জাতির স্বাধিকার আন্দোলনের ভিত্তি ভাষা আন্দোলনই। এক জন ভাষা সৈনিক জাতির শ্রেষ্ঠসন্তান, এবং বীর সেনানী শহীদদের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা ও শত কটি সালাম।
লিখেছেন লিখেছেন কুয়েত থেকে ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ০২:৫৯:৪০ দুপুর
জাতির স্বাধিকার আন্দোলনের ভিত্তি ভাষা আন্দোলনই। জাতির শ্রেষ্ঠসন্তান, বীর সেনানী শহীদদের প্রতি আমাদের শত শ্রদ্ধা ও সালাম।
এডওয়ার্ড জন বলেছেন, মৃত্যুর পর যার জন্য মানুষ মানুষের হুদয়ে অম্লান হয়ে থাকে, সে হচ্ছে তার ব্যবহার এবং কর্ম। রক্তের লাল কাপড়ে মোড়ানো একুশে ফেব্রুয়ারি।
যাদের আন্দোলন সংগ্রামের নিরন্তর লড়াইয়ে পাওয়া আমার মায়ের বাংলা ভাষা। ত্যাগের রক্তিম শিখরে লেখা আমাদের উজ্জ¦ল দিশা ৫২। জাতির স্বাধিকার আন্দোলনের ভিত্তি তো সেই ভাষা আন্দোলনই।
জাতির শ্রেষ্ঠসন্তান, বীর সেনানী শহীদদের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা ও সালাম। ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস।
বিশ্বের ১৯০টি দেশে এখন প্রতি বছর ২১ ফেব্রুয়ারি ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ উদযাপিত হচ্ছে। বর্তমানে বিশ্বের ৩০ কোটিরও বেশি লোক বাংলা ভাষায় কথা বলে। এ বিশাল অর্জন একান্তই আমাদের ।
কিন্তু যাদের ত্যাগের বিনিময়ে পাওয়া আমাদের মুখের বাংলা ভাষা, আমরা দল-মতের উর্ধ্বে উঠে কি ভাষা শহীদ আর সৈনিকদের যথাযোগ্য সম্মান ও মর্যাদায় ভূষিত করতে পেরেছি?
সে লড়াইয়ে প্রথম কাতারের-ই একজন অধ্যাপক গোলাম আযম। জীবনের শেষ সময়গুলোতে রাষ্ট্রীয়ভাবে এই ভাষা সৈনিকের উপর চালানো হয়েছে অমানুষিক নির্যাতন। এটি ছিল অমানবিক!
মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। বিশ্বের ইতিহাসে সম্ভবত ভাষার জন্য জীবন দেয়ার ইতিহাস আমরাই কায়েম করতে সক্ষম হয়েছি। কিন্তু বিশ্বের ইতিহাসে সম্ভবত আমরাই প্রথম যারা একজন ভাষা সৈনিককে আমৃত্যু কারাগারে আবদ্ধ করে রেখেছি!
এই জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের মধ্যে ভাষা সৈনিক অধ্যাপক গোলাম আযম অন্যতম। স্বমহিমায় উদ্ভাসিত একজন মানুষ তিনি। নিজ যোগ্যতা বলে তার ঐতিহাসিক স্বাক্ষর তিনি নিজেই।
তিনিই তাঁর গৌরবোজ্জ্বল কর্মের উপমা। তিনি ছিলেন প্রাচ্যের অক্সফোর্ড হিসেবে খ্যাত ডাকসু’র সাবেক নির্বাচিত জি.এস। সময়ের সাড়া জাগানো ছাত্রনেতা গোলাম আযম।
বর্তমান সময়ের আন্দোলন সংগ্রামের কেন্দ্রবিন্দু, বিশ্বব্যাপী সমাদৃত, কেয়ারটেকার সরকারের রূপকার, ভাষাসৈনিক, বিশ্ব ইসলামী আন্দোলনের অন্যতম প্রাণপুরুষ, মজলুম মানবতার বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর, জননেতা অধ্যাপক গোলাম আযম।
আজ তিনি নিজেই একটি ইতিহাস, একটি আন্দোলন, একটি চেতনা আর বিশ্বাসের স্মৃতির মিনার হয়ে আমাদের মাঝে দন্ডায়মান।
অধ্যাপক গোলাম আযম একজন সৎ,ব্যক্তিত্বসম্পন্ন, খ্যাতিমান অহিংস রাজনৈতিক নেতা, যিনি আন্তর্জাতিকভাবে শ্রদ্ধেয় পন্ডিত ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত।
এই মেধাবী চৌকস ও অভাবনীয় নেতৃত্বের গুণাবলী সম্পন্ন ক্ষণজন্মা মানুষ ১৯২২ সালে ঢাকার লক্ষ্মীবাজারে নানার বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন।
ম্যাট্রিক ও ইন্টারমিডিয়েট ঢাকা থেকে পাস করেন তিনি। স্কুল-কলেজের গন্ডি পেরিয়ে প্রাচ্যের অক্সফোর্ড হিসেবে খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ এবং রাষ্ট্রবিজ্ঞানে এমএ পাস করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে সম্পৃক্ত হন ছাত্র আন্দোলনের সাথে। ১৯৪৭-৪৮ ও ৪৮-৪৯ সালে পরপর দু’বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু)এর জিএস (জেনারেল সেক্রেটারি) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে সক্রিয় অংশ নিয়ে পাকিস্তান সরকার দ্বারা কারা নির্যাতিত হন। এই মহান নেতা ঐতিহাসিক ভাষা আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক ছিলেন।
শেখ মুজিব কর্তৃক ’৬৬ সালের ছয় দফা দাবি তৈরিতে অংশ নেয়া ২১ সদস্যের অন্যতম। ১৯৫৪ সালে যোগদান করেন জামায়াতে ইসলামীতে এবং প্রত্যক্ষভাবে শুরু করেন রাজনৈতিক জীবন।
পাকিস্তানে ১৯৫৫ থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন। কপ (COP- Combined Opposition Party), পিডিএম (PDM- Pakistan Democratic Movement), ডাক (DAC- Democratic Action Committee)
জনাব শেখ মুজিবুর রহমানসহ অন্য সকল দলের নেতাদের সাথে অংশগ্রহণ করে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। রাজনৈতিক কারণে ১৯৬৪ সালেও তাকে কারাবরণ করতে হয়েছিল।
ভাষাসৈনিক অধ্যাপক গোলাম আযম একটি আন্দোলন, একটি জাগরণ, একটি বলিষ্ঠ নেতৃত্বের নাম। একটি চেতনা ও বিশ্বাসের গগনজোয়ারী বিশ্বাসের কণ্ঠস্বর।
বিশ্বব্যাপী সমাদৃত কেয়ারটেকার সরকার ফর্মুলার রূপকার। মেধা ও নৈতিকতার সমন্বয়ের একটি সম্ভাবনাময় দেশগড়ার চেতনার অগ্রপথিক।
ভাষা সৈনিক অধ্যাপক গোলাম আজম সহ জাতির শ্রেষ্ঠসন্তান, এবং বীর সেনানী শহীদদের প্রতি গভির ভালো বাসা শ্রদ্ধা ও শত কটি সালাম।
বিষয়: বিবিধ
১৪৫৪ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন