এক মিতুর হত্যার প্রতিশোধ নিতে রমজানেই সারা দেশে চলছে পুলিশী অভিযান। এই অভিযানে ১,৭৫০ জনকে গ্রেফতার। ১১ জনকে ক্রসফায়ারে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। ইসরাইলকেও আমরা....
লিখেছেন লিখেছেন কুয়েত থেকে ১২ জুন, ২০১৬, ০২:১১:৪৬ দুপুর
এক মিতুর হত্যার প্রতিশোধ নিতে এই রমজানেই সারা দেশে চলছে পুলিশী সাঁড়াশী অভিযান। এই অভিযানে এখনো পর্যন্ত ১,৭৫০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
১১ জনকে ক্রসফায়ারে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।
ব্যাপারটা অনেকটা ইসরাইলী আগ্রাসনের সাথে দারুণ মিল। বছর খানেক আগে কোন এক ফিলিস্তিনি বালক এক ইসলাইলী নাগরিককে হত্যা করেছিল। ব্যাস, এর জের ধরেই ইসরাইল পুরো রমজান মাসে গাজায় আগ্রাসন চালিয়ে,৭৫০ জন ফিলিস্থিনিকে হত্যা করে,
১০ হাজার জনকে আহত করে,বিমান হামলা চালিয়ে প্রায় পুরা গাজা মাটির সাথে মিশিয়ে দেয়।
এই তো কয়দিন আগে পশ্চিম তীরে এক ফিলিস্তিনি ইসরাইলীর দখলদারের প্রতিবাদে গুলি করে ৪ ইসরাইলীকে হত্যা করে। ব্যাস, এর জেরে সেবারও শুরু হয় গিয়েছিল ইসরাইলি আগ্রাসন। ঐ দুই ছেলেকে হত্যা তো করেছেই, সাথে ৮৩ হাজার ফিলিস্তিনিকে ইসরাইলে প্রবেশের যে বিশেষ অনুমতি দেওয়া হয়েছিল তা বাতিল করা হয়েছে।
গাজা উপত্যকার ফিলিস্তিনিদেরও ইসরাইলে প্রবেশ অনুমতি বাতিল করা হয়েছে। এমনকি তাদের বিদেশযাত্রা ও আল-আকসা মসজিদে নামাজের অনুমতিও বাতিল করা হয়েছে।
এছাড়া হামলাকারী দুই যুবকের ২০৪ জন আত্মীয়ের ইসরায়েলে কাজ করার অনুমতিপত্রও বাতিল করা হয়েছে। এমনকি তারা যে গ্রামের বাসিন্দা সে গ্রামটিতেও ফিলিস্তিনিদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
এদিকে বাংলাদেশের মিডিয়ার ভূমিকাও ইসরাইলী মিডিয়ার মত। তারাও জনগনের আবেগ বিবেক নিয়ন্ত্রণ করে। ৪ জন ইসরাইলি খুনের কারণে তাদের মিডিয়ায় চলছে শোকের মাতম, লিখছে একের পর এক হৃদয় স্পর্শী রিপোর্ট, তা পড়ে তাদের জনগণ আবেগে কাঁদছে।
আবেগ ধরে রাখতে না পেরে ওবামা পর্যন্ত সুদূর আমেরিকা থেকে এই হত্যা নিন্দা জানিয়েছিল। কিন্তু ইসরাইল যে কিছুদিন আগে আল-আকসা মসজিদে প্রবেশকে কেন্দ্র করে কয়েক দিনের সহিংসতায় ২০৭ জন ফিলিস্তিনিকে গুলি করে হত্যা করেছে, এই নিয়ে কোন মিডিয়ার আবেগও নেই, বিবেকও নেই, তাদের মৃত্যু নিয়ে লেখা হয় না কোন হৃদয় স্পর্শী করুন রিপোর্ট, ফলে জনগণ কান্দে না, ওবামাও নিন্দা জানায় না, অন্তরালে কাঁদে শুধু নিহতের স্বজনরা।
ঠিক একইভাবে পুলিশ সুপারের বউ মিতু যখন মরে ছিল তখন মিডিয়াগুলুতে চলছিল শোকের মাতম। লিখেছিল তারা একের পর এক হৃদয় স্পর্শী রিপোর্ট। তা পড়ে জনগণ আবেগ ধরে রাখতে না পেরে কেঁদে বুক ভাসিয়েছে।
কেউ এতটা বেশী আবেগী হয়েগেছিল যে মিতুকে বৈন, আর বাবুলকে ভাই পর্যন্ত বানিয়েছে। এদিকে আবেগের ঠেলায় ইউরোপ আমেরিকা থেকে পর্যন্ত নিন্দায় ঝড় এসেছে। কিন্তু এর জেরে মিতুর স্বামীদের বাহিনী গত কয়দিনে যে ১১ জনকে গুলি করে হত্যা করেছে তা নিয়ে কোন মিডিয়া আবেগ তো দূরের বিবেক পর্যন্ত দেখাল না।
লিখল না কোন হৃদয় স্পর্শী করুন রিপোর্ট। তাই পুলিশের এই হত্যাকান্ড কারোর আবেগ নাড়া দেয় নাই, বিবেক জাগে নাই, তাই কেউ কান্দে নাই, ইউরোপ আমেরিকাও নিন্দা জানায় নাই, শুধু নিরব নিভৃতে কেঁদেছে নিহেতের স্বজন। কারণ একমাত্র স্বজনই জানে স্বজন হারানোর বেদনা যে কত কষ্টের।।
বিষয়: বিবিধ
১২৮৯ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
একটি মুসলিম দেশে রমযান মাসে এই জাতীয় নির্যাতন বন্ধে দল মত নির্বিশেষে সকলেরই এগিয়ে আসা উচিৎ বলে মনে করি।
গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি উপস্থাপনের জন্য জাজাকাল্লাহু খাইর।
মন্তব্য করতে লগইন করুন