আল্লাহর পথে সংগ্রাম করা প্রতিটি মুসলমানের জন্যই ফরজ। আল্ কুরআনের পথই হলো আল্লাহর পথ তথা জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ...! আসুন এ পথে থেকে আল্লাহর সন্তোষ্টি অর্জন করি।।
লিখেছেন লিখেছেন কুয়েত থেকে ১৫ মে, ২০১৬, ০৩:৫৮:৪৭ দুপুর
আল্লাহর পথে সংগ্রাম করা প্রতিটি মুসলমানের জন্যই ফরজ। আল্ কুরআনের পথই হলো আল্লাহর পথ তথা জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ...! আসুন এ পথে থেকে আল্লাহর সন্তোষ্টি অর্জন করি।
আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,
﴿ وَقَاتِلُوا المُشْرِكِينَ كَافَّةً كَمَا يُقَاتِلُونَكُمْ كَافَّةً وَاعْلَمُوا أَنَّ اللهَ مَعَ المُتَّقِينَ ﴾ ( التوبة: ৩৬ )
অর্থাৎ আর অংশী-বাদীদের সকলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ কর, যেমন তারা তোমাদের সকলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে। আর জেনে রেখো যে, আল্লাহ মুত্তাকীগণের সাথে রয়েছেন। (সূরা তাওবাহ ৩৬ আয়াত)
তিনি অন্যত্র বলেছেন,
﴿كُتِبَ عَلَيۡكُمُ ٱلۡقِتَالُ وَهُوَ كُرۡهٞ لَّكُمۡۖ وَعَسَىٰٓ أَن تَكۡرَهُواْ شَيۡٔٗا وَهُوَ خَيۡرٞ لَّكُمۡۖ وَعَسَىٰٓ أَن تُحِبُّواْ شَيۡٔٗا وَهُوَ شَرّٞ لَّكُمۡۚ وَٱللَّهُ يَعۡلَمُ وَأَنتُمۡ لَا تَعۡلَمُونَ ٢١٦ ﴾ (البقرة: ٢١٦)
অর্থাৎ তোমাদের জন্য যুদ্ধের বিধান দেওয়া হল। যদিও এটা তোমাদের কাছে অপছন্দ; কিন্তু তোমরা যা পছন্দ কর না সম্ভবত: তা তোমাদের জন্য কল্যাণকর এবং তোমরা যা পছন্দ কর সম্ভবত: তা তোমাদের জন্য অকল্যাণকর। আল্লাহ জানেন, তোমরা জান না। (সূরা বাকারাহ ২১৬ আয়াত)
তিনি আরও বলেছেন,
ٱنفِرُواْ خِفَافٗا وَثِقَالٗا وَجَٰهِدُواْ بِأَمۡوَٰلِكُمۡ وَأَنفُسِكُمۡ فِي سَبِيلِ ٱللَّهِۚ [التوبة: ٤١]
দুর্বল হও অথবা সবল সর্বাবস্থাতেই তোমরা বের হও এবং আল্লাহর পথে নিজেদের মাল ও জান দ্বারা জিহাদ কর। (সূরা তাওবাহ ৪১ আয়াত)
তিনি অন্য জায়গায় বলেছেন,
﴿۞إِنَّ ٱللَّهَ ٱشۡتَرَىٰ مِنَ ٱلۡمُؤۡمِنِينَ أَنفُسَهُمۡ وَأَمۡوَٰلَهُم بِأَنَّ لَهُمُ ٱلۡجَنَّةَۚ يُقَٰتِلُونَ فِي سَبِيلِ ٱللَّهِ فَيَقۡتُلُونَ وَيُقۡتَلُونَۖ وَعۡدًا عَلَيۡهِ حَقّٗا فِي ٱلتَّوۡرَىٰةِ وَٱلۡإِنجِيلِ وَٱلۡقُرۡءَانِۚ وَمَنۡ أَوۡفَىٰ بِعَهۡدِهِۦ مِنَ ٱللَّهِۚ فَٱسۡتَبۡشِرُواْ بِبَيۡعِكُمُ ٱلَّذِي بَايَعۡتُم بِهِۦۚ وَذَٰلِكَ هُوَ ٱلۡفَوۡزُ ٱلۡعَظِيمُ ١١١ ﴾ [التوبة: ١١١]
