ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি বলেছেন, বাংলাদেশে গণতন্ত্রের চর্চা বর্তমানে ‘আন্তর্জাতিক মানে’ উন্নীত হয়েছে। আপনারাও কি তা মনে করেন..?
লিখেছেন লিখেছেন কুয়েত থেকে ০৬ মার্চ, ২০১৬, ০৭:০৫:৫৮ সন্ধ্যা
ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি নাকি বলেছেন, বাংলাদেশে গণতন্ত্রের চর্চা বর্তমানে ‘আন্তর্জাতিক মানে’ উন্নীত হয়েছে। বিডিনিউজ এক খবরে জানাচ্ছে এমন তথ্য। বাংলাদেশের গণতন্ত্র আন্তর্জাতিক মানে’ প্রণব শিরোনামের খবর দ্রষ্টব্য।
বাংলাদেশ সরকারের বরাতে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী প্রণব মুখার্জি আরো বলেছেন, বর্তমানে বাংলাদেশের সংসদীয় গণতন্ত্র আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত হয়েছে। এর ফলে দুটি আন্তর্জাতিক পার্লামেন্টারি ফোরাম সিপিএ ও আইপিইউ’র প্রধান বাংলাদেশ থেকে নির্বাচিত হয়েছেন।
প্রণব মুখার্জি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করেন বলে এতে বলা হয়। ভারতের রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী ও গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের ভাগ্যোন্নয়ন ঘটছে এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখায় বাংলাদেশ প্রশংসিত হচ্ছে।
বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরিন শারমিন চৌধুরী শনিবার নয়া দিল্লিতে রাষ্ট্রপতি ভবনে প্রণব মুখার্জির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এসব কথা বলেন।
খবরটি পড়ার পর থেকে যারপরনাই আনন্দ হচ্ছে। এই আনন্দ বিশ্বের দরবারে নতুন কিছু নিয়ে দেশ ও জাতি হিসেবে হাজির হতে পারার আনন্দ।
বিশ্বের সবচেয়ে বড় গণতান্ত্রিক দেশ বলে পরিচিত ভারতে এখনো ‘আন্তর্জাতিক মানের গণতন্ত্র’ কায়েম হওয়ার সুযোগ পায়নি।
ইন্টারনেটে দেশটির বিভিন্ন পত্রপত্রিকা পড়তে গেলে দেখা যায়, সেদেশের বুদ্ধিজীবীরা আফসোস করছেন যে, কংগ্রেসের সাবেক নেত্রী ইন্দিরা গান্ধি কর্তৃক ধ্বংস করে যাওয়া গণতান্ত্রিক নানা প্রতিষ্ঠান এখনো পুরোপুরি সেরে উঠতে পারেনি। ফলে ভারত দিন দিন উন্নতি করলেও এখনো ‘আন্তর্জাতিক মানের গণতন্ত্র’ থেকে অনেক দূরে।
রাজনীতির ক্ষেত্রে এক দেশের আইডিয়া অন্য দেশে, এমনকি ছোট্ট দেশে ভাল আইডিয়া বিরাট উন্নত দেশে, অনুসরণ করার অনেক পুরোনো ইতিহাস রয়েছে। উদাহরণ হিসেবে বাংলাদেশের রাজনীতিবিদদের মস্তিস্কপ্রসূত ‘তত্ত্বাবধায় সরকার পদ্ধতি’র কথাই বলা যায়।
যদিও বাংলাদেশে এখন আর এই পদ্ধতি চালু নেই, কিন্তু এই দেশেরে এই আইডিয়াটি বহুদেশে অনুসৃত হচ্ছে। পাকিস্তানে হয়েছে আগেই। গত কিছুদিন আগে ইউরোপের দেশ সুইজারল্যান্ডেও প্রায় একই পদ্ধতি অনুসরণ করে সরকার গঠিত হয়েছে।
রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি দাদুকে আমরা বাংলা অকৃত্রিম বন্ধু হিসেবেই পত্রপত্রিকায় জেনে বড় হয়েছি। শুধু মুখের ‘বন্ধু’ নন। কাজে কর্মেও দাদা বহুত কিছু দেখিয়েছেন।
এই যে আজকের ‘আন্তর্জাতিক মানের গণতন্ত্র’- এটির জন্ম ও বেড়ে ওঠায়ও উনার যথেষ্ট অবদান রয়েছে। নিজ হাতে গড়ে তুলেছেন এই ‘আন্তর্জাতিকি’ জিনিসটাকে।
তারচেয়েও বড় ব্যাপার হল, তিনি নিজেই শেষমেশ এটার ‘আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন’ হয়ে উঠতে পারার স্বীকৃতিটা দিলেন।
আমরা বাংলাদেশে মানুষ এখন উদ্বেলিত। আন্তর্জাতিক মানের পোশাক কারখানার পর এখন ‘আন্তর্জাতিক মানের গণতন্ত্র’ কারখানাও স্থাপন করতে পেরেছি আমরা।
কিন্তু আমাদের এই ‘আন্তর্জাতিক মানের গণতন্ত্র’ শুধু উৎপাদন করলেই কি চলবে? এটির বিপনন করা লাগবে না? আমরা গরীব দেশের মানুষ আশা করতেই পারি, প্রণব দা তার দেশের জন্য আমাদের এই আন্তর্জাতিক মানের গণতন্ত্র’ জিনিসটা আমদানি করবেন। আসলে উনাদেরও তো ‘আন্তর্জাতিক মানের গণতন্ত্র’র চাহিদা আছে। সেটা আগেই বলেছি।
তো, সেটা ইউরোপ-আমেরিকার মতো দূর দেশ থেকে ‘শিপমেন্টের’ মাধ্যমে আমদানি করার চেয়ে বিনে পয়সা ট্রানজিট দিয়ে বাংলাদেশি ‘আন্তর্জাতিক মানের গণতন্ত্র’ আমদানি করলেই তো ভারতের জন্য ‘খরচ’ কম পড়বে! আমরা সভ্যতার খাতিরে কোনো ট্রানজিট ফি চাইবো না।
বাংলাদেশি ‘আন্তর্জাতিক মানের গণতন্ত্র’ আমদানি করলে প্রণব দা’র একটা বিশেষ লাভও আছে! শুধু তার নয়, তার দুর্দশাগ্রস্ত দল কংগ্রেসেরও।
আগামী নির্বাচনের পর থেকে ভারতে এই গণতন্ত্র কায়েম করে নিলে ভবিষ্যতে আর কেউ কংগ্রেসকে ক্ষমতা থেকে সরাতে পারবে না। প্রণব দাদা আমৃত্যু রাষ্ট্রপতির পদ অলংকৃত করতে পারবেন!
আমাদেরকে নিজস্ব প্রযুক্তিতে উৎপাদিত আন্তর্জাতিক মানের গণতন্ত্র’ রপ্তানির সুযোগ করে দেবেন না, বুড়ো দাদা?
বিষয়: বিবিধ
১৫১৮ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন