থাকতে হবে। যদি তিনি সৌদি আরব থেকে চলে যান, সে সময়ও সর্বোচ্চ কত টাকা পাঠাতে পারবেন তারও একটা নির্দিষ্ট সীমা থাকা জরুরি।
দেশটির অর্থনৈতিক কমিটি অভিবাসীদের উপার্জিত অর্থের সঙ্গে রেমিট্যান্সের সামঞ্জস্য আছে কিনা, তাও খতিয়ে দেখবে বলে জানা গেছে। যদি কেউ ভুয়া তথ্য দেয় তাহলে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থাও নেয়ার কথা ভাবছে তারা।
অর্থনৈতিক কমিটি আশা করে, যদি এ আইন জারি করা হয় তাহলে সৌদি আরব অর্থনৈতিকভাবে আরো স্বাবলম্বী হবে। তাদের হিসাব মতে, ২০০৫ সালে অভিবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্সের পরিমাণ ছিল ৫৬ বিলিয়ন রিয়াল, যা ২০১৪ সালে এসে দাঁড়ায় ১৩৫ বিলিয়ন রিয়ালে।
জানা গেছে, সদ্য শেষ হওয়া অর্থবছরে প্রবাসীরা ১৫২৮ কোটি (১৫.২৮ বিলিয়ন) ডলারের রেমিটেন্স দেশে পাঠিয়েছেন
বিষয়: বিবিধ
১৪৬৭ বার পঠিত, ১০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
প্রবাসীদের কষ্টার্জিত আয়ে এভাবে ট্যাক্স নির্ধারণ আসলেই দুঃখজনক!
হুন্ডির মত অনৈতিক পথে ঠেলে আর কি!
বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে এর জোরালো প্রতিবাদ করা দরকার। কারণ রেমিটেন্স প্রবাহ কমে গেলে বাংলাদেশ ব্যাংকও বেকায় পড়বে। কারণ রিজার্ভ করে যাবে।
বাংলাদেশ থেকেও বিভিন্নভাবে তাদেরকে মেইলে বা যেভাবে সম্ভব তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা দরকার যাতে এমন সিদ্ধান্ত থেকে তারা সরে আসে।
আমার মনে হয় তাদেরকে বুঝিয়ে বলতে জানলে তারা এমন কাজ করবেন না। তাদের উচিত বাংলাদেশীদের জন্য ফ্রি-তে ভিসার ব্যবস্থা করে দেয়া এবং রিনিউ ফি মওকূফ করে দেয়া। সেখানে তারা উল্টা আমাদের ঘাম ঝরা টাকায় ভাগ বসাবে কেন ?
মুসলিম রাস্ট্র মুসলমানদেরকে না দেখলে আর কে দেখবে ?
ব্যাপারটি সত্যিই হতাশাজনক ও দুঃখজনক বটে।
মন্তব্য করতে লগইন করুন