প্রসিকিউশনের দূর্বলতার কারণে বিচারপতি আক্ষেপ করে প্রমাণ করলেন জামায়াত নেতারা আওয়ামী হিংস্রতার শিকার এবং রায় কি হতে পার..?

লিখেছেন লিখেছেন কুয়েত থেকে ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ০৭:৫৮:৪৮ সন্ধ্যা



প্রসিকিউশনের দূর্বলতার কারণে বিচারপতি আক্ষেপ করে আবারো প্রমাণ করলেন জামায়াত নেতারা আওয়ামী হিংস্রতার শিকার এবং রায় কি হতে পারে সেটা এখান থেকেই অনুমান করা যায়, বিস্তারিত দেখুন-

আপনাদের ডকুমেন্টেই রয়েছে ঘটনার সময় মীর কাসেম আলী ঢাকা ছিলেনঃ প্রধান বিচারপতি

মীর কাসেম আলীর মামলাসহ যুদ্ধাপরাধ অভিযোগের অন্যান্য মামলা পরিচালনার ক্ষেত্রে ট্রাইব্যুনালে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ও তদন্ত সংস্থার অদক্ষতা, অযোগ্যতা এবং দুর্বলতার জন্য তীব্র অসন্তোষ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা।

জামায়াতে ইসলামীর নির্বাহী পরিষদ সদস্য মীর কাসেম আলীর আপিল শুনানিতে মঙ্গলবার রাষ্ট্রপক্ষে অ্যটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম যুক্তি পেশ করার সময় আদালত এ অসন্তোষ প্রকাশ করেন।

প্রধান বিচারপতি বলেন, আমরা রাষ্ট্রপক্ষের মামলা পরিচালনায় খুবই মর্মাহত। মামলার এভিডেন্স দেখলে, এগুলো পড়লে আমাদের খুব কষ্ট লাগে।

মামলাগুলো যখন আমরা পড়ি তখন আমাদের গা ঘিনঘিন করে তাদের মামলা পরিচালনা দেখে। সব মামলায় এটা হয়ে আসছে।

এরপর অ্যাটর্নি জেনারেলকে বলেন, এত হাফ হার্টেড হয়ে আপনারা মামলা চালান কেন? প্রসিকিউশন, তদন্ত সংস্থার পেছনে রাষ্ট্রের লাখ লাখ টাকা খরচ হচ্ছে। কিন্তু তারা এসব কি মামলা পরিচালনা করছে?

তিনি বলেন, ট্রাইব্যুনালে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা শুধু ব্যস্ত টিভিতে চেহারা দেখানো নিয়ে। তারা দামি দামি গাড়ি চড়েন আর পুলিশের হুইসেল দিয়ে ঘুরে বেড়ায়।

মঙ্গলবার রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তি উপস্থাপনের শুরুতে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম মীর কাসেম আলীর বিরুদ্ধে ২ নম্বর অভিযোগ বিষয়ে যুক্তি পেশ করেন। ২ নম্বর অভিযোগে রাষ্ট্রপক্ষের মাত্র ১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য রয়েছে।

এসময় আসামিপক্ষ আদালতকে বলেন, সাক্ষীর বক্তব্যের সমর্থনে (করোবোরেশন) আর কোনো সাক্ষী হাজির করেনি।

অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, করোবেরশন নেই বলে সাক্ষীর সাক্ষ্য অবিশ্বাস করা যায় না। তখন প্রধান বিচারপতি বলেন, আপনার দায়িত্ব হচ্ছে অভিযোগ প্রমাণ করা।

সারা চট্টগ্রামে এ একজন ছাড়া আর কোনো সাক্ষী পেলেন না? এরকম হাফ হার্টেড মামলা চালান কেন আপনারা? এমন যদি দেখা যেত যে, বিরূপ পরিস্থিতি বিরাজমান তাহলে একটা কথা ছিল।

কিন্তু এখন নিজেদের সরকার ক্ষমতায়। চাইলে আপনি প্রটেকশন দিতে পারতেন। সেখানে কেন সাক্ষী আনতে পারবেন না? যখন অন্য সাক্ষী আনার সম্ভাবনা রয়েছে, রুল অব ল বলছে অন্য সাক্ষী দরকার।

অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, মাই লর্ড এই লোকটা নির্যতানে পুরুষত্বহীন হয়ে গেছে। তার বেছে থাকার আর কী অর্থ আছে।

এ পর্যায়ে প্রধান বিচারপতি রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এবং তদন্ত সংস্থার কর্মকর্তাদের প্রতি তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আর সাক্ষী আনেন নাই কেন? প্রসিকিউশন করে কি?

ইনভেস্টিগেশন অ্যাজেন্সি করে কি? দামি দামি গাড়ি চড়েন খালি। আমাদের এখানে একজন জজ সাহেব যা বেতন পান তার চেয়ে তিনগুণ বেশি ফিস দেন তাদেরকে।

এগুলো কি মশকরা করার জন্য? এত আইনজীবী লাগে কেন? এরা সবাই পুলিশের গাড়ি আর হুইসেল দিয়ে ঘুরে বেড়ায় এই ধরনের মামলা পরিচালনার জন্য?

এসময় তিনি জানতে চান প্রসিকিউশনে রাষ্ট্রপক্ষে কতজন আইনজীবী এবং তদন্ত সংস্থায় কতজন তদন্ত কর্মকর্তা আছে।

অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, আমার জানা নেই।

প্রধান বিচারপতি বলেন, আপনারা যেভাবে মামলা চালান, যেভাবে মামলা তদন্ত করেন তাতে আমরা শকড।

আমরা যখন মামলাগুলো পড়ি তখন আমাদের গা ঘিনঘিন করে রাষ্ট্রপক্ষের মামলা পরিচালনা দেখে। এসব অদক্ষ অফিসার রাখেন কেন আপনারা?

একজন সাক্ষীও করোবোরেশনের জন্য আনবেন না?

প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেন, ট্রাইব্যুনাল, প্রসিকিউশন এবং ইনভেস্টিগেশন অ্যাজেন্সি যেভাবে এ মামলা পরিচালনা করেছে তাতে আমরা খুবই শকড।

আপনাদের ডকুমেন্টেই দেখা যায় ঘটনার সময় মীর কাসেম আলী ঢাকা ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম মঙ্গলবার মীর কাসেম আলীর বিরুদ্ধে যুক্তি উপস্থাপনের সময় একটি অভিযোগ থেকে পড়ে শোনান।

যার ঘটনাকাল ১৯৭১ সালের ২৪ নভেম্বর। তখন আদালত তাকে প্রশ্ন করেন, আপনাদের ডকুমেন্টেই তো রয়েছে উনি ২৩ নভেম্বর ঢাকা ছিলেন।

তখন মাহবুবে আলম বলেন, ঢাকার বাইরে অবস্থান করেও পত্রিকায় বিবৃতি দেয়া যায়। ২৪ নভেম্বর পত্রিকায় বিবৃতি প্রকাশিত হলে তার মানে এই নয় যে, তিনি ২৩ নভেম্বর ঢাকায় ছিলেন।

এটা যেকোনো স্থান থেকে দেয়া যায়। এটা কোনো বিষয় নয়। তখন আদালত অ্যাটর্নি জেনারেলকে বলেন, মনে রাখবেন তখন নভেম্বর মাস। পরিস্থিতি খেয়াল করবেন।

যোগাযোগ ব্যবস্থা বিধ্বস্ত। ব্রিজ কালভার্ট প্রায় সব ধ্বংস হয়ে গেছে । মুক্তিযোদ্ধারা জেঁকে বসেছে প্রায় সবখানে। এয়ার সার্ভিসও তখন বন্ধ। দেশের ভেতরে যাদের দূরের পথে যাতায়ত করতে হতো তাদের ভেঙে ভেঙে যেতে হতো।

ট্রেন কিছু দূর গিয়ে থেমে যেত। নৌকায় পার হতে । তাছাড়া মিডিয়াও এত শক্তিশালী ছিল না যে, ঢাকার বাইরে থেকে যেকোনো মুহূর্তে যেকোনো কিছু পাঠানো যেত।

প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে ৫ সদস্যের আপির বেঞ্চ শুনানি গ্রহণ করেন। বুধবার এ মামলায় শুনানি শেষ হবার কথা রয়েছে।

শুনানিতে মীর কাসেম আলীর পক্ষে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি খন্দকার মাহবুব হোসেন, এস এম শাহজাহান, ব্যারিস্টার তানভির আহমেদ আল আমিন, ব্যারিস্টার মীর আহমাদ বিন কাসেম প্রমুখ।

বিষয়: বিবিধ

১৪১৫ বার পঠিত, ৭ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

360352
২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ রাত ০৮:১০
শেখের পোলা লিখেছেন : প্রধান বিচারপতিকে হয়ত আর একবার শিঘ্রই রাষ্ট্রপতি চায়ের দাওয়াত দিতে পারেন৷ ধন্যবাদ৷
২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ রাত ০৯:১০
298637
কুয়েত থেকে লিখেছেন : দেয়াল ঠেকে গেলে বিড়ালও লাপ দেয়। শেখ মুজিবের হত্যাকারীরা বাইরের কোন লোক ছিলনা। যারা ছিল আম্লীগ,বাম্লীগ বাকশালীরাই এইকামটি করেছিল। ধন্যবাদ আপনাকে
360368
২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ রাত ০৯:১০
কুয়েত থেকে লিখেছেন : দেয়াল ঠেকে গেলে বিড়ালও লাপ দেয়। শেখ মুজিবের হত্যাকারীরা বাইরের কোন লোক ছিলনা। যারা ছিল আম্লীগ,বাম্লীগ বাকশালীরাই এইকামটি করেছিল। ধন্যবাদ আপনাকে
360377
২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ রাত ০৯:৪৭
মু. মিজানুর রহমান মিজান (এম. আর. এম.) লিখেছেন : পুরোণো চালে ভাতে বাড়ে............
মনে রাখবেন।
২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ রাত ০৯:৫৪
298641
কুয়েত থেকে লিখেছেন : ঠিক বলেছেন ধন্যবাদ আপনাকে
360384
২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ রাত ১০:২৮
তোমার হৃদয় জুড়ে আমি লিখেছেন : বুঝতেছি না আসলে ঘটনা কোনদিকে মোড় নিচ্ছে। প্রধান বিচারপতি আসলে কি চান? এই সরকারের আমলে নিয়োগ পেয়ে সরকার বিরোধী কথাবার্তা মানে কি?
২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ দুপুর ০৩:০৭
298703
কুয়েত থেকে লিখেছেন : হতে পারে এখানেও কোন নতুন চাল..!হবে এটাও হতে পারে বিবেকের তাড়নায়। দেখাযাক আল্লাহ কি করেন।ধন্যবাদ আপনাকে

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File