নিঃসন্দেহে আল্লাহ মুমিনদের নিকট থেকে তাদের প্রাণ ও তাদের ধন-সম্পদসমূহকে জান্নাতের বিনিময়ে ক্রয় করে নিয়েছেন; তারা আল্লাহর পথে যুদ্ধ করে, যাতে তারা হত্যা করে এবং নিহত হয়ে যায়। এ (যুদ্ধে)র দরুন (জান্নাত প্রদানের) সত্য অঙ্গীকার করা হয়েছে তাওরাতে, ইঞ্জিলে এবং কুরআনে; আর নিজের অঙ্গীকার পালনে আল্লাহ অপেক্ষা শ্রেষ্ঠতর অন্য কে আছে? অতএব তোমরা আনন্দ করতে থাক তোমাদের এই ক্রয়-বিক্রয়ের উপর যা তোমরা সম্পাদন করেছ। আর এটা হচ্ছে মহা সাফল্য।” (সূরা তাওবাহ ১১১)
তিনি অন্যত্র বলেছেন,
﴿لَّا يَسۡتَوِي ٱلۡقَٰعِدُونَ مِنَ ٱلۡمُؤۡمِنِينَ غَيۡرُ أُوْلِي ٱلضَّرَرِ وَٱلۡمُجَٰهِدُونَ فِي سَبِيلِ ٱللَّهِ بِأَمۡوَٰلِهِمۡ وَأَنفُسِهِمۡۚ فَضَّلَ ٱللَّهُ ٱلۡمُجَٰهِدِينَ بِأَمۡوَٰلِهِمۡ وَأَنفُسِهِمۡ عَلَى ٱلۡقَٰعِدِينَ دَرَجَةٗۚ وَكُلّٗا وَعَدَ ٱللَّهُ ٱلۡحُسۡنَىٰۚ وَفَضَّلَ ٱللَّهُ ٱلۡمُجَٰهِدِينَ عَلَى ٱلۡقَٰعِدِينَ أَجۡرًا عَظِيمٗا ٩٥ ﴾ (النساء : ٩٥)
অর্থাৎ ঈমানদারদের মধ্যে যারা অক্ষম নয় অথচ ঘরে বসে থাকে তারা এবং যারা আল্লাহর পথে স্বীয় ধন-প্রাণ দ্বারা জিহাদ করে, তারা সমান নয়। যারা স্বীয় ধন-প্রাণ দ্বারা জিহাদ করে আল্লাহ তাদেরকে যারা ঘরে বসে থাকে তাদের উপর মর্যাদা দিয়েছেন; আল্লাহ সকলকেই কল্যাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। আর যারা ঘরে বসে থাকে তাদের উপর যারা জিহাদ করে তাদেরকে আল্লাহ মহা পুরস্কার দিয়ে শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন। এ তাঁর (আল্লাহর) তরফ হতে মর্যাদা, ক্ষমা ও দয়া। বস্তুতঃ আল্লাহ অত্যন্ত ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। (সূরা নিসা ৯৫-৯৬ আয়াত)
তিনি আরও বলেছেন,
﴿ يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ هَلۡ أَدُلُّكُمۡ عَلَىٰ تِجَٰرَةٖ تُنجِيكُم مِّنۡ عَذَابٍ أَلِيمٖ ١٠ تُؤۡمِنُونَ بِٱللَّهِ وَرَسُولِهِۦ وَتُجَٰهِدُونَ فِي سَبِيلِ ٱللَّهِ بِأَمۡوَٰلِكُمۡ وَأَنفُسِكُمۡۚ ذَٰلِكُمۡ خَيۡرٞ لَّكُمۡ إِن كُنتُمۡ تَعۡلَمُونَ ١١ يَغۡفِرۡ لَكُمۡ ذُنُوبَكُمۡ وَيُدۡخِلۡكُمۡ جَنَّٰتٖ تَجۡرِي مِن تَحۡتِهَا ٱلۡأَنۡهَٰرُ وَمَسَٰكِنَ طَيِّبَةٗ فِي جَنَّٰتِ عَدۡنٖۚ ذَٰلِكَ ٱلۡفَوۡزُ ٱلۡعَظِيمُ ١٢ وَأُخۡرَىٰ تُحِبُّونَهَاۖ نَصۡرٞ مِّنَ ٱللَّهِ وَفَتۡحٞ قَرِيبٞۗ وَبَشِّرِ ٱلۡمُؤۡمِنِينَ ١٣ ﴾ (الصف: ١٠، ١٣)
অর্থাৎ হে ঈমানদারগণ! আমি কি তোমাদেরকে এমন এক বাণিজ্যের সন্ধান বলে দিব না, যা তোমাদেরকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি হতে রক্ষা করবে? (তা এই যে,) তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলে বিশ্বাস স্থাপন করবে এবং তোমাদের ধন-সম্পদ ও জীবন দ্বারা আল্লাহর পথে জিহাদ করবে। এটাই তোমাদের জন্য শ্রেয় যদি তোমরা জানতে। আল্লাহ তোমাদের পাপ-রাশিকে ক্ষমা করে দেবেন এবং তোমাদেরকে প্রবেশ করাবেন জান্নাতে; যার নিম্নদেশে নদীমালা প্রবাহিত এবং (প্রবেশ করাবেন) স্থায়ী জান্নাতের উত্তম বাসগৃহে। এটাই মহা সাফল্য। আর তিনি তোমাদেরকে দান করবেন বাঞ্ছিত আরও একটি অনুগ্রহ; আল্লাহর সাহায্য ও আসন্ন বিজয়। আর বিশ্ববাসীদেরকে সুসংবাদ দাও। (সূরা সাফ্ ১০-১৩ আয়াত)
এ মর্মে প্রসিদ্ধ বহু আয়াত রয়েছে। আর জিহাদের ফযীলত সংক্রান্ত হাদিসও রয়েছে অগণিত। তন্মধ্যে কতিপয় নিম্নরূপ:-
১/১২৯৩। আবূ হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জিজ্ঞাসা হল, ‘সর্বোত্তম কাজ কি?’ তিনি বললেন, “আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা।” জিজ্ঞাসা করা হল, ‘তারপর কি?’ তিনি বললেন, “আল্লাহর পথে জিহাদ করা।” পুনরায় জিজ্ঞাসা করা হল, ‘অতঃপর কি?’ তিনি বললেন, “মাবরূর’ (বিশুদ্ধ বা গৃহীত) হজ্জ।” (বুখারী-মুসলিম) [1]
২/১২৯৪। আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নিবেদন করলাম, ‘হে আল্লাহর রাসূল! মহান আল্লাহর নিকট কোন কাজটি সর্বাধিক প্রিয়?’ তিনি বললেন, “যথা সময়ে নামায আদায় করা।” আমি নিবেদন করলাম, ‘তারপর কোনটি?’ তিনি বললেন, “মা-বাপের সাথে সদ্ব্যবহার করা।” আমি আবার নিবেদন করলাম, ‘তারপর কোনটি?’ তিনি বললেন, “আল্লাহর পথে জিহাদ করা।” (বুখারী ও মুসলিম)[1]
[1] সহীহুল বুখারী ৫২৭, ২৭৮২, ৫৯৭০, ৭৫৩৮, মুসলিম ৮৫, তিরমিযী ১৩৭, ১৮৯৮, নাসায়ী ৬১০, ৬১১, আহমাদ ৩৮৮০, ৩৯৬৩, ৩৯৮৮, ৪১৭৫, ৪২১১, ৪২৩১, ৪২৭৩, ৪৩০১, দারেমী ১২২৫ হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
[1] সহীহুল বুখারী ২৬, ১৫১৯, মুসলিম ৫৩, তিরমিযী ১৬৫৮, নাসায়ী ২৬২৪, ৩০৩০, আহমাদ ১২৮১ এর সবগুলো, দারেমী ২৩৯৩ হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বিষয়: বিবিধ
১৯৬৪ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